কেমন হবে জাহান্নামের শাস্তি?

কেমন হবে জাহান্নামের শাস্তি?


আমি আপনাদের জিজ্ঞেস করছি, আমাদের অন্তরে কি আসলেই আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালার ভয় আছে? আমরা কি জাহান্নামের ভয়ে ভীত? এই প্রশ্নের সাধারণ উত্তর হলো - হ্যাঁ, অবশ্যই। আপনি কী নিয়ে কথা বলছেন? অবশ্যই আমি জাহান্নামের ভয়ে ভীত। 

আমরা সবাই বলে থাকি, আমি জাহান্নামকে ভয় করি, আল্লাহকে ভয় করি। কিন্তু চারদিকে তাকিয়ে দেখুন মনে হয় যেন সবাই ছুটির দিন উদযাপন করছে। কোথায় সে ভয়, কোথায় সে আতঙ্ক? আপনার জীবনে কখনো, কোনো দিন কি এমন হয়েছে যে, আপনি সারা রাত ঘুমাতে পারেন নি - মুভি দেখে নয়, বা কোনো আড্ডা দিয়ে নয় - বরং জাহান্নামের ভয়ে আপনি সারা রাত ঘুমাতে পারেন নি। 

আমি এমন মানুষের কথা জানি, যারা ঘুমাতে পারেন নি, কারণ পরের দিন সকালে তাদের পরীক্ষা ছিল। কেউ হয়তো ভালোবাসার কারণে ঘুমাতে পারেন নি। কোনো যুবক যদি প্রেমে পড়ে সে ঘুমাতে পারে না। আল্লাহর কসম! আমি মিথ্যা বলছি না। কোনো বোন ও যদি এভাবে প্রেমে পড়ে ঘুমাতে পারে না। তারা সারা রাত মোবাইলে কথা বলে কাটিয়ে দেয়। যদি কথা না বলে তবুও একে অন্যের কথা মনে করে ঘুমাতে পারে না। কারো হয়তো কোর্টে হাজিরা দিতে হবে, তাই দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম আসে না। 

সর্বশেষ কখন আপনার অন্তরে আল্লাহর ভয়ের কারণে সারা রাত ঘুমাতে পারেন নি। আপনি কি কখনো এমন কারো সাক্ষাৎ পেয়েছেন? যার মুখ মলিন হয়ে আছে, চোখ লাল হয়ে আছে - তারপর আপনি জিজ্ঞেস করলেন: "কী হয়েছে?" সে জবাব দিলো: "আল্লাহর কসম! ভাই আমি জাহান্নামের ভয়ে ভীত।" এটা শুনলে আপনি হয়তো হেসে দিতেন। সত্যিই! বেশি ওয়াজ শোনার কারণে মনে হয় তার এ অবস্থা হয়েছে। কেউ একজন তাকে সমুদ্র সৈকতে নিয়ে যাও। তাকে কিছু মজা করতে দাও। 

আমাদের সময়ে জাহান্নামের ভয়ে ভীত হওয়া স্বাভাবিক নয়। আমাদের জীবনে সবকিছুকে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু আল্লাহর ভয় হয়ে পড়েছে অস্বাভাবিক। আর আজকে আমার আলোচনার উদ্দেশ্য এটাই। আমরা চাই মানুষ আল্লাহকে ভয় করুক। আমরা চাই মানুষ জাহান্নামের ভয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ুক। আল্লাহ বিশ্বাসীদের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন - আপনাদের চোখ কান খোলা রেখে মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তিনি সুব হানাহু ওয়া তায়ালা ধার্মিক লোকদের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন - وَالَّذِينَ هُم مِّنْ عَذَابِ رَبِّهِم مُّشْفِقُونَ - “এবং যারা তাদের পালনকর্তার শাস্তি সম্পর্কে ভীত-কম্পিত।” (70:27)  আল্লাহ ঠিক তার পরবর্তী আয়াতে বলেন - إِنَّ عَذَابَ رَبِّهِمْ غَيْرُ مَأْمُونٍ - নিশ্চয় তাদের রবের আযাব থেকে কেউ নিরাপদ নয়। (70:28) 

দুৰ্ভাগ্যবশতঃ আমি আপনি মনে মনে একটা উপসংহারে চলে এসেছি। জানেন সেই উপসংহারটি কী? আমার কোনো সমস্যা হবে না। সত্যিই? ভালোভাবে নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন। " আরে ভাই! কি যে বলেন! আমি জাহান্নামে যাবো? ভাই আমি নামাজ পড়ি, রোজা রাখি, হজ্জে যাই, আমি যদি দোজখে যাই তাহলে বাকি সবার কী হবে। মানুষ ক্লাবে যায়, জিনা করে, মদ খায় আরো কত পাপ করে! আর আমি দোজখে যাবো!! আলহামদুলিল্লাহ! আমার সমস্যা হবে না। 

