ইসলামী আন্দোলন ও হরতাল! কিসের জন্য এই আন্দোলন!

ইসলামী আন্দোলন ও হরতাল! কিসের জন্য এই আন্দোলন!


ইসলামী আন্দোলন ও হরতাল! কিসের জন্য এই আন্দোলন! 
ইসলামী দল গুলুর কাছে জানতে ইচ্ছে হয় । আল্লাহ কি দিন-কায়েম বা ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে সময় বা দিন খন বেধে দিয়েছেন যে এর মধ্যে তা কায়েম করতে হবে ।


যদি না দেন তাহলে কার জইন্ন কিসের জন্য এত কিছু করছেন । করবেন পরবত্তিতে ।
আমরা কেউই ব্যর্থ হওয়ার পরিকল্পনা করি না বরং সঠিক পরিকল্পনা করতেই ব্যর্থ হই । পরিকল্পনা ভুল বা পরিকল্পনা করতে ব্যর্থ হলে সব শ্রম জলে যাবে ।

যেকোনো আন্দোলনের সফলতার জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও সুবিন্যস্ত পরিকল্পনা, যোগ্য সাহসী আপসহীন নেতৃত্ব, সিদ্ধান্ত ও কাজের সমন্বয় এবং চেইন অফ কমান্ড মেনে চলা পূর্বশর্ত।

চলমান পরিস্থিতিতে হেফাজতের আন্দোলনটা শুরু হয়েছিল সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে; যদিও তা শুরু হয়েছিল বিক্ষিপ্ত ও অবিন্যস্তভাবে। শুরুটা শান্তিপূর্ণই ছিল।

তবে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা কিছু অতি উৎসাহী এবং প্রশাসনের ভুল পদক্ষেপের কারণে বিষয়টি অন্যদিকে গড়িয়েছে। দুদিন আগেও কেউ ভাবেনি, বিষয়টি এতদূর গড়াতে পারে। কেন যেন মনে হচ্ছে, দূরের কারও ইশারায়, বিশেষ কোনো গোপন পরিকল্পনাকে সামনে রেখে সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ও ফ্যাসাদ ঘটানো হয়েছে।

এই পরিকল্পিত নৈরাজ্য আসন্ন ভয়াবহ মালহামার দিকে ইঙ্গিত করছে। পাশাপাশি শেষ জামানায় মুমিন ও মুনাফিকের তাঁবু যে সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যাবে, তার আগাম বার্তা জানান দিচ্ছে।

আন্দোলনটা শুরু হয়েছিল মোদিবিরোধী মিছিলের মধ্য দিয়ে। কিন্তু এখন বিষয়টা অন্যদিকে মোড় নিয়েছে। মোদি তো চলেই এসেছে। ইতিমধ্যে তার চলেও যাওয়ার কথা। তাহলে এখন তো আর মোদি ঠেকাও আন্দোলন হচ্ছে না।

তাহলে এখন কী নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে? যদি বলা হয়, হাটহাজারীতে গোলাগুলির আদেশদাতা ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে। তবে এটাও সঠিক কথা নয়।

কারণ, ইতিমধ্যে শুধু সে একাই নয়, আরও বহুজনের আদেশেই জনতার বুকে গুলি চালানো হয়েছে। যদি বলা হয়, তাদের সবাইকে প্রত্যাহার করা হোক, তবে এতেও রক্তের দাগ শুকাবে না।
কারণ, এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে ক্ষমতাসীন দলের বহু লোকের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে।

আর বলা বাহুল্য, ফিরআউনের কাছে হামানের বিরুদ্ধে বিচার দিয়ে অথবা নমরুদের কাছে আজরের বিরুদ্ধে নালিশ দায়ের করে কিংবা আবু জাহলের কাছে আবু লাহাবের খুনের বিচার চাইলে কোনো ফলই পাওয়া যাবে না।

তাহলে কীসের জন্য এই আন্দোলন?

