জামাতে নামাজ পড়া ফরজ নয়, প্রমান আল কোরআন!

জামাতে নামাজ পড়া ফরজ নয়, প্রমান আল কোরআন!

জামাতে নামাজ আদায় করার কোরআনিক বিধান কি? এর আবশ্যকতা কি?


এইযে প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ এর ফরজ জামাতে আদায় করা সম্পর্কে কোরআনে একটি আয়াতের উদ্ধৃতি অনেকেই দিয়ে থাকে, যেমন," তোমরা রুকু কারীদের সাথে রুকু করো"। সুরা বাকারা:43

এ আয়াত দ্বারা নাকি জামাতে সালাত আদায় ফরজ করা হয়েছে? আপনার মত কি?

রুকু এবং সালাত একই বিষয় নয়। রুকুকারীদের সাথে রুকু করো দ্বারা প্রতিদিন প্রতি ওয়াক্তের সালাত জামায়াতে আদায় করা বুঝায় না। তাহলে রুকু কারীদের সাথে রুকু করা দিয়ে কি বুঝিয়েছে?

রুকু সম্পর্কে বুঝার জন্য রুকু সম্পর্কিত আয়াতসমূহের সমন্বিত অধ্যয়ন প্রয়োজন। রুকূ অর্থ স্বীয় পূর্বমত বা রীতি বা সাধারণ অবস্থা বাদ দিয়ে প্রাপ্ত তথ্য-নির্দেশ মেনে নেয়া, স্বীয় দুর্বলতার স্বীকৃতি দিয়ে সঠিক ব্যবস্থা বা পথনির্দেশের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার মনোবৃত্তি, কুর্নিশ করা, কোনো কিছু বিনীতভাবে সম্পাদন করা। রুকুকারীদের সাথে রুকু করার অর্থ হলো, যারা রুকুকারীদের সাথে একীভুত হয়ে যাওয়া, তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন না থাকা, তাদের সাথে সম্পর্কযুক্ত হওয়া।

রুকু সালাত ও যাকাত থেকে একটি স্বতন্ত্র বিষয় এবং রুকু করা অবস্থায় সালাত প্রতিষ্ঠা ও যাকাত প্রদান করতে হয়।
আবার রুকুকে একটি আনুষ্ঠানিক রূপ দিয়ে সালাতে রুকু করার যে রীতি প্রচলিত রয়েছে সেটা সরাসরি নির্দেশকৃত নয়, আবার তা আপত্তিকরও নয় তথা তা বাধ্যতামূলক না হলেও গ্রহণযোগ্য। কারণ কিয়াম ও সাজদাহর মধ্যবর্তীতে রুকুর উল্লেখ থাকায় এবং কিয়াম, রুকু ও সাজদাহর অর্থানুসারে এ গুলোর এক ধরনের আনুষ্ঠানিক ধারাবাহিক ক্রমিকতা নির্ণয় সাদৃশ্যপূর্ণ বিধায় তা গ্রহণযোগ্য।

তবে 'রুকুকারীদের সাথে রুকু করার অর্থ কোনোক্রমে 'প্রতি ওয়াক্তের সালাত জামায়াতের সাথে আদায় করা' নয়। যদি এর অর্থ জামায়াতের সাথে সালাত আদায় করা হতো তবে প্রতি ওয়াক্তের সালাত জামায়াতের সাথে আদায় করা ফরজ সাব্যস্ত হতো। অথচ যারা আয়াতটির অর্থ 'জামায়াতে সালাত আদায় করা' বলেন, তারাও প্রতি ওয়াক্ত সালাত জামায়াতে পড়াকে ফরজ মনে করেন না, তাদের ভাষায় তারা একে ওয়াজিব নামক সুন্নাত/নফল মনে করেন।

যেহেতু 'জুমুয়া' এবং 'জামায়াত' সমার্থক, তাই সূরা জুমুয়া অনুসারে প্রতিদিন প্রতি ওয়াক্ত সালাত জামায়াতে করা বাধ্যতামূলক নয়। আর তা থেকে এটাও প্রমাণিত হয়ে যায় যে, 'রুকুকারীদের সাথে রুকু করা' মানে 'জামায়াতে সালাত করা' নয়।

প্রচলিত একটি হাদীসও বলে যে, রসুল (সাঃ) নাকি বলেছেন আমার ইচ্ছে হয় সে সব ঘর গুলো আমি আগুনে পুরিয়ে দেই যারা জামায়াতে সালাত আদায় না করে ঘরে আদায় করে।
রসূল কর্তৃক এভাবে মাসজিদে গিয়ে সালাত আদায় না করে ঘরে সালাত আদায়কারীদের ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ইচ্ছার কথা বলে যারা হাদীস বানিয়েছে তাদের পক্ষে এরূপ মিথ্যাচার খুবই স্বভাবগত একটা ব্যাপার, রসূলের অবমাননা করে তাঁর উপর মিথ্যা আরোপই হাদীসশাস্ত্রের উৎপত্তিগত মূল স্বরূপ।