এই রোগটি খুবই ভয়ংকর। কেন এই রোগটি ভয়ঙ্কর এবং সর্বত্র ছড়িয়ে আছে? আপনি যদি ভালোভাবে নিজেকে পর্যবেক্ষণ করেন দেখবেন, আপনার একটি অংশ আপনার কোনো রকম শাস্তি হবে এ ব্যাপারে সন্দেহ করে। তাই আমরা যদি জাহান্নাম সম্পর্কে আলোচনা করি তবু তার কোনো প্রভাব আমাদের উপর পড়ে না। আরে! উনি তো কাফেরদের সম্পর্কে বলছেন। আমি ভালো আছি আমি এতো খারাপ না। 

আমরা যদি আল্লাহর রাসূলের শ্রেষ্ঠতম সাহাবাদের দিকে তাকাই -  হজরত আবু বকর, ওমর, ওসমান (রা) - যাদেরকে রাসূল (স) জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। আর তাই তাঁদের এখন এটা বিশ্বাস করতে হবে যে, তাঁদের কোনো শাস্তি হবে না। কিন্তু তারপরেও তাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় ছিল। তারপরেও তারা রাত জেগে ইবাদাত করতেন। তারপরেও তারা কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোর ভয় পোষণ করতেন। 

আবু বকর (রা) কে রাসূল (স) বলেন - "হে আবু বকর! জান্নাতের আটটি দরজা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশের আহবান জানাবে।" একবার ধারণা করুন, জান্নাতের আটটি দরজা আপনাকে জান্নাতে নেয়ার জন্য পরস্পর প্রতিযোগিতা করছে। হযরত ওমর সম্পর্কে রাসূল (স) বলেন - হে ওমর! তুমি যখন কোনো পথ দিয়ে হাট, শয়তান সেখান থেকে পালিয়ে যায়। 

আর হজরত ওসমানের নিকট রাসূল (স) তার দুই কন্যাকে বিয়ে দেন। (একজনের মৃত্যুর পর অন্য জনকে) একবার কল্পনা করুন, আল্লাহর রাসূল আপনার শ্বশুর। হজরত আলী (রাঃ) সহ এরকম দশ জন সাহাবীকে জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হয়। তারপরেও তাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় ছিল। 

এখন আমি আপনাদের জিজ্ঞেস করছি, তাহলে কেন আমাদের এ ব্যাপারে কোনো উদ্বেগ উৎকণ্ঠা নেই। তাহলে আমাদের অন্তরে কোনো ভয় নেই কেন? মানুষ চালাকি করে বলে, আমার আল্লাহর রহমতের উপর বিশ্বাস আছে। আমি আপনার মত নই। আমার আল্লাহর রহমত এবং দয়ার উপর বিশ্বাস আছে। আমি তাদের বলি - তাহলে আবু বকর ওমরের কী ছিল? আল্লাহর দয়ার উপর সন্দেহ?? না, এটা হতে পারে না। 

আপনি যদি আসলেই ধার্মিক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি তাদের পথে থাকবেন। আপনার অন্তর যদি প্রশান্ত হয়, তাহলে আপনার অন্তরেও তাদের মত সবসময় একটি সাংঘর্ষিক অনুভূতি বিরাজমান থাকবে। ভয় এবং আশা, ভয় এবং আশা। কিন্তু আমাদের আছে আশা, আশা, আশা এবং আশা। আল্লাহর ভয়? মাঝে মধ্যে আপনার অন্তরে অনুভূত হয়। কোনো লেকচার শুনলে হয়তো কিছুটা অনুভূত হয়। তারপর আবার মানুষের সাথে মিশলে তা হারিয়ে যায়। আমরা দিন রাত সারাক্ষন হাসি আনন্দে মেতে থাকি। অথচ আল্লাহ বলেন - أَفَمِنْ هَٰذَا الْحَدِيثِ تَعْجَبُونَ - وَتَضْحَكُونَ وَلَا تَبْكُونَ - "তোমরা কি এই বিষয়ে আশ্চর্যবোধ করছ? এবং হাসি- ঠাট্টা করছ! ক্রন্দন করছ না?" (53:59-60) সত্যিকারের প্রশান্ত অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকতে হবে। আল্লাহর ভয়ে কাঁদতে হবে। আমাদের এই অনুভূতিগুলো থাকতে হবে, এগুলো হলো সঠিক ঈমানের লক্ষণ।

