মেরাজের ঘটনা মিথ্যা ! প্রমান কোরআন !

মেরাজের ঘটনা মিথ্যা ! প্রমান কোরআন !



  মেরাজের ঘটনা ঐতিহাসিক  মিথ্যা ! প্রমান কোরআন !  আমার এ ধর্ম সংক্রান্ত আলোচনার লেখা ও কথা উদ্দেশ্য কারো সাথে তর্কে জেতা নয় । ধর্ম সম্পর্কে আপনাদেরকে একটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয়া । যাতে কেউ ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আপনাকে হিপনোটাইজ করতে না পারে ।  লক্ষ্য করে দেখবেন বহু মানুষী আল্লাহ্‌কে ভয়ংকর কিছু মনে করে কারন আল্লাহ্‌ কে ভালবাসার চেয়ে আল্লাহ্‌কে ভয় এর কোথায় আমরা বেশি শুনি ।

 আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত সম্পূর্ণ পরিপূর্ণ অনুমুদিত জীবনবিধান হচ্ছে কোরআন । আর কোরানের সাথে সামঞ্জস্যহীন কথিত এসব হাদিস ইজমা কিয়াস এ  বানোয়াট কিচ্ছা কাহিনী দোয়া তাবিজ নির্ভর এক উতভট ধর্মচর্চা ইসলাম নামে আমাদের বেশির ভাগ মানুষের কাছে পরিচিত ।

বেসির ভাগ ধর্ম প্রান মুসলমান এটা উপলব্ধি পর্যন্ত করতে পারে না কোরআন আর হাদিসের মধ্যে পার্থক্য টা আসলে কি? কোনটা হাদিসে কথা কোনটা কোরআনের সেটাও অনেক আলাদা করতে পারেনা । আরবি হরফে ইচ্ছা মত যা কিছু লিখে দিলোও মানুষের এটাকে কোরআন বলে সম্মান করবে । দেওয়ালে আরবিতে পেশাব করা নিষেধ লিখে দিলে মানুষ আর সেখানে পেশাব করে না । মানুষ আরবি দেখলেই সেটাকে ধর্মের মন্ত্র মনে করে ভয় করে ।

 মানুষের এই অন্ধ আবেগকে কাজে লাগিয়ে মুসলমানদের কুরআন থেকে এত দূরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে সে আর ফিরে আসতে পারেনা কোরআনের কাছে । কতগুলো আরবি লেখাকে যাবতীয় সমস্যার সমাধানের দোয়া এবং সেসব দোয়ার ফজিলত সম্মৃদ্ধ আমাদের দৈনন্দিন ধর্ম চর্চার প্রধান ভিত্তি ।  ধর্মপ্রাণ  বেশির ভাগ মুসলমানকে ইসলাম ধর্মের প্রধান করনীয়-বর্জনীয় কাজ গুলোর তালিকা বানাতে বলেন দেখবেন তারা যে তালিকা বানাবেন তার সিংহভাগই কোরআন বহির্ভূত কোরআনের বক্তবের পরিপন্থী মানব রচিত সংগ্রহিত সংকলিত বিভিন্ন ধরনের কিতাব ভিত্তি । ধর্মের কথা ধর্মের বই থেকে না নিয়ে আমাদের বিভিন্ন বই ধরিয়ে দিচ্ছে । 

শুরুতেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কারণ আমার অন্যান্য কলাম গুলোর মতো এই কলামটা এতো সংক্ষিপ্ত ও সহজ ভাবে লেখা নয়। তাই আশাকরবো দুই একলাইন পড়ে মন্তব্য না করে পুরোটা পড়ে মন্তব্য করুন । 

প্রচলিত ইসলামী শরিয়াতে ‘‘মিরাজ’  বিশেষ গুরুত্ত্ব বহন করে । আল-মিরাজ ইসলামের ইতিহাসে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ মিরাজ এর সাথে ইসলামের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্তম্ভ 'সালাত' যুক্ত। অথচ অবাক  বিষয় হচ্ছে এই অতীব গুরুত্বপূর্ন বিষয়টি যাকে নবী মুহাম্মদের বিরাট মুজিজা মনে করা হয়  । তাঁর কোন উল্লেখই কোরআনে নেই । ইসরা আরবি শব্দটা কোরআনে পাওয়া যায় কিন্তু মিরাজ নয় । মজার বিষয় এই যে কোরআন অনুসারে ইসরা নবী মুসার জীবনে ঘটেছিল নবী মুহাম্মদের জীবনে নয় ।

কেননা মুহাম্মদ সাঃ  মেরাজের ঘটনার কোন বর্ননা ই কুরানে নেই । অথচ মুহাম্মদের ব্যক্তিগত নানা বিষয় দিয়ে কুরান  ভরপূর ।  এই মেরাজের মত অতীব গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়ে আয়াত পাঠাতে আল্লায় বেমালুম ভুলেই গেছিল ।
[ নাউজুবিল্লাহ ] 

যাহোক, যেহেতু  ইসলামের দৃষ্টিতে মিরাজ খুবই অতীব গুরুত্বপূর্ন বিষয়,সেহেতু আমি আর দ্বিতীবার সেই ঘটনা এখানে উল্লেখ করে লেখা বড় করতে চাইনা।মিরাজ কি আসলেই বিশুদ্ধ কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা নাকি সারা বিশ্বের সকল মুসলিম দের সাথে যুগ যুগ ধরে হয়ে আসা এক বিশাল প্রতারণা?

প্রশ্ন: কুরআন-হাদিসের এমন কোন সহিহ দলিল আছে কি যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মেরাজ থেকে ফিরে আসলেন তখনও তিনি তাঁর বিছানার ‘মুলাআ’ (চাদর) উষ্ণ পেলেন, তিনি পানির যে পাত্রটি উপড় করে রেখেছিলেন সে পাত্র থেকে তখনও মাটির উপর ফোটা ফোটা পানি পড়ছিল, দরজার শিকল তখনও কাঁপছিল, ঠিক মেরাজে যাওয়ার আগে তিনি যখন রুম বের হচ্ছিলেন তখন যেভাবে রেখে গিয়েছিলেন সেভাবে।

উত্তরঃ আলহামদুলিল্লাহ। প্রশ্নে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেরাজ থেকে ফিরে এসে তাঁর বিছানার মুলাআ বা চাদর উষ্ণ পেয়েছেন, যে পাত্রটি উপড় করে রেখে গিয়েছেন সেটি থেকে তখনও পানি ঝরছিল, দরজার শিকলকে কাঁপা কাঁপা অবস্থায় পেয়েছেন; আমরা এসবের কোন ভিত্তি জানি না। এ ধরণের কথা প্রচার করা জায়েয নয়; কারণ এতে স্পষ্ট কৃত্রিমতা ও কদর্যতা পাওয়া যায়।

আমরা জানি না এমন কেউ আছেন যিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চকিতে মুলাআ (চাদর) থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। বিছানার চাদরকে ‘মুলাআ’ বলা এটি একটি আধুনিক ব্যবহার। আরবী ভাষায় ‘মুলাআ’ বলা হয় বিছানার চাদরকে কিংবা লুঙ্গিকে।[দেখুন: লিসানুল আরব (১/১৬০) ও আল-নিহায়া (৪/৩৫২)]

শাইখ শুকাইরি (রহঃ) বলেন:

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম রাতের বেলায় মেরাজে যাওয়া ও ফিরে এসে বিছানা উষ্ণ পাওয়া সাব্যস্ত নয়; বরং এটি মানুষের বানানো একটি বানোয়াট মিথ্যা।”[আস-সুনান ওয়াল মুবতাদিআত (পৃষ্ঠা-১৪৩) থেকে সমাপ্ত]

অনুরূপভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘরের দরজার শিকল ছিল দরজা বন্ধ রাখার জন্য; এমনটি আমরা জানি না। বরং প্রথম যামানায় ঘরের কোন দরজা থাকত না। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৫৮-৬২] পরে জানা যায়   তখন তাদের ঘরের দরজা থাকত না; পর্দা টানিয়ে রাখা হত” [তাফসিরে তাবারি (১৯/২২১) থেকে সমাপ্ত]

উপরোক্ত তথ্যকে বাতিল প্রমাণ করার আরও একটি দলিল হচ্ছে যা বুখারি (৩৩৪২-৩৪৯) ও মুসলিম (১৬৩) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন: আবু যর (রাঃ) হাদিস বর্ণনা করতেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমি তখন মক্কায় ছিলাম। আমার ঘরের ছাদ উন্মুক্ত হয়ে গেল এবং জিব্রাইল নাযিল হলেন। তিনি আমার বুক ফাঁড়লেন। এরপর সেটাকে জমজমের পানি দিয়ে ধৌত করলেন। তারপর তিনি সোনার তৈরী একটি আনলেন। সেটি হেকমত ও ঈমানে পরিপূর্ণ ছিল। সেগুলো আমার বুকে ভরে দিলেন। এরপর বুক লাগিয়ে দিলেন। অতঃপর আমার হাত ধরে আমাকে নিয়ে আকাশের দিকে উঠতে থাকলেন...” এরপর বাকী হাদিস উল্লেখ করলেন।

