ইসলামে মধ্যমপন্হা

ইসলামে মধ্যমপন্হা

 কুরআনুল কারিমে ‘ওয়াসাতিয়া’ তথা মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। পুরো আরব যখন নিকষ অন্ধকারে নিমজ্জিত।এক গহীন অন্ধকারে আবৃত।সভ্যতার সূর্য পূর্বাকাশে আলো ছড়াতে ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে,...মানবজাতি যখন বর্বরোচিত, বর্বরতম জাহিলিয়াতের ঘুমে আচ্ছন্ন, ঠিক সেই চরম পাপ-পংকিলতায় নিমজ্জিত অন্ধকারকে চিরতরে দূরীকরণ করতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা পৃথিবীর বুকে প্রেরণ করলে তাঁর প্রিয় হাবীব রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে।

সূর্যের প্রচন্ড দাবদাহে তপ্ত খরার মাঝে এক পশলা বারিশ যেমন এনে দেয় শান্তির স্নিগ্ধ ছোঁয়া, দূর করে দেয় মনের সকল অস্থিরতা, বিষন্নতা। ঠিক তেমনি জাহেলিয়াতের নিকষ কালো আঁধার ছিন্ন করে আমার রব তার প্রিয় বান্দা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে নতুন প্রভাত অর্পণ করেন। যার নাম ইসলাম।একটি সাচ্ছা দ্বীন। একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন-বিধান।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ শ্বাশত ও সার্বজনীন ধর্ম। Islam is the complete code of life. আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ইসলামকে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম হিশেবে আখ্যায়িত করেছেন।

إِنَّ الدِّيْنَ عِنْدَ اللهِ الْإِسْلاَمُ

‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হ’ল ইসলাম।[1]

ইসলামই শুধু ইসলামের তুলনা। ইসলাম কোনো নাবী রাসুল বা ব্যক্তি বিশেষের আবিষ্কার নয়, কোনো জাতির নামানুসারেও এ মতাদর্শের নাম হয়নি। ইসলাম নামটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা প্রদত্ত।

ইসলামে চরমপন্থা, বাড়াবাড়ি, সীমালঙ্ঘন, ফিতনা-ফ্যাসাদ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা কোনভাবেই কাম্য নয়। ইসলামি জীবনব্যবস্থায় ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ, জাতি-গোষ্ঠীর শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান, সম্প্রীতিপূর্ণ ব্যবহার, পরম সহনশীলতার মনোভাব ও মধ্যম পন্থা অবলম্বন মুসলমানদের চরিত্রের অনুপম বৈশিষ্ট্য।

ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থায় যখন কেউ গোঁড়ামির মতো একধরনের মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়, তখন মানুষ সাধারণত অন্যের মত ও পন্থাকে গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করে না, বরং নিজের মত ও পন্থাকে সঠিক বলে মনে করে এবং সেটাই প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কঠোরতা অবলম্বন ও অহেতুক শক্তি প্রয়োগ করতে চায়।

আবূ হুরাইরাহ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

‘নিঃসন্দেহে ধর্ম অতি সহজ। যারাই ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি বা কঠোরতা অবলম্বন করে, তাদের ওপরই ধর্মটা বাড়াবাড়ি-পর্যায়ের মনে হয়। তাই ভারসাম্য ও মধ্যমপন্থা অবলম্বন করো। যতোদূর সম্ভব, ততোদূর করো। প্রতিদানের সুসংবাদ গ্রহণ করো। সন্ধ্যে-ভোরের শেষাংশে ইবাদত করে সাহায্য প্রার্থনা করো।’ [2]

আল কুরআনুল কারিমে আমার রব বলেছেন,

وَكَذَلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدًا وَمَا جَعَلْنَا الْقِبْلَةَ الَّتِي كُنْتَ عَلَيْهَا إِلَّا لِنَعْلَمَ مَنْ يَتَّبِعُ الرَّسُولَ مِمَّنْ يَنْقَلِبُ عَلَى عَقِبَيْهِ وَإِنْ كَانَتْ لَكَبِيرَةً إِلَّا عَلَى الَّذِينَ هَدَى اللَّهُ وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُضِيعَ إِيمَانَكُمْ إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ.