এখন এই সমস্যার অন্যতম একটি কারণ হলো, অনেক সময় আমরা জানি না যে কেন ভয় করবো। এই জন্য আল্লাহর শাস্তির বিস্তারিত বর্ণনা জানাটা জরুরি। আল্লাহ কুরআনে তাঁর শাস্তির বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন। আর রাসূল (স) জাহান্নামের শাস্তির কথা আরো সবিস্তারে উল্লেখ করেছেন।  রাসূল (স) জাহান্নামের কঠোর আজাবের এমন বর্ণনা দিয়েছেন যে, আপনি যদি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে বিশ্বাস করেন - তাহলে এসব বর্ণনা শুনার পর ঘুমাতে পারবেন না। আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালার শাস্তির ভয়ে আপনি সবসময় ভীত থাকবেন। প্রিয় ভাই এবং বোনেরা, আমরা যতই ভয়ঙ্কররূপে দোজখের শাস্তির কথা বর্ণনা করি না কেন, এটা কখনোই যথেষ্ট হবে না। কারণ শব্দ কখনই বাস্তবতার মত হবে না। আর কখনো দেখেননি এমন কিছুর বর্ণনা শুনে তার প্রকৃত অবস্থা উপলব্ধি করা আসলেই কঠিন। আল্লাহ কুরআনে জাহান্নামের আগুনের আজাবের কথা উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ এবং তার রাসূল আমাদের সতর্ক করেছেন। 

শুধু আমাদের বুঝার জন্য বলছি, কখনো কখনো কোন কিছু উপলব্ধি করার জন্য যুক্তি একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। কিছু একটা হয়তো আমার দেখার সাধ্যের বাইরে। যেমন আমি বললাম - এখান থেকে বিমানে করে সিডনি যেতে চার ঘন্টা লাগে। তখন আপনার ব্রেইন নিজের মতো করে দূরত্ব টা সম্পর্কে একটা ধারণা নিয়ে নেয়। কারণ আপনি এরকম দূরত্বে পূর্বে ভ্রমণ করেছেন। কিন্তু যখন আমি বলি - এখান থেকে সূর্যের দূরত্ব ১৫০ মিলিয়ন কিলোমিটার। এই বড় বড় নাম্বারগুলো আমাদের কাছে একটু বেমানান। আপনি তখন ভাবেন, ও! অনেক দূরে। কারণ এই দূরত্ব আপনার উপলব্ধি ক্ষমতার বাইরে। আবার আমি যদি বলি, আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে নিকটবর্তী  নক্ষত্রের দূরত্ব ৪.৩ আলোকবর্ষ। আলোকবর্ষ, মানে আলোর গতিতে এক বছর গেলে যতদূর যাওয়া যাবে, ততটুকু হলো এক আলোকবর্ষ। এইরকম চার আলোকবর্ষ দূরে। এখন বিষয়টা আসলেই হাস্যকর। আপনার পক্ষে এই দূরত্ব বোঝা আরো কঠিন। 

ঠিক একইভাবে, আমি যত ভয়ংকরভাবেই জাহান্নামের শাস্তির কথা বর্ণনা করি না কেন, বিশ্বাস করুন, এটা তার চেয়েও ভয়ংকর। আমার আপনার ধারণা কল্পনার চেয়েও ভয়ংকর। আপনার ব্রেইনকে যতটুকু বোঝার যোগ্যতা দিয়ে তৈরী করা হয়েছে, এটা তার থেকেও ভয়ংকর। শুধুই শাস্তি আর শাস্তি। 

আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা নিখুঁত। যখন তিনি পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন, জান্নাতে তাঁর হবে পুরস্কার নিখুঁত। আবার যখন তিনি শাস্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তাঁর শাস্তিও নিখুঁত। নিখুঁত শাস্তি। এর চেয়ে বেদনাদায়ক কোনো শাস্তি হতে পারে না, এর চেয়ে কষ্টকর কোনো শাস্তি হতে পারে না। কারণ তিনিই আমাদের এই শরীর তৈরী করেছেন। তিনিই আপনার রূহ তৈরী করেছেন। আর তিনিই সুব হানাহু ওয়া তায়ালা আপনার শরীর এবং আত্মার জন্য শাস্তি তৈরী করেছেন, যদি আপনি ভুল পথ গ্রহণ করে থাকেন। 

