ধর্মীয় মতভেদে অস্তিত্ব সঙ্কট ধেয়ে আসছে !

ধর্মীয় মতভেদে অস্তিত্ব সঙ্কট ধেয়ে আসছে !


ধর্মীয় মতভেদে অস্তিত্ব সঙ্কট ধেয়ে আসছে ! লড়াইটা ধর্ম নিয়ে। ধর্মের ধ্বজা আলেম-পুরোহিত শ্রেণির হাতে। ধর্মকে মুছে ফেলার জন্য যে শ্রেণিটা এদের বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে সেটা হলো- পাশ্চাত্য বস্তুবাদী আত্মাহীন, স্রষ্টাহীন সভ্যতা ।
.
অর্থনীতিক শক্তি, সামরিক শক্তি, বিশ্বমিডিয়া, নব নব আবিষ্কার, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি, চিকিৎসা শাস্ত্র এক কথায় বর্তমান পৃথিবী যা দিয়ে চলছে তার সমস্ত কিছুই পাশ্চাত্যদের দখলে, সকল ক্ষেত্রে যেন তারাই শ্রেষ্ঠ। মানুষ শক্তির পূজারী তাই তাদের পূজা করছে, তাদের অনুকরণ করছে। না চাইলেও কাউকে করতে হচ্ছে ।  মানুষ নিজের চোখকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করে, তাই তাদের আবিষ্কৃত বিজ্ঞানকে অস্বীকার করতে পারছে না, তাদের দৃশ্যত চাকচিক্যময়তাকে অস্বীকার করতে পারছে না, কাজেই তাদের জয়গান গাইছে।
.
পাশ্চাত্যরা যখন সকল ক্ষেত্রে প্রভুত্ব করছে, সব জায়গাতেই তারা যখন ঊর্ধ্বগামী তখন মানুষ তাদের অনুকরণ করবে এটাই স্বাভাবিক।
.
মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, ইহুদি ইত্যাদি সকল ধর্মের সাধারণ মানুষ, ধর্মে অবিশ্বাসী মানুষ, শিক্ষিত, চিন্তাশীল সকল শ্রেণির মানুষই আজ পাশ্চাত্য সভ্যতার অনুকরণ, অনুসরণ করে চলেছে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে কেবল ধর্মজ্ঞানী আলেম-পুরোহিত একটা শ্রেণি। তাদের দৃশ্যত অবস্থা হলো- বর্তমান বিশ্ব সম্পর্কে তাদের জ্ঞান অতি সামান্য, বিজ্ঞান সম্পর্কে তারা প্রায় অজ্ঞ, অর্থনীতিক শক্তি, সামরিক শক্তি, তথ্য-প্রযুক্তি, মিডিয়া ইত্যাদি কোনোকিছুতেই তাদের কর্তৃত্ব নেই। তারা কেবল ধর্মের কিছু পুস্তক মুখস্থ করে সাধারণ (অধিকাংশই অশিক্ষিত, দরিদ্র শ্রেণির) মানুষকে নসিহত করতে ব্যস্ত। এর বিনিময়ে তাদের ক্ষুন্নিবৃত্তির যোগান হয়। বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতিতে উদ্ভূত নানা রকম সমস্যার বাস্তব সমাধানও তারা ধর্ম থেকে দিতে অপারগ।
.
তাদের অনুসারী সাধারণ ঐ মানুষগুলোকে তারা এই চিন্তার মধ্যে নিমজ্জিত করে রেখেছে যে, দুনিয়ার যা হয় হোক, তোমরা কোনোমতে ধর্ম-কর্ম করে জীবনটা পার করে দাও, তাহলে আখেরাতের অনন্তকালের জীবনে শান্তি পাবে, জান্নাত পাবে, স্বর্গ পাবে, হ্যাভেন পাবে।

অধিকাংশ লোক সমগ্র কোরআনের বিধানাবলীর উপর পরিপূর্নভাবে ঈমান আনে নাই ।  ব্যক্তি জিবনে যেমন নাই নাই নাই করে ঠিক তেমন , হুজুর ছাড়া মোল্লা ছাড়া ইত্যাদি ছাড়া এদের চলে না কোরআন নিয়ে এমন মন্তব্য শুধু নাই নাই নাই
কোরআনের বিধানাবলীর প্রতি আনুগত্য পোষন করে সে অনুযায়ী জীবনের সকল কাজ-আমল-আচরন-সম্পর্ক-লেনদেন-সমর্থন-বিরোধিতা না করলে, হারাম পরিহার না করে । আল্লাহর সন্তুষ্টির উপর বহাল থেকে বিদায় নেওয়া সম্ভব নয়, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির উপর বহাল নাই, সে আল্লাহর লানতের উপর বহাল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী, যে আল্লাহর লানতের উপর বহাল থেকে বিদায় নিলো, সে নিশ্চিত হতভাগ্য, সীমালংঘনকারীদেরই দলভুক্ত।