পুরো হাদিস, আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবূ যার (রাঃ) রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ আমি মক্কায় থাকা অবস্থায় আমার গৃহের ছাদ উন্মুক্ত করা হ’ল। অতঃপর জিব্‌রীল (‘আঃ) অবতীর্ণ হয়ে আমার বক্ষ বিদীর্ণ করলেন। আর তা যমযমের পানি দ্বারা ধৌত করলেন। অতঃপর হিকমাত ও ঈমানে ভর্তি একটি সোনার পাত্র নিয়ে আসলেন এবং তা আমার বুকের মধ্যে ঢেলে দিয়ে বন্ধ করে দিলেন। অতঃপর হাত ধরে আমাকে দুনিয়ার আকাশের দিকে নিয়ে চললেন। পরে যখন দুনিয়ার আকাশে আসলাম জিব্‌রীল (‘আঃ) আসমানের রক্ষককে বললেনঃ দরজা খোল। আসমানের রক্ষক বললেনঃ কে আপনি? জিব্‌রীল (‘আঃ) বললেনঃ আমি জিব্‌রীল (‘আঃ)। (আকাশের রক্ষক) বললেনঃ আপনার সঙ্গে কেউ রয়েছেন কি? জিব্‌রীল বললেনঃ হাঁ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রয়েছেন। অতঃপর রক্ষক বললেনঃ তাকে কি ডাকা হয়েছে? জিব্‌রীল বললেনঃ হাঁ। অতঃপর যখন আমাদের জন্য দুনিয়ার আসমানকে খুলে দেয়া হল আর আমরা দুনিয়ার আসমানে প্রবেশ করলাম তখন দেখি সেখানে এমন এক ব্যক্তি উপবিষ্ট রয়েছেন যার ডান পাশে অনেকগুলো মানুষের আকৃতি রয়েছে আর বাম পাশে রয়েছে অনেকগুলো মানুষের আকৃতি। যখন তিনি ডান দিকে তাকাচ্ছেন হেসে উঠছেন আর যখন বাম দিকে তাকাচ্ছেন কাঁদছেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ স্বাগতম ওহে সৎ নবী ও সৎ সন্তান। আমি (রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) জিব্‌রীল (‘আঃ)-কে বললামঃ কে এই ব্যক্তি? তিনি জবাব দিলেনঃ ইনি হচ্ছেন আদম (‘আঃ)। আর তাঁর ডানে বামে রয়েছে তাঁর সন্তানদের রূহ। তার মধ্যে ডান দিকের লোকেরা জান্নাতী আর বাম দিকের লোকেরা জাহান্নামী। ফলে তিনি যখন ডান দিকে তাকান তখন হাসেন আর যখন বাম দিকে তাকান তখন কাঁদেন। অতঃপর জিব্‌রীল (‘আঃ) আমাকে নিয়ে দ্বিতীয় আসমানে উঠলেন। অতঃপর তার রক্ষককে বললেনঃ দরজা খোল। তখন এর রক্ষক প্রথম রক্ষকের মতই প্রশ্ন করলেন। পরে দরজা খুলে দেয়া হল। আনাস (রাঃ) বলেনঃ আবূ যার (রাঃ) উল্লেখ করেন যে, তিনি [রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] আসমানসমূহে আদম, ইদরীস, মূসা, ‘ঈসা এবং ইব্‌রাহীম (‘আলাইহিমুস সালাম)-কে পান। কিন্তু আবূ যার (রাঃ) তাদের স্থানসমূহ নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। তবে এতটুকু উল্লেখ করেছেন যে, তিনি আদম (‘আঃ)-কে দুনিয়ার আকাশে এবং ইব্‌রাহীম (‘আঃ)-কে ষষ্ঠ আসমানে পান।

আনাস (রাঃ) বলেনঃ জিব্‌রীল (‘আঃ) যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে নিয়ে ইদরীস (‘আঃ) নিকট দিয়ে অতিক্রম করেন তখন ইদরীস (‘আঃ) বলেনঃ মারহাবা ওহে সৎ ভাই ও পুণ্যবান নবী। আমি (রসূলুল্লাহ্‌) বললামঃ ইনি কে? জিব্‌রীল বললেনঃ ইনি হচ্ছেন ইদরীস (‘আঃ)। অতঃপর আমি মূসা (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করাকালে তিনি বলেনঃ মারহাবা হে সৎ নবী ও পুণ্যবান ভাই। আমি বললামঃ ইনি কে? জিব্‌রীল বললেনঃ ইনি মূসা (‘আঃ)। অতঃপর আমি ‘ঈসা (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করাকালে তিনি বলেনঃ মারহাবা হে সৎ নবী ও পুণ্যবান ভাই। আমি বললামঃ ইনি কে? জিব্‌রীল বললেনঃ ইনি হচ্ছেন ‘ঈসা (‘আঃ)। অতঃপর আমি ইব্‌রাহীম (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করলে তিনি বলেনঃ মারহাবা হে পুণ্যবান নবী ও নেক সন্তান। আমি বললামঃ ইনি কে? জিব্‌রীল (‘আঃ) বললেনঃ ইনি হচ্ছেন ইব্‌রাহীম (‘আঃ)। ইব্‌নু শিহাব বলেনঃ ইব্‌নু হায্‌ম (রহঃ) আমাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, ইব্‌নু ‘আব্বাস ও আবূ হাব্বা আল-আনসারী উভয়ে বলতেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অতঃপর আমাকে আরো উপরে উঠানো হল অতঃপর এমন এক সমতল স্থানে এসে আমি উপনীত হই যেখানে আমি লেখার শব্দ শুনতে পাই। ইব্‌নু হায্‌ম ও আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) বলেনঃ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অতঃপর আল্লাহ আমার উম্মাতের উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয করে দেন। অতঃপর তা নিয়ে আমি ফিরে আসি। অবশেষে যখন মূসা (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করি তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা আপনার উম্মাতের উপর কি ফরয করেছেন? আমি বললামঃ পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন। তিনি বললেনঃ আপনি আপনার পালনকর্তার নিকট ফিরে যান, কেননা আপনার উম্মাত তা পালন করতে পারবে না। আমি ফিরে গেলাম। আল্লাহ তা’আলা কিছু অংশ কমিয়ে দিলেন। আমি মূসা (‘আঃ)-এর নিকট পুনরায় গেলাম আর বললামঃ কিছু অংশ কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি বললেনঃ আপনি পুনরায় আপনার রবের নিকট ফিরে যান। কারণ আপনার উম্মাত এটিও আদায় করতে পারবে না। আমি ফিরে গেলাম। তখন আরো কিছু অংশ কমিয়ে দেয়া হল। আবারো মূসা (‘আঃ)-এর নিকট গেলাম, এবারো তিনি বললেনঃ আপনি পুনরায় আপনার প্রতিপালকের নিকট যান। কারণ আপনার উম্মত এটিও আদায় করতে সক্ষম হবে না। তখন আমি পুনরায় গেলাম, তখন আল্লাহ বললেনঃ এই পাঁচই (নেকির দিক দিয়ে) পঞ্চাশ (বলে গণ্য হবে)। আমার কথার কোন রদবদল হয় না। আমি পুনরায় মূসা (‘আঃ)-এর নিকট আসলে তিনি আমাকে আবারও বললেনঃ আপনার প্রতিপালকের নিকট পুনরায় যান। আমি বললামঃ পুনরায় আমার প্রতিপালকের নিকট যেতে আমি লজ্জাবোধ করছি। অতঃপর জিব্‌রীল (‘আঃ) আমাকে সিদরাতুল মুনতাহা [১] পর্যন্ত নিয়ে গেলেন। আর তখন তা বিভিন্ন রঙে আবৃত ছিল, যার তাৎপর্য আমি অবগত ছিলাম না। অতঃপর আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হলে আমি দেখতে পেলাম যে, তাতে রয়েছে মুক্তোমালা আর তার মাটি হচ্ছে কস্তুরী।


এ হাদিস প্রমাণ করে যে, জিব্রাইল (আঃ) সরাসরি ছাদের ছিদ্রপথ দিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে আকাশের দিকে উঠতে থাকেন; দরজা দিয়ে নয়।

অর্থাৎ কোরআনে সরাসরি মিরাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে। আমরা সকলেই জানি যে মক্কা থেকে মসজিদুল আকসায় ভ্রমণ মেরাজের রাঁতেই ঘটেছিলো। এছাড়া অনেক হাদীস এ সরাসরি মেরাজের ঘটনার উল্লেখ আছে (যেমনঃ Sahih Bukhari, Volume 5, Book 58, Number 227, Sahih Muslim, Book 001, Number 0309, Sahih Bukhari, Volume 5, Book 58, Number 228 and so on)

তাই কোনো ভাবেই কোনো মুসলিমের মিরাজ এর ঘটনা অস্বীকার করা উপায় নেই। কারণ ইসলামের সবচেয়ে অথেন্টিক সোর্স কোরান ও হাদীস এ মিরাজ সম্পর্কিত আলোচনা রয়েছে।

অতএব আমরা মেনে নিতে পারি এই অব্দি ঘটনা কোরআন দিয়ে সত্য প্রমানিত । 

এখন দেখা যাক বাস্তব সত্য কি ? 

