আল-কুরআনের ঘটনাগুলো নৃতাত্ত্বিক গবেষণায় সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে! জ্ঞানীদের শিক্ষা গ্রহন করার জন্য এই নিদর্শনগুলোই যথেষ্ট!

 নূহ নবী (আ:) নৌকার সন্ধান:

চীনা ও তুর্কী গবেষেকদের সমন্বয়েগঠিত নোয়াস আর্ক মিনিস্ট্রিজ ইন্টারন্যাশনাল নামক হংকং ভিত্তিক একটি সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, তুরস্কের মাউন্ট আরোরাত এর ১৪,৭০০ ফুট উঁচুতে স্তরীভূত কাঠের জাহাজের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর কয়েকটি ছবি প্রকাশ করে তারা দেখিয়েছেন, জাহাজটির গঠন কাঠামো এবং অভ্যন্তরিন অন্যান্য নিদর্শন থেকে তারা ৯৯.৯ ভাগ নিশ্চিত যে এটিই কোরান ও বাইবেলে উল্লেখিত নূহের কিস্তি। সংস্থাটি জাহাজের কার্বন পরীক্ষাও সম্পন্ন করেছেন। তারা জানিয়েছেন, এ পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেছে স্তরীভূত কাঠের বয়স ৪,৮০০ বছর। অনুসন্ধানী দলেরসদস্য ইয়ং উইং-চুং, যিনি একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা, বলেছেন : আমরা ১০০ ভাগ নিশ্চিত নই যে এটা নূহের কিস্তি, তবে আমরা ৯৯.৯ ভাগ নিশ্চিত যে এটাই সেটা।

[তথ্যসুত্র: Fox News (২৮ এপ্রিল ২০১০)]

এ ঘটনাই সাক্ষী দেয় যে পবিত্র কুরআনে বর্ণীত ঘটনাগুলো নিছক গল্প বা কিচ্ছা কাহিনী নয়। বরং, এগুলো ঐতিহাসিক ঘটনা, যা বস্তবেই ঘটেছে। তারপরও কি অবিশ্বাসীগণ অস্বীকার করবে?

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

"তোমরা তো অবশ্যই তাদের (ধ্বংসপ্রাপ্ত বসতিগুলোর) উপর দিয়ে সকাল—সন্ধ্যা চলাচল চলাচল কর৷ তবুও কি তোমরা বোঝা না?"

As-Saffat 37:137,138

নূহ (আ) ঘটনা জানতে পড়ুন হযরত নূহ( আঃ) এর জীবনী

আদ জাতি সম্পর্কে কুরআনের 7, 11, 46 এবং 89 নং সুরায় বর্ণনা করা হয়েছে৷ আদ জাতির ধ্বংসাবশেষ ও তার ঐতিহাসিক প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পড়ুন-

কাছাছুল কোরআন ১ম-৫ম খণ্ড - মাওলানা হিফযুর রহমান (রহ.) বইটি অত্যন্ত চমৎকার, যেখানে আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক ধ্বংসকৃত সকল জাতিসমূহের ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে; কুরআনের আলোকে সেগুলো আলোচনা করা হয়েছে এবং ঐতিহাসিক তথ্যের সাথে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করা হয়েছে৷ এছাড়াও পড়তে পারেন—

এই বইটি৷

وَٱذْكُرُوٓا۟ إِذْ جَعَلَكُمْ خُلَفَآءَ مِنۢ بَعْدِ عَادٍ وَبَوَّأَكُمْ فِى ٱلْأَرْضِ تَتَّخِذُونَ مِن سُهُولِهَا قُصُورًا وَتَنْحِتُونَ ٱلْجِبَالَ بُيُوتًاۖ فَٱذْكُرُوٓا۟ ءَالَآءَ ٱللَّهِ وَلَا تَعْثَوْا۟ فِى ٱلْأَرْضِ مُفْسِدِينَ

"স্মরণ কর, ‘আদ জাতির পরে তিনি তোমাদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন আর তোমাদেরকে যমীনে বসতি দান করেছেন, তোমরা তার সমতলে প্রাসাদ নির্মাণ করছ আর পাহাড় কেটে* ঘর তৈরি করছ, কাজেই আল্লাহর অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর, পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি কর না।" সুরা আরাফ 7: 74