রাসূল (স) আমাদের বুঝার জন্য বলেন - "জাহান্নামের সবচেয়ে কম শাস্তি যাকে দেয়া হবে তাকে জ্বলন্ত কয়লার দুটি জুতা পরিয়ে দেয়া হবে, এর ফলে তার মস্তিস্ক ফুটতে থাকবে।" জ্বলন্ত কয়লার উত্তাপ তার পা থেকে মাথায় গিয়ে পৌঁছবে, এবং মস্তিস্ক এতে ফুটতে থাকবে। এখনো আপনাদের খারাপ খবর দেই নি। খারাপ খবর হলো, সেই লোক সন্দেহাতীতভাবে মনে করবে এবং বলে উঠবে, কোনো শাস্তি এর চেয়ে কষ্টকর হতে পারে না। কিন্তু আল্লাহর কসম! সে আসলে সবচেয়ে কম শাস্তি ভোগ করছে। আল্লাহর পক্ষ থেকে জাহান্নামে যে শাস্তি রয়েছে সে তুলনায় ঐ লোক আনন্দে আছে। 

আমার প্রিয় ভাই এবং বোনেরা জাহান্নামের শাস্তি খুবই ভয়ংকর। দুনিয়াতে আমাদেরকে যে শরীর দেয়া হয়েছে সে শরীর নিয়ে কেউ জাহান্নামে প্রবেশ করতে পারবে না। সে বাষ্প হয়ে উড়ে যাবে। তাই আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা মানুষের শরীরকে নতুন ডিজাইনে তৈরী করবেন। এক নম্বর, মানুষ অনেক বড় আকৃতির হবে। হাদিসে এসেছে, জাহান্নামীদের দাঁত হবে ওহুদ পাহাড়ের সমান। মদিনায় গিয়েছেন কখনো? ওহুদ পর্বত দেখেছেন? সে ওহুদ পাহাড়ের সমান হবে আপনার দাঁত; শরীর নয়, আপনি নিজে নন। চামড়ার পুরুত্ব হবে তিন দিন ভ্রমণের দূরত্বের সমান। যেন আগুনের আজাব সামলাতে পারে। কিন্তু তারপরেও আপনার শরীর এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গ টিকবে না। সেগুলো গলে যাবে। كُلَّمَا نَضِجَتْ جُلُودُهُمْ بَدَّلْنَاهُمْ جُلُودًا غَيْرَهَا لِيَذُوقُوا الْعَذَابَ - "যখনই তাদের চামড়াগুলো পুড়ে যাবে তখনই আমি তাদেরকে পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়ে যাতে তারা আস্বাদন করে আযাব।" (সূরা নিসা আয়াত ৫৬।) 

আমি জানি না আপনারা কেউ এই দুনিয়ায় আগুনের উত্তাপ কখনো অনুভব করেছেন কিনা। সিডনিতে আমার এক বন্ধু আছে, একবার এক একসিডেন্টে আগুনে তার চামড়া পুড়ে যায়। তার মুখ পুড়ে গেছে, সারা শরীর পুড়ে গেছে। সে তারপরেও বেঁচে ছিল। কিন্তু এখনো তার মুখে সে সময়ের যন্ত্রণার ছবি ফুটে উঠে। এটা হলো দুনিয়ার আজাবের শাস্তি! আর দোজখের আগুন দুনিয়ার আগুনের চেয়েও ৭০ গুণ বেশি উত্তপ্ত। এক হাজার বছর জ্বালানোর পর আগুন উজ্জ্বল লাল বর্ণ ধারণ করে। তারপর আরো এক হাজার বছর জ্বালানোর পর এটা সাদা বর্ণ ধারণ করে। তারপর আরো এক হাজার বছর জ্বালানোর পর এটা কুঁচকুঁচে কালো রং ধারণ করে। জান্নামের আগুন লাল, সাদা বা হলুদ নয়। এর রং হলো কালো। 

আল্লাহর ডিজাইনের দিকে লক্ষ্য করুন। এই দুনিয়ার যে কোনো শাস্তিই আপনি গ্রহণ করেন না কেন, কিছু ফ্যাক্টর এই শাস্তিকে হ্রাস করে দেয়। তারা বলে কিছু কিছু জিনিস সব সময় শাস্তিকে কমিয়ে দেয়। কী সেগুলো? এই পৃথিবীতে যখন আপনি কোনো শাস্তি পান, আপনার এই আশা রয়েছে যে এক সময় এই শাস্তির সমাপ্তি ঘটবে। অস্ট্রেলিয়াতে আপনি যদি জেলে যান - যেটা পৃথিবীর অন্যান্য রাষ্ট্রের তুলনায় হোটেলে থাকার মত - আপনি আপনার পরিবারকে মিস করবেন, হতাশ হয়ে পড়বেন, জেলের ভেতর মানুষ এমন হতাশ হয়ে পড়ে যে আত্মহত্যা করতে চায়। কল্পনা করতে পারেন? ছোট্ট একটি সেলের ভেতর দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা! আমরা তো কল্পনা করতেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ি। আল্লাহু আকবার। এটা আসলেই কঠিন! 