মি’রাজে কিভাবে সালাত ফরজ হল?

    এখানে লক্ষ্যনীয়ঃ

{১} আল্লাহর সাথে ১ম সাক্ষাতে নবীকে ৫০ ওয়াক্ত নামাজ দেওয়া হল ।

{২} আল্লাহর সাথে ২য় সাক্ষাতে নবীকে  কিছু অংশ কমিয়ে  দেওয়া হল ।

{৩} আল্লাহর সাথে ৩য় সাক্ষাতে নবীকে আর কিছু অংশ কমিয়ে ওয়াক্ত নামাজ দেওয়া হল ।  

{৪}আল্লাহর সাথে শেষ সাক্ষাতে নবীকে ০৫ ওয়াক্ত নামাজ দেওয়া হল ।


মিরাজের রাতে আল্লাহ মানব জাতির জন্যে সব চেয়ে বড় উপহার 'সালাত' মোহাম্মদ সাঃ  কে উপহার দেন এবং সেই নামাজ প্রথমে ৫০ ওয়াক্ত করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে মুসার বিচক্ষণতায়/ পরামর্শে  মোহাম্মদ সাঃ আল্লাহ কাছে ফিরে গিয়ে কমাতে কমাতে শেষে ৫ ওয়াক্তে এসে আমাদের কাছে উপস্থিত হয়। 
আচ্ছা ওযু+মসজিদে যাওয়া আসা ও নামাজ আদায় করা নিয়ে এক ওয়াক্ত নামাজের সময় হিসাব করা হয় তাহলে কমছে কম সময় প্রয়োজন ৩০ মিনিট লাগবে । কোনো ওয়াক্তে বেশি কোনো ওয়াক্তে তার চেয়ে কম সময় লাগে। ধরে নিলাম আধা ঘন্টা। তাহলে ৫০ ওয়াকত নামাজ আদায় করতে সময় প্রয়োজন ৫০*৩০=১৫০০ মিনিট বা ২৫ ঘন্টা! অর্থাৎ আল্লাহর হিসেবে দিনের ২৪ ঘন্টার মাঝে মানুষ ২৫ ঘন্টাই নামাজ পড়ে কাঁটাবে। ? খোলা মনে চিন্তা করেন ত । যদি তাই হত আল্লাহর এই ১ টি হুকুম মানতে গিয়ে আমাদের পুরো কোরআন এর কত কত আয়াত বা আল্লাহর হুকুম ছেরে দিতে হত । 

যাহোক, উক্ত প্যাসেজ থেকে কিছু প্রশ্নঃ
  পয়েন্ট- (ক)

১। আল্লাহ কি জানতেন না ২৪ ঘন্টায় একদিন হয়?
২। আল্লাহ কি বলেন নি  তার বান্দাদের খেতে হয়, ঘুমাতে হয়, কাজ করতে হয়, পরিবারের দেখভাল করতে হয়?
৩। আল্লাহ কি জানতেন না তার বান্দারা তার এই অদ্ভুত ও হাস্যকর রকমের বিশাল চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হবে?
৪। আপনার কি মনে হচ্ছে না  মুসা সাঃ  আল্লার চাইতে বেশি বাস্তবিক জ্ঞানের অধিকারী?
৫। মুসা কি আল্লাহর চাইতে বেশি বিজ্ঞ ?
৬। আল্লাহর দেয়া আদেশ মাথা পেতে নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে না এসে মোহাম্মদ কেনো মুসার উপদেশে আল্লাহর আদেশ কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলো?
৭। আল্লাহর সকল আদেশ যদি প্রথম থেকেই সর্বকালীন হয়, মুসা কিভাবে সেই আদেশ পরিবর্তন করলেন?

 পয়েন্ট - (খ)

মোহাম্মদ সাঃ এর  ভাষ্য মতে তিনি মক্কা থেকে বোরাকে করে ২০০০ মাইল দূরে জেরুজালেম শহরের মসজিদুল আকসায় ভ্রমণ করেন, সেখানে তিনি দুই রাকাত সালাত আদায় করেন যাতে তার সাথে সকল পয়গম্বরেরা (১২৪০০০) শরীক হয়েছিলো।(Sahih Muslim, Book 001, Number 0309)।

মেরাজ গমন করেছিলেন ৬২০ খ্রিষ্টাব - ৬২১ খ্রিষ্টাব্দ এই দুই বছরের কোনো এক বছরে। কিন্তু মসজিদুল আকসার একটা ঐতিহাসিক সত্য হলো  ব্যবিলনের সম্রাট দ্বিতীয় নেবুচ্যাডনেজার; সুলায়মান (আঃ) এর তৈরি স্থাপত্যগুলি ধ্বংস করেন (খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮৬) ,

 এরপরে এই স্থান রাজা হেরোড দ্য গ্রেটের সময় (২০৮ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে) সম্প্রসারিত হয়। মসজিদটি একটি প্লাটফর্মের উপর অবস্থিত যা হেরোডের প্রকৌশলীরা বিভিন্ন স্থানগত অবস্থা কাটিয়ে উঠার জন্য নির্মাণ করেছিলেন। সেকেন্ড টেম্পলের সময় বর্তমান মসজিদের স্থানটিতে রয়েল স্টোয়া ( প্রশাসনিক ভবন) ছিল।

পরবর্তীতে  রোমানরা খিষ্টাব্দ ৭০ শতাব্দীতে জেরুজালেমের এই মসজিদ ধ্বংস করে দেয় এবং দেবতা জুপিটারের উপাসনার স্থানে পরিণত করেছিল। ৩১৫ খ্রিষ্টাব্দে  খ্রিষ্টানে রূপান্তরিত রোমান সম্রাজ্জ এটিকে ময়লা ফেলার স্থানে পরিণত করে এবং এসময় ইহুদীরাও এটিকে তাদের পবিত্র স্থান বলে মনে করত না।  তারপর থেকে প্রায় ৫০০ বছর তা বন্ধ ছিলো এবং খেলাফায়ে রাশেদিনের যুগে ইসলামের দ্বিতীয় খালিফা ওমর জেরুজালেম দখলের পর মসজিদুল আকসা দ্বিতীয়বার পুনর্নিমাণ করেন ৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দে। সেখানে তিনি দুই রাকাত সালাত আদায় করলেন কেমনে ?  ৫২২ বছর আগে থেকেই মসজিদুল আকসা রোমান রা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছিলো। এগুলো সব ঐতিহাসিক তথ্য। 

উক্ত পয়েন্ট থেকে প্রশ্নঃ

৮। যদি মসজিদুল আকসা ধ্বংসই হয়েছিলো তাহলে মোহাম্মদ সাঃ  স্বশরীরে সেখানে নামাজ আদায় করলেন কিভাবে?
৯। তখনকার সময়ে নির্মিত ছোট্ট একটা মসজিদে ১২৪০০০ পয়গম্বর একসাথে নামাজ আদায় করলো  কিভাবে ?
যেখানে এই আধুনিক যুগে এসে বৃহদাকারে পূনঃনির্মান এবং সংস্কারের পরেও একসাথে ৫০০০০ লোক আটানো বা জমায়েত করা সম্ভব হয়না ।
১০। জেরুজালেমে যেহেতু আগে থেকে কোনো মুসলিম ছিলো না সেখানে মুসলিম দের প্রার্থনার জন্যে মসজিদ কিভাবে এলো? আর যদি সেটা ইহুদীদের টেম্পেল হয় তাহলে কোরানে সেটা মসজিদ বলার কারণ কি? টেম্পেলে নিশ্চই নামাজ আদায় করা সম্ভব নয়?
উইকিতে চেক করে নিতে পারেন যেখানে টেম্পেল হিসাবেই বলা হয়েছে ।
টেম্পেল মানে হচ্ছে মন্দির বা গীর্জা টাইপের যেটা হয়ে থাকে
            পয়েন্ট - (গ)

নবী মোহাম্মদ নামাজ নিয়ে ফেরার পথে জিব্রাইল তাকে জান্নাত-জাহান্নাম ঘুরিয়ে দেখান। তিনি জাহান্নামে বিভিন্ন নারী পুরুষ ও তাদের প্রতি হওয়া শাস্তি ও শাস্তির বিভিন্ন কারণ বর্ণনা করেন অসংখ্য হাদিসে। এক হাদীসে বর্ণিত আছে নবী মোহাম্মদ জাহান্নামে অপরাধীদের মাঝে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লোক দেখেছিলেন নারী।

                                          এই পয়েন্ট থেকে প্রশ্নঃ

১১। কেয়ামতের পর মানুষের হিসাব নিকাশ হবে তারপরেই সকল মানুষ জান্নাত/জাহান্নে যাবে। কেয়ামতের আগেই কিভাবে কিছুলোক জাহান্নামে প্রবেশ করেছে?