যদি বলেন, শহিদানের রক্তের ক্ষতিপূরণের জন্য এই আন্দোলন? তাহলে আমি বলব, শরিয়তে কিসাসের কথা রয়েছে। হত্যার বদলে হত্যা, রক্তের বদলে রক্ত। এটাই শরিয়াহর পক্ষ থেকে বিধিবদ্ধ দণ্ড।

এখন এই শরয়ি দণ্ড কে বাস্তবায়ন করবে কে ? এটা তো স্পষ্ট কথা, যারা সেক্যুলারিজম ও ডেমোক্রেসির আলোকে দেশ চালায়, তারা শরয়ি দণ্ডের থোড়াই কেয়ার করে।

তাহলে তাদের থেকে কিসাস প্রত্যাশা করে লাভ নেই। আর যদি তারা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়, তাহলে আল্লাহর কসম, কয়েক হাজার টাকা বা বেশি থেকে বেশি দুয়েক লাখ টাকার বান্ডিল কখনোই এই মজলুম শহিদদের রক্তের মূল্য হতে পারে না।

তারা দীনের জন্য জীবন দিয়েছে, যতক্ষণ এই দীন পরিপূর্ণরূপে বাস্তবায়িত না হবে এবং খুনীদের ওপর কিসাস কার্যকর না করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এসব মনভুলানো সামান্য অর্থ তাদের রক্তের বদলা হতে পারে না।

তাছাড়া এই আন্দোলন অব্যাহত থাকার অর্থ হচ্ছে, আরও রক্ত ঝরবে, আরও মানুষ শহিদ হবে। দীন কায়েমের জন্য শহিদ হতে তো দোষের কিছু নেই।

কিন্তু লক্ষ্যের মধ্যে যদি প্রত্যক্ষভাবে দীন কায়েমের কোনো বিষয় না থাকে, তাহলে কীসের জন্য মানুষ জীবন দেবে, সেটাই তো খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়!

তাওহিদি জনতার কাছে জীবনের চাইতে দীনের মূল্য বেশি। কিন্তু জীবন তারা কেন দেবে, এটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

যদি তারা মজলুম রক্ষার জন্য বা দীন কায়েমের জন্য জীবন দেয়, তাহলে এটা অশেষ সাধুবাদ পাওয়ার দাবিদার।
(মদি দেশে না আসলে কি দিন কায়েম হয়ে যাবে পরের দিনেই । মদির দেশের পণ্য দিয়ে দিন চালান তাতে সমস্যা হয় না । আপনার দিনের ? )

কিন্তু এ দুটো লক্ষ্যের কোনোটাই যদি সামনে না থাকে, জুলুমের প্রতিশোধ নেওয়ারও অনুমতি নেই, শহিদানের খুনীদের ওপর কিসাস কার্যকর করারও কোনো অনুমোদন নেই, আবার দীন কায়েমের কোনো লক্ষ্যও নেই,

শুধুই আন্দোলনের জন্য আন্দোলন, জীবন দেওয়ার জন্যই জীবন দেওয়া, তাহলে এই ফলাফলশূন্য কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক হওয়াই স্বাভাবিক।

হরতাল ডেকেছে হেফাজত। ফলাফল ভাল হলে এর সুবিদা ভগ সুধু হেফাজত করবে না বাকিরাও করবে যারা এখন তাদের সঙ্গ দিচ্ছে । কথা হচ্ছে কিছু দিন আগেও কিন্তু অনেকে হেফাজত কে দেখতে পারত না তাদের এখন অনেকে তাদের সাথে সংগ দিচ্ছে । পরে আবার আলাদা হয়ে আবার নিজেরা নিজেরা লেগে যাবে । আবার নতুন করে সুরু হবে আন্দোলন তাহলে লাগ কি দিন ত কায়েম হল না ।

তবে হেফাজতের চেইন অফ কমান্ডের মধ্যে সমন্বয়হীনতার বিষয়টি এখন দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট। চট্টগ্রাম মেডিকেলে শহিদানের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি সবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, হেফাজত নেতৃবৃন্দের পদক্ষেপের মধ্যে কতটুকু সমন্বয়হীনতা রয়েছে।
শায়খ হারুন ইজহার হেফাজতের সবিশেষ উল্লেখযোগ্য কোনো পদে নেই। কিন্তু তরুণদের অন্তরে তিনি নেতৃত্বের আসনে জায়গা করে নিয়েছেন। আর অনেক বড় বড় নেতার জড়তা ও স্থবিরতা তাদেরকে চরমভাবে হতাশ করেছে।