এমনকি এই মানুষটিরও আশা রয়েছে যে, একদিন আমি এই জেল থেকে ছাড়া পাবো এবং পরিবারের কাছে ফেরত যেতে পারবো। অথবা আমি মারা যাবো। সবচেয়ে খারাপ যা হতে পারে তা হলো - এই জেলের ভেতরেই আমি মৃত্যুবরণ করবো এবং আমার মৃত্যুর মাধ্যমে এই শাস্তির সমাপ্তি ঘটবে। 

আর জাহান্নামে কী হবে? জাহান্নামের শাস্তিকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে, সময় সেখানে অর্থহীন হয়ে পড়বে। সময় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে। কেন এমন হবে? কারণ যাদের ঈমান নেই তারা জাহান্নামে অনন্ত কাল জ্বলতে থাকবে। এই শাস্তির কোনো সমাপ্তি নেই। শত, সহস্র, কোটি, বিলিয়ন, ট্রিলিয়ন বছরেও এর সমাপ্তি ঘটবে না, অনন্ত কাল ধরে চলতে থাকবে। 

কিন্তু হ্যাঁ, আপনি যদি ঈমানদার হয়ে থাকেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ এই কালেমায় বিশ্বাস করেন তাহলে জাহান্নামে গেলেও একদিন এর থেকে মুক্তি পাবেন। কিন্তু এতে  খুব বেশি খুশি হয়ে পড়বেন না। ইয়াহুদীদের মতো বলবেন না যে, আমরা হলাম আল্লাহর পছন্দনীয়, নির্বাচিত জনগোষ্ঠী। এমনকি যদি আমরা জাহান্নামে যাই, তা হবে কয়েক দিনের জন্য। আজকাল মুসলমানরাও এভাবে কথা বলে। কে বলেছে এটা কিছু দিনের জন্য? আল্লাহর কাছ থেকে আপনি কি কোনো চুক্তিপত্র পেয়েছেন? হ্যাঁ আপনি একদিন মুক্তি পাবেন। কিন্তু জানেন? আল্লাহ বলেছেন - وَإِنَّ يَوْمًا عِندَ رَبِّكَ كَأَلْفِ سَنَةٍ مِّمَّا تَعُدُّونَ - "আপনার পালনকর্তার কাছে একদিন তোমাদের গণনার এক হাজার বছরের সমান।" (22:47) 

জাহান্নামের শাস্তি হতে পারে হাজার বছর, মিলিয়ন বছর, বিলিয়ন বছর বা তারও বেশি। আল্লাহর শপথ! এমনকি জাহান্নামের এক সেকেন্ডের শাস্তিও অকল্পনীয় পীড়াদায়ক।  

রাসূল (স) বলেছেন, এমন এক ব্যক্তিকে জাহান্নামে আনা হবে যে দুনিয়াতে সবচেয়ে বিলাসবহুল জীবন যাপন করেছে। (এমন সুখী মানুষ যে জীবনে কখনো কষ্ট দেখেনি। টাকা-পয়সা, নারী, বন্ধু-বান্ধব, স্বাস্থ্য, ধন-সম্পদ সবই তার ছিল। কিন্তু পরকালে সে জাহান্নামে গেলো।) অতঃপর আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা তাকে এক সেকেন্ডের জন্য দোজখে রাখবেন। তারপর তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তুমি কি তোমার জীবনে কখনো কোনো বিলাসিতা দেখেছো? তখন সে উত্তর দিবে - আল্লাহর শপথ! আমার আমার জীবনে কখনো কোনো সহজ সময় দেখিনি। (এই এক সেকেন্ডের শাস্তির ফলে তার এই অবস্থা হবে।) 

এখন কল্পনা করুন, আপনি যদি হাজার বছর সেখানে শাস্তি পান! কী অবস্থা হবে? এই দুনিয়ার সবচেয়ে সহজ পরীক্ষাও আমরা সহ্য করতে পারি না। এই কক্ষটি যদি একটু গরম হয়ে পড়ে আমরা সহ্য করতে পারি না। জাহান্নামের শাস্তি সহ্য করার কথা কল্পনা করুন!! 