"এভাবেই তোমাদেরকে মধ্যমপন্থী জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি, যাতে তোমরা মানব জাতির জন্য সাক্ষ্যদাতা হতে পার এবং রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষ্যদাতা হতে পারে। (হে রাসূল!) আপনি এ যাবত যে কেবলা অনুসরণ করেছিলেন, তাকে এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম-যাতে জানতে পারি কে রাসূলের অনুসরণ করে এবং কে ফিরে যায়। আল্লাহ যাদের সৎ পথে পরিচালিত করেছেন তারা ব্যতীত অপরের নিকট তা নিশ্চয় কঠিন। আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমাদের বিশ্বাসকে ব্যর্থ করেন। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি স্নেহশীল দয়াময়।[3]

মধ্যমপন্হা অবলম্বন করলে একটি ভারসাম্যপূর্ণ জীবন চেতনা প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে। সত্যকে, শান্তিকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সর্বাত্মকভাবে বার বার চেষ্টা করার নামই হচ্ছে জিহাদ, সেই জিহাদে উগ্রতার কোন স্থান নেই। হাদিসে এসেছে,

‘সবচেয়ে উত্তম হলো- প্রতি বিষয়ে মধ্যমপন্থা। ’[4]

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই মধ্যমপন্থা উত্তম। বাড়াবাড়ি বা ছাড়াছাড়ি- কোনোটাই ইসলামের আদর্শিক পথ নয়। যেমন বন্ধুত্বের মাঝেও মধ্যমপন্থার সীমারেখায় থাকা উচিত।কারণ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন

‘বন্ধুর সঙ্গে মধ্যমপন্থী ভালোবাসা রাখো, হতে পারে সে একদিন তোমার শত্রুতে পরিণত হবে। তেমনি শত্রুর সঙ্গেও মধ্যমপন্থী শত্রুতা রাখো, হতে পারে সে একদিন তোমার বন্ধুতে পরিণত হবে। ’[5]

আমরা যখন কারো গোপন বিষয় সম্পর্কে সন্ধান করি তখন তার খুব কাছের মানুষের কাছে যায় বা তার কাছের বন্ধুর কাছে জানতে চাই।আবার বন্ধু যখন কোন কারণে কালক্রমে শত্রুতে পরিণত হয় তখন সে আপনার গোপনীয় সব বিষয় সকলের সামনে ফাঁস করে দেয়। তাইতো রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বন্ধুর সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে মধ্যমপন্হা অবলম্বন করতে বলেছেন।

কিছু কিছু ব্যাপারে আমরা হয়তো খুব বেশি বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যাই। আবার কিছু কিছু ব্যাপারে চরম শৈথিল্য দেখিয়ে ফেলি।বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির রাস্তা থেকে সরে এসে ভারসাম্যপূর্ণ পথ ও মতকে আঁকড়ে ধরতে হবে।

একজন সচেতন মুসলিমের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তার চলার পথ হবে মধ্যপন্থা। দ্বীনের সকল বাধা-বন্ধনকে ঝেড়ে ফেলে, একজন মুসলিম তার দুষ্ট নফসের তাড়না মিটানোর পিছনে কখনো ছুটবে না। আবার জীবনের সব কিছু থেকে হাত গুটিয়ে বৈরাগ্যবাদকেও কখনো সে গ্রহণ করবে না। আর এই দুয়ের মাঝামাঝি পথের নামই হলো ইসলাম।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনের প্রতিটি পদে মধ্যমপন্হা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন ব্যাপকভাবে খাদ্য ও পোশাকসহ যাবতীয় কর্মে মিতব্যয়ী হতে বলেছেন এবং অপব্যয় ও অপব্যবহার থেকে বারণ করেছেন। মধ্যম পর্যায়ে জীবন যাপনকে মুমিনের বৈশিষ্ট্য সাব্যস্ত করা হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন,

