পড়াশোনার পাশাপাশি টাকা উপার্জনের উপায়

আজ আমি ছাত্র অবস্থায় টাকা আয় করার অভিনব কিছু উপায় বলবো। চাইলে আপনিও এর যেকোনো এক বা একাধিক উপায়ে টাকা আয় করা শুরু করতে পারেন।

১. হোম টিউটোরিং

ছাত্র অবস্থায় আয় করার যে প্রথম চিন্তাটি মাথায় আসে তা হলো টিউশনি করা। আমিও টিউশনি করিয়ে এক সময় অনেক টাকা আয় করতাম।

কিছু পদ্ধতি এপলাই করে খুব সহজে স্টুডেন্ট ম্যানেজ করা যায়।

আর টিউশনি যে শুধু টাকা আয়ের জন্যই করবে তা নয়, বরং এটা তোমাকে অনেক আনন্দও দিতে পারে।

কিছু কিছু বাবা-মায়ের সন্তান আছে যারা টিউশনি করাটাকে অনেকটাই লজ্জার বিষয় মনে করে এই ভেবে যে আমার বাবার কি কম আছে বা আমার কি কোনো অভাব আছে যে টিউশনি করবো।

এটি আসলে আমাদের দেশের নোংরা মানসিকতার পরিচয় ছাড়া আর কিছুই না। মানুষ কি বলবে, মানুষ কি ভাববে এই ভেবে যে আমরা কত ভালো কাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে আনি তা বলে শেষ করা যাবে না।

তো তুমি যদি কোনো সাবজেক্ট এ পারদর্শী হও, তবে অন্যদেরকেও তা শেখাও। দেখবে তোমার ও তোমার শিক্ষার্থী উভয়েই উপকৃত হচ্ছ।

২. কোচিং

ছাত্রদের জন্য ব্যবসা হিসেবে কোচিং অসাধারণ একটি মাধ্যম হতে পারে।

যদি বাসায় বাসায় গিয়ে পড়ানোকে অপছন্দ করো তবে তুমি তোমার একটি কোচিং খুলতে পারো। কিছু মার্কেটিং টেকনিক এপলাই করে একটি কোচিংকে ভালো লাভজনক করা যায়। তবে একটি কোচিং শুরু করতে কিছু ইনভেস্টমেন্ট এর দরকার হয় যার এবিলিটি সকল শিক্ষার্থীর নাও থাকতে পারে।

এক্ষেত্রে অন্য কোনো কোচিং এ যেয়েও তুমি ক্লাস নিতে পারো।

৩. ফ্রিল্যান্সিং

পড়াশোনার পাশাপাশি আউটসোর্সিং আয়ের একটি ভালো মাধ্যম হতে পারে। আর তুমি যদি একটু ঘরকুনো টাইপের মানুষ হও তবে তো কথাই নেই।

যদিও আমাদের দেশে ফ্রিল্যান্সিংকে আউটসোর্সিং বলে বোঝানো হয়, কিন্তু আসলে সঠিক কাজটি হলো ফ্রিল্যান্সিং। আর যে তোমাকে দিয়ে কাজটি করাবে সে হলো আউটসোর্সিং করছে।

যাই হোক ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে তুমি একটি আয়ের উৎস তৈরী করতে পারো।

৪. ব্লগিং (এডসেন্স)

ছাত্র জীবনে আয় ব্লগিং করেও করা যায়, তবে এর জন্য চাই ডেডিকেশন।

হ্যা, ব্লগিং থেকে আয় হতে কিছুটা সময় লাগে, কিন্তু একবার আয় শুরু হলে তোমার আর অন্য কোনো কাজ নাও করা লাগতে পারে!

৫. এফিলিয়েট মার্কেটিং

এফিলিয়েট মার্কেটিং করেও তুমি তোমার পড়াশুনার পাশাপাশি আয় করতে পারো।

অনেকেই এই কাজ করে আজ স্বাবলম্বী।

৬. ইউটিউবিং

এখন তো জানোই যে বাংলাদেশে অনেকেই ইউটিউবে ভিডিও পাবলিশ করে অনেক আয় করছে!

তোমার যে বিষয়ে ঝোক আছে তার ওপর ভিডিও বানিয়ে তা তোমার ইউটুব চ্যানেলে পাবলিশ করতে পারো। নিয়মিত মূল্যবান কনটেন্ট বানাতে থাকলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তোমার চ্যানেলটিকে মানিটাইজ করতে পারবে।

৭. হাতের কাজ

লেখাপড়ার পাশাপাশি ব্যবসা হিসেবে তোমার হাতের কাজও হতে পারে একটি অনন্য মাধ্যম! অনেকে অনেক কিছুই করে শখ হিসেবে এবং এই শখ থেকেও অনেক আয় করা সম্ভব।

৮. ভার্সিটির টি-শার্ট অর্ডার

পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা করতে চাইলে তুমি তোমার ভার্সিটিতেই করতে পারো! হ্যা, ভার্সিটিতে বিভিন্ন অকেশনে টি-শার্ট অর্ডার করা হয়।

তুমি এ ব্যাপারে একটু খোঁজ-খবর রেখে অর্ডারগুলো নিতে পারো। এককালীন কিছু ভালো লাভ হতে পারে।

৯. ফটোগ্রাফি

ফোনে ছবি তোলে না এমন লোকের সংখ্যা এখন নেহায়েত নেই বললেই চলে। অনেক সাইটে ফটো আপলোড করে টাকা আয় করা যায় আর তোমার যদি প্রফেশনাল ফটোগ্রাফির দিকে মনোযোগ থাকে, তবে একটি DSLR ক্যামেরা ম্যানেজ করে ফটোশুট করতে থাকো।

বিভিন্ন বিয়ে বাড়িতে যেয়ে ফ্রি ছবি তুলে দাও। দেখবে অনেক কানেকশন হয়ে যাচ্ছে ও টাকা আয়ের পথ ও তৈরী হয়ে যাচ্ছে!