এবার আমরা দেখবো মুহাম্মদের মেরাজের ব্যাপারে কোরআন  হাদীস কি বলেঃ

সুরা বনি ইসরাইলের ১ম আয়াত দিয়ে শুরু করা যাকঃ

“পবিত্র ও মহীয়ান তিনি যিনি তাঁর বান্দাহকে রাতের বেলা ভ্রমণ করিয়েছেন মাসজিদুল হারাম থেকে মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চারপাশকে আমি কল্যাণময় করেছি। তাকে আমার নিদর্শনাবলী দেখানোর জন্য, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” (১৭:১)

উপরের আয়াতে কোন নাম না নিয়ে  বলা হয়েছে ‘ আমার বান্দা’ । এর ঠিক পরের আয়াতেই সেই বান্দার নাম দেওয়া হয়েছে ।

“এবং আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছি এবং তা বনী ইসরাঈলের জন্য পথনির্দেশ বানিয়েছি। যেন তোমরা আমাকে ছাড়া কোন কর্মবিধায়ক না বানাও। ” (১৭:২)

আয়াত ১৭:২ এ মুসা নবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে । লক্ষ্যনিয় যে সুরার নাম করন করা হয়েছে সুরা বনি ইসরাইল – যা কিনা নবী মুসার কওম বা যাদেরকে ইয়াহুদি বলা হয়ে থাকে। তাই ১৭:১ এ ইসরা সম্পাদনকারী বান্দা বনি ইসরাইলের নবী হওয়াই যুক্তিযুক্ত ।

এবার দেখা যাক রাত্রিকালে ভ্রমণ বা আরবি শব্দ ইসরা কোরআনে কার সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে ।

ক্রিয়া পদ  ইসরা কোরআনে ৬ বার ব্যবহৃত হয়েছে ।
 ১৭:১ তে ১ বার যা আমরা উপরে দেখেছি , ২ বার তা নবী লুতের ক্ষেত্রে (১১:১৮ , ১৫:৬৫ )
 এবং ৩ বার নবী মুসার ক্ষেত্রে (২০:৭৭, ২৬:৫২ , ৪৪:২৩ ) নবী মুহাম্মদের ক্ষেত্রে ইসরার কোন রেফারেন্স কোরআনের কোথাও নেই ।

নবীর মুসার ভ্রমণের কথা কোরআনের বহু জায়গাতে বিষদ ভাবে বর্ননা করা হয়েছে (২৮:২৯-৩২, ২০:৯-২৩ , ২৭:৭-১২)

তাই নবী মুসার রাত্রি কালে ভ্রমনের স্পষ্ট বর্ননা এর সাথে ১৭:১ ও ১৭:২ এর সরল সম্পর্ক খুজে পেতে কোন সমস্যা হয়না ।

উপরন্তু নীচের দুইটি আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মিরাজে গমন করেননি ।

১-“ আর যদি তাদের উপেক্ষা তোমার উপর কঠিন মনে হয়, তাহলে যদি তুমি পার যমীনে কোন সুড়ঙ্গ অথবা আসমানে কোন সিঁড়ি অনুসন্ধান করতে, অতঃপর তাদের কাছে কোন নিদর্শন নিয়ে আসতে (তবে কর)। যদি আল্লাহ চাইতেন তিনি অবশ্যই তাদেরকে হিদায়াতের উপর একত্র করতেন। সুতরাং তুমি কখনো মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। ” ( ৬:৩৫)

২- “অথবা তোমার একটি স্বর্ণ নির্মিত গৃহ হবে, অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করবে, কিন্তু তোমার আকাশে আরোহণ আমরা তখনও বিশ্বাস করবনা যতক্ষণ না তুমি আমাদের প্রতি এক কিতাব অবতীর্ণ করবে যা আমরা পাঠ করব। বলঃ পবিত্র আমার মহান রাব্ব! আমিতো শুধু একজন মানুষ, একজন রাসূল।” (১৭:৯৩)

দ্বিতীয়তঃ মিরাজের কল্প কাহিনী অনুসারে নবী মুহাম্মদ জান্নাত আর জাহান্নাম সব দেখে এসেছেন । কিন্তু কোরআনে মহান আল্লাহ্‌ জান্নাতকে গায়েব  বা অদেখা বস্তু বলেছেন (১৯:৬১)
 আর নবী মুহাম্মদের গায়েবের জ্ঞান নেই বলে নিশ্চিত করেছেন (৬:৫০) । তাই যুক্তিগত ভাবে কোরআন মতে নবী কোন ভাবেই জান্নাত দেখেননি ।

বল, ‘তোমাদেরকে আমি বলি না, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডারসমূহ রয়েছে এবং আমি গায়েব জানি না এবং তোমাদেরকে বলি না, নিশ্চয় আমি ফেরেশতা। আমি কেবল তাই অনুসরণ করি যা আমার কাছে ওহী প্রেরণ করা হয়’। বল, ‘অন্ধ আর চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? অতএব তোমরা কি চিন্তা করবে না’? (৬:৫০)

বাকী থাকল ১৭:১ এ বর্নিত ‘আল মাসজিদ আল হারাম ‘ ও ‘আল মাসজিদ আল আকসা’ এর ব্যপারটা । নবী মুসার সাথে এই দুই মাসজিদের সম্পর্ক কি ?

কোরআনে নবী মুসার ইসরা কোথায় থেকে শুরু হয়েছে ও কোথায় শেষ হয়েছে তা খুব পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছে ।

নবী মুসা মিশর থেকে পলায়ন করার পরে মিদিওয়ানে আসেন । (২৮:২২)

আমরা জানি যে মিদিয়ান আরব হেজাযের তাবুকে অবস্থিত । তাই নবী মুসা তাঁর জীবদ্দশাতে যে আরব ভূমিতে এসেছিলেন তাঁর স্বাক্ষ কোরআন বহন করে ।

আরো মজার বিষয় এই যে , নবী মুসা আরব ভূমিতে ৮/১০ হজ্জের সমকাল সময় অবস্থান করেছিলেন বলে কোরআন সাক্ষ দেয় (২৮:২৭ ) । আয়াতে বছর বা সাল নয় বরং ( থামানিয়া হিজাজিন) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে । তাই নবী মুসা আরব ভূমিতে এসে ৮ থেকে ১০ বার হজ্জ করেছেন বলে প্রমাণিত হয় । সংগত কারনেই উনাকে হজ্জ করতে আল মাসজিদুল হারামেই যেতে হবে ।

২৮:২৯ এ জানা যায় যে নবী মুসা ৮/১০ হজ্জের মেয়াদ শেষ করে তাঁর পরিবার সহ ইসরা শুরু করে , তাই তাঁর ভ্রমণ যে আল মাসজিদুল আল হারাম থেকে শুরু হতে পারে তা যুক্তিযুক্ত ও কোরআনে পাওয়া উপাত্তের সাথে যথেষ্ট সামঞ্জস্যপূর্ন ।

ইসরা শুরু করার পর নবী মুসা যে যে জায়গাতে গিয়েছিলেন তাঁর নাম কোরআনে পাওয়া যায় । সেগুলো হল তুর পর্বত ( ২৮:২৯ ) , তোয়া উপত্যকা (২০:১২ , ৭৯:১৬ ) , মিশর (১০:৮৭)

মিশরে অবস্থিত তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকাকে পবিত্র ও বরকত ময়  বলা হয়েছে ( ২৮:৩০ , ২০:১২ , ৭৯:১৬) ।

তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকাতে নবী মুসাকে আল্লাহর তরফ থেকে নিদর্শন দেখানো হয়েছে (২৮:৩১ , ২৮:৩২ ) ।

১৭:১ এ উল্লেখিত আল মাসজিদ আল আকসা এর আশেপাশের স্থানকে কে বরকতময় করা হয়েছে তা তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকার সাথে মিলে যায় ।

১৭:১ ইসরাকারিকে নিদর্শন দেখানো হবে তা নবী মুসার সাথে মিলে যায় ।

ধাঁধার শেষ যে অংশটা বাকী থাকল তা হল , ১৭:১ এর মাসজিদুল আকসা কোথা থেকে আসল ?

মাসজিদ হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে সালাত ( নামাজ) আদায় করা হয় । কোরআনের ১০:৮৭ তে  আল্লাহ্‌ নবী মুসা , হারুন ও তাঁর অনুসারীদেরকে মিশরে তাদের ঘর সমূহকে ক্বেবলা তে রূপান্তরিত করে সালাত আদায়ের জন্য হুকুম দেন ।
৭:১৪৪ থেকে আমরা দেখতে পাই যে নবী মুসা ও তাঁর অনুসারীরা তুর পর্বতেই অবস্থান করছিল এবং সেখানেই সালাতের জন্য মাসজিদ বানিয়েছিল যা ১০:৮৭ তে বলা হয়েছে । এই মসজিদের নাম আল আকসা ।

তাই কোরআন কে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে , নবী মুহাম্মদের নামে যে ইসরা বা মিরাজের কাহিনী মুসলিম সমাজে প্রচলিত আছে তার কোন ভিত্তি নাই । বরঞ্চ ১৭:১ এর ইসরা কোরআন মতে নবী মুসার ইসরাকেই শক্তভাবে সমর্থন করে ।

ছাড়াও  মিরাজের হাদিসে গণ্ডগোল-- মিরাজ সংক্রান্ত ৫ টি সহিহ হাদিসে ৫ টি স্ববিরোধী বর্ননা যা কোন সুস্থ মস্তিস্কে বিশ্বাস করা যায়নাঃ