যেখানে সালাতিল ফজরের আগে ও সালাতিল ইশার পরে কারো ব্যক্তিগত কক্ষে ঢুকার আগে অনুমতি নেয়ার বিধান (২৪:৫৮) সাধারণভাবে মাসজিদের চেয়ে ঘরের গুরুত্বকে অধিক তুলে ধরে, যেখানে নবী যাকারিয়া তাঁর ব্যক্তিগত কক্ষে সালাত আদায়ের উদাহরণ উল্লেখের মাধ্যমে কুরআন সালাতের জন্য ব্যক্তিগত কক্ষের গুরুত্ব তুলে ধরে (৩:৩৯), সেখানে রসূল কি করে এমন কথা বলতে পারেন?

অবশ্যই রসূল তা বলেননি। বরং এ ধরনের হাদীস রসূলের  মিথ্যা ছাড়া আর কিছু নয়।

যখন যাকারিয়া কক্ষে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিল, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাকে ইয়াহইয়া সম্পর্কে সুসংবাদ দিচ্ছেন, যে হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে বাণীর সত্যায়নকারী, নেতা ও নারী সম্ভোগমুক্ত এবং নেককারদের মধ্য থেকে একজন নবী’। 
যে দুটি সুরার আয়াত দুয়ে সেখানেতো মসজিদে বা ঘরে সালাত আদায়ের কিছু বলা হয়নি।৩;৩৯

৩:৩৯ মিহরাব = প্রাইভেট চেম্বার, ব্যক্তিগত কক্ষ।

হে ঈমানদারগণ! তোমাদের মালিকানাধীন দাসদাসীগণ এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি তারা যেন অবশ্যই তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে। ফজরের সালাতের পূর্বে, দুপুরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখ, এবং ‘ইশার সালাতের পর; এই তিনটি তোমাদের [গোপনীয়তার] সময়। এই তিন সময়ের পর তোমাদের এবং তাদের কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অন্যের কাছে যাতায়াত করতেই হয়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের উদ্দেশ্যে তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। ২৪:৫৮

২৪:৫৮ সালাতিল ফজরের আগে এবং সালাতিল ইশার পরে এবং যুহরের সময় যখন এক্সট্রা পোশাক খুলে বিশ্রাম নেয়া হয় তখন অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা যাবে না মানে এখানে ব্যক্তিগত কক্ষের বিষয়ই বুঝানো হয়েছে, সালাতিল ফজর সম্পাদনের পরে এবং সালাতিল ইশার আগে  সাধারণভাবে তাতে আসা যাওয়া করাকে স্বাভাবিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সুতরাং এতে বক্তব্যের ধারা অনুসারে স্ব স্ব বাড়িতে সালাতের দিকটাই গুরুত্ব পাচ্ছে, কোনো আয়াত নেই, যেখানে প্রতি ওয়াক্ত সালাতের জন্য মাসজিদে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তাই স্বাভাবিক অবস্থা হিসেবে সাধারণত সালাতের ক্ষেত্রে মাসজিদের চেয়ে বাড়িই অগ্রাধিকার পায়। 

প্রশ্ন?  মিহরাব কি ঈমামতির স্হান নয়? 

তাফসিরে তো প্রাইভেট কক্ষ, চেম্বার এ ধরনের কোন মত আনা হয়নি। এ আয়াত দ্বারাতো এ ধরনের কোন সেন্স প্রকাশ পাচ্ছেনা। বরং মিহরাবতো মসজিদেই থাকে ঈমামের সামনের যায়গা।
মিহরাব শব্দের অর্থ করা হয় 'ইমামতির স্থান বা মসজিদে ইমামের জন্য সামনের জায়গা'। কিন্তু এটি মিহরাব শব্দের অর্থ হিসেবে পরবর্তী সংযোজন, অর্থ বিকৃতি এবং কুরআনিক প্রয়োগের পরিপন্থী।

মিহরাব শব্দটি কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে ৪ স্থানে: ৩:৩৭:১৪, ৩:৩৯:৭, ১৯:১১:৫, ৩৮:২১:৭ এবং এর বহুবচন 'মাহারিব' (মিহরাবসমূহ) ব্যবহৃত হয়েছে ১ স্থানে: ৩৪:১৩:৬।