১০. ফেইসবুক

ফেইসবুক কিন্তু শুধু হাই, হ্যালো করবার জন্য নয় যদিও অধিকাংশ এটিই করে!

চাইলে তুমি ফেসবুকের ওপর ভিত্তিকরে তোমার ব্যবসা দাঁড় করাতে পারো।

তোমার ব্যবসার জন্য একটি ফেইসবুক পেইজ তৈরী করে তাতে গ্রাহক আনতে থাকো ও তাদের কাছে তোমার প্রোডাক্ট তুলে ধরো।

এছাড়া ফেসবুকে বড় গুরুপ তৈরী করেও বিভিন্নভাবে আয় করা যায়।

১১. রেস্টুরেন্টে বা হোটেলে

পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করেও আয় করার সুযোগ রয়েছে! চাইলে তুমি কোনো রেস্টুরেন্টে ক্যাশিয়ার বা ওয়েটার হিসেবে কাজ করতে পারো।

এছাড়া হোটেলে বিভিন্ন কাজেও যোগ দিতে পারো কারণ বাংলাদেশে ট্যুরিজম একটি বড় ব্যবসায়িক ক্ষেত্র হিসেবে অনেক আগে থেকেই চিহ্নিত হয়ে আছে।

১২. ওয়ার্কশপ

কোনো বিষয়ে তোমার ভালো দখল থাকলে তা মানুষকে ওয়ার্কশপের মাদ্ধমেও শেখাতে পারো। একটি নির্দিষ্ট এন্ট্রি ফী এর মাদ্ধমে শুরু করে দাও তোমার ওয়ার্কশপ।

১৩. লাইব্রেরি

বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, ভার্সিটিতে দক্ষ লাইব্রেরিয়ান এর দরকার হয়। তুমি কিন্তু এই কাজটির জন্য কিছু প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারো।

১৪. লোকাল মার্কেটিং

লোকাল মার্কেটিং এ কাজ পাওয়াটা অনেকটাই সহজ, কিন্তু এর জন্য ভালো পরিশ্রম করতে হয়।

তবে কিছুটা অভিজ্ঞতা ও টাকা অর্জনের জন্য তা করা যেতে পারে, তাই না?

হ্যা, বিভিন্ন কোম্পানি লোকাল মার্কেটিং এর জন্য নিয়মিত লোক নিয়োগ করে এবং তুমি হতে পারো তাদের কাঙ্খিত একজন লোকাল মার্কেটার।

১৫. ডে-কেয়ারিং

আধুনিক এই বিশ্বে ব্যস্ত বাবা-মা উভয়ের বাইরে কাজের ফলে বাচ্চাদের লালন-পালনের জন্য ডে-কেয়ার এর সংখ্যা নিয়ত বেড়েই চলেছে।

এমন একটি প্রতিষ্ঠানেও তুমি পার্ট-টাইম কাজ শুরু করে আয় করতে পারো।

বাচ্চাদের সাথে সময়ও কাটবে আবার মাস শেষে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকাও পকেটে আসবে।

১৬. নিউসপেপার

বিভিন্ন নিউসপেপার এ নানা কাজের জন্য লোকের প্রয়োজন হয় এবং তুমি এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারো।

১৭. টেলিভিশন

এখন প্রতিনিয়ত নতুন নতুন টিভি চ্যানেল তাদের সম্প্রচার শুরু করছে আর একারণে তাদের প্রচুর জনবলের প্রয়োজন হচ্ছে।

তুমিও একটু ট্রাই করে দেখতে পারো যে তোমার কোনো কাজের অপর্চুনিটি সেখানে আছে কিনা!

১৮. সেলস পারসন

আজকাল অনেক দোকানে বা সুপার শপে অনেক সেলস পারসন দরকার হয়। তুমিও এসব প্রতিষ্ঠানে তোমার সেলস এবিলিটি কাজে লাগিয়ে কাজ শুরু করতে পারো।

কাস্টমারের সাথে সরাসরি সেলস এর মাদ্ধমে তুমি অনেক কিছু শিখতে পারবে যা তোমাকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

১৯. কলসেন্টার

বিভিন্ন কলসেন্টার এ কাজ করেও তুমি আয় করতে পারো।

তোমার উচ্চারণ ও বাচনভঙ্গি ভালো হলে এসব কাজ পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

২০. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট

দেশের আনাচে-কানাচে নানা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি বিভিন্ন ব্র্যান্ড প্রোমোশনের কাজে নিয়োজিত।

এসব প্রতিষ্ঠানে কাজের মাদ্ধমে তুমি অনেক কিছু শিখতেও পারো, আবার আয়ও করতে পারো।

Post a Comment

Previous Post Next Post