এখনো হেফাজত যে হরতালের ডাক দিয়েছে, তা বাস্তবায়নে অধিকাংশ জেলার হেফাজতের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের কোনো ভূমিকাই চোখে পড়েনি।
যেমন, রাজবাড়ীর কথা। এখানে হেফাজতের কমিটি হয়েছে কিছুদিন আগে। কিন্তু এই চলমান ইস্যুতে তাদের কোনো একটিভিটি দেখা যায়নি। সেই তেরো সালের পর থেকে অদ্যাবধি তাদের মধ্যে প্রাণের কোনো স্পন্দনও চোখে পড়েনি।

এমনকি জেলার হেফাজত নেতারা বিবৃতি দেওয়া তো দূরের কথা, ফেসবুকে পর্যন্ত নিজেদের অবস্থান জানান দিয়ে একটা স্ট্যাটাস দেয়নি। আশপাশের সবগুলো জেলারও একই অবস্থা। চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা, নোয়াখালী ইত্যাদি কিছু অঞ্চলের কথা বাদ দিলে অধিকাংশ জেলারই এই অবস্থা।

এমনকি ভোলার ছাত্র সমাজ তো সেখানকার কমিটিই বিলুপ্ত করার জোর আওয়াজ তুলেছে। তো যেই সংগঠন হরতালের ডাক দিয়েছে, তাদের অধিকাংশ শাখা নেতৃত্বেরই যদি দুরবস্থা হয়, তাহলে কীভাবে একটা আন্দোলন সফল হবে?

দিনশেষে নিরীহ ছাত্রদের মার খাওয়া এবং নেতাদের শান্তির বাণী উগড়ে দিয়ে আপস করার দৃশ্য ছাড়া আর কী দেখা যাবে? এভাবে চলবে না। এভাবে চলতে পারে না। শুধু আবেগ দিয়ে ফল আসবে না।

এটা কোনো যুদ্ধ নয়।
এটা জাস্ট প্রতিবাদ।

তাও অপরাধীর কাছেই অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
আবার অপরাধীকেই আরও নতুন নতুন অপরাধ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

তাওহিদি জনতার জীবন এতটা সস্তা হতে পারে না।
যদি এটা যুদ্ধ হতো, তাহলে সবাই একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়া যৌক্তিক ছিল। এতে হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ
একটা না একটা পাওয়া যেত।

কিন্তু এখানে তো কোনো ফল নেই। যেখানে নেতৃত্বের অবস্থাই শোচনীয়, সেখানে আমরা কার থেকে কী আশা করি?
অনেকে জি হা-দের ডাক আসার প্রতীক্ষায় রয়েছে।
বহুজন শাহ আবদুল আজিজের মতো দারুল হারবের ফাতওয়া প্রত্যাশা করছে।

কিন্তু জেনে রাখা উচিত, জি হা-দের ডাক আসে মু-জা-হি-দদের পক্ষ থেকে। জীবনে একমুহূর্তের জন্যও যিনি রণাঙ্গনে যাননি, তিনি কীভাবে এই ডাক দিতে পারেন?

উপরন্তু গৃহযুদ্ধের ডাক কোনো সমাধান নয়; বরং তা আরও হাজারো সমস্যা সৃষ্টিকারী বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।

নিরস্ত্র জনতাকে সশস্ত্র বাহিনীর মোকাবিলায় নামিয়ে রক্তের সাগর রচনা করার নামান্তর হবে।
ফাতওয়া দ্বারা কোনো জাতিকে জাগানো যায় না। নইলে ফাতওয়া তো বহুকাল আগেই এসেছিল; গত একশ বছর ধরে বহু ফাতওয়ার কথা পৃথিবীর মুসলমানরা জানতে পেরেছিল; কিন্তু কোনো ফাতওয়াই তাদের ঘুম ভাঙাতে সক্ষম হয়নি।

সুতরাং ফাতওয়ার পেছনে পড়ে লাভ নেই।
এখন প্রয়োজন যোগ্য নেতৃত্ব। কারণ, বর্তমান নেতৃত্বের দৌড় কতটুকু, তা সবার জানা আছে।

১৩ থেকে ২১ আর কয় সাগর রক্ত ঝরার পর নেতৃত্বের দুরবস্থার ব্যাপারে মানুষ সজাগ হবে! দ্বিতীয়ত প্রয়োজন চেইন অফ কমান্ডের সমন্বয়।