‘তারা (মুমিনগণ) যখন ব্যয় করে, তখন অপব্যয় করে না এবং কৃপণতাও করে না, বরং (তাদের জীবনযাত্রা) হচ্ছে এর মাঝামাঝি, ভারসাম্যপূর্ণ।’[6]

আল্লাহর অবাধ্যতায় (পাপকাজে) খরচ করা অপব্যয় এবং আল্লাহর পথে খরচ না করা কৃপণতা। আর আল্লাহর নির্দেশানুসারে ও তাঁর আনুগত্যের পথে খরচ করা হল মধ্যপন্থা অবলম্বন করা।[7]

মনে করেন আপনি বিশাল সম্পত্তির মালিক। আপনি যদি সম্পদ রেখে, ব্যয় থেকে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে তো চলবে না। আপনার সম্পদ থেকে যদি আপনি প্রয়োজনমতো খরচ না করেন, দান - সাদকাহ না করেন, আত্নীয় স্বজনকে সাহায্য না করেন, তবে আপনিতো আমার রবের দরবারে অপরাধী। আমার রব আপনার নাম দিয়েছেন বখিল যার অর্থ কৃপণ!

আবার আপনাকে রব সম্পদ দিয়েছে বলে আপনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ করে, বিলাসিতা করে অপচয় করতে পারেন না। অপচয় অপব্যয় দুটোই ইসলামে নিষিদ্ধ। ইমাম কুরতুবি (রহ.) লিখেছেন,

‘যে ব্যক্তি নিষিদ্ধ ও অন্যায় কাজে একটি দেরহামও খরচ করবে, সে-ও অপব্যয়কারী।যারা অপব্যয় করে, তারা তো শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার রবের প্রতি অতি অকৃতজ্ঞ।[8]

অনেক সময় এমনও দেখা যায় বেশি খরচ করে নিঃস্ব হয়ে গেলে পরে মানুষের ধারে ধারে ঘুরতে হয়। তাই ব্যয়ের ক্ষেত্রেও আপনাকে মাস্ট মধ্যমপন্হা অবলম্বন করতে হবে।

আমরা যেমন শিথিলপন্হী নয় তেমন কট্টরপন্থী ও নয়। আমরা মধ্যমপন্হী। কাউকেই আমরা বকাবকি করবো না। উপহাস করবো না। ট্রল করবো না। আমরা আমাদের মধ্যমপন্হা দিয়ে ইসলামের সৌন্দর্যকে তুলে ধরবো। আমরা দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি , অতিরঞ্জন, সীমালঙ্ঘন, ছাড়াছাড়ি বা বিবেদ সৃষ্টি কোনটাই করবো না। আমরা বরং মধ্যমপন্হা অবলম্বন করবো। পৃথিবীর জাতিসমূহের কাছে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরবো, আমরা পরস্পর কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করে আমাদের ইসলামকে প্রশ্নবিদ্ধ করবো না।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ গুলো মেনে চললেই আমাদের জীবন পরিপূর্ণ সীমার মধ্যে থাকবে। কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবাদাতে যেমন ছাড়াছাড়ি করেন নি তেমনি বাড়াবাড়ি ও করেন নি। তাই নিজের সাধ্যের বাইরে গিয়ে অতি বেশি নফল সলাত আদায় করা, নফল সাওম রেখে নিজের উপর ইবাদাতকে চাপিয়ে নেওয়া রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারবার নিষেধ করেছেন। নিজের সাধ্যের ভেতর ইবাদাত করলে আপনি ইবাদাতে স্বাদ পাবেন। আপনি যদি দ্বীন পালনকে কঠিন করে ফেলেন তাহলে একসময় অপারগ হয়ে যাবেন। ইবাদাতের স্বাদ হারিয়ে ফেলবেন।

হাদীসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন

‘নিজেদের ওপর কঠোরতা অবলম্বন কোরো না। কেননা তোমাদের আগে বহু লোক ধ্বংস হয়েছে এসবের কারণে। আর তোমরা তাদের অবশিষ্ট লোকদেরকে পথভ্রষ্ট ও দ্বিধাদ্ব,ন্দে পাবে।’ [9]

