এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান ধর্ম, যার অনুসারী সংখ্যা ১.৯ বিলিয়ন এবং পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২৪.৪%, যারা মুসলমান নামে পরিচিত। মুসলমানরা ৫০ এর অধিক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টি। ইসলাম শিক্ষা দেয় যে আল্লাহ দয়ালু, করুনাময়, এক ও অদ্বিতীয় এবং একমাত্র ইবাদতযোগ্য অভিভাবক।
অমুসলিমদের প্রতি ন্যায়বিচার ও মহানুভবতা
‘দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদের নিজেদের দেশ থেকে বের করে দেয়নি তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেননি। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন।’ (সুরা মুমতাহিনা : আয়াত ৮)
অমুসলিমদের ধর্মের বিষয়ে স্বাধীনতা ও জোর প্রয়োগ না করা
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(বলুন!) তোমাদের ধর্ম তোমাদের এবং আমার ধর্ম আমার।’ (সূরা আল-কাফিরুন, আয়াত: ৭)
لَاۤ اِکۡرَاهَ فِی الدِّیۡنِ ۟ۙ قَدۡ تَّبَیَّنَ الرُّشۡدُ مِنَ الۡغَیِّ ۚ فَمَنۡ یَّکۡفُرۡ بِالطَّاغُوۡتِ وَ یُؤۡمِنۡۢ بِاللّٰهِ فَقَدِ اسۡتَمۡسَکَ بِالۡعُرۡوَۃِ الۡوُثۡقٰی ٭ لَا انۡفِصَامَ لَهَا ؕ وَ اللّٰهُ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۲۵۶﴾
দীন গ্রহণের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই। নিশ্চয় হিদায়াত স্পষ্ট হয়েছে ভ্রষ্টতা থেকে। অতএব, যে ব্যক্তি তাগূতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে, অবশ্যই সে মজবুত রশি আঁকড়ে ধরে, যা ছিন্ন হবার নয়। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।(সূরা বাকারা)
বিধর্মীদের ঈশ্বর ও দেবদেবীকে এবং অমুসলিমদের গালাগালি করা নিষিদ্ধ
(ওহে মুমিনগণ!) আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে(দেবদেবী) তারা(বিধর্মী) পূজা-আর্চনা তোমরা তাদেরকে(দেবদেবীকে) গালি দিও না, কেননা তারা তাদের অজ্ঞতাপ্রসূত শত্রুতার বশবর্তী হয়ে আল্লাহকে গালি দেবে। আর এভাবেই আমি প্রত্যেক জাতির জন্য তাদের কার্যকলাপকে তাদের দৃষ্টিতে চাকচিক্যময় করে দিয়েছি, অতঃপর তাদের প্রত্যাবর্তন (ঘটবে) তাদের প্রতিপালকের নিকট, তখন তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন যা কিছু তারা করতো। (সূরা আনআম আয়াত ১০৮)
কাফির ও মুসলমানদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি করবেন আল্লাহ
عَسَى اللَّهُ أَنْ يَجْعَلَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ الَّذِينَ عَادَيْتُمْ مِنْهُمْ مَوَدَّةً ۚ وَاللَّهُ قَدِيرٌ ۚ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ
যারা তোমাদের শত্রু আল্লাহ তাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সম্ভবতঃ বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দেবেন। আল্লাহ সবই করতে পারেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।(সূরা মুমতাহিনা আয়াত ০৭)
ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করলে ও ঘর থেকে বহিষ্কার না করলে সেই অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব বৈধ
إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَىٰ إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ ۚ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম।(সূরা মুমতাহিনা আয়াত ০৯)
পিতামাতা অমুসলিম হলেও তাদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে হবে