আমাদের এত এত পদের তো দরকার নেই। যারা কাজের লোক, তারা পদে না থাকলেও কাজ করে। আর যারা অকর্মণ্য, তাদেরকে দিয়ে পদ সাজিয়ে রেখে লাভ কী?
পদ্মার এপারের অধিকাংশ জেলার অবস্থাই তো করুণ। এখানে যাদেরকে পদে বসিয়ে রাখা হয়েছে, তাদের অধিকাংশ তো কোনো কাজের লোকই না।

এখন থেকে অর্ধযুগ আগে হেফাজতে এত পদ ছিল না; কিন্তু ভালো কিছু কাজ ছিল।

এখন পদের সংখ্যা ভেড়ার লোমের চাইতেও বেড়েছে;
কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছু হচ্ছে না। সুতরাং সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। সম্ভব না হলে নতুন কিছু নিয়ে ভাবতে হবে। আর কোনোভাবেই পরিবর্তন আনতে না পারলে আবার বিকল্প কিছুও দাঁড় করাতে না পারলে সব আশা ছেড়ে দিয়ে বকরি নিয়ে পাহাড়ে চলে যেতে হবে।

আর অরাজনৈতিক হেফাজতকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সিস্টেমে রক্ত দেওয়ার মহড়া বন্ধ করে এখন শক্তি অর্জনের দিকে নজর দিতে হবে।

পরগাছাকে কেউ মূল্যায়ন করে না। হেফাজত যদি শক্তিশালী হতো, তাহলে তাদের দিকে বাঁকা চোখে তাকানোর আগেও দশবার ভেবে নিত। আজ তাদের দুর্বলতা, অক্ষমতা, পরনির্ভরতা ও নরম সুরের শান্তিকামিতার কথাই ওদেরকে উগ্র ও উদ্ধত হতে উৎসাহিত করেছে।

আগে ঘর ঠিক করে তারপর ময়দানে নামতে হবে। নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত যারা, তাদের মধ্যেই সমন্বয়হীনতা থাকলে পাবলিকেরই শুধু রক্ত ঝরবে।

সুতরাং যোগ্য নেতৃত্ব, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, প্রতিরোধের শক্তি, যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত ও সমন্বিত পদক্ষেপই পারে নিরীহ জনতাকে সফলতার দোরগোড়ায় পৌঁছাতে। নতুবা একই গর্তে দংশিত হতে হবে বারবার।

অবশেষে হয়তো এমন সময় আসবে, যখন প্রাণের প্রয়োজন হবে, কিন্তু তিক্ত অভিজ্ঞতা মানুষকে আর জান বাজি লাগাতে উৎসাহিত করবে না।

প্রয়োজনের সময় ব্যয় করার জন্য শক্তি সঞ্চয় রাখা প্রয়োজন।
সুতরাং দাবি উঠুক, লড়াই পরে; ইদাদ (প্রস্তুতি গ্রহণ) হোক আগে। ইদাদহীন জাতিকে মাঠে নামানো নিশ্চিত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার নাম।

এটাও একধরনের আত্মহত্যাস্পৃহা; যদিও শহিদদেরকে আল্লাহ তাদের ইখলাসের কারণে যথাযোগ্য প্রতিদান দেবেন ইনশাআল্লাহ। শুধু জান দেওয়াই মুমিনের বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত না।

সাহাবির নাম মনে নেই , নবীজির সময় কোন এক সাহাবি যুদ্ধে তার নিজের কাটা হাত নিজে ছিরেফেলার কারনে মারা গিয়েছিল এবং তা রাসুল সাঃ জানতে পরে বলেছিলেন সে নিজের ইচ্ছায় মৃত্যু বরন করেছে তাই জান্নাতে যাবে না ।

তাই আম জনতাকে ফতোয়া দিয়ে ভুল জিহাদে ঠেলে দিলেন তারাও সস্তায় জান্নাত পাউয়ার লভে বীরত্ব দেখাতে আহত হতে গিয়ে নিহত হয়ে গেলে এর দায় আপনাদের কেই নিতে হবে ।

