অচেনা ব্যক্তির সাথে কী কী গোপনীয়তা রাখা উচিত?
অনলাইনে অচেনা ব্যক্তি, ভালো বা খারাপ, দু'রকম হওয়ারই সম্ভাবনা রয়েছে।
যতক্ষন অবধি সেটা নিশ্চিত হওয়া না যাচ্ছে, ততক্ষণ অবধি, চ্যাট বা চ্যাটের সূত্রে বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে,
১। নিজের প্রকৃত নাম, বয়স, ঠিকানা, মেইল আইডি, ইত্যাদি প্রকাশ করা উচিৎ হবে না।
(যদি পরবর্তী সময়ে এটা বুঝা যায় যে অচেনা ব্যক্তি বা বন্ধুটি প্রকৃতপক্ষেই ভালো, তখন তাঁকে নিজের সম্পর্কে বলা যেতে পারে। এবং, প্রথম দিকে এই সতর্কতা অবলম্বন করাকে, তিনি অর্থাত্ অচেনা বন্ধু, সাধুবাদই জানাবেন)।
২। নিজের ছবি, নিজের ঘনিষ্ঠ কারোরই ছবি, কোনো অবস্থায়ই দেয়া ঠিক হবে না।
(কারণ, ছবির ব্যবহার কী পর্যায়ে হবে, সেটা অনিশ্চিত)।
৩। কী কী ব্যাপারে অচেনা বন্ধুটি উৎসাহ প্রকাশ করছেন, সেটা ভালো করে লক্ষ্য করা উচিৎ। প্রথম দিকেই যদি শুধু ব্যক্তিগত বিষয়েই তাঁর উৎসাহ সীমাবদ্ধ থাকে, সেখানে সন্তর্পণে এগোনো উচিৎ।
৪। অচেনা বন্ধুটির কাছ থেকে প্রাপ্ত কোনো লিংক, এমন কী আপাতদৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে ও, ঢোকা উচিৎ হবে না।
৫। অচেনা বন্ধুটির প্রোফাইলটি অতি বিচক্ষণতার সাথে বিবেচনা করা উচিৎ। প্রোফাইলে আত্মকথা বর্ণনে যদি আত্ম প্রচারের সুর টি থাকে, তবে, খুবই সন্তর্পণে এগোনো উচিৎ। প্রোফাইলে কোনো অসামঞ্জস্য আছে কী না, সেটা বিশ্লেষণাত্মক ভঙ্গিতে দেখা উচিৎ।
৬। অচেনা বন্ধুটি যে সব ব্যাপারে উৎসাহ দেখাচ্ছেন, সে সব ব্যাপারে নিজের উৎসাহ থাকলে ও, সেটা প্রকাশ না করে, নিরুৎসাহ প্রকাশ করলে, কী প্রতিক্রিয়া হয়, দেখা উচিৎ। ভালো বন্ধু হলে, ব্যক্তিগত পছন্দ, অপছন্দের মর্যাদা দেবেন।
৭। পরীক্ষামুলক ভাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিন্ন করার অভিনয় করলে, অচেনা বন্ধুর থেকে সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে উৎসাহের আতিশয্য, সন্দেহের কারণ হতে পারে।
৮। অচেনা বন্ধুর থেকে কোনোরূপ উপহার গ্রহণ করার ব্যাপারে, সতর্ক থাকা উচিৎ।
(কারণ, দুরাত্মার ছলের অভাব নাই)।
৯। বন্ধুর সততা সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া অবধি, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের অবস্থান সম্পর্কে বিস্তৃত তথ্যাদি দেয়া উচিৎ হবে না।
১০। সামনা সামনি দেখা করতে হলে, অচেনা বন্ধুর পছন্দের স্থান নয়, নিজের নির্বাচিত স্থানই পছন্দ হওয়া উচিৎ।
এবং, দেখা করার সময়, অকল্পিত বিপদের মোকাবিলার মানসিক প্রস্তুতি রাখা প্রয়োজন এবং অতি অবশ্যই নিজের ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বস্ত লোকজনদের, প্রচ্ছন্ন ভাবে নজরদারির জন্য সাথে রাখা উচিৎ, যাতে প্রয়োজন হইলে, তৎক্ষণাৎই শক্ত মাইরের ব্যবস্থা করে ফেলা যায়।
প্রথমে অনলাইনেই অচেনা বন্ধুর সাথে শুরু, চ্যাট, দিনে দিনে চেনা, জানা, তারপর আপন, তারপর প্রেম, গভীর প্রেম, এবার দুজনে মুখোমুখি।
স্ক্রীনে দেখা সে রাজপুত্তুর তো নয়, প্রেমিক হয়ে যুবতীর সামনে বসে আছেন, ষাটোর্ধ প্রেমিকের বাবা।
অচেনা বন্ধু, হয়ে উঠে জীবনের চরম দু:স্বপ্নের বিভীষিকাময় অধ্যায়।
বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, দেহ, মন,
ফুরিয়ে যায়, বেঁচে থাকার উৎসাহ।