উৎসঃ
১ম হাদিসঃ সহিহ বুখারি ৮/৩৪৯ 
২য় হাদিসঃ সহিহ বুখারি ১৯৮৮/২৯৮০(
৩য় হাদিসঃ সহিহ বুখারি ২১৫১/৩৬০৮
৪র্থ হাদিসঃ সহিহ মুসলিম ৭৩/৩০৮
৫ম হাদিসঃ সহিহ মুসলিম ৭৩/৩১২

                                        পয়েন্ট (ঙ)

  মেরাজ ঘটনায় বিজ্ঞান খোজা।

এতসব গোজামিল পাওয়ার পরেও অনেকে দেখি আবার মেরাজের মাঝে বিজ্ঞান খুজে পায় এবং তারা মেরাজকে বিজ্ঞানের আলোকে আইন স্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের সাথে  প্রমান করার চেষ্টা করে থাকে ।

তাই এই বিষয়েঅ তাদের মিথ্যচারটাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাইঃ
মুহাম্মদ কাউকে কিছু না জানিয়ে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে আল্লাহর সকাশে যান।বোরাক নামক এক ডানাওয়ালা গাধা সদৃশ জন্তুর পিঠে চড়ে  ২০০০ মাইল দূরে জেরুজালেম শহরের মসজিদুল আকসায় ভ্রমণ করেন, সেখানে তিনি দুই রাকাত সালাত আদায় করেন যাতে তার সাথে সকল পয়গম্বরেরা (১২৪০০০) শরীক হয়েছিলো! 

যাহোক, মক্কা  থেকে প্রথমে জেরুজালেম যান , সেখানে বায়তুল মোকাদ্দসে ১,২৪,০০০ পয়গম্বরের  সাথে  ২ রাকাত নামাজ পড়েন ,যার ইমামতি করেন তিনি নিজে ( যদিও এখানে প্রশ্ন থেকে যায় যে, তিনি আল্লার কাছে পৌছানোর পরেই নামাজের অনুমতি পেয়েছিলেন,তাহলে সেখানে যাওয়ার আগেই তিনি কিভাবে ,কিসের নামাজ আদায় করলেন)

এরপর সেখান থেকে সরাসরি বিভিন্ন আসমান পর্যবেক্ষন শেষে আল্লাহর সাথে দেখা করেন ,জান্নাত,জাহান্নাম দেখে,  নানা কথা বার্তা বলে তারপর ফিরে আসেন। ফিরে এসে তিনি দেখেন আল্লাহর আরশে যাওয়ার আগে ওজু করার জন্যে যে পানি তিনি ব্যবহার করেছিলেন , তা তখনও গড়িয়ে পড়ছে।

উক্ত বিষয়টাকে বিভিন্ন ইসলামী বিজ্ঞানী( যারা কোরান হাদিসে বিজ্ঞান খোজে) আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের একটা প্রমান হিসাবে দাখিল করে , মিরাজের এই ঘটনাকে একটা অলৌকিক ঘটনা হিসাবে প্রচার করে আসছে দীর্ঘকাল।

আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব বলে কোন বস্তু যদি আলোর গতির সমান গতিতে ভ্রমন করে তাহলে তার কাছে সময় থেমে যাবে। অর্থাৎ কোন নভোচারী যদি আলোর গতিতে আমাদের পার্শ্ববর্তী নক্ষত্র প্রক্সিমা সেঞ্চুরিতে যান ও আবার দুনিয়াতে ফিরে আসেন , তাহলে তিনি দেখবেন দুনিয়াতে ৮ বছর সময় পার হয়ে গেছে ,অথচ তার নিজের কাছে মনে হবে , তিনি তো এইমাত্র ভ্রমনে বের হয়েছিলেন আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড বা মিনিট তিনি পার করেছেন। কারন পৃথিবী থেকে প্রক্সিমা সেঞ্চুরি হলো ৪ আলোকবর্ষ দুরে। অর্থাৎ তার কাছে সময় থেমে ছিল , কিন্তু দুনিয়াতে সময় থেমে থাকে নি। সেহেতু দুনিয়াতে ৪+৪=৮ বছর পার হয়ে গেলেও , তার কাছে সময় থেমে ছিল বলেই তার কাছে এই ভ্রমনটার সময়কাল মনে হবে মাত্র কয়টা মুহুর্ত।

এখন ধরা যাক , আল্লাহর আরশ হলো ১০০০ আলোক বর্ষ দুরে। যদিও বাস্তবে সে কত আলোক বর্ষ দুরে থাকে , তা কেউ জানে না। সাত আসমানের পর তার আরশ , তার দুরত্বের কোন সীমা পরিসীমা আছে ? 

সুতরাং যদি মুহাম্মদ সাঃ  আলোর গতিতে আরশের দিকে রওনা হন ও শুধুমাত্র আল্লাহর সাথে দেখা করে ফিরে আসেন , তাহলে তিনি দুনিয়াতে ফিরে এসে দেখবেন দুনিয়াতে ১০০০+১০০০= ২০০০ বছর পার হয়ে গেছে , কিন্তু তার কাছে মনে হবে মাত্র কয়টা মুহুর্ত পার হয়েছে।

 আইনস্টাইনের তত্ত্ব আরো বলে, কোন বাস্তব বস্তু বা কনিকা আলোর গতি বা তার চাইতে বেশী গতিতে চলতে পারে না। যদি তা চলতে চায় , তাহলে সেই বস্তু বা কনিকার ভর অসীম হয়ে যাবে , যার ফলে তার পক্ষে চলাটাই সম্ভব হবে না।

 মুহাম্মদ যেহেতু একজন পার্থিব মানুষ , তাই তার পক্ষে কোন মতেই আলোর গতি বা তার চাইতে বেশী গতিতে চলা সম্ভব না। সুতরাং তাকে অবশ্যই আলোর গতির চাইতে কিছু কম গতিতে চলতে হবে আর তাহলেই তার মত পার্থিব কোন ব্যাক্তির পক্ষে মহাকাশ ভ্রমন সম্ভব হবে। তার পরেও যুক্তির খাতিরে ধরে নেয়া যাক , তিনি আলোর গতিতেই চলেছিলেন আর ফিরেও আসেন আলোর গতিতে। এটা হলেও তিনি দুনিয়াতে এসে দেখবেন যে দুনিয়াতে ২০০০ বছর পার হয়ে গেছে, যদি আইন স্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের সূত্র সত্য ধরা হয়। 

কিন্তু তিনি আল্লাহর কাছ থেকে ফিরে এসে দাবী করলেন , তিনি যাত্রার আগে যে ওজূ করেছিলেন , তা তখনও গড়িয়ে পড়ছে। তার মানে দুনিয়াতেই মাত্র কয়েক মুহুর্ত পার হয়েছে। যা আপেক্ষিক তত্ত্বের বিপরীত ও অবাস্তব ধারনা। তার দাবী সত্য হবে , যদি দুনিয়াটাই সহ তিনি আল্লাহর আরশে যান। তাহলে দুনিয়াটাও আলোর গতিতে চলবে ও ফলে তাতে সময় স্থির থাকবে।

বলাবাহুল্য, মুহাম্মদ একাই আল্লাহর সাথে দেখা করতে গেছিলেন, দুনিয়াটা তার সাথে যায় নি।
সুতরাং এমতাবস্থায় , মুহাম্মদের আল্লাহর সাথে মোলাকাতের এ ঘটনা কিভাবে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সত্য হতে পারে ? কিন্তু কথিত ইসলামী বিজ্ঞানীরা এসবের ধার ধারে না। তারা মনে হয় শুধু শুনেছে আপেক্ষিতাবাদ বলে একটা তত্ত্ব আছে , আর শুনেছে এ তত্ত্ব বলে সময় নাকি থেমে যায়। কিন্তু কোনদিন এই তত্ত্বটা ভালমত পড়ে বোঝার চেষ্টা করে নি ,আসলে বিষয়টা কি।

 বিষয়টা আদৌ না জেনে ,না বুঝে ( সেটা বোঝা সম্ভবও না যদি তারা কোরান থেকে বিজ্ঞান শেখে)
তারা দিব্যি ওয়াজে ,ইসলামী টিভি তে , লম্বা চওড়া বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছে ,আর মুসলমানরাও তাদেরকে বাহবা দিয়ে নিজেদের ইমান শক্ত করছে আর নিজেরা গমন করছে অজ্ঞতার অতল গর্ভে।
এভাবেই দুনিয়ার গোটা মুসলমান জাতি দিনে দিনে অজ্ঞতা ও অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে , সেটা কিন্তু তারা বুঝতেও পারছে না। 

আসুন দেখি  কুরআনের সরল সৌন্দর্য! 

 হাদিসের জটিলতায় যাওয়ার আগে কোরআনের সরল ও সম্পূর্ণ তা নিশ্চিত হওয়া যাক ।  সূরা আল-কামার চারবার 17 22 32 40 নং আয়াতে আল্লাহ আয়াতের পুনরাবৃত্তি করেছেন । 
 আর আমি তো কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য অতএব কোন উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি? 