উপরন্তু তা কোনো গর্ব বা বীরত্বের কথাও না। আবার অবিন্যস্ত ও বিক্ষিপ্ত পদক্ষেপ বা নিজেদের লোকদের সাথেই গৃহযুদ্ধের অবতারণা করাও বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক নয়। এখানে এসেই নেতৃত্ব আর সমন্বয়ের গুরুত্ব ফুটে ওঠে।
লেখা সংগ্রহীত ও সংশোধিত Kazi monirul Islam

আল্লাহ দিন কায়েমের ঠিকাদারি দিয়ে কাউকে দেন নি ।
আল্লাহ কি দিন-কায়েম বা ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে সময় বা দিন খন বেধে দিয়েছেন যে এর মধ্যে তা কায়েম করতে হবে ।

সুতরাং নিজেকে যদি মাজলুম মনে করেন । তাহলে তার মাজলুম এর যা করা উচিত তা করেন ।

জুলুমের উদাহরণ:
অন্যায়ভাবে আঘাত করা, রক্তপাত ঘটানো, সম্পদ লুণ্ঠন করা, অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, ন্যায় বিচার না করা, গালি দেয়া, অপবাদ দেয়া, কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া, গিবত বা অসাক্ষাতে দোষত্রুটি নিয়ে সমালোচনা করা বা অন্য কোনো উপায়ে অন্যায়ভাবে কষ্ট দেয়া ইত্যাদি। এগুলো সবই জুলুমের অন্তর্ভুক্ত।

যেমন, আল্লাহ বলেন –

وَنُرِيدُ أَنْ نَمُنَّ عَلَى الَّذِينَ اسْتُضْعِفُوا فِي الْأَرْضِ وَنَجْعَلَهُمْ أَئِمَّةً وَنَجْعَلَهُمُ الْوَارِثِينَ

“আমি ইচ্ছে করলাম, সে দেশে যাদেরকে দুর্বল (সর্বহারা) করা হয়েছে, তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে, তাদেরকে নেতৃত্ব দান করতে ও তাদেরকে দেশের উত্তরাধিকারী করতে।” [সূরা ২৮/কাসাস – ৫]

এ আয়াত থেকে কয়েকটা বিষয় স্পষ্ট।
১) এখানে দুইটা শ্রেণীর কথা বলা হয়েছে। একটি সর্বহারা বা দুর্বল শ্রেণী, অন্যটি ক্ষমতাশীল শ্রেণী। অন্যভাবে বললে, একটি মজলুম শ্রেণী, অন্যটি জালিম শ্রেণী।

আল্লাহ বলেন : ‘তুমি কখনো মনে করো না যে, জালিমেরা যা করে যাচ্ছে, সে বিষয়ে আল্লাহ গাফিল, তবে তিনি সে দিন পর্যন্ত তাদের অবকাশ দেন ।
তুমি কখনো মনে করো না যে, আল্লাহ তাঁর রাসূলদের প্রতি প্রতিশ্র“তি ভঙ্গ করেন। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।’ (অতএব জালিমকে আল্লাহ অবশ্যই কঠিন শাস্তি প্রদান করবেন, দুনিয়ার কোনো শক্তিই তা ফেরাতে সম হবে না) (সূরা ইব্রাহীম, ৪২-৪৭)

এভাবে কুরআনুল কারিমের অনেক আয়াত রয়েছে,যাতে জালিমের কঠিন শাস্তির কথা আলোচনা করা হয়েছে।

আল্লাহ জালিমকে সুযোগ দেন, ছাড় দেন না। জালিমকে তার জুলুমের শাস্তি অবশ্যই ভোগ করতে হবে, মাজলুমের কাছে মা চেয়ে মাফ করানো ছাড়া এ শাস্তি থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই।

সুতরাং নিজেকে মাজলুম মনে করলে আল্লাহ্‌র কাছে বিচার চান
“মাজলুমের বদদোয়া থেকে বেঁচে থাক। কারণ তার বদদোয়া ও আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা নেই।।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

