খাবারে হালাল, হারাম, কুরআনের বিধান!

খাবারে হালাল, হারাম, কুরআনের বিধান!


আমার এ ধর্ম সংক্রান্ত আলোচনার লেখা ও কথা উদ্দেশ্য কারো সাথে তর্কে জেতা নয় । ধর্ম সম্পর্কে আপনাদেরকে একটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয়া । যাতে কেউ ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আপনাকে হিপনোটাইজ করতে না পারে ।  লক্ষ্য করে দেখবেন বহু মানুষী আল্লাহ্‌কে ভয়ংকর কিছু মনে করে কারন আল্লাহ্‌ কে ভালবাসার চেয়ে আল্লাহ্‌কে ভয় এর কোথায় আমরা বেশি শুনি ।

 
আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত সম্পূর্ণ পরিপূর্ণ অনুমুদিত জীবনবিধান হচ্ছে কোরআন । আর কোরানের সাথে সামঞ্জস্যহীন কথিত এসব হাদিস ইজমা কিয়াস এ  বানোয়াট কিচ্ছা কাহিনী দোয়া তাবিজ নির্ভর এক উতভট ধর্মচর্চা ইসলাম নামে আমাদের বেশির ভাগ মানুষের কাছে পরিচিত । বেসির ভাগ ধর্ম প্রান মুসলমান এটা উপলব্ধি পর্যন্ত করতে পারে না কোরআন আর হাদিসের মধ্যে পার্থক্য টা আসলে কি? কোনটা হাদিসে কথা কোনটা কোরআনের সেটাও অনেক আলাদা করতে পারেনা ।

 আরবি হরফে ইচ্ছা মত যা কিছু লিখে দিলোও মানুষের এটাকে কোরআন বলে সম্মান করবে । দেওয়ালে আরবিতে পেশাব করা নিষেধ লিখে দিলে মানুষ আর সেখানে পেশাব করে না । মানুষ আরবি দেখলেই সেটাকে ধর্মের মন্ত্র মনে করে ভয় করে । মানুষের এই অন্ধ আবেগকে কাজে লাগিয়ে মুসলমানদের কুরআন থেকে এত দূরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে সে আর ফিরে আসতে পারেনা কোরআনের কাছে । 

কতগুলো আরবি লেখাকে যাবতীয় সমস্যার সমাধানের দোয়া এবং সেসব দোয়ার ফজিলত সম্মৃদ্ধ আমাদের দৈনন্দিন ধর্ম চর্চার প্রধান ভিত্তি ধর্মপ্রাণ । বেশির ভাগ মুসলমানকে ইসলাম ধর্মের প্রধান করনীয়-বর্জনীয় কাজ গুলোর তালিকা বানাতে বলেন দেখবেন তারা যে তালিকা বানাবেন তার সিংহভাগই কোরআন বহির্ভূত কোরআনের বক্তবের পরিপন্থী মানব রচিত সংগ্রহিত সংকলিত বিভিন্ন ধরনের কিতাব ভিত্তি । ধর্মের কথা ধর্মের বই থেকে না নিয়ে আমাদের বিভিন্ন বই ধরিয়ে দিচ্ছে । 

 খাবার সংক্রান্ত কুরআনের বিধান !

আল্লাহ বলেন, "হে মানবজাতি! "পৃথিবীতে যা কিছু হালাল ও ত্বইয়িব রয়েছে, তা হতে তোমরা খাও এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না" (2/168, 5/88) এ আয়াতগুলো একটি সাধারণ নির্দেশনা। আমরা জানি, সবকিছুই আমাদের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে।

তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায়, নির্দিষ্টভাবে কি বলা আছে, কি খেতে হবে, খাওয়ার মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করতে হবে? হ্যাঁ, আছে, পুনরাবৃত্তি করছি। "আল্লাহ যে জীবনোপকরণ দিয়েছেন তা থেকে তোমরা হালাল (বৈধ) ও ত্বইয়িব (মানসম্পন্ন/উৎকৃষ্ট/Qualified) কিছু খাও" (16/114)। তার মানে আমরা যেভাবে চিন্তা করি বা জেনে এসেছি যে, যা হারাম করা হয়েছে, তা বাদে বাকি সব হালাল। আসলে তা নয়, এ বেলায় উল্টো। আল্লাহ যা উল্লেখ করে হালাল করেছেন, শুধু তাই খাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, আমরা যেটা খাব তা উৎকৃষ্ট/মানসম্পন্ন হতে হবে। এটি হচ্ছে একেবারে মৌলিক নির্দেশনা। তারমানে এক্ষেত্রে যা হালাল করা হয়েছে, তা বাদে বাকি হারামগুলো ব্যতিক্রম হিসেবে উল্লেখ থাকবে। তাহলে, উপরোল্লিখিত আয়াতগুলো থেকে আমরা দুইটি Standard পেলাম, 1. হালাল এবং 2. ত্বইয়িব।
প্রথমে ত্বইয়িব সম্পর্কে আলোচনা করি। ত্বইয়িব/উৎকৃষ্ট/মানসম্পন্ন খাবার, "বৈজ্ঞানিক, আর্থসামাজিক ভৌগোলিক এবং যুগের অবস্থা" এর উপর নির্ভরশীল। বর্তমান যুগের প্রায় সব খাবারেরই Expiry Date আছে। অথবা খাবারের মান নির্ণয়ের নানা রকমের Standard আছে বা আরো যোগ হচ্ছে, যা মানসম্পন্ন হিসেবে বিবেচিত। যেমন, গরু আমাদের জন্য হালাল হলেও তা সঠিকভাবে জবাইকৃত না হলে, মানসম্পন্ন হিসেবে বিবেচিত হয় না, Meat Market এ বিক্রয়ের ক্ষেত্রে, "কোয়ালিটি পাস সার্টিফিকেট" না থাকলে, তা মানসম্পন্ন হিসেবে বিবেচিত হয়না। তাহলে "মানসম্পন্ন" ব্যাপারটা আমাদের বুঝে এসে গেল। অতএব, ত্বইয়িব অংশটা আমাদের আলোচনা থেকে বাদ। এখন থাকল হালাল খাবার ও উল্লিখিত ব্যতিক্রমসমূহ বা বিপরীতক্রমে হারামসমূহ, এই আলোচনা।

স্থলভাগের শিকারঃ

(5/1) তোমাদের জন্য "চতুস্পদ জন্তু" হালাল করা হয়েছে। আসলে এখানে আরবীটা আছে, "বাহিমাতুল আন'আম"। এখন, "বাহিমাহ" হচ্ছে Brute Beasts/Animals নির্বোধ পশু। আর আন'আম হচ্ছে (Grazing or Pasturing) Cattle বা গবাদিপশু যা চরে বেড়ায়। কারণ এর মূল শব্দ হচ্ছে "নুন-আইন-মীম" যার অর্থ চারণরত, এটি সাধারণত উট ভেড়া ছাগল, গো মহিষাদির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এগুলো আপনারা corpus.quran. com এ গিয়ে Edward Lane's Lexicon (Arabic Classical Dictionary, 1863) তে চেক করতে পারেন। তাহলে "বাহিমাতুল আন'আম" মানে Pasturing Cattle বা চরে বেড়ানো গবাদিপশু, যা কোনক্রমেই Carnivore/মাংশাসী নয়, বরং Herbivore/তৃণভোজী। যেহেতু, শুকরও তৃণভোজী "বাহিমাতুল আন'আম" এর অন্তর্ভুক্ত, তাই ব্যতিক্রম হিসেবে আল্লাহ সেটির উল্লেখ করেছেন (2/173, 5/3, 6/145, 16/115)। তাহলে পশু/Beast/Animal ক্যাটাগরির মধ্যে আমাদেরকে আল্লাহ শুধু "তৃণভোজী গবাদিপশু" খাওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন। অর্থাৎ মাংসাশী (বাঘ সিংহ, হায়েনা, কুকুর, বিড়াল প্রভৃতি), সুবোধ ও সর্বভুক (মানুষ) পরোক্ষভাবে নিষেধ করেছেন।
আমরা এতক্ষণ স্থলভাগের খাবার নিয়ে কথা বলছি এবং আরো বলব। ফল (Fruits) (14/32, 16/69); নানাধরনের উদ্ভিদ (Vegetations) (20/53-54); শস্য/ফসল (Crops) (32/27); পাখির গোশত (Flesh of Birds/Fowls) (56/21) এসব আয়াতের মাধ্যমে হালাল। যদিও আয়াতে পাখির গোশতকে জান্নাতের খাবার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখন কেউ বলতে পারে যে, জান্নাতে তো খাবার হিসেবে মদের কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু কোরআনের কোন আয়াতে "মদের মত" এমন প্রকাশ্যভাবে "পাখির গোশত"কে কিন্তু হারাম বলা হয়নি। তাছাড়া আল্লাহ, বানী ইসরাইলদের জন্য "মান্না ও সালওয়া" নাজিল করতেন (2/57, 7/160, 20/80)। "সালওয়া" এক ধরনের পাখি। অতএব, মানুষের জন্য উৎকৃষ্ট/মানসম্পন্ন এমন ধরনের পাখি খাওয়া যাবে। অতএব "শিকারি ও মৃতজীবী" পাখি খাওয়া যাবেনা। জ্ঞানীদের জন্য "ইশারাই কাফী" বা ইঙ্গিত-ই যথেষ্ট।
স্থলভাগের খাবারের (তা'আমুল বাররি) মধ্যে পতঙ্গ (Insects) এর ব্যাপারে কোরআন নিশ্চুপ। তার মানে এক্ষেত্রে "তাইয়্যিবাহ বা উৎকৃষ্টতা" হবে আমাদের মানদণ্ড। হতে পারে তা খাদ্য বিশেষজ্ঞের মতামত বা আমাদের ব্যক্তিগত অভিরুচি। কারণ এখানে আল্লাহ নিজেই Flexibility/নমনীয়তা দিয়েছেন। আবারও মনে করিয়ে দিতে চাই, তবুও আমাদের একটি Standard, "ত্বইয়েবাহ বা উৎকৃষ্টতা" কিন্তু রয়ে গিয়েছে পঙ্গপালের ক্ষেত্রে।