কাউকে দ্বীনের ব্যাপারে এতই উদাসীন দেখা যায় মনে হয় জান্নাত পাওয়া একেবারেই সহজলভ্য আবার কাউকে দ্বীন পালনের ব্যাপারে এতই কট্টরপন্থা অবলম্বন করতে দেখা যায় মনে হয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা পালন করেছেন সাহাবায়ে কেরাম যা পালন করেছেন তাতে দ্বীনের ঘাটতি রয়ে গেছে। এখন তিনিই বেশি বুঝেন। তিনি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লাকে বেশি ভয় করেন। এর কোনটাই ঠিক নয়।

যেমন ধরুন একটি বাস মক্কা শরীফ থেকে মদীনা শরীফের উদ্দেশ্যে রওনা দিবে। সেক্ষেত্রে বাস যদি নিয়মের বাইরে গিয়ে স্প্রীডে চলে তাহলে একটি দুর্ঘটনার কবলে পড়া অসম্ভব কিছু না আর বাসটি যদি নিয়মের থেকে ধীরে চলে তাহলে সঠিক সময়ে কখনোই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেনা। এটা স্বাভাবিক। এটাতো জাস্ট উদাহরণ দিলাম। দ্বীন পালনও এমন। বেশি বাড়াবাড়ি বেশি ছাড়াছাড়ি কোনটাই আমাদের জন্য মঙ্গলজনক নয়। কারণ আমাদের মনে রাখতে হবে ইসলাম হলো ভারসাম্যপূর্ণ ও মধ্যমপন্হী একটি দ্বীন। ইসলামে কোন উগ্রপন্থীর স্হান নেই আবার শৈথিল্যের স্হানও নেই।

আল্লামা ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন,

‘মধ্যমপন্থা হলো বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির মধ্যবর্তী ন্যায়ানুগ অবস্থান যাতে পার্থিব ও অপার্থিব কল্যাণ নিহিত।’ [10]

আমার সাথে আপনার মতানৈকট্য হতে পারে। এটা স্বাভাবিক। কারণ এটা যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে। আদম আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম এর যুগ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বরং কেয়ামত পর্যন্ত এমন থাকবে। মতপার্থক্য থাকবে। এখতেলাফ থাকবে। তাই আমাদেরকে বেশি বেশি স্টাডি করতে হবে। জানতে হবে। শিখতে হবে। জানাতে হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার প্রত্যেকটি বিধান মধ্যমপন্হা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিটি কাজ বা সুন্নাহ মধ্যম। সাহাবাদের প্রতিটি কাজ ছিল মধ্যম। সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীন, আইম্মায়ে মুজতাহিদীন, ওয়া আইম্মায়ে তরিকত প্রভৃতি আমাদের সালফে সালেহিন। সালফে সালেহিন আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় । প্রত্যেকটি মানহাজ মধ্যম।

যদি পরিপূর্ণ ভাবে শরীয়াহ পদ্ধতিতে জীবন পরিচালনা করেন তাহলে বুঝবেন আপনি মধ্যমপন্হায় আছেন। আপনি নিজে নতুন ভাবে দ্বীনে কোনকিছু প্রবেশ করাতে পারবেন না। তাওহীদের ব্যাপারে একবিন্দু ছাড় দিতে পারবেন না। আক্বীদার ব্যাপারে একবিন্দু ছাড় দিতে পারবেন না। দ্বীনের ব্যাপারে একবিন্দুও ছাড় নেই। আপনি পারবেন না ইসলামকে আধুনিক বানাতে। ইসলামকে আধুনিক বানানো যায় না। ইসলাম ১৪০০ বছর পূর্বে যা ছিল তা দিয়েই আপনাকে চলতে হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা তাঁর দ্বীন যেভাবে অবতীর্ণ করেছেন সেভাবে দেখতে চান। কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি ও সীমা লঙ্ঘন ছাড়াই তিনি তাঁর ওপর দৃঢ় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