যখন খুবাইব রা: এর একটা একটা করে হাত-পা কেটে নিয়ে শূলীতে চড়ানো হয়েছিল তখন খুবাইব রা: একটা দূয়া করেছিলেন ঐ সমস্ত উপস্থিত কুরাইশ কাফিরদের বিরুদ্ধে। খুবাইব রা: এর নির্মম নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড তদারকি করছিলেন আবু সুফিয়ান রা:, যিনি তখন কাফিরদের শীর্ষ সর্দার ছিলেন। তাঁর পাশে ছিলেন মুয়াবিয়া রা:, তিনি তখন টিনেজার। পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণের পর মুয়াবিয়া রা: বলেছেন, যখন খুবাইব রা:  বদদূয়া করছিলেন তখন উপস্থিত কাফিররা আতঙ্কে কাঁপতে শুরু করে এবং আল্লাহর আযাব তাৎক্ষণিক নেমে আসার চিন্তায় অস্থির হয়ে আবু সুফিয়ান তার ছেলে মুয়াবিয়া রা: কে মাটিতে শুইয়ে দেয়। 

যদিও মাটিতে শুয়ে আযাব থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব নয় তবুও খুবাইব রা: এর দূয়া তাদের মধ্যে এমন ভীতি ও আতঙ্ক তৈরী করে যে আবু সুফিয়ান নিজ সন্তানকে মাটিতে শুইয়ে এই আসন্ন আযাব থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। 
আফসোস! আজ আমাদের খুবাইব রা: এর সেই ঈমান নাই। আমাদের দূয়াও তাই আরশে আযীমে কাঁপন ধরায় না, আর না ধরায় ফিরআউনের মনে। তবুও অভাগা ভিখারীর মত আসুন আমরা খুবাইব রা: এর দূয়াটার উপর বেশি বেশি আমল করি। সালাতে ও সালাতের বাইরে সারাদিন পড়তে থাকি একনিষ্ঠভাবে। নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের দূর্বল ঈমানের হাল ও উম্মাহর দরদ ব্যাথা সম্পর্কে অবগত। আমাদের একজনের দূয়াও যদি আল্লাহ কবুল করে নেন তাহলেও যথেষ্ট।
দূয়াটি হল-
اللَّهُمَّ أَحْصِهِمْ عَدَدًا، وَاقْتُلْهُمْ بَدَدًا، وَلاَ تُبْقِ مِنْهُمْ أَحَدًا
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি তাদের প্রত্যেককে গুণে রাখুন, তাদেরকে একে একে ধ্বংস করুন এবং তাদের একজনকেও আপনি ছেড়ে দিবেন না।



ইসলামি আন্দোলন যারা করেন তাদের বলছি !

বর্তমান এই সেকুরাল জাতি রাষ্ট্রের মূল নেতৃত্বের কলকাঠি বাইরে থেকে নাড়া হয়, এই রাষ্ট্র স্বাধীন না, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির অধীন। এই গদিতে বসতে হলে বাইরের গদির মালিকদের গ্রীন সিগন্যাল পেতে হয়।

ইসলামি আন্দোলন এর দল এর নিজেস্ব ইমারাহ গড়ে তুলতে হবে। এই সেকুলার রাষ্ট্রের গদি দখলের কিছু নেই, গদি তৈরি করে নিতে হবে।

রাসূল সা. মক্কায় জাহেলি দারুল নাদওয়ার গদিতে বসার চেষ্টা করেননি, সেটা স্বাধীন ছিল না, রাসূল সময় নিয়ে সবরের সাথে স্বাধীন ইসলামী ইমারত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

আপোসের পথে হেঁটে তড়িৎ বিজয় খুঁজতে যেয়ে প্রতারিত হননি। আপনারা হয়েছেন ,

এতো তাড়াতাড়ি ২০১৩ সালের আপনাদের ভূমিকা ভুলে গেলেন?
মনে আছে , ১৩ দফা দাবী দিয়ে সাধারণ জনগণকে কনভিন্স করেছিলো এই কথা বলে, যারা এই দাবির পক্ষ অবলম্বন করবে না তাদের ঈমান থাকবে না!
তখনো তারা মাদ্রাসার হাজার হাজার ছাত্রকে শাপলা চত্বরে রেখে একেকজন বিদেশ পর্যন্ত পালিয়ে গিয়েছিলএন !