আল্লাহ বলেন, ‘তোমার মাতা-পিতা যদি তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সমকক্ষ দাঁড় করাতে যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তুমি তাদের কথা মানবে না, তবে পৃথিবীতে তাদের সঙ্গে বসবাস করবে সদ্ভাবে।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৫)
পিতামাতার সাথে উত্তম ব্যবহার
মাতা-পিতার হক সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ বলেন : ‘আর তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, তার সঙ্গে কোন বস্তুকে শরীক করো না এবং মাতা-পিতার প্রতি উত্তম আচরণ কর।’ (সূরা নিসা ৩৬)
‘আর তোমার প্রতিপালক এ আদেশ করেছেন যে, তোমরা তাঁকে ভিন্ন অপর কারো ইবাদত করো না। আর মাতা-পিতার প্রতি উত্তম আচরণ কর। যদি তাঁদের একজন কিংবা উভয়ে তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাঁদের উদ্দেশ্যে কখনো ‘উহ’ পর্যন্ত বলবে না। তাদেরকে ধমক দিও না, বরং তাদের সঙ্গে মার্জিত ভাষায় কথা বল। আর তাদের উদ্দেশ্যে অনুগ্রহে বিনয়ের বাহু অবনমিত কর। আর বল, হে আমার প্রতিপালক! তাদের উভয়কে অনুগ্রহ কর, যেমন তাঁরা আমাকে শৈশবে প্রতিপালন করেছেন।’ (সূরা বনী ইসরাঈল ২৩-২৪)
‘আর আমি মানুষকে তার মাতা-পিতা সম্পর্কে আদেশ করেছি। তার মাতা কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে তাকে গর্ভধারণ করেছেন। দুই বছর পর্যন্ত তাকে স্তন্য দান করেছেন। এ মর্মে যে, তোমরা আমার এবং তোমাদের মাতা-পিতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। আমার দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’ (সূরা লোকমান ১৪)
‘আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছি। আর যদি তোমার মাতা-পিতা তোমাকে আমার সঙ্গে শিরক করার জন্য পীড়াপীড়ি করে, যে সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তাহলে তুমি তাদের আনুগত্য করো না।’ (সূরা আনকাবুত ৮)
‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে মাতা-পিতা ও আমার গৃহে মুমিন হয়ে প্রবেশকারীদেরকে এবং সব ঈমানদার নর-নারীকে ক্ষমা করুন।’ (সূরা নূহ ২৮)
আত্মীয় স্বজনদের সাথে সুন্দর আচরণ
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَهَلۡ عَسَيۡتُمۡ إِن تَوَلَّيۡتُمۡ أَن تُفۡسِدُواْ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَتُقَطِّعُوٓاْ أَرۡحَامَكُمۡ ٢٢ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَعَنَهُمُ ٱللَّهُ فَأَصَمَّهُمۡ وَأَعۡمَىٰٓ أَبۡصَٰرَهُمۡ ٢٣﴾ [محمد: ٢٢، ٢٣
“ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারলে সম্ভবত তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। আল্লাহ তা‘আলা এদেরকেই করেন অভিশপ্ত, বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীন”। [সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ২২-২৩]
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
﴿وَٱلَّذِينَ يَنقُضُونَ عَهۡدَ ٱللَّهِ مِنۢ بَعۡدِ مِيثَٰقِهِۦ وَيَقۡطَعُونَ مَآ أَمَرَ ٱللَّهُ بِهِۦٓ أَن يُوصَلَ وَيُفۡسِدُونَ فِي ٱلۡأَرۡضِ أُوْلَٰٓئِكَ لَهُمُ ٱللَّعۡنَةُ وَلَهُمۡ سُوٓءُ ٱلدَّارِ ٢٥﴾ [الرعد: ٢٥]
“যারা আল্লাহ তা‘আলাকে দেওয়া দৃঢ় অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে আল্লাহ তা‘আলা আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে তাদের জন্য রয়েছে লা’নত ও অভিসম্পাত এবং তাদের জন্যই রয়েছে মন্দ আবাস”। [সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ২৫]
কি শিখতে পারলেন?
আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘আর ইবাদত কর আল্লাহর, শরিক করো না তাঁর সঙ্গে অন্য কাউকে। পিতা-মাতার সঙ্গে সৎ ও সদয় ব্যবহার কর এবং নিকটাত্মীয়, এতিম-মিসকিন, প্রতিবেশী, অসহায়, মুসাফির ও নিজের দাস-দাসীর প্রতিও। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক-গর্বিতজনকে। ’ সূরা নিসা, আয়াত ৩৬
ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, যখন বনি ইসরাঈলের অঙ্গীকার নিয়েছিলাম, তোমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না। মাতা-পিতা, আত্মীয়স্বজন, এতিম ও দরিদ্রদের প্রতি সদয় আচরণ করবে। মানুষের সঙ্গে সদালাপ করবে। সালাত কায়েম করবে। জাকাত দেবে। কিন্তু অল্পসংখ্যক লোক ছাড়া তোমরা বিরুদ্ধভাবাপন্ন হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলে।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৮৩)
এতিম(অনাথ) এর প্রতি সদয় আচরণ
‘সুতরাং তুমি এতিমের প্রতি কঠোর হয়ো না।’ (সুরা : দুহা, আয়াত : ৯)
ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি কি দেখেছ তাকে, যে দ্বিনকে অস্বীকার করে? সে তো সে-ই, যে এতিমকে রূঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয়।’ (সুরা : মাউন, আয়াত : ১-২)
ইরশাদ হয়েছে, ‘এতিমদের তাদের ধন-সম্পদ সমর্পণ করবে। আর ভালোর সঙ্গে মন্দ বদল করবে না। তোমাদের সম্পদের সঙ্গে তাদের সম্পদ মিশিয়ে গ্রাস কোরো না। অবশ্যই এটি মহাপাপ।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ২)
ইরশাদ হয়েছে, ‘...মানুষ তোমাকে এতিম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, তাদের জন্য সুব্যবস্থা করা উত্তম...।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২২০)
ইসলামে দানশীলতা
‘যারা নিজের সম্পদ দিনে বা রাতে প্রকাশ্যে অথবা গোপনে আল্লাহর পথে খরচ করে তাদের পুরস্কার প্রতিপালকের কাছে আছে। তাদের কোনো ভয় নেই। তাদের কোনো চিন্তাও নেই,’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-২৭৪)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, দানের কথা প্রচার কর না এবং দান নিতে আসা মানুষজনকে কষ্ট দিয়ে তোমাদের দান ওই ব্যক্তির মতো ব্যর্থ কর না, যে নিজের ধন সম্পদ কেবল লোক দেখানোর জন্যই ব্যয় করে, (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-২৬৪)।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান কর তবে তা ভালো। আর যদি গোপনে দান কর তাহলে আরও ভালো, (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-২৭১)
অঙ্গীকার পূর্ণ করা
‘আর অঙ্গীকার পূর্ণ করো। অবশ্যই অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত: ৩৪)
অন্যত্র মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা অঙ্গীকারগুলো পূর্ণ করো। ’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ১)
অন্যত্র ইরশাদ করেন, ‘(বোধশক্তিসম্পন্ন লোকেরা এমন) যারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করে এবং অঙ্গীকার ভঙ্গ করে না। ’ (সুরা রাদ, আয়াত: ২০)
মহান আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর নামে অঙ্গীকার করার পর সে অঙ্গীকার পূর্ণ করো।(সুরা নাহল, আয়াত: ৯১)
ইসলামে সত্যবাদীতা
আল্লাহ আল কোরআনে হুশিয়ার করে বলেন, ‘সুতরাং পরিণামে তিনি তাদের অন্তরে নিফাক (দ্বিমুখিতা) রেখে দিলেন সেদিন পর্যন্ত, যেদিন তারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তারা আল্লাহকে যে ওয়াদা দিয়েছে তা ভঙ্গ করার কারণে এবং তারা যে মিথ্যা বলেছিল তার কারণে। (সূরা তওবা, আয়াত : ৭৭)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরও বলেন, ‘তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে সংমিশ্রণ করো না এবং জেনেশুনে সত্য গোপন করো না’ (২: ৪২)
অনেকে ভাবেন দাড়ি টুপি পড়ে নামাজ পড়লেই ইসলাম পালন হয়ে যায়।কিন্তু ইসলামের প্রকৃত সংজ্ঞা কি?