 একটা সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি বা মাইন্ডসেট নিয়ে নিজে কোরান পরলেই দেখবেন সব জটিল প্রশ্নের সহজ উত্তর দেয়া আছে 
 কোরআন সম্পূর্ন পরিপূর্ণ বিস্তারিত তা নিয়ে আলোচনা করা যাক সূরা বাকারা আয়াত 2
এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াত। 
সূরা শুয়ারা আয়াত 2>> 
এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
 সূরা নূর 34
আর নিশ্চয় আমি তোমাদের কাছে নাযিল করেছি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ এবং তোমাদের পূর্বে যারা চলে গেছে তাদের দৃষ্টান্ত ও মুত্তাকীদের জন্য উপদেশ।
সূরা ফুসসিলাত আয়াত 3
এমন এক কিতাব, যার আয়াতগুলো জ্ঞানী কওমের জন্য বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, কুরআনরূপে আরবী ভাষায়। 
 সূরা নাহল আয়াত 89
আর আমি তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছি প্রতিটি বিষয়ের স্পষ্ট বর্ণনা, হিদায়াত, রহমত ও মুসলিমদের জন্য সুসংবাদস্বরূপ।
 
 নবীজির মোজেজা সম্পর্কে অনেক ভিত্তিহীন বানোয়াট গল্প প্রচলিত থাকলেও আমাদের নবীজি সাঃ এর মজেজা  ছিল কুরআন  । কোরআন তার নিরবিচ্ছিন্ন অনুসারীদের  এক যুগেরও কম সময়ে বেদুইন থেকে সারা পৃথিবীর প্রতিভা নিয়ে প্রমাণ করেছে ।  কোরআন সকল সন্দেহের ঊর্ধ্বে সাফল্যের চিরন্তর পথপ্রদর্শক কোরআনের শ্রুতি এবং ছন্দের সাথে শব্দ বাক্য এবং উপমা যুক্তি তাই কোরআনের স্বতন্ত্র  বিস্ময়  ।সংক্ষিপ্ত  আবার সীমাহীন এখানে অনেকের হাদিস তাফসির কোরআন এর তাৎপর্য বলেছেন ,  কিন্তু কোরআনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ তাৎপর্য  বর্ণনা বিবরণ যাই হোক কোরআনের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারবে না।  

পাঁচবার অজু করার দোয়া পাঠ করলে তার জন্য জান্নাতের  আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে ।  বা  টাকনুর  নিচে কাপড় পড়লে সে জাহান্নামী এই  হাদীসগুলো কোরআনের কোন কোন আয়াতের তাৎপর্য ব্যাখ্যা বলতে পারেন। ? 

কোরআনের অতিরিক্ত ব্যাখ্যা যাদের প্রয়োজন তাদের সম্পর্কে সূরা আল ইমরানের 7 নং আয়াতে আল্লাহ পরিষ্কার করে দিয়েছে  । 

তিনিই তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছেন, তার মধ্যে আছে মুহকাম আয়াতসমূহ। সেগুলো কিতাবের মূল, আর অন্যগুলো মুতাশাবিহ। ফলে যাদের অন্তরে রয়েছে সত্যবিমুখ প্রবণতা, তারা ফিতনার উদ্দেশ্যে এবং ভুল ব্যাখ্যার অনুসন্ধানে মুতাশাবিহ্ আয়াতগুলোর পেছনে লেগে থাকে। অথচ আল্লাহ ছাড়া কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে পরিপক্ক, তারা বলে, আমরা এগুলোর প্রতি ঈমান আনলাম, সবগুলো আমাদের রবের পক্ষ থেকে। আর বিবেক সম্পন্নরাই উপদেশ গ্রহণ করে।

এ আয়াতেরও কি ব্যাখ্যা লাগবে?
 শুধু মুহকাম শব্দের অর্থটা একটু আপরিষ্কার । মুহকাম শব্দের মূলশব্দ হুকুম এটা বাংলায় ব্যবহৃত হয় ।  আমরা একমাত্র আল্লাহর   হুকুম মানি ।  আল্লাহ কোরআনের কিছু আয়াত এ আমাদের হুকুম দিয়েছেন এই হুকুম সম্বলিত আয়াত বা মোকাম আয়াতগুলো সহজ এবং স্পষ্ট। 

কুরআনে আল্লাহ বিভিন্ন উপমা উদাহরণ দিয়ে মানুষের সতর্ক করেছেন উদ্বুদ্ধ করেছেন কোরআনের আয়াতএ  রূপক কিছু আয়াত শুধু নবীজির জন্য প্রযোজ্য নবীজির স্ত্রীদের জন্য প্রযোজ্য কিছু একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কিছু আয়াত কোন নির্দিষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে নাযিলকৃত এই মুতাশাবিহ  আয়াতগুলো অর্থ আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না  । 

এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জানার প্রয়োজন নেই।  আমাদের সেগুলো কোরআনের অংশ হিসেবে বিশ্বাস করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।   মুহকাম বা হুকম আহকাম সম্বলিত আয়াতগুলো এ কোরআনের  মূল । 

 আর এর বাইরে কোরআনের ভাষায় , যাদের অন্তরে রয়েছে  সত্য বিমুখ প্রবণতা তারাপীঠ থানার উদ্দেশ্যে এবং ভুল ব্যাখ্যার অনুসন্ধানে মুতাশাবিহ  আয়াতগুলোর পেছনে লেগে থাকে।   আবাবিল পাখির পাথর নিক্ষেপের প্রকৃত ব্যাখ্যা আমরা জানি না।  চন্দ্রকে দুখন্ডিত করা হয়েছে এর অর্থ যাদের জন্য প্রযোজ্য তারা বুঝেছে আমাদের এনিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনী রচনা আর কোনো প্রয়োজন নেই। 

 মেরাজ সম্পর্কে যত মেগাসিরিয়াল আমরা জানি তার ভিত্তি কোরআনের একমাত্র আয়াত সূরা ইসরা আয়াত ১ 
   উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা উপরে আলোচনা করা হয়েছে।  তাই আমাদের শুধু বিশ্বাস  করব কথাটা আল্লাহ তথ্যসূত্র আল্লাহই ভালো জানেন।  যেমনটা আল্লাহ বলেছেন-

 আর যারা জ্ঞানের পরিপক্ক তারা বলে আমরা এগুলোর প্রতি ঈমান আনলাম সবগুলো আমাদের রবের পক্ষ থেকে আর বিবেকসম্পন্ন রাই উপদেশ গ্রহণ করে। 

 কোরআনে মেরাজ সম্পর্কে আর কোন কথা নেই কিন্তু আমরা এনে মস্ত বড় বড় কল্প কাহিনী কিচ্ছা কাহিনী বড় বড় কিতাব আজব গজব কাহিনী দিয়ে ভরপুর করে হাজার বছর ধরে  মানুষকে শোনাচ্ছি নিজেও শুনছি ।

 ধর্ম নিয়ে দিনভর বিতরকের বিষয় বস্তু এগুলো  । অথচ এগুলো সোজা উত্তর এ গুলো নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর দরকার নেই এগুলো গুগলের টাইম এন্ড কন্ডিশন এর মত আপনাকে বুঝতে হবে না কিন্তু এ ক্লিক করতে হবে  । 

কোরআনের সাথে হাদিসের কিছু নতুন সিদ্ধান্ত দেওয়ার বা কোরানের এই আয়াত বলা সম্পর্কে সূরা কাহাফ 27 নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, 
 হে নবী আপনি করুন প্রভুর থেকে আপনার নিকট যা অবতীর্ণ হয়েছে শব্দগুলির কোন পরিবর্তন করেনি এবং আপনি কখনোই আল্লাহ ছাড়া কাউকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে পাবেন না।
 সুতরাং কোরআনের পরবর্তী আয়াত দ্বারা আগে আয়াত মানুষের বাতিল হয়ে গেছে এটাও কোরআন বিরুদ্ধ কথা।

  সূরা বাকারা আয়াত 85
 তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস করবে আর কিছু অংশ বিশ্বাস করবে। 
সূরা আরাফ আয়াত 3
 হে মানুষেরা তোমরা সকলে তোমাদের নিকট তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তার অনুসরণ করো এবং তাকে ছাড়া অন্যকিছু অনুসরণ করো না। 
 আয়াত অনুযায়ী কোরআনের বাইরে ভিন্ন কিছু অনুসরণের অনুমতি আছে? 
 সূরা বাকারা আয়াত 42
 তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না। 
 অর্থাৎ বিন্দুমাত্র  সন্দেহাতীত কোরআনের সাথে জাল জয়ীফ হাসান এবং অমুকের মিশ্রিত করার কোনো সুযোগ নেই। 

সবশেষে , 
বিশ্বপ্রভু এবং মহাগ্রন্থ কুরআ'নের উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস রেখেই বলছি, কারো ব্যাখ্যা মানতে আমি বাধ্য নই। যদি কুরআ'নের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, কিংবা সুস্পষ্ট(মুবি'ন) কুরআ'ন-এ সে বিষয়ে কোন ইংগিতও না থাকে, তবে সেটি মানতে আমি অবশ্যই বাধ্য নই।

রাসূলের সুন্নাত বলতে আপনি হাদীস বুঝাচ্ছেন, বিষয়টিকে তো এভাবেও বলা যায়, রাসূলের সুন্নত হচ্ছে সেই জিনিস, যা রাসূল অপরিহার্যভাবে করেছেন। যেমন তিনি আল্লাহর প্রেরণকৃত মহাগ্রন্থকে অপরিহার্যভাবে অনুসরণ করেছেন, এবং এখানে যা করতে আদেশ করা হয়েছে তিনি কখনোই তার ব্যতিক্রম করেননি এবং যা করতে নিষেধ করা হয়েছে তা কখনোই করেননি, এবং এই আদেশ ও নিষেধের বাইরে তাঁর তো একটি স্বাধীন সত্ত্বা ছিল, সেগুলোও কি তিনি আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছে?