এরপর, মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে শহীদ হয়ে যাওয়া সহস্রাধিক বাচ্চাদের ব্যাপারে তারা মন্তব্য করেছিলো, শাপলা চত্বরে কেউ শহীদ হয়ই নি! শুধু এখানেই ক্ষান্ত হয়নি, সাথে এই সুবিশাল ধ্বংসযজ্ঞের তৎকালীন হর্তা কর্তা কে পুরো জাতির সামনে সংবর্ধনা দিয়ে "মা" ডাকতেও তাদের দ্বিধাবোধ হয়নি!

এখনো সময় আছে, এই দুনিয়ালোভী উলামায়ে সূ'দের চিনে রাখুন এবং মনে রাখুন, যেন পরবর্তী সময়ে তাদের ধোঁকা চিনতে পারা যায়। আমার সাথে চটে গিয়ে লাভ নেই ফায়সালা হবে ইনশাআল্লাহ কেয়ামতের ময়দানে।

কে দেখেও না দেখার ভান করেছিলো? আর কে সত্য জনসম্মুখে উপস্থাপন করেছিলো!

বারবার, মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে ব্যবহার করা এবং কিছু দিন পরেই ছাত্রদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা, এইসব দেখে চুপ থাকতে পারিনা!

এবার মোদি আসার খবর দুমাস পূর্ব থেকেই জাতীয় গণমাধ্যমগুলো আলোচনা করা সত্ত্বেও, একটি ব্যক্তিও একটি মাত্র প্রতিবাদলিপি অথবা একটি মাত্র বক্তব্যও উপস্থাপন করেনি জনসম্মুখে! অথচ, যেদিন সমস্ত প্রোগ্রাম ফাইনাল হয়ে গেল! সেদিন, হঠাৎ আবার পূর্বের একই চেতনাকে কাজে লাগিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে বিভিন্ন স্থানে হঠাৎ জামা করা শুরু হয়ে গেল! এরই মধ্য দিয়ে মাদ্রাসার যে কতজন ছাত্রদের এখন পর্যন্ত প্রাণ চলে গেল, তারা তো শহীদি মর্যাদা পেয়ে যাবে, তাদের নিয়তের কারণে! কিন্তু, আপনাদের কি হবে একবারও কি ভেবে দেখেছেন?

২০১৩ সালের মতো এবারের মাদ্রাসার ছাত্র গুলোর সাথে এবং তাদের রক্তের সাথে কদিনের ব্যবধানে টাকার বান্ডিল গুলো হাতে পেয়ে, আপনি বা আপনারা বেঈমানি করবেন না তার গ্যারান্টি কোথায়? লজ্জা লাগেনা? সাধারণ মানুষের ঈমানী চেতনাকে ব্যবহার করে নিজেদের পকেট ভারি করতে...! cd- সারাহ বিনতে মোহাম্মাদ

অতয়েব , আর আমরা এও জানি বর্তমান ইসলামী রাজনীতির নামে পশ্চিমা রাজনীতিরচর্চার পরিণতি সুখকর নয়, যার শুরু হয় আপস দিয়ে, যার সমাপ্তি ঘটে উপনিবেশিক শক্তির হাতে গড়া দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীর হাতে ফাঁসির মাধ্যমে নতুবা কারাগারের লৌহ প্রকষ্টে। বিদ্যমান অসার পন্থা থেকে বের হয়ে আমাদের সীরাতের শিক্ষায় ফিরে যেতে হবে।

এখন রাজনীতি ও সংবিধানের নামে যে জাহেলিয়াতের চর্চা চলছে তাকে জাহেলিয়াত বলার মতো দায়ীর মধ্যে সৎসাহস থাকতে হবে। তাদের সাথে হুমকি ও আতাত নয়, দাওয়ার ভাষায় ডায়লগ প্রয়োজন। তাদের ইসলামের বৃত্তে নিয়ে আসতে হবে। এ জাতির মুক্তির পথ এ জাতিকেই ঠিক করতে হবে। বিজাতীয় আধিপত্য রুখতে নিজেস্ব ইমারাহ গড়ে তুলার বিকল্প নেই।

এখন ধরে রাখার ক্ষমতা নাই, দখল করার চিন্তা আত্মঘাতি!

ভাল থাকবেন , খলা মনে ভাবুন কি করছেন, কেন করছেন , কার জন্য করছেন ।

Post a Comment

Previous Post Next Post