لَيْسَ الْبِرَّ أَنْ تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آَمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآَتَى الْمَالَ عَلَى حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّائِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآَتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُوا وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ وَحِينَ الْبَأْسِ أُولَئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ (177)
"নামাজের সময় পূর্ব ও পশ্চিম দিকে মুখ ফেরানোতে তোমাদের জন্যে কোন সওয়াব বা পূণ্য নেই বরং পূণ্য তার, যে আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতাগণ ও ঐশী গ্রন্থসমূহ এবং নবীদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। আর সম্পদের প্রতি আসক্ত থাকা সত্ত্বেও যারা আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, পথিক ও ভিক্ষুকদের এবং দাসত্ব মোচনের জন্যে ধন-সম্পদ দান করে ও নামাজ প্রতিষ্ঠাসহ যাকাত দান করে, আর ওয়াদা করলে তা পূরণ করে এবং যারা অভাব, বঞ্চনা ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য ধারণ করে, এরাই ঈমানের দাবিতে কথায়, আচরণে ও বিশ্বাসে সত্যবাদী এবং এরাই ধর্মভীরু।" (সূরা বাকারা:১৭৭)
সুতরাং আত্মীয় স্বজন,এতিম,অভাবগ্রস্থ,ভিক্ষুক ও দাসদের সাহায্য সহযোগিতা না করে,কথা দিয়ে কথা না রেখে অযথা নামাজ পড়ে মুসলিম সেজে কোনো লাভ হবে না।
ইসলাম হচ্ছে আত্মীয় স্বজনের সাথে ভালো ব্যবহার,এতিমকে আশ্রয় দান,অভাবগ্রস্থ ও ভিক্ষুককে সাহায্য করা,অর্থ দান করা এবং কথা দিয়ে কথা রাখা।
ইসলামে সন্ত্রাসবাদ,জঙ্গিবাদ ও মানবহত্যা
নরহত্যার শাস্তি সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নরহত্যা বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল।’ (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত: ৩২)
যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা(সন্ত্রাসবাদ) ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। এবং যে কারও জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে(সূরা মায়িদা আয়াত ৩২)
কেননা মানব হত্যা যদিও খারাপ কাজ, তবে ফিতনা(সন্ত্রাস) সৃষ্টি মানবহত্যার চেয়েও খারাপ। –(সুরা বাকারা, আয়াত ১৯১)
'দুনিয়ায় শান্তি স্থাপনের পর এর মধ্যে বিপর্যয় ঘটাবে না।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৫৬)
ইসলাম ও নারীবাদ
কোরআনে আছে, ‘তোমরা তাদের (নারীদের) সঙ্গে উত্তম আচরণ করো ও উত্তম আচরণ করার শিক্ষা দাও।’ (সূরা-৪ নিসা, আয়াত: ১৯)
পবিত্র কোরআনে রয়েছে, ‘তারা তোমাদের আবরণস্বরূপ আর তোমরা তাদের আবরণ।’ (সূরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৭)
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সদাচরণ করো।’ (সূরা-৪ নিসা, আয়াত: ১৯)
কোরআনে আরেক জায়গায় বলা হয়েছে, ‘নারীদের ওপর যেমন অধিকার রয়েছে পুরুষের, তেমনি রয়েছে পুরুষের ওপর নারীর অধিকার’ (সূরা-২ বাকারা, আয়াত ২২৮)