গোঁড়ামি ও চরমপন্থা শব্দ দু’টি সামনে আসলেই বনি ইসরাইল জাতির ইতিহাস হৃদয়পটে ভেসে উঠে। কারণ এ জাতির প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল গোঁড়ামি ও চরমপন্থা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বনি ইসরাইলদের হিদায়াতের জন্য অসংখ্য নবী ও রাসূল পাঠিয়েছিলেন এবং পৃথিবীবাসীর নেতৃত্বের আসনে সমাসীন করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা তাদের ইতিহাসকে অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী করেছিলেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন,

‘হে বনি ইসরাইল! আমার সেই নিয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আমি তোমাদের দান করেছিলাম এবং এ কথাটিও যে আমি দুনিয়ার সমস্ত জাতির ওপর তোমাদের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছিলাম’ [11]

পৃথিবীর ইতিহাসের এক দীর্ঘকালব্যাপী তারা এ নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত ছিল। কিন্তু গোঁড়ামি ও চরমপন্থার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা তাদেরকে নেতৃত্বের আসন থেকে অপসারিত করে মধ্যমপন্থী জাতি হিশেবে ‘উম্মতে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে নেতৃত্বের দণ্ড তুলে দিলেন। কুরআনুল কারিমের বিভিন্ন জায়গায় ইসরাইল জাতির গোঁড়ামির ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে।

কুরআনুল কারিমে ‘ওয়াসাতিয়া’ তথা মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।

কুরআনুল কারিমে আমার রব বলেছেন,

-‘ হে কিতাবধারী ! নিজেদের ধর্ম নিয়ে অযথা বাড়াবাড়ি করো না। আর (ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে) তোমাদের আগে যারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হয়ে ও অন্যদেরকে পথভ্রষ্ট করে সহজ সরল পথচ্যুত হয়েছে, তাদের পথ অবলম্বন করো না।’[12]

হে কিতাবধারীরা! তোমরা তোমাদের ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত হয়ো না। আর আল্লাহ সম্বন্ধে যথাযথ বলো।’ [13]

কুরআনুল কারিমের আয়াতদুটিতে ইহুদি-খৃস্টানদেরকে নিজেদের ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা এরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার নির্ধারিত সীমারেখা সর্বদা ভেঙে ধর্মে বাড়াবাড়ি করার মাধ্যমে নিজেদের ধর্ম বিকৃত করে ফেলতো। ইহুদীরা উজায়ের আলাইহিস সালামকে এবং খৃস্টানরা ঈসা আলাইহিস সালামকে খোদাপুত্র সাব্যস্ত করেছিলো।

মুফাসসিরে কুরআন কুরতুবি রাহিমাহুল্লাহ বলেন-

‘ইহুদিরা ঈসা আলাইহিস সালাম এর সম্বন্ধে বাড়াবাড়ির শিকার হয়েছে। তারা মারইয়াম আলাইহিস সালাম এর ওপর মিথ্যারোপ করে থাকে। পক্ষান্তরে খৃস্টানরাও ঈসা আলাইহিস সালাম-কে নিয়ে বাড়াবাড়ি করেছে। তারা তাকে খোদা সাব্যস্ত করতো। সুতরাং দুটো দলই ইফরাত ও তাফরিত তথা কমবেশি করে বাড়াবাড়ির শিকার হয়েছে। যা মস্ত বড় গোনাহ ও কুফুরি।’[14]

ফলে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির কারণে খৃষ্টানরা গোনাহ ও কুফরিতে ডুবে গিয়েছিলো।

দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে যদি আপনি কঠোরতা অবলম্বন করেন তাহলে প্রত্যাবর্তনকারী ভয়েই কাবু হয়ে যাবে। ধরুন একবোন শুধু মাত্র থ্রি পিছ বা শাড়ী পরিধান করে রাস্তায় চলাফেরা করে। তাকে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার সময় খুব হেকমতের সাথে দিতে হবে। তাকে আপনি সরাসরি হাত মোজা, পা মোজা পরিধান করার দাওয়াত দিলে সে কখনোই গ্রহন করবেনা। আপনি তাকে আগে হিজাব বোরকা পরিধানের দাওয়াত দিন। তারপর নিকাব পরিধানের দাওয়াত দিন। দেখবেন তাওবা করে পর্যায়ক্রমে তিনি এমন একজন পর্দানশীন মহিলা হয়ে আপনার কাছে আসবেন আপনি তাকে চিনতেই পারবেন না।