কুরআনের বর্ণনা থেকে স্পষ্ট যে আল্লাহ তায়ালা আদ জাতিকে পাহাড় কেটে বাড়ি তৈরী করার দক্ষতা দিয়েছিলেন৷ আদ ও সামুদ জাতির ধ্বংসাবশেষ রয়েছে জর্দানে পেট্রা নগরীতে৷ বিস্তারিত সামুদ জাতির ইতিহাস

এটি সেই পেট্রা নগরীর একটি অংশ, যেখানে পাহাড়ে খোদাইকৃত বাড়ি দেখতে পাচ্ছেন৷ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, এদের ধ্বংস দেখে যেন আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি; আল্লাহর আযাব থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করি! অথচ, মানুষ সেসব জায়গায় যায় পর্যটক-ট্যুরিস্ট হিসেবে; সেখানে যায় সেলফি তুলতে! আল্লাহ তায়ালা তার আযাব হতে হেফাজত করুন৷

আদ জাতির ধ্বংসের ইতিহাস জানতে পড়ুন: আদ জাতির ধ্বংস| কোরাণের গল্প

কওমে লুত বা লুত (আ) এর সম্প্রদায়: তাফসিরবিদগন বলেন, তাদেরকে শহর সুদুমকে শুন্যে (আকাশে) তুুুুলে নিয়ে সেখানে তাদের উপর পাথর বর্ষণ করা হয়৷ অতঃপর, পুরো শহরকে উল্টো করে ভুমিতে নিক্ষেপ করা হয়৷

এর ফলে সেখানে গভীর যে গর্ত তৈরী হয়, তা থেকে মৃত সাগর বা ডেড সি (Dead sea) নামক হ্রদের সৃষ্টি হয়৷

ইতিহাসখ্যাত ‘মৃত সাগর’। ইংরেজিতে বলা হয় ‘ডেড সি’ (Dead Sea) এবং আরবদের কাছে তা ‘বাহরুল মায়্যিত’ নামে পরিচিত। জর্দান নদীর সঙ্গে সংযুক্ত হলেও এটি মূলত একটি হ্রদ। ডেড সি বা মৃত সাগরের দৈর্ঘ্য ৬৭ কিলোমিটার, প্রস্থ ১৮ কিলোমিটার আর গভীরতা ১.২৪০ ফুট। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪২২ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এ সাগরের পশ্চিমে রয়েছে ইসরায়েল ও পূর্বে জর্দান। এখান থেকে পবিত্র জেরুজালেম নগরীর দূরত্ব মাত্র ১৫ মাইল।

লুত জাতির ইতিহাস জানতে পড়ুন: লুত জাতির ধ্বংসের দৃষ্টান্ত আমাদের শিক্ষা - BanglaPostBD

ফিরাউনের লাশ: হাজার বছরেও পঁচেনি! আল্লাহ তায়ালা বলেন,

‘আজ আমি তোমার (ফেরাউন) দেহ রক্ষা করব, যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাকো। অবশ্যই মানুষের মধ্যে অনেকে আমার নিদর্শন সম্পর্কে উদাসীন।’ (সুরা : ইউনুুস, আয়াত : ৯২)

এবং আল্লাহ তায়ালা তার ওয়াদা রেখেছেন!

আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা এই ঘোষণা দিয়েছেন যে পরবর্তীদের জন্য ফেরাউনের লাশ সংরক্ষিত রাখা হবে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আল্লাহর এই ঘোষণা সত্য প্রমাণিত হয়েছে।

বর্তমানে ফেরাউনের মমি মিশরের কায়রোতে দ্যা রয়েল মমি হলে একটি সাধারণ কাচের আবরণে রাখা আছে। এর দৈর্ঘ ২০২ সেন্টিমিটার। আবিষ্কৃত হওয়ার আগে মমিটি তিন হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে থিবিসের কবরস্থানে ছিল।

লাশটি সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় আবিস্কার করা হয়েছিল। বিজ্ঞান আজ পর্যন্ত ফেরাউনের লাশের অবিকৃত অবস্থার ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। হয়ত কোনদিন পারবেও না! আল্লাহ তায়ালার ভাষ্য অনুযায়ী এটা তার কুদরতের নিদর্শন।

১৯৮১ সালে তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া মিতেরা মমি করে রাখা ফেরাউনের লাশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণার জন্য তা ফ্রান্সে পাঠাতে মিশর সরকারের কাছে অনুরোধ করেন।