 তাহলে রাসূল যেমন মহাগ্রন্থ অনুসরণ করে চলেছেন, তেমনিভাবে আমরাও যদি মহাগ্রন্থকে অনুসরণ করে চলি তবে এর মাধ্যমে মহাগ্রন্থকেও আঁকড়ে ধরা হবে এবং একই সাথে রাসূলের সুন্নতকেও আঁকড়ে ধরা হবে। কিন্তু এই কথাটুকু বলতে যেয়ে আপনি যে 'দুটো' শব্দ ব্যবহার করেছেন, মূল আরবি হাদিসে যেয়ে দেখুনতো সেখানে এই শব্দটি আছে কিনা? মূল শব্দের দিকে লক্ষ্য না করে, শুধুমাত্র অনুবাদের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া বা তর্ক-বিতর্কে অংশ নেয়া কি ঠিক হবে?

আমার কথা শুনে যদি আপনি মনে করেন আমি হাদীস অস্বীকারকারী, তবে সেকথাটিও সত্য নয়। হাদীস বলতে আমরা প্রচলিত অর্থে যা বুঝি, সেই সকল সংকলন যেমন বুখারী, মুসলিম, ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ, তিরমিযি, নাসাঈ, মুয়াত্তা এবং আরো অনেকগুলো সংকলন, যেগুলোতে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এগুলোর সংকলকরা অনেক কষ্ট করে এগুলো সংকলন করেছেন। কিন্তু একটা বিষয় কি স্পষ্ট নয় যে, এই সংকলনগুলো মানুষই সংগ্রহ, সংরক্ষণ, সংকলন বা রচনা করেছেন। কাজেই এই সংকলনগুলোতে ভুল বা সীমাবদ্ধতা থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। এখন কোনটা ভুল,কোনটা শুদ্ধ সেটা আমরা কেমন করে বুঝব? সেটাও সহজ। আল্লাহ আমাদের জন্য চির-সংরক্ষিত, সুস্পষ্ট মহাগ্রন্থ ও ফুরকা'ন দিয়েছেনে। এর মাধ্যমে আমরা হাদীস থেকে শুরু করে যেকোন বিষয়ের সত্য-মিথ্যা যাচাই করে নিতে পারবো। মহাগ্রন্থের বক্তব্যের সাথে যদি মিলে যায় তবে অবশ্যই নির্দ্বিধায় তা গ্রহণ করব, আর যদি মহাগ্রন্থে এ বিষয়ে কোন বক্তব্য না থাকে তাহলে সেটি আমাদের জন্য কি অপরিহার্য্য হবে? আর যদি মহাগ্রন্থের বক্তব্যের বিরোধী হয় তবে নির্দ্বিধায় তা বর্জন করবো। 

কিন্তু সবার আগে এই মহাগ্রন্থটাতো আগে ভালোভাবে জানতে হবে তাই নয়কি? কুরআ'ন সম্পূর্ণ  না পড়ে কি সেসম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যাবে?

সূরা আল মায়েদাহ আয়াত ৩
কোরআনের সমাপনি আয়াতে আল্লাহ্‌ বলছেন এই কোরআন -ই আমাদের জন্য আল্লাহর দেওয়া নিয়ামত বা জীবন বিধান । যা সম্পূর্ণ এবং পরিপুন্ন ।

আমি অবশ্যই নবীজির হাদিস মানি কিন্তু নবীজির কথা কাজ এবং অনুমোদনের বিবরণ ত কোরআনে -ই আছে তা প্রমাণ করবে ইনশাল্লাহ । হাদিসের প্রয়োজনীয়তা উপযোগিতা নিয়ে যাবতীয় যুক্তি-প্রমাণের সারাংশ হচ্ছে এ যে কোরআনের সব কিছু ক্লিয়ার করে বলা হয়নি । কিন্তু এটা জলজ্যান্ত মিথ্যাচার । চলুন দেখে কোরআন কি বলছে ,

ذَلِكَ الْكِتَابُ لاَ رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ
এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াত। সূরা আল বাক্বারাহ আয়াত ২

تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡکِتٰبِ الۡمُبِیۡنِ
এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত। আশ-শুআ'রা আয়াত ২

وَ لَقَدۡ اَنۡزَلۡنَاۤ اِلَیۡکُمۡ اٰیٰتٍ مُّبَیِّنٰتٍ وَّ مَثَلًا مِّنَ الَّذِیۡنَ خَلَوۡا مِنۡ قَبۡلِکُمۡ وَ مَوۡعِظَۃً لِّلۡمُتَّقِیۡنَ
নিশ্চয় আমি তোমাদের কাছে নাযিল করেছি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ এবং তোমাদের পূর্বে যারা চলে গেছে তাদের দৃষ্টান্ত ও মুত্তাকীদের জন্য উপদেশ।আন-নূর আয়াত ৩৪


کِتٰبٌ فُصِّلَتۡ اٰیٰتُهٗ قُرۡاٰنًا عَرَبِیًّا لِّقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ
এক কিতাব, যার আয়াতগুলো বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যাকৃত, আরবী ভাষার কুরআন, জ্ঞানসম্পন্ন মানুষদের জন্য।
অর্থাৎ, হালাল কি এবং হারাম কি? অথবা আনুগত্য কি এবং অবাধ্যতা কি? কিংবা নেকীর কাজ কোন্গুলো এবং শাস্তি পেতে হয় এমন কাজ কোনগুলো? হা-মীম আস-সাজদা (ফুসসিলাত) আয়াত ৩
وَ مَا مِنۡ دَآبَّۃٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا طٰٓئِرٍ یَّطِیۡرُ بِجَنَاحَیۡهِ اِلَّاۤ اُمَمٌ اَمۡثَالُکُمۡ ؕ مَا فَرَّطۡنَا فِی الۡکِتٰبِ مِنۡ شَیۡءٍ ثُمَّ اِلٰی رَبِّهِمۡ یُحۡشَرُوۡنَ
আর যমীনে বিচরণকারী প্রতিটি প্রাণী এবং দু’ডানা দিয়ে উড়ে এমন প্রতিটি পাখি, তোমাদের মত এক একটি উম্মত।
আমি কোন কিছু লিখতে ছাড়িনি। অতঃপর সবাই স্বীয় প্রতিপালকের কাছে সমবেত হবে।সূরা আল আন-আম আয়াত ৩৮


وَيَوْمَ نَبْعَثُ فِي كُلِّ أُمَّةٍ شَهِيدًا عَلَيْهِم مِّنْ أَنفُسِهِمْ وَجِئْنَا بِكَ شَهِيدًا عَلَى هَـؤُلاء وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا لِّكُلِّ شَيْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً وَبُشْرَى لِلْمُسْلِمِينَ
সেদিন প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে আমি একজন বর্ণনাকারী দাঁড় করাব তাদের বিপক্ষে তাদের মধ্য থেকেই এবং তাদের বিষয়ে আপনাকে সাক্ষী স্বরূপ উপস্থাপন করব। আমি আপনার প্রতি গ্রন্থ নাযিল করেছি যেটি এমন যে তা প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলমানদের জন্যে সুসংবাদ।সূরা নাহল আয়াত ৮৯


সুতুরাং কোরআনের সব কিছু ক্লিয়ার করে বলা হয়নি । কিন্তু এটা জলজ্যান্ত মিথ্যাচার ।

যেমন একটা দেশের সংবিধান ছোট্ট একটা বই কিন্তু সংবিধানে প্রতিটা দেশের সর্বোচ্চ ময় আইন বা বই  । আপনি এক মিলিয়ন আইন বানাতে পারেন কিন্তু তার সংবিধানের সীমার বাইরে যেতে পারবেনা।ঠিক তেমনি আপনি এক বিলিয়ন বিধি বিধান প্রণয়ন করতে পারেন কিন্তু তা কোরআনের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারবেনা । 

কোরআন যেটাকে হারাম বলেনি সেটাকে হারাম বা যেটাকে বাধ্যতামূলক বলেনি সেটাকে আবশ্যকীয় বলার কোন সুযোগ নেই ।

সূরা ইউনুস 59 নম্বর আয়াত

বল-তোমরা কি ভেবে দেখেছ আল্লাহ যে রিযক তোমাদের জন্য পাঠিয়েছেন, তোমরা তার কতকগুলোকে হারাম আর কতককে হালাল করে নিয়েছ। বল, আল্লাহ কি তোমাদেরকে এর অনুমতি দিয়েছেন? না তোমরা আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছ?