বর্তমানে জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী তানভীর ইভান। যারা গান শুনে ঐ জগতের জন্য সে সেলিব্রিটি। সম্পর্কে সে আমার হাজবেন্ডের বড় ভাইয়ের পুত্র। এক পরিবারের বললেই চলে। আমার হাজবেন্ড কখনোই তাকে বলেনা তুমি এসব বেহায়াপনা বা নোংরা গান গাওয়াগুলো ছেড়ে দাও। তুমি গুনাহগার বা তুমি জাহান্নামী। কারণ এভাবে বললে তো আর দাওয়াতী কাজ হবে না। সে উনার এসব বকবক শুনবেও না। কারণ গান গাওয়া তার শখ, তার নেশা, তার পেশা। উনি তাকে বলেন আবু উবাইদার নাশীদ আমাদের খুব ভালো লাগে। কলরবের নাশীদগুলোও প্রচুর ভালোলাগে। তুমি তো ইসলামীক গান গাইতে পারো। জাতিকে নাশীদ উপহার দিতে পারো। নাশীদ গাইলে দুনিয়া আখেরাত তোমার জন্য কল্যাণময়ী হবে। গান গাইলেতো গুনাহ হয়। কারণ তোমার গানে বাজনা আছে। যেমন তোমার গোনাহ হয় তেমন যারা তোমার গান শুনে তারাও গুনাহের সাগরে নিমজ্জিত হয়। কিন্তু হামদ আর নাশীদ গাইলে গুনাহ তো হবেই না বরং গান থেকে নাশীদ জগতে প্রত্যাবর্তন করার জন্য বর খুশি হয়ে তোমাকে জান্নাত দান করবেন৷ ইন শা আল্লাহ।

আমরা আশা করি রব নিশ্চয়ই তাকে একদিন জোনায়েদ জামশেদ রূপে আমাদেরকে কোন মিরাক্কেল দেখাবেন। আমরা একদিন তার নাশীদ শুনে আমাদের হৃদয়কে প্রশান্তি করবো। ইন শা আল্লাহ।

হিকমাহ ও উত্তম উপদেশের মাধ্যমে মানুষকে ধার্মিক বানানোর চেষ্টা করতে হবে। ইসলামী আখলাকের দাওয়াত দিতে হবে।

দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে,

বাড়াবাড়ি পর্যায়ের কঠিন ও জটিল চিন্তা-চেতনার দ্বন্দ্বে ফেলে দিলে নবাগতরা ইসলামের সৌন্দর্য অনুধাবন করতে পারবে না। তা ছাড়া অসংখ্য মাসলাকের উপস্থিতি তার জন্য কঠিন ও যন্ত্রণার কারণ হবে। একজন নবাগত মানুষ মধ্যমপন্হা ধর্ম পালনে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। তাকে যদি মুসলমানদের বিভিন্ন ফেরকার কথা শোনানো হয় তারপর কোনো বিশেষ ফেরকার দিকে ডাকা হয় সে ইসলামকে বিদঘুটে মনে করবে।

দ্বীনের দাওয়াত দিতে আপনাকে মাস্ট বাড়াবাড়ি বর্জন করতে হবে। মননে চিন্তায় ও কর্মে উদার হতে হবে। যাকে দ্বীনের দাওয়াত দিবেন সর্বোপরি তার সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ ও লালন করতে হবে। কখনো নেতিবাচক চিন্তা মনে স্থান দেওয়া যাবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন,

‘তোমরা আহ্বান করো তোমাদের রবের পথে, হিকমাহ এবং সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে।’ [15]

তাকে ভালোবাসার চাদরে জড়িয়ে নিতে হবে। আপনার বচণগুনে তাকে মুগ্ধ করতে হবে। দেখবেন আপনার ব্যবহারেই সে প্রত্যাবর্তন হবে,ইন শা আল্লাহ।