ফেরাউনের লাশবাহী বিমান যখন ফ্রান্সের মাটিতে অবতরণ করে, তখন দেশটির সরকার প্রধান ও মন্ত্রী পরিষদসহ অনেক উচ্চ-পদস্থ ফরাসী কর্মকর্তা লাশটিকে সম্বর্ধনা জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত হন। মনে হচ্ছিল, যেন ফেরাউন এখনও জীবিত রয়েছেন এবং তিনিই ফ্রান্সের প্রকৃত শাসক।

অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের পর ফেরাউনের লাশ ফ্রান্সের একটি বিশেষ সংরক্ষণাগার কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। দেশটির সেরা শল্যবিদ বা সার্জন ও লাশ বা শরীর পরীক্ষার বিশেষজ্ঞ এবং গবেষক ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের সেখানে জড়ো করা হয়।

ফেরাউনের মমি কৃত লাশ পরীক্ষা করা এবং এর অজানা রহস্যগুলো উদঘাটনই ছিল এ পদক্ষেপের উদ্দেশ্য।

ফেরাউনের লাশ সংক্রান্ত গবেষক টিমের প্রধান ছিলেন মরিস বুকাইলি। ফেরাউনের লাশ সংরক্ষণ অন্য গবেষকদের উদ্দেশ্য হলেও বুকাইলি নিজে ফেরাউনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে উদগ্রীব ছিলেন।

Dr. Maurice Bucaille. আল্লাহ তার উপর রহম করুন৷

সারা রাত ধরে তিনি গবেষণা চালান। কয়েক ঘণ্টা গবেষণার পর ফেরাউনের লাশে লবণের কিছু অবশিষ্টাংশ পাওয়া যায়। ফলে স্পষ্ট হয় যে সাগরে ডুবেই ফেরাউনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর তার লাশ সাগর থেকে উঠিয়ে এনে মমি করা হয়। কিন্তু বুকাইলির বিস্ময়ের মাত্রা ব্যাপক হয়ে উঠেছিল একটি প্রশ্নকে ঘিরে- এ লাশ কিভাবে অন্য লাশগুলোর চেয়ে বেশি মাত্রায় সংরক্ষিত বা অক্ষত রয়েছে?

বুকাইলি যখন ফেরাউনের মৃত্যুর কারণ নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করছিলেন এবং তাতে এটা লেখেন যে ফেরাউন সাগরে ডুবেই মারা গেছে তখন উপস্থিত সঙ্গীদের মধ্যে একজন তাকে বললেন, এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশে তাড়াহুড়া না করাটাই ভাল হবে। কারণ, এ গবেষণার ফলাফল মুসলমানদের মতের পক্ষে যাচ্ছে।

ড. মরিস বুকাইলির বই: hThe Bible The Qur'an and Science. বইটি বাংলা ভাষায় অনুদিত হয়েছে

ড. মরিস বুকাইলির আরেকটি বই৷৷

বুকাইলি তা নাকচ করে দেন। কারণ, তার মতে এমন ফলাফলে উপনীত হওয়া অসম্ভব। বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নতি এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার অত্যন্ত উন্নত মানের বা নিঁখুত সাজ-সরঞ্জাম ও উন্নত কম্পিউটার ছাড়া এটা প্রমাণ করা সম্ভব নয় বলে বুকাইলি মনে করতেন।

এরপর বুকাইলিকে বলা হল, মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থে এসেছে ফেরাউন ডুবে মারা গেছে, মৃত্যুর পরও তার শরীর অক্ষত থেকে যায়। এ কথা শুনে বিস্ময়ে হতবাক বুকাইলি ভাবলেন, এটা কি মোটেও যৌক্তিক? কারণ, মুহাম্মাদ সা.-এর যুগের আরব জাতি ও অন্যরা মিশরীয়দের মাধ্যমে ফেরাউনের লাশ মমি করার কথা জানত না।

মরিস বুকাইলি সারা রাত ফেরাউনের লাশের দিকে চোখ রেখে ভাবতে লাগলেন কিভাবে কুরআন ডুবে যাওয়া ফেরাউনের লাশ উদ্ধারের কথা জানল? অথচ খৃস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল এই গল্প বর্ণনার সময় ফেরাউনের লাশ উদ্ধার সম্পর্কে কিছুই বলেনি।

নিজেকে প্রশ্ন করলেন, এটা কি সেই ফেরাউন যে হযরত মূসা আ.-কে গ্রেফতারের জন্য তার পেছনে ছুটেছিল?