এখন দেখুন,

৩:৩৭ >>> মারইয়াম কি মাসজিদে ইমামের ইমামতির জায়গায় থাকতো? তিনি কি সালাতের ইমাম ছিলেন? নাকি তিনি তাঁর ব্যক্তিগত কক্ষে থাকতেন, যেখানে গিয়ে যাকারিয়্যা তাঁর কাছে রিযক তথা ফলমূল দেখতে পেয়েছিলেন?
৩:৩৯ >>> এটি আমাদের আলোচ্য আয়াত, তাই অন্য আয়াতগুলো থেকে অর্থ নির্ণয়ের পর এতে তা বসিয়ে দিতে হবে।
১৯:১১ >>> এতে কি তিনি তাঁর ক্বওমের কাছে মসজিদে মুসল্লিদের সামনে থাকা ইমামের জায়গা থেকে বের হয়ে এসেছিলেন? সেক্ষেত্রে তো সেখানে দাঁড়িয়েই তিনি লোকদেরকে যা বলার বলে দিতে পারতেন।
৩৮:২১ >>> বিবদমান দুটি লোক কি প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে নবী দাউদের মসজিদের ইমামের জন্য সামনে থাকা জায়গায় ঢুকেছিল? নাকি তাঁর ব্যক্তিগত কক্ষে ঢুকেছিল?
৩৪:১৩ >>> জিনেরা কি বিভিন্ন মসজিদে ইমামের জন্য সামনে দাঁড়ানোর জায়গাটুকু বানাতো? নাকি তারা প্রেসিডেন্ট সুলাইমান (সালামুন আলাইহির) রাষ্ট্রীয় গুরত্বপূর্ণ বিভাগের কর্মকর্তাদের জন্য 'ব্যক্তিগত চেম্বার' তৈরি করতো?

পরিশেষে , জুমার নামাজ বাদে সকল নামাজ মসজিদ কিংবা বাসায় পরা যাবে । বাহিরে সফরে বা নিজ গৃহ থেকে দূরে কথাও গেলে মসজিদ ও বাসায় থাকলে বাসায় নামাজ পরলেও হবে এতে কোন বাধ্য বাধকতা নেই । 

জুমার নামাজ; জামাতে নামাজ পড়া জরুলি! 

জুমার নামাজ (আরবি: صلاة الجمعة‎‎ সালাত আজ-জুমুআহ, "শুক্রবারের সালাত") ইসলামের অন্যতম একটি নামাজ। جُمُعَة (জুমুআহ) শব্দটি আরবী । এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া । যেহেতু, সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামায়াতের সাথে সে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরযরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে "জুমার নামাজ" বলা হয়।
শুক্রবার বা শনিবার সাপ্তাহিক দিন মাসের নাম আরবিতে যা আছে তা স্রস্টির শুরু থেকেই একি নামে আছে ।

খুতবা , জুমার নামাজ এর মূল বিষয় হল খুতবা

সাপ্তাহিক এই দিনে রাসুল সা ঃ খুতবা দিতেন
জুমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো খুতবা। এতে রাসুল সাঃ ও এখন ইমাম গন সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা ও কুরআন আলোকে আম জনতাকে দিকনির্দেশনা দেন।

সপ্তাহের এদিনে জুমার খতিব উম্মতের যাবতীয় প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নির্দেশনা ও সমাধানমূলক উপদেশ দেবেন তাঁর খুতবায়।
এবং রাসুল সাঃ তাই করতেন , 

আমরা কি কখনো গভীরভাবে চিন্তা করে দেখেছি কেন অন্যান্য ওয়াক্তিয়া নামাজের চেয়ে জুমার নামাজ ব্যতিক্রম? 
কেন এ নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি? 

এ নামাজের রয়েছে অনন্য এক বৈশিষ্ট্য। তা হলো খুতবা। আল্লাহর প্রশংসা, তাঁর গুণ বর্ণনা, মুসলিমদের জন্য দোয়া ও তাদের নসিহত ও স্মরণ করানোর নামই হলো খুতবা।
খুতবায় ইমাম উপস্থিত মুসল্লিদের উপদেশ দিয়ে থাকেন, নসিহত করে থাকেন, সমাজ সংশোধনের কথা বলে থাকেন। আজকের জুমা থেকে আগামী জুমা পর্যন্ত মধ্যকার সময়ে কী করণীয় আছে এসব বিষয়ে ইমাম দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। 

লক্ষণীয় যে, আমাদের অনেক ইমাম বাংলায় যা বলে থাকেন তার সাথে আরবি খুতবার তেমন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। অথচ এমনটা সমীচীন নয়। বরং বাংলা ভাষাভাষী হিসেবে, আরবি-বাংলার সংমিশ্রণে অর্থবহ খুতবা প্রদানই শ্রেয়।
খুতবা যাতে দুর্বোধ্য না হয়; খুতবা যেন সামাজিক ও ধর্মীয় কল্যাণে হয়ে থাকে সেদিকে দৃষ্টি রাখা উচিত। ইমামের খুতবা যেন সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী বা জনপদের মানুষের চলার পথকে সুগম ও সুশৃঙ্খল করে তোলে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