একটা ঘটনা উল্লেখ করার প্রয়োজন মনে করছি।

ইসলামের প্রথম দিকে সাধারণ রীতি-নীতির মত মদ্যপান একবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিজরতের পরেও মদীনাবাসীদের মধ্যে মদ্যপান ও জূয়ার প্রথা যথেষ্ট প্রচলিত ছিল। সাধারণ মানুষ এ দুটি বস্তুর শুধু বাহ্যিক উপকারিতার প্রতি লক্ষ্য করেই এতে মত্ত ছিল। কিন্তু এগুলোর অন্তর্নিহিত অকল্যাণ ও অপকারিতা সম্পর্কে তাদের বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না বললেই চলে।

মদীনা শরীফে পৌছার পর কিছু সাহাবী এসব বিষয়ের অকল্যাণগুলো অনুভব করলেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে উমার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু , মা’আয ইবনে জাবাল এবং কিছুসংখ্যক আনসার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হয়ে বললেনঃ

“ মদ ও জুয়া মানুষের বুদ্ধি-বিবেচনাকে পর্যন্ত বিলুপ্ত করে ফেলে এবং ধনসম্পদও ধ্বংস করে দেয়। এ সম্পর্কে আপনার নির্দেশ কি?” এ প্রশ্নের উত্তরে সূরা বাকারায় নিম্নোক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।

“তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্য উপকারিতাও রয়েছে, তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়”।

এ আয়াতে স্পষ্ট ভাবে মদকে হারাম করা হয়নি, কিন্তু এর অনিষ্ট ও অকল্যাণের দিকগুলোকে তুলে ধরে বলা হয়েছে যে, মদ্যপানের দরুন মানুষ অনেক মন্দ কাজে লিপ্ত হয়ে যেতে পারে।

মদের ব্যাপারে পরবর্তী আয়াতটি নাযিল হওয়ার ঘটনা-

একদিন আবদুর রহমান ইবনে আওফা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু সাহাবিগণের মধ্যে হতে তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করেন। আহারাদির পর যথারীতি মদ্যপানের ব্যবস্থা করা হলো এবং সবাই মদ্যপান করলেন। এমতাবস্থায় মাগরিবের সলাতের সময় হলে সবাই সলাতে দাঁড়ালেন এবং একজনকে ইমামতি করতে এগিয়ে দিলেন। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় যখন তিনি সুরা আল-কাফিরূন ভুল পড়তে লাগলেন, তখনই মদ্যপান থেকে পুরোপুরী বিরত রাখার জন্যে দ্বিতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হল। এরশাদ হলঃ

“হে ঈমানদারগণ! নেশাগ্রস্থ অবস্থায় তোমরা নামাযের কাছেও যেওনা।”

এই আয়াতের মাধ্যমে শুধুমাত্র সলাতের সময় মদ্যপানকে হারাম করা হয়েছে। তবে অন্যান্য সময় তা পান করার অনুমতি তখনও পর্যন্ত বহাল রয়েই গেল।

মদ্যপান সম্পূর্নরূপে হারাম হওয়ার ঘটনা-

হযরত আতবান ইবনে মালেক কয়েকজন সাহাবীকে নিমন্ত্রণ করেন, যাদের মধ্যে সা’দ ইবনে আবী অক্কাসও উপস্থিত ছিলেন। খাওয়া-দাওয়ার পর মদ্যপান করার প্রতিযোগিতা এবং নিজেদের বংশ ও পূর্ব-পুরুষদের অহংকারমূলক বর্ণনা আরম্ভ হয়। সা’দ ইবনে আবী অক্কাস একটি কবিতা আবৃত্তি করলেন যাতে আনসারদের দোষারোপ করে নিজেদের প্রশংসাকীর্তন করা হয়। ফলে একজন আনসার যুবক রাগাম্বিত হয়ে উটের গন্ডদেশের একটি হাড় সা’দ এর মাথায় ছুঁড়ে মারেন। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে সা’দ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হয়ে উক্ত আনসার যুবনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করলেনঃ

‘হে আল্লাহ! শরাব সম্পর্কে আমাদের একটি পরিষ্কার বর্ণনা ও বিধান দান কর।’