এখন থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে হযরত মুহাম্মদ সা. তা জানতেন- এটা কি বিশ্বাস করা সম্ভব? অস্থির বুকাইলি সে রাতেই বাইবেল ও তৌরাত পড়া শুরু করেন। তৌরাতের একটি অধ্যায়ে তিনি পড়ছিলেন, ‘পানি ফিরে এসে ফেরাউনসহ তার পিছে পিছে আসা ঘোড়াগুলো ওতার সেনাদের সবাইকে গ্রাস করে। তাদের কেউই রক্ষা পায়নি।’

এ অংশটুকু পড়ে বিস্মিত হলেন বুকাইলি। কিছু দিন পর ফরাসী সরকার কাঁচের কফিনে করে ফেরাউনের মমি আবারও মিশরে ফেরত পাঠায়। কিন্তু বুকাইলির মাথা তখনও ফেরাউনের সম্পর্কে কুরআনের বক্তব্য নিয়ে বিভোর ছিল।

তিনি ফেরাউনের লাশ রক্ষা পাওয়া সংক্রান্ত কুরআনের বক্তব্য সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য মুসলিম দেশগুলো সফরের সিদ্ধান্ত নেন। ফরাসি সার্জন বুকাইলি সৌদি আরবে চিকিৎসা সংক্রান্ত এক সম্মেলনে ‘ডুবে-যাওয়া ফেরাউনের লাশ রক্ষা পাওয়া’ সম্পর্কে গবেষণালব্ধ নতুন তথ্য উল্লেখ করেন।

ফিরাউনের কাহিনী জানতে পড়ুন: ফেরাউন ও মুসা| কোরাণের গল্প

উপসংহার: এসব জাতি গোষ্ঠী, জনপদকে আল্লাহ তায়ালা ধ্বংস করে দিয়েছেন, তাদেরকে কিচ্ছা-কাহিনী বানিয়ে দিয়েছেন, ইতিহাস বানিয়ে দিয়েছেন! হ্যাঁ, এটাই সত্যি৷ আজ তারা স্থান পেয়েছে ইতিহাস ও গল্পের বইয়ের পাতায়৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন,

ثُمَّ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا تَتْرَاۖ كُلَّ مَا جَآءَ أُمَّةً رَّسُولُهَا كَذَّبُوهُۚ فَأَتْبَعْنَا بَعْضَهُم بَعْضًا وَجَعَلْنَٰهُمْ أَحَادِيثَۚ فَبُعْدًا لِّقَوْمٍ لَّا يُؤْمِنُونَ

"এরপর একের পর এক আমি আমার রসূলদেরকে পাঠিয়েছি। যখনই কোন জাতির কাছে তাদের রসূল এসেছে, তারা তাকে মিথ্যে বলে প্রত্যাখ্যান করেছে, অতঃপর (অবাধ্যতায়) তারা একে অন্যের অনুসরণ করেছে, অতঃপর, তাদেরকে কাহিনী বানিয়ে দিলাম! কাজেই যে জাতি ঈমান আনে না তারা ধ্বংস হোক!" Al-Mu'minun 23:44

لْ سِيرُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ ثُمَّ ٱنظُرُوا۟ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ

ٱلْمُكَذِّبِينَ

"বল, দুনিয়ায় পরিভ্রমণ কর, অতঃপর দেখ সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের পরিণাম কী দাঁড়িয়েছিল।" Al-An'am 6:11