সুতরাং যারা একদিন জাহান্নাম থেকে বের হওয়ার আশায় আছেন, আমি দুঃখিত, আপনার কোনো ধারণাই নেই আপনি কী নিয়ে খেলছেন। আপনি এমন আগুন নিয়ে খেলছেন যেখানে সময়ের কোনো অর্থ থাকবে না। যদি এই শাস্তি হাজার বছর, মিলিয়ন বছরের শাস্তিও হয়, আপনাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য এটা যথেষ্ট। তাই এই আশা করা যে একদিন আমি মুক্তি পাবো - আল্লাহর ডিজাইন করা শাস্তিতে এমনকি ঈমানদারদের জন্যেও এটা বড় কোনো আশা নয়।

দ্বিতীয়ত, দুনিয়ার শাস্তির ক্ষেত্রে কিছু কাল পর মানুষ অভ্যস্ত হয়ে পড়ে।

 মনে করুন, আপনি জেলখানায় গিয়েছেন কাউকে দেখতে। অস্ট্রেলিয়ায় না - এখানে হিউম্যান রাইটস সহ বিভিন্ন কারণে জেলখানার অবস্থা এতো খারাপ নয়। মিশরের কথা ধরুন। আমি যেখান থেকে এসেছি। কাউকে যদি জেলখানায় রাখা হয় - বিশেষ করে, রাজনৈতিক বন্দী বা ধর্মীয় নেতাদের ক্ষেত্রে এটা বেশি ঘটে - তাঁদের উপর প্রতিদিন নির্যাতন চালানো হয়। প্রথম দিনের নির্যাতন সবচেয়ে কষ্টের। কারণ সে ব্যক্তি হয়তো এইসবে অভ্যস্ত নয়, নম্র- ভদ্র মানুষ। তারপর তারা তাঁকে চাবুক মারে, মারধর করে, ঝুলিয়ে রাখে, ইলেকট্রিক শক দেয় এভাবে নানারকম উপায়ে নির্যাতন করে। খুবই খারাপ অবস্থা। এভাবে প্রতিদিন নির্যাতন চলতে থাকে। একমাস পরে, বন্দীর চামড়া শক্ত হয়ে যায়। তারা সজোরে আঘাত করে আপনি হাসি দেন, তারা লাথি মারলে আপনি হাসি দিয়ে বলেন, আরও বেশি লাথি মারো। একবছর পরে, তোমরা যা খুশি তাই করতে পারো। কেন? কারণ আপনার শরীর নির্যাতনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু জাহান্নামে কী হয়? জাহান্নামে আল্লাহ মানুষকে এই বিলাসিতার অনুমতি দেননি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা জাহান্নামে মানুষকে অবসর নেয়ার কোন সুযোগ দেননি। কোন অবসর নেই। فَذُوقُوا فَلَن نَّزِيدَكُمْ إِلَّا عَذَابًا - “অতএব, তোমরা আস্বাদন কর, আমি কেবল তোমাদের শাস্তিই বৃদ্ধি করব।” (78:30) কখনোই একরকম নয়। এটা কখনোই একরকম হবে না। প্রতিদিন, নতুন ধরণের শাস্তি, নতুন ধরণের ব্যথা। চামড়া জ্বলে গেলে আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা নতুন চামড়া দিবেন। সর্বদা, কষ্টের পর কষ্ট, কষ্টের পর কষ্ট। আর এই কষ্ট  সবসময় বাড়তে থাকবে, বৃদ্ধি পেতে থাকবে। কোন বিশ্রাম নেই, কোন আশা নেই। 

স্কলাররা বলে থাকেন, দুনিয়ার যে কোন শাস্তির ক্ষেত্রে আশে পাশে অনেক মানুষ থাকে যারা আপনার প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন করে। জেলখানার অন্য বন্দীরা। বন্দীরা একে অন্যের বন্ধু হওয়া শুরু করে। যেহেতু তারা একসাথে নির্যাতন সহ্য করে তাই এই বন্ধুত্ব কিছুটা হলেও শাস্তির মাত্রা কমিয়ে দেয়।  

আমি চাবুকের কশাঘাত খাচ্ছি সেও খাচ্ছে। আমাকে পিটানো হচ্ছে আবার তাকেও পিটানো হচ্ছে। এরফলে কিছুটা হলেও মনে সান্ত্বনা পাওয়া যায়।আল্লাহ তায়ালা বলেন -  وَلَن يَنفَعَكُمُ الْيَوْمَ إِذ ظَّلَمْتُمْ أَنَّكُمْ فِي الْعَذَابِ مُشْتَرِكُونَ - "তোমরা যখন কুফর করছিলে, তখন তোমাদের আজকের আযাবে শরীক হওয়া কোন কাজে আসবে না।" (৪৩:৩৯)  