তখনই সূরা মায়েদার উদ্ধৃত মদ ও মদ্যপানের বিধান সম্পর্কিত বিস্তারিত আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এতে মদকে সম্পূর্ণরূপে হারাম করা হয়েছে।

“হে ঈমান্দারগণ! নিশ্চিত জেনো, মদ, জুয়া, মূর্তি এবং তীর নিক্ষেপ এসবগুলোই নিকৃষ্ট শয়তানী কাজ। কাজেই এসব থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে থাক, যাতে তোমরা মুক্তিলাভ ও কল্যাণ পেতে পার। মদ ও জুয়ার দ্বারা তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্ত্রুতা ও তিক্ততা সৃষ্টি হয়ে থাকে; আর আল্লাহর যিকর ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখাই হল শয়তানের একান্ত কাম্য, তবুও কি তোমরা তা থেকে বিরত থাকবে না? [16]

এভাবে তৃতীয় বারে মদকে সম্পূর্ণ ভাবে হারাম করা হয়েছে। আমার রব চাইলেই প্রথম বারেই হারাম ঘোষণা করতে পারতেন। কিন্তু রব এমনটি করবেন নি। রব ধীরে ধীরে মদকে হারাম করেছেন। মধ্যমপন্হা কী এটা বুঝানোর জন্য মদ ধীরে ধীরে হারাম হওয়া উদাহরণ কী যথেষ্ট নয়?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইবাদাত-বন্দেগির ধরণ, পদ্ধতি ও পরিমাণ সম্পর্কে আমাদের বেশি বেশি জানতে হবে। ইসলামে বৈরাগ্যের কোন স্থান নেই। ইবাদাত, খাওয়া-দাওয়া, ঘুম-নিদ্রা, বিয়ে-শাদী, পরিবার-পরিজন ইত্যাদি সবকিছু নিয়েই ইসলামি জীবন। এগুলো বাদ দিয়ে যদি কেউ শুধু ইবাদাত-বন্দেগি করে ইসলাম পালন করতে চায় সে তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মত বলে গণ্য হবে না। দুনিয়ার সব কাজ-কর্ম ও অন্যের অধিকার আদায় করার সাথে সাথে সাধ্য ও সামর্থ্যনুযায়ী ইবাদত-বন্দেগি সম্পাদন করাই হলো মধ্যপন্থা অবলম্বন।

তাই একজন মুসলমানের জীবনের প্রতিটি পর্যায়, যেমন আধ্যাতিকতা ও বস্তুবাদ, অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধিভিত্তিকতা, দ্বীনি ও দুনিয়াবি, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক এবং সামাজিক সকল ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতে হবে।

আমরা আমাদের রবের বিধানগুলো পরিপূর্ণরূপে মেনে চলবো, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শরিয়তের অনুসরণ করবো, তাঁর পথ ও মতকে আঁকড়ে ধরবো এবং এর ওপরই মৃত্যুবরণ করবো, আর প্রতিদান হিসেবে কেয়ামতের দিন হাউজে কাউসারে উপনীত হবো ইন শা আল্লাহ।

তথ্যসূত্র

1. আলে ইমরান ৩/১৯

2. সহিহ বোখারি : ৩৯, সুনানে নাসাই : ৫০৩৪, সুনানে বায়হাকি : ৪৯২৯, শরহুস সুন্নাহ : ৯৩৫

3. সূরা আল বাকারা:১৪৩

4. বায়হাকি, শোয়াবুল ঈমান: ৬৬৫১

5. সুনানে তিরমিজি: ২০৬৫

6. সূরা: ফুরকান, আয়াত: ৬৭

7. ফাতহুল কাদীর

8. সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২

9. শুআবুল ইমান : ৩৬০১

10. আল-ফাওয়াইদ, পৃষ্ঠা : ১৩৯

11. সূরা বাকারা-৪৮

12. সুরা মায়িদা : ৭৭

13. সুরা নিসা : ১৭১

14. তাফসিরে কুরতুবি : ৬/২১

15. সুরা-১৬ নাহল, আয়াত: ১২৫

16. সূরা মায়েদা - ৯০-৯১

Post a Comment

Previous Post Next Post