জলভাগের শিকারঃ

# খাবার মূলত দুই ধরনের, ১/সাইদুল বাহার (জলভাগ এর শিকার) এবং ২/সাইদুল বাররি (স্থলভাগ এর শিকার) (5/96)। এখানে, এখন জলভাগের শিকার নিয়ে আলোচনা হবে, বিশেষ করে মাছ নিয়ে।
# তোমাদের জন্য হালাল করা হলো "সাইদুল বাহার" (জলভাগ এর শিকার) তোমাদের খাবার এবং ভোগ্য সামগ্রী হিসেবে (5/96)।

# এখানে খেয়াল করার বিষয় হলো, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আমরা যেমনটি জানি, যে বিষয়টি হারাম করা হয়, তা বাদে বাকি সব হালাল। কিন্তু খাবারের বেলায় উল্টো। বরং আল্লাহ উল্লেখ করে বলে দিয়েছেন, "তোমাদের জন্যে হালাল করা হলো" এভাবে।

# এ আয়াতটিতে বাহার বা জলভাগ এর শিকারের কথা বলা হয়েছে। মানুষ মৃত প্রাণীকে কখনো শিকার করে না, শিকার করে জীবিত প্রাণীকে। অতএব, শিকারের পূর্বে automatically মরা মাছ, প্রথমেই বাতিল। এছাড়া আল্লাহ বলেছেন "লাহমান ত্বরিইয়ান" বা তাজা গোশত (35/12) এর কথা। অতএব, শিকারের পূর্বে মৃত মাছ খাওয়া নিষেধ। আর তাজা গোশতের কথা এজন্য বলেছেন যে, মাছ হওয়া সত্ত্বেও বৃহৎ জলাশয় এর বৃহৎ মাছগুলো, বিশেষ করে সর্ববৃহৎ জলভাগ সমুদ্রের মাছগুলো কাটার পর naturally দেখতে গোশতের ন্যায় এবং রান্নাও করতে হয় গোশতের মত।

# এছাড়াও 35/12 নম্বর আয়াতে থাকা "তাজা" (fresh) শব্দটি (2/168,172; 16/114) নম্বর আয়াতগুলিতে থাকা খাবারের অন্যতম একটি দিক/criterion "ত্বইয়িবান বা উৎকৃষ্ট বা Qualified বা মানসম্পন্ন" হওয়ার সাথে সামঞ্জস্য বিধান করেছে।