এমনকি জাহান্নামে এই সুবিধাটুকুও পাওয়া যাবে না। মানুষ একে অন্যকে মন্দ কথা বলবে, দোষ দিতে থাকবে, শত্রুতামূলক কথা বলবে। অবস্থা এমন হবে যে, এক সাথে শাস্তি পাওয়ার কারণে যে একটা মানসিক স্বান্তনা পাওয়ার কথা ছিল সেটাও পাওয়া যাবে না। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা শাস্তির এই ডিজাইন করেছেন। 

একদিন রাসূলুল্লাহ (স) তাঁর সাহাবীদের সাথে বসে আছেন। এমন সময় একটি পাথর মাটিতে পড়ার প্রচণ্ড আওয়াজ সাহাবীরা শুনতে পেলেন। তো, রাসূলুল্লাহ (স) জিজ্ঞেস করলেন - "তোমরা কি জানো এটি কিসের আওয়াজ?  তাঁরা বললেন - আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ভালো জানেন।  তিনি বললেন - এটি একটি পাথর পড়ার আওয়াজ যা সত্তর বছর আগে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এটি সত্তর বছর ধরে জাহান্নামে পড়ছিলো, আর ঠিক এখন এটি জাহান্নামের তলায় গিয়ে আঘাত করেছে। জাহান্নাম এমনই বিশাল। অসহনীয় তাপ। গভীরতা অনেক। জাহান্নামের অলংকার হলো, শিকল। পানীয় হল, তীব্র গরম পানি।  وَإِن يَسْتَغِيثُوا يُغَاثُوا بِمَاءٍ كَالْمُهْلِ يَشْوِي الْوُجُوهَ ۚ  - "যদি তারা পানীয় প্রার্থনা করে, তবে পুঁজের ন্যায় পানীয় দেয়া হবে যা তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে।" (18:29) 

------------------------------------------ 

প্লিজ, জীবনে একটি বারের জন্যে হলেও কল্পনা করুন আপনি এই ভয়ংকর শাস্তির মাঝে রয়েছেন। নিজেকে জাহান্নামের আগুনে কল্পনা করুন। এভাবেই আপনি অন্তরকে পরিবর্তন করতে পারবেন। এভাবে কল্পনা করার মাধ্যমেই আমরা উপলব্ধি করতে পারবো দ্বীনকে উপেক্ষা করা কতটা ভয়ংকর! নিজেকে সেখানে কল্পনা করুন। 

শয়তানের এই ওয়াদায় কোনো বিশ্বাস রাখবেন না যে "এটা অনেক দূরের ব্যাপার, এটা কখনো ঘটবে না।" আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি - আপনি বিপদে আছেন! আল্লাহর শপথ! কেউ নিরাপদে নেই। 

জাহান্নামে এই অবস্থায় নিজেকে কল্পনা করুন। আপনি সাহায্যের জন্য কাঙ্গাল হয়ে আছেন। وَقَالَ الَّذِينَ فِي النَّارِ لِخَزَنَةِ جَهَنَّمَ ادْعُوا رَبَّكُمْ يُخَفِّفْ عَنَّا يَوْمًا مِّنَ الْعَذَابِ - "যারা জাহান্নামে আছে, তারা জাহান্নামের রক্ষীদেরকে বলবে, তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে বল, তিনি যেন আমাদের থেকে একদিনের আযাব লাঘব করে দেন।" (40-49) 

আমার প্রিয় ভাই এবং বোনেরা, মানুষ জাহান্নামের ফেরেশতাদের কাছে কাকুতি মিনতি করতে থাকবে - বের হয়ে যাওয়ার জন্য নয় বা শাস্তি বন্ধ করার জন্য নয় - তাদের সর্বোচ্চ আশা হলো শুধু একদিনের জন্য একটু বিরতি। ''আমাকে শুধু একটু বিরতি দিন, একটু নিঃশ্বাস নিতে দিন।" ادْعُوا رَبَّكُمْ يُخَفِّفْ عَنَّا يَوْمًا مِّنَ الْعَذَابِ - “তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে বল, তিনি যেন আমাদের থেকে একদিনের আযাব লাঘব করে দেন।” 

এভাবে কতকাল যে তারা ডাকতে থাকবে তা একমাত্র আল্লাহ জানেন। অবশেষে জাহান্নামের ফেরেশতারা জবাব দিবে - قَالُوا أَوَلَمْ تَكُ تَأْتِيكُمْ رُسُلُكُم بِالْبَيِّنَاتِ - " রক্ষীরা বলবে, তোমাদের কাছে কি সুস্পষ্ট প্রমাণাদিসহ তোমাদের রসূল আসেননি?  قَالُوا بَلَىٰ - "তারা বলবে হ্যাঁ।"  রাসুলরা সুস্পষ্ট প্রমাণাদি সহ আমাদের কাছে এসেছিলো। আলেম ওলামারা আমাদের এই বিষয়ে জ্ঞান দিয়েছিলেন। আমরা উপেক্ষা করেছি। আমরা এই  দুনিয়া দ্বারা প্রতারিত হয়েছিলাম। দুনিয়ার ভোগ বিলাস আর অলীক উপকরণ দ্বারা আমরা বোকা বনে গিয়েছিলাম। 