সহজ-সরল-সোজা জিনিষকে বাঁকা-জটিল-কুটিল করে তোলাটাই যেন কিছু লোকের অতি আগ্রহ, মতলববাজ এসব লোক সহজ-সরল দ্বীনকে বাদ দিয়ে ফাঁক-ফোকরের সন্ধানেই সব সময়ে নিয়োজিত থাকে । 

এরা  প্রকৃত মুসলমানদের মধ্যে পড়ে না, এরা আসলে ভ্রান্ত আকীদার অনুসারী ভুয়া-ভন্ড-ডিস্কো মুসলমান, এরা সবাই হুজুর পুজারী, পীর পুজারী, মাজার পুজারী, ঐ দেশের আলেম নামধারী লোকগুলো ঐ সমাজটাকে শেষ করে ফেলেছে,


ঈমান-আমলের দিকে নজর নাই।  কোরআন বহির্ভূত অমীমাংসিত জিনিস / কথা নিয়ে পরে আছে সেই সেকাল থেকে । 

প্রতিটি মুহর্তে আল্লাহর বিধান অনুসরন না করে এবং ভিন্ন বিধান অনুসরন করে চলেছে, হারাম-হালাল বাছ-বিচার করার প্রয়োজন বোধ করছে না, জুলুম-লুন্ঠন-ধোকা-আত্মসাত চলছে ফ্রি-ষ্টাইলে। 
কেউ যদি তাদের এই বেড়াজাল ছিন্ন করে তাদের মতের বিরুদ্ধে ধর্ম পালন করতে চায় (কোর’আন-হাদিস মেনেই) তাহলে তার ভাগ্যে জোটে নানা গালাগালি ও অধার্মিক, ধর্মবিদ্বেষী, মুর্তাদ, নাস্তিক, দালাল ইত্যাদি তকমা।
.
আপনি যতই ধর্ম-কর্ম পালন করেন না কেন যদি ধর্মের লেবাস না থাকে তাহলে আপনাকে ধার্মিক মনে করা হবে না। বোরখা পরবেন না, তাহলে আপনি তো ধার্মিকই না ।  আপনার মাথায় টুপি নেই মানেই আপনি অধার্মিক । 

ধর্মের নামে তর্কের অন্যতম দুটি মূল কারণ।
মুশরিক বুঝেনা শির্ক কি? বিদআতি বুঝেনা বিদআত কি?


ধর্মচেতনা প্রবল হলে আত্মচেতনা থমকে যায়।


যে জনপদের মানুষ অতিউৎসাহী ধার্মিক, সেখানে সাম্প্রদায়িক বিরোধ, দাঙ্গা, হাঙ্গামা, বৈষম্য, সমকক্ষতার ঔদ্ধত্য, দ্বান্দ্বিক স্বার্থের লোভ, পাশবিক মত্ততা ও বীভৎসতার চাষাবাদ হয়; ধর্মখোরেরা নেশারঝোঁকে ভুলে যায় স্বদেশপ্রেম!


মুসলিম জাতি আজও স্বদেশপ্রেম বুকে ধারণ করতে পারে নাই। কেন পারে নাই? অতিমাত্রায় ধার্মিক হওয়ার কারণে।   হিন্দু মোল্লা আর মুসলিম ঠাকুর একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।

 সাথে অন্যান্যরাও 

চোখকান বন্ধ করে দলবাজি করতে-করতে এই অঞ্চলের মুসলমানরা কোরআনকেও মনের অজান্তে অবমাননা করতে ছাড়ে নাই!


মুসলমান কখনো বাঙালি, ভারতীয়, চৈনিক, মঙ্গোলীয়, ইউরোপীয়, আমেরিকান, আফ্রিকান, অস্ট্রেলিয়ান, জাপানিজ কিংবা রাশিয়ান ইত্যাদি  হতে পারে না। এই জাতিত্ব বোধ-ই তাদের নিয়ে গেছে সভ্যতার পিছনের দরজায়।
 তুলসীগাছ ঔষধি গাছ হলেও হিন্দুরা এটাকে পূজা করে তাই তুলসীপাতাকে ঘৃণার চোখে দেখা হয়!

 ধর্মচেতনা প্রবল হলে মানুষের মস্তিষ্কে কিভাবে পচন ধরে এটা তার আরেক নমুনা।

ধর্মের পক্ষশক্তিটি এখন কেবল পরাজিতই নয়, একেবারে নিশ্চিহ্ন হবার কাছাকাছি। এখনো যদি ধর্মের পক্ষশক্তির মানুষগুলো তাদের যাবতীয় মতভেদ, অনৈক্য দূর করে সত্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে, আল্লাহর হুকুমের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে তাহলে তাদের অস্তিত্ব সঙ্কট দেখা দেবে। তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে। তারা ধ্বজা বহন করার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে বহু আগেই।

Post a Comment

Previous Post Next Post