# আর 5/96 নম্বর আয়াতে থাকা জলভাগের শিকার ও স্থলভাগের শিকার কথাগুলি পরোক্ষভাবে উভচর শিকার নিষিদ্ধ করেছে। তাছাড়া এই আয়াতে জলভাগের শিকার বৈধ করা হলেও, একই সময়ে স্থলভাগের শিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখন এমন হতে পারে না যে, উভচর স্থলভাগে থাকলে হারাম, আর জলভাগে থাকলে হালাল। অতএব, যে প্রাণী স্থলভাগে থাকলে হারাম, সেই একই প্রাণী জলভাগে থাকলেও হারাম। অতএব, উভচর প্রাণী খাওয়া হারাম।

# মাছ জবাইয়ের দরকার নেই। কারণ জবাইয়ের বিষয়টি "বাহিমাতুল আন'আম বা নির্বোধ তৃণভোজী" এর সাথে আল্লাহ সম্পর্কিত করেছেন (5/3)।

# আরেকটি বিষয় হচ্ছে, 5/3 নম্বর আয়াতে থাকা হারাম বিষয়গুলো যেমন, "আল-মাইতাতু" বা মৃতপ্রাণী (যা ধর্মীয় বিধানে বৈধ এমন উপায়ে মারা যায়নি) সহ রক্ত, শূকরের মাংস, সবকিছুই স্থলভাগের শিকার (সাইদুল বাররি) এর সাথে আল্লাহ সম্পর্কিত করেছেন। জলভাগ এর মাছের সাথে নয়। তাছাড়া জবাইয়ের সাথে রক্ত বহানোর বিষয়টিও রয়েছে, যা মাছের বেলায় প্রযোজ্য নয়।


আসলে, হাদিস কেন, এমনকি আপনার কথা মানতেও অসুবিধা নেই। অসুবিধা নেই ক্যালেন্ডার, ডিকশনারি, উইকিপিডিয়া, বৈজ্ঞানিক তথ্য, ইতিহাস এগুলোকে আমলে নিতে (39/18)
কিন্তু সব কিছুকেই আমলে নিতে হবে আল-কুরআনের মানদণ্ডে। যেহেতু আল্লাহ নিজেই আল-কোরআনকে ঠিক-বেঠিক বা সত্য-মিথ্যার মানদণ্ড বা পার্থক্যকারী (25/1) হিসেবে নির্বাচন করেছেন।
অতএব, ততক্ষণ সেটি গ্রহণযোগ্য, যতক্ষণ তা কোরআনের মানদণ্ডে টিকে যায় বা কোরআন বহির্ভূত বা কোরআনবিরোধী না হয়। তবে রাষ্ট্রের আইন কে রাষ্ট্রের আইন হিসেবে, হাদীসকে ইতিহাস বা ঐতিহাসিক সত্য বা বিশেষায়িত ইতিহাস হিসেবে মানবো। কোনক্রমেই সেটিকে মুহাম্মদ সালামুন আলাইহি থেকে প্রমাণিত - এ মর্মে বিশ্বাস, প্রকাশ ও প্রচার করা যাবে না।

কারণ, কোরআনের সাথে সংযোজন-বিয়োজনের মাধ্যমে বিধানে কম-বেশি হিসেবে পরিগণিত হবে, যা মারাত্মকভাবে কুফর। যেমন একটা দেশের সংবিধান ছোট্ট একটা বই কিন্তু সংবিধানে প্রতিটা দেশের সর্বোচ্চ ময় । আপনি এক মিলিয়ন আইন বানাতে পারেন কিন্তু তার সংবিধানের সীমার বাইরে যেতে পারবেনা।ঠিক তেমনি আপনি এক বিলিয়ন বিধি বিধান প্রণয়ন করতে পারেন কিন্তু তা কোরআনের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারবেনা ।

কোরআন যেটাকে হারাম বলেনি সেটাকে হারাম বা যেটাকে বাধ্যতামূলক বলেনি সেটাকে আবশ্যকীয় বলার কোন সুযোগ নেই । সূরাঃ আল-আন'আম ১১৪ আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বিচারক হিসেবে তালাশ করব? অথচ তিনিই তোমাদের নিকট বিস্তারিত কিতাব নাযিল করেছেন। আর যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছিলাম তারা জানত যে, তা তোমার রবের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে নাযিলকৃত। সুতরাং তুমি কখনো সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।