আমরা শয়তান এবং আমাদের প্রবৃত্তির ধোঁকায় পড়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম।  ۖ قَالُوا بَلَ - হ্যাঁ, তারা এসেছিলো। কিন্তু প্লিজ আমাদেরকে একটু আশা দেখান। قَالُوا فَادْعُوا ۗ - জাহান্নামের রক্ষীরা বলবে - যত পারো দোয়া করতে থাকো। যত সময় ধরে পারো কাকুতি মিনতি করতে থাকো, কোনো লাভ হবে না। তোমাদের সকল দোয়াই আজ ব্যর্থ। কোনো দয়া প্রদর্শন করা হবে না। এমন কোনো জায়গায় নিজেকে কল্পনা করতে পারেন? যেখানে কোনো দয়া দেখানো হয় না। কোনো রাহমাহ নেই, কোনো আশা নেই। 

নিজেকে এই অবস্থায় কল্পনা করুন, তারপর আল্লাহর আদেশ অমান্য করার মাধ্যেম যে স্টুপিড মজা পেয়ে থাকেন তার সাথে তুলনা করুন। আল্লাহর শপথ করে বলছি, কারো মাথায় যদি সামান্যতম বুদ্ধিও থেকে থাকে সে কখনো এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার মজাকে প্রাধান্য দিবে না। আর এই মজা তো অল্পতেই শেষ হয়ে যায়। সেখানকার এক সেকেন্ডের শাস্তির সাথেও এর কোনো তুলনা চলে না। قَالُوا فَادْعُوا ۗ وَمَا دُعَاءُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ - "রক্ষীরা বলবে, তবে তোমরাই দোয়া কর। বস্তুতঃ কাফেরদের দোয়া নিস্ফলই হয়।" 

-- ওমর আল বান্না

পরিশিষ্টঃ

আপনি যদি আল কুরআন গভীর মনোনিবেশ সহকারে অধ্যয়ন করেন তাহলে আপনার কাছে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে উঠবে যে, আল কুরআন শুধু মাত্র একটি বিষয় নিয়েই উদ্বিগ্ন, আর তা হলো - আপনাকে আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানো। এটিই আল কুরআনের প্রধান কনসার্ন (চিন্তার বিষয়)। 

আল্লাহ এই দুনিয়ার জীবন তৈরী করেছেন। তারপর মানুষের মৃত্যু হবে, এরপর বিচার দিবসে সকল মানুষের বিচার হবে। তারপর কেউ জাহান্নামে আর কেউ জান্নাতে যাবে। এই বইয়ের প্রধান উদ্দেশ্য হলো আপনাকে আমাকে জাহান্নামের আগুন সম্পর্কে সতর্ক করা। এটাই আল কুরআনের প্রধান বার্তা। 

আপনি যদি আল কুরআনকে মহা বিশ্বের মালিকের বাণী হিসেবে অধ্যয়ন করেন তাহলে বার বার এই বার্তাটি পাবেন যে, আপনার সৃষ্টিকর্তা চান আপনাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে। কুরআনের সর্বত্র আপনি আল্লাহর এই অসীম করুনার সন্ধান পাবেন। 

কুরআনের অনেক সূরায় রহমান (পরম করুনাময়) শব্দটি পাবেন। যেমন, সূরা আর রহমান, সূরা ফুরকান, সূরা নাবা এবং সূরা মূলক - এ এই শব্দটি রয়েছে। অর্থাৎ অসমী দয়ালু আল্লাহ আপনাকে আসলেই জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে চান। [আপনার আমার দায়িত্ব হলো তাঁর কথা মত চলা। তাহলেই তিনি আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচিয়ে দিবেন]

সূরা নাবার ২১ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে - إِنَّ جَهَنَّمَ كَانَتْ مِرْصَادًا - "জাহান্নাম তো ওঁৎ পেতে আছে।" অর্থাৎ জাহান্নাম সকলের অপেক্ষায় আছে। কারো এটাকে এড়ানোর সুযোগ নেই। প্রতিটি মানুষকেই জাহান্নাম অতিক্রম করতে হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post