জুমার ইতিহাস

সুপ্রাচীনকাল থেকেই সকল ইলাহী ধর্মে সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট থাকত, যে দিনটিতে মানুষ স্বাভাবিক জীবন যাপন থেকে বেরিয়ে নিজেরা একত্রিত হবে, সম্মিলিত ভাবে ইবাদতে শরীক হবে। আল্লাহ তায়ালা এই দিনটিকে প্রতি জাতির সমাবেশের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন।

কোরাইশদের পূর্বপুরুষের মধ্যে একজন ছিলেন কা’ব ইবনে লুয়াই। যিনি রাসুলুল্লাহর জন্মের পাঁচশত ষাট বছর পূর্বে ইন্তেকাল করেছিলেন। তাফসীরে মাযহারী অনুযায়ী শুক্রবারে সমবেত হয়ে ইবাদত করার রীতি তিনিই আরবদের মধ্যে প্রচলিত করেছিলেন। যদিও আরবরা এই দিনটিকে জুমার দিন না বলে বলতো ‘ইয়াওমে আরূবা’। 

এদিন কোরাইশরা সকলে একত্রিত হতো, কা’ব ইবনে লুয়াই ভাষণ দিতেন। সেই থেকে জাহিলী যুগের আরবরা এই দিনকে সম্মান করতে শুরু করেছিল। পরবর্তীতে যখন ইসলামের আগমণ ঘটল তখনও এটিকে সম্মানিত দিন হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

সেই থেকে সর্বযুগে মুসলিমদের ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে জুমার দিনটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে এসেছে।
জুমার মাধ্যমে কেবল একটি জামাতের নামাজ আদায়ের উদ্যেশ্যই পূরণ হয় না, বরং একই সঙ্গে একটি বিরাট জনগোষ্ঠীর কাছে রাষ্ট্রীয় বার্তা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যম হিসেবেও একে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া সামাজিক কর্মকাণ্ড, বিবাহ, বিচার, মতবিনিময় ইত্যাদি কাজেও জুমার গণজমায়েতকে কাজে লাগানো হতো।

যেভাবে এলো জুমাবার

প্রথম হিজরি সন। মহানবী (সা.) মক্কা ছেড়ে মদিনা গেলেন। নবী (সা.) এর মদিনায় পৌঁছার দিনটি ছিল ইয়াওমুল আরুবা (শুক্রবার)। সেদিন তিনি বনি সালেম গোত্রের উপত্যকায় গেলে জোহর নামাজের সময় হয়ে যায়। সেখানে তিনি জোহর নামাজের পরিবর্তে জুমার নামাজ আদায় করেন। এটাই ইতিহাসের প্রথম জুমার নামাজ।

তবে জুমার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় আরো পরে। রাসুলুল্লাহ (সা.) এর মদিনায় যাওয়ার পর এবং জুমার নামাজ আগে একবার মদিনার আনসার সাহাবিরা আলোচনায় বসেন। তারা বললেন, ইহুদিদের জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট রয়েছে, যে দিনে তারা সবাই একত্র হয়। খ্রিস্টানরাও সপ্তাহে একদিন একত্র হয়। সুতরাং আমাদের জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজন, যে দিনে আমরা সবাই সমবেত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করব, নামাজ আদায় করব।

অতঃপর তারা আলোচনায় বললেন, শনিবার ইহুদিদের আর রোববার নাসারাদের জন্য নির্ধারিত। অবশেষে তারা ইয়াওমুল আরুবা শুক্রবারকে গ্রহণ করলেন এবং তারাই এদিনকে ‘জুমার দিন’ নামকরণ করলেন।

ইয়াহুদীদের আলোচনার পর পবিত্র কুরআনের জুম'আর আলোচনার কারণ এটাই যে, তাদের ইবাদতের যুগ শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন কেবলমাত্র মুসলিমদের ইবাদতের দিনের প্রতি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। আর তা হচ্ছে জুম'আর দিন। মূর্খতাযুগে শুক্রবারকে “ইয়াওমে আরূবা” বলা হত। বলা হয়ে থাকে যে, আরবে কাব ইবনে লুয়াই সর্বপ্রথম এর নাম ‘ইয়াওমুল জুমুআ’ রাখেন। কারণ, জুম'আ শব্দটির অর্থ একত্রিত করা। এই দিনে কুরাইশদের সমাবেশ হত এবং কাব ইবনে লুয়াই ভাষণ দিতেন। সারকথা এই যে, ইসলাম পূর্বকালেও ক’ব ইবনে লুয়াই-এর আমলে শুক্রবার দিনকে গুরুত্ব দান করা হত। তিনিই এই দিনের নাম জুমআর দিন রেখেছিলেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post