সূরাঃ ৬/ আল-আন'আম আয়াত ১১৬ তুমি যদি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের অনুসরণ কর তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করে ফেলবে, তারা তো কেবল আন্দাজ-অনুমানের অনুসরণ করে চলে, তারা মিথ্যাচার ছাড়া কিছু করে না। কোরআন বহির্ভূত কন কিছুকে পার্সোনাল চয়েস বা ফ্যাশন হিসাবে করেন তাতে কন সমস্যা নাই ।

কিন্তু ধর্মীয় বিধিবিধান হিসেবে করলে উল্টা গুনা হবে । আল্লাহ প্রদত্ত বিধান এর বাইরে কোন কিছুকে ধর্মীয় বিধি-নিষেধ হিসেবে পালনকারীদের সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে (উলাইকা হুমুল মুশরিকুন ) তারাই মুশরিক অর্থাৎ আল্লাহ যা ফরয বলেননি বা যা হারাম বলেননি তা ফরয বা হারাম মনে করে করা যাবে না । কোরান বুঝতে হবে । নিজেদের সুবিধা পছন্দ অনুযায়ী বুঝলে হবে না । অর্থ না বুঝে কোরআন পড়া হচ্ছে ( সুম্মুন বুকমুন ) বধীর ও ববা । আর না বুঝে তর্ক করা হচ্ছে ( লা ইয়াকিনুন ) নিজের আকল কে ব্যবহার না করা ।

বাংলালিংকের একটা বিজ্ঞাপন ছিল এই দিন কি আর আছে দিন বদলাইছে না ।

এখন বাংলা অনুবাদ সহ কোরআন তো সবার হাতে হাতে । কেউ কোনো ফতোয়া দিলে আগে জিজ্ঞেস করবেন এই কথাটা কোরআনে আছে । আপনি সে বিষয়ে আয়াতগুলো অনুবাদ পড়ে দেখুন । যেখানে কনফিউশন কয়েকটা অনুবাদ করস * চেক করুন । কাউকে অন্ধের মত কেন অনুসরণ করবেন । যে কথা কোরআনে নাই । তা কোন হাদিসে থাকলো ও সে হাদিস এডমিশন নয় তা বাতিল । এবিষয়ে আইম্মায়ে মুজতাহিদীনরাও একমত সাহাবা ইয়াজমাইদের ইজমাও তাই । ইমাম আবু হানিফার সহ সকল মুজতাহিদী তাদের বই এর ভূমিকায় বলে গেছেন । যে তাদের কোনো বক্তব্য যদি কোরআন এবং সহিহ সুন্নাহ পরিপন্থী হয় । সে ক্ষেত্রে তাদের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় ।

ইমাম বুখারী সহ সকল হাদিস সংকলক বলে গেছেন তাদের সংগৃহীত কোন হাদীস যদি কোরআনের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ প্রমাণিত হয় । সে হাদিস শরীয়তের বিধান হিসেবে প্রযোজ্য হবে না । দুনিয়ার কোন আলেম কি বলেছে বা বলতে পারবে যে তার ফতোয়া কোরআনের সাথে কন্ট্রাডিক্টরি হলেও সত্য আমলযোগ্য ।

সুতরাং আপনি তামাম জাহান ঘুরে যত সোনা দানাই সংগ্রহ করেন দিন শেষে কষ্টিপাথর হচ্ছে কোরআন । কোরআন বলবে আসল না নকল সোনা 22 ক্যারেট নাকি 24 ক্যারেট । আমি হাদিস ফেকা ফাজায়েলে আমল সবি মানি এবং কাউকে মানতে মানা করিনা । কিন্তু কোরান মানবেন কোরআন হিসেবে হাদিস মানবেন হাদিস হিসেবে কিচ্ছা কাহিনী মানবেন কিচ্ছা কাহিনী হিসাবে । শুধু শুধু মানুষকে হাইকোর্ট দেখিয়ে কুরআনের সত্য থেকে দূরে রাখার কোন মানে হয় না ।

Post a Comment

Previous Post Next Post