আপনি কোরআনের বহির্ভূত যাবতীয় রীতি রেওয়াজ ধর্ম থেকে বাদ দিলে ধর্মবিরোধী অভিযোগ ভিত্তিহীন হয়ে পড়বে কারণ যারা ধর্মের সমালোচনা করছে তারা মূলত ধর্মের নামে যেসব প্রচলিত চর্চা তার সমালোচনা করছে ।

আপনি অবশ্যই দাড়ি রাখতে পারেন পুরুষের সৌন্দর্য ব্যক্তিত্বের প্রতি দাড়ি রাখতে নিষেধ করা হয়নি টুপি-পাগড়ি পছন্দের হলে কোনো সমস্যা নেই । কিন্তু আপনি দাড়ি রাখা কি ফরজ না ওয়াজিব বা ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার মধ্যে ফেলতে পারেন না । কারণ কোরআনে দাড়ি রাখতে বলা হয়নি নবীজির দাড়ি ছিল বলে আমরা জানি কিন্তু আবুজেহেলের যেমন ছিল সব কাফের-মুশরিকদের ছিল ইহুদি ধর্মের লোকেরা সময়ের আবর্তে দাড়ি রেখেছেন ।

আমি রেফারেন্স দিয়েছি আপনারা বিস্তারিত চেক করে দেখবেন ।

কোরআনে ফরজ হারাম পাপ-পুণ্য পানিশমেন্ট বেহেশত ও দোযখ এমন শব্দ দিয়ে আল্লাহ্‌ বলে দিয়েছেন । যা করতেই হবে না করলে শাস্তি পেতে হবে । আবার কি করলে তার জন্য কি পুরষ্কার রয়েছে । তা কোরআনে স্পস্ট করে বলে দিয়েছেন ।

তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে , সুদকে হারাম করা হয়েছে বা 'কুতিবা আলাইকুমুস সিয়াম' তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে এমন শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে যেগুলো শাস্তিযোগ্য অপরাধ সেখানে পাপকাজ ঘৃণ্য শয়তানের কাজ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি অপমানজনক শাস্তি জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করা । এ জাতীয় শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে জান্নাত থেকে পুরস্কৃত হওয়া উত্তম প্রতিদান এমন শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে । 

 সূরা ইউনুস আয়াত 59 

হে নবী আপনি বলুন আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে আপনি কোন কিছুকে হালাল এবং কোন কিছুকে হারাম বলার কোন সুযোগ আছে বলুন আল্লাহ আপনাকে সে অনুমতি দিয়েছে না আপনি আল্লাহর নামে কিছু বানিয়েছেন ।

সুতরাং তা হালাল বা হারাম বলার কোনো অবকাশ নবীকেও দেয়া হয়নি । আমাদের বেশির ভাগ ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাই বোন খুবই আশাহত হবেন বেহেশত ও দোযখ পুরস্কার এর সাথে সম্পর্কিত কার্যক্রমের তালিকা দেখলে কারণ তারা দিনভর বেহেশতের চাবি বানানোর দুঃখের আগুন নেভানোর জন্য যা যা করেন তার বেশিরভাগই কোরআন অনুমদনের সিলেবাসের বাইরে ।

সূরাঃ আল-আন'আম ১১৪

আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বিচারক হিসেবে তালাশ করব? অথচ তিনিই তোমাদের নিকট বিস্তারিত কিতাব নাযিল করেছেন। আর যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছিলাম তারা জানত যে, তা তোমার রবের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে নাযিলকৃত। সুতরাং তুমি কখনো সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।

একজন বলবেন এই হাদিস সহি এটা নামলে সে কাফের আরেক জন বলবে এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট হাদিস সে জাহেল শেষ পর্যন্ত আমার হুজুর পীর যেটাকে সহি বলবে সেটাই আমার কাছে সহি । তব বিচার বিশ্লেষণের পর যে হাদীসগুলো সর্বসম্মতিক্রমে বিবেচিত তা আমরা সাধারণত ঐতিহাসিক সত্য হিসেবে মানতে পারি । কিন্তু কেবলমাত্র সেসব হাদীসের ভিত্তিতে ফরয-ওয়াজিব হারামের বিধান আরোপ করা কোরআনের পরিপন্থী এবং কোরআনের সাথে শরিক করার শামিল বলে আমি মনে করি । এখন হয়ত বলবেন , এত বড় বড় আলেম , মুফতিরা সারাজীবন লেখাপড়া করে কি সত্য উতঘাটন করতে পারেনি ।আমি বলবো কারো জীবনের সারাজীবনএর লেখাপড়া সত্যের মাপকাঠি নয় ।

অনেক বড় বড় জ্ঞানী রা সারাজীবন পড়াশোনা করেও কোরআনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না হাদিস তো পরের বিষয় । সারাজীবন পড়াশোনা করে হিন্দু ধর্মের পন্ডিত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে বাবরি মসজিদ রাম মন্দির ছিল এবং ভগবান রামের জন্মস্থান যদিও তাদের কাছে কোন এভিডেন্স নেই ।

ইরানের আয়াতুল্লাহ রা সারাজীবন পড়াশোনা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে কালেমার সাথে আলী অলিউল্লাহ না পড়লে এবং আবু বকর ওমর ওসমান সহ তাদের অনুগত সাহাবীদের কাফের বিশ্বাস না করলে আপনি মুসলমাননি না । আস্তাগফিরুল্লাহ  সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাপকাঠি নয় । আপনি অন্ধভাবে অনুসরণ করে পথভ্রষ্ট হবে ।


কোরান শরিফ নিয়ে কবি শঙ্কর দয়াল শর্মার হিন্দি ভাষায় লিখা কবিতা।

কুরআন শরিফ

আমল করার কিতাব ছিলো,

দোয়ার কিতাব বানিয়ে দিয়েছো।

অনুধাবন করার কিতাব ছিলো,

পাঠের কিতাব বানিয়ে দিয়েছো।

জীবিতদের জীবনবিধান ছিলো,

মৃতদের ইশতাহার বানিয়ে দিয়েছো।

যেটা ছিলো জ্ঞানের কিতাব,

মূর্খদের হাতে ছেড়ে দিয়েছো।

সৃষ্টির জ্ঞান দিতে এসেছিলো এটা,

স্রেফ মাদ্রাসার পাঠ্য বানিয়ে দিয়েছো।

মৃত জাতিদের বাঁচিয়ে তুলতে এসেছিলো এটা,

মৃতের জন্যে দোয়ার কাজে লাগিয়ে দিয়েছো।

হে মুসলমানেরা, এ তোমরা কী করেছো?

হিন্দি ভাষায়

কোরান শরিফ

আমল কি কিতাব থি,

দুয়া কি কিতাব বনা দিয়া।

সমঝ্নে কি কিতাব থি,

পড়নে কা কিতাব বনা দিয়া।

জিন্দাওঁ কা দস্তুর থা,

মুর্দাওঁ কা মনশুর বনা দিয়া।

জো ইলম্ কি কিতাব থি

উসে লা-ইলমোঁ কে হাথ থমা দিয়া।

তশখীর-এ-কয়েনাৎ কা দর্স দেনে আয়ি থি,

সির্ফ মদ্রাসোঁ কা নিসাব বনা দিয়া।

মুর্দা কওমোঁ কো জিন্দা করনে আয়ি থি,

মুর্দোঁ কো বখশ্ওয়ানে পের লগা দিয়া।

অয় মুসলমানোঁ, ইয়ে তুম নে ক্যা কিয়া?

কেন এই কবিতা? করোনা কেন?

কুরআন পড়ে মর্মার্থ অনুধাবন করে ভারতের প্রাক্তন নবম রাষ্ট্রপতি পন্ডিত শঙ্কর দয়াল শর্মা হিন্দি ভাষার উপরের কবিতাটি লিখেন। যার ভাব এবং কার্যকারিতা এখনও অম্লান।

মন্তব্যঃ এতো সুন্দর এবং যুক্তিসংগত কবিতা যিনি লিখলেন তিনি কেন ইসলাম গ্রহণ করলেন না??? ইসলামের এতো কাছে এসেও ইসলাম কবুল না করে কাফের অবস্থাতেই ১৯৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন । 

এমন হাজার উধাহরন দেওয়া যাবে , সারাজীবনএর লেখাপড়া সত্যের মাপকাঠি নয় । 


সূরাঃ ৬/ আল-আন'আম আয়াত ১১৬

তুমি যদি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের অনুসরণ কর তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করে ফেলবে, তারা তো কেবল আন্দাজ-অনুমানের অনুসরণ করে চলে, তারা মিথ্যাচার ছাড়া কিছু করে না।

আমাদের বেশিরভাগ মানুষই বৃত্তের বাইরে পরিচিত দিগন্তের বাইরে ভাবতে চায় না তারা হাজার  বছর ধরে ছুটছে কিন্তু ১০  মিনিট বসে ভাবতে চায় না কেন ছুটছে এই বেশিরভাগের পছন্দ অনুযায়ী কথা বলতে পারলে আপনি অনেক সম্মান পাওয়ার যোগ্য । 

এই লেখা আমি তাদের জন্য লিখছি যারা গভীর মনোযোগী এবং মাথা খাটাতে আগ্রহী



Post a Comment

Previous Post Next Post