  • ঐতিহাসিক এসব নিদর্শনই প্রমাণ করে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত ঘটনাগুলো নিছক ভিত্তিহীন কেচ্ছা কাহিনী নয়৷ বরং, এগুলো বাস্তব সত্য ঘটনা যা অতীতে পৃথিবীতে ঘটেছ৷
  • প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধগুলোর কাহিনী শুনলে আমরা যেমন সত্য মনে করি, এগুলো অতীতে ঘটেছে৷ কুরআনের এই ঘটনাগুলোও ঠিক তেমন সত্য৷ এগুলোও ঐতিহাসিক ঘটনা৷ কিন্তু, ঘটনাগুলো এতই প্রাচীন যে, হয়তো ইতিহাসও তখন যখন লাভ করেনি৷
  • সুুুুতরাং, আমরা যখন আদ, সামুদ, কওমে লুত, ফিরাউনের নাম শুনব, তখন যেন এদের বাস্তব ঐতিহাসিক সত্য বলে মনে করি৷ আরেকটু প্রাক্টিক্যাল কনসেপ্ট দেই: আপনার যেমন দাদা আছে/ছিল, তারও যেমন দাদা ছিল, তেমনিভাবে এরকম কয়েক হাজার দাদা পূর্বে হয়তো মুসা (আ) ও ফিরাউনের ঘটনা এই পৃথিবীতে ঘটে; তারও কয়েক দাদা পূর্বে লুত (আ) এর ঘটনা ঘটে, তারও কয়েক দাদা পূর্ব সামুদ; তারও কয়েক দাদা পূর্বে আদ জাতির রাজত্ব পৃথিবীতে ছিল৷ ঠিক এভাবেই, আপনার হয়তো কয়েক হাজার তম পূর্বপুরুষ বা দাদা ছিলেন নুহ (আ)৷৷ আশা করি কিছুটা বুঝতে পারছেন৷

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন—

أَفَلَمْ يَسِيرُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ فَتَكُونَ لَهُمْ قُلُوبٌ يَعْقِلُونَ بِهَآ أَوْ ءَاذَانٌ يَسْمَعُونَ بِهَاۖ فَإِنَّهَا لَا تَعْمَى ٱلْأَبْصَٰرُ وَلَٰكِن تَعْمَى ٱلْقُلُوبُ ٱلَّتِى فِى ٱلصُّدُورِ •

"তারা কি যমীনে ভ্রমণ করে না? তাহলে তারা হৃদয় দিয়ে বুঝতে পারত, আর তাদের কানগুলো শুনতে পারত। প্রকৃতপক্ষে চোখ অন্ধ নয়, বরং বুকের ভিতর যে হৃদয় আছে তা-ই অন্ধ।Al-Hajj 22:46

أَوَلَمْ يَسِيرُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ فَيَنظُرُوا۟ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْۚ كَانُوٓا۟ أَشَدَّ مِنْهُمْ قُوَّةً وَأَثَارُوا۟ ٱلْأَرْضَ وَعَمَرُوهَآ أَكْثَرَ مِمَّا عَمَرُوهَا وَجَآءَتْهُمْ رُسُلُهُم بِٱلْبَيِّنَٰتِۖ فَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيَظْلِمَهُمْ وَلَٰكِن كَانُوٓا۟ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ

তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না? তাহলে তারা দেখত যে, তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কী হয়েছিল। তারা শক্তিতে ছিল এদের চেয়ে অধিক প্রবল। তারা যমীন চাষ করত আর তা আবাদ করত এদের আবাদ করার চেয়ে বেশি। তাদের কাছে তাদের রসূলগণ স্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে এসেছিল। অতঃপর আল্লাহ তাদের উপর যুলম করেননি, তারা নিজেরাই নিজেদের উপর যুলম করেছিল। Ar-Rum 30:9

أَوَلَمْ يَسِيرُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ فَيَنظُرُوا۟ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَكَانُوٓا۟ أَشَدَّ مِنْهُمْ قُوَّةًۚ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُعْجِزَهُۥ مِن شَىْءٍ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَلَا فِى ٱلْأَرْضِۚ إِنَّهُۥ كَانَ عَلِيمًا قَدِيرًا

"তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না? তাহলে দেখত, তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কী হয়েছিল। তারা তো শক্তিতে ছিল এদের চেয়েও শক্তিশালী। আসমান ও যমীনের কোন কিছুই আল্লাহকে অপারগ করতে পারে না। তিনি সর্বজ্ঞাতা, সকল শক্তির অধিকারী।" Fatir 35:44

আল্লাহ তায়ালার ক্ষমতার উর্ধ্ব কেউ না৷ তিনি কারোর প্রতি অন্যায় করেননা৷ অবশ্যই এসকল জাতির ধ্বংস হওয়ার ভিতর শিক্ষনীয় নিদর্শন রয়েছে চিন্তাশীলদের জন্য৷

Post a Comment

Previous Post Next Post