ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর
মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে কেউ পারদর্শী হলে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের চাকরি তার জন্য উপযুক্ত। একজন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর গ্রাহককে কথার মাধ্যমে পণ্য বা সেবা গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করে। সেই পণ্যের বা সেবার নমুনা উপস্থাপন ও এর মাধ্যমে গ্রাহকের লাভ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে ধারণা দেন। বছরে একজন পূর্ণকালীন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের বেতন প্রায় ২৭ লাখ টাকা।
ক্লাসরুম বা লাইব্রেরি পরিদর্শক
শৃঙ্খলা রক্ষায় ক্লাসরুম, লাইব্রেরি, জিম বা বাস যেকোনো স্থানে একজন পরিদর্শককে থাকতে হয়। একজন পরিদর্শকের উন্নতমানের যোগাযোগের দক্ষতা ও শিশুদের সঙ্গে কাজ করার সামর্থ্য থাকতে হবে। একজন পরিদর্শক ১৭ লাখ ২৪ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারেন।
গ্রাহক সেবা
মানুষকে সহযোগিতা করার মানসিকতা ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দক্ষতা থাকলে গ্রাহক সেবার চাকরি নেয়া যায়। ঘরে বসেও গ্রাহক সেবার চাকরি সম্ভব। কারণ অনেক গ্রাহক সেবাকেন্দ্র অনলাইনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। গ্রাহক সেবার বিভিন্ন দিক রয়েছে। শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন অনুযায়ী একজন গ্রাহক সেবাদাতাকে প্রতি ঘণ্টার কাজের জন্য ১৩৪৪ টাকা দেয়া হয়।
তথ্য সংগ্রাহক
তথ্য সংগ্রাহক বা ডাটা এন্ট্রির চাকরি সাধারণত অনলাইনের মাধ্যমে করতে হয়। দ্রুত ও নির্ভুলভাবে টাইপ করার দক্ষতা থাকলে এটি আপনার জন্য উপযুক্ত চাকরি। কোনও কোনও কোম্পানিতে চাকরির জন্য বিশেষ দক্ষতা লাগে। যেমন হাসপাতালে কাজ করার জন্য স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা জরুরি। প্রতি ঘণ্টায় তথ্য সংগ্রাহককে প্রায় ১৩০০ টাকা বেতন দেয়া হয়।
ডেলিভারি ম্যান
মানুষের ঘরে খাবার বা অন্য যে কোনও পণ্য পার্সেল হিসেবে পৌঁছে দেওয়ার অনেক চাকরি রয়েছে। এসব চাকরির মধ্যে ডেলিভারি ম্যান অন্যতম। শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী একজন ডেলিভারি ম্যানকে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৮০০ টাকা বেতন হিসেবে দেয়া হয়। চাকরিতে অন্য সুবিধাগুলো হলও বিনামূল্যে খাবার, স্বয়ংক্রিয় বিমা সুবিধা, গাড়ির লাইসেন্স ও নিজের খেয়াল খুশিমতো সময় পাওয়া যায়।
ফিটনেস ইনস্ট্রাক্টর
আপনি কি কখনো জিমে গেছেন? ফিটনেস ইনস্ট্রাক্টর হলে আপনাকে স্বাস্থ্যকরভাবে কীভাবে চলা যায় তার দিকনির্দেশনা দিতে হবে। দক্ষতার ওপর নির্ভর করে আপনি ব্যক্তিগত প্রশিক্ষকও হতে পারেন। শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী এই চাকরিতে গড়ে প্রায় ১৬০০ টাকা বেতন পাওয়া যায়।
স্বাদ পরীক্ষক
আপনি কি খেতে ভালোবাসেন? আপনি কি রান্না করতে পছন্দ করেন? বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে প্রডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা স্বাদ পরীক্ষক নিয়োগ দেয়। তাদের কাজ হলও খাবারের গুণগত মান যাচাই করা। আপনি যদি খাদ্য রসিক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনিও এই চাকরি নিতে পারেন। এতে গড়ে ৯২৪ টাকা দেয়া হয়।
ফ্রিল্যান্সিং
ঘরে বসে স্মার্ট ইনকামের অন্যতম উপায় ফ্রিল্যান্সিং। দক্ষতাকে ব্যবহার করে আয় বাড়ানোর পথ এটি। অনেকেই চাকরির বেতনে সন্তুষ্ট না হয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার উজ্জ্বল ক্যারিয়ার তৈরি করতে চান। আপওয়ার্ক থেকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রের আপওয়ার্ক ফ্রিল্যান্সিংয়ের এক গবেষণায় বলা হয়, দেশটির ৭০ শতাংশ মানুষ ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও প্রতি ঘণ্টায় তাদের আয় হয় ২৮ ডলার।
অতিথি সেবা
হোটেল, ক্লাব, মিউজিয়াম, অতিথি কেন্দ্র, ইভেন্টপ্লেস এবং শিশুদের বিনোদনের স্থানে অতিথি সেবা দেয়া হয়ে থাকে। অতিথি সেবক হিসেবে আপনাকে পার্টি ও ট্যুরের পরিকল্পনা এবং ইভেন্টের ব্যবস্থা করার কাজ করতে হবে। খেয়াল খুশিমতো সময় দিয়ে সহজে আয় বাড়ানো সম্ভব। পে-স্কেল অনুযায়ী এই চাকরির গড় বেতন ৯২৪ টাকা।
হোটেল প্রহরী
হোটেল প্রহরীর কাজ হলও বিভিন্ন হোটেল বা রিসোর্টে আসা অতিথিদের সহায়তা করা। এই চাকরি করার জন্য যোগাযোগের দক্ষতা থাকা জরুরি। পে-স্কেলের তথ্য অনুযায়ী হোটেল প্রহরীর গড় বেতন প্রায় ১১০০ টাকা।
কেয়ারটেকার
কেয়ারটেকারের দায়িত্ব বাড়িতে নিরাপত্তার পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখা। এছাড়া আর কিছুই তাকে করতে হয় না। কোথাও কারও কোনও সমস্যা হলে আপনাকে তার সমাধান ও প্রতিদিনের নির্ধারিত কিছু কাজ করতে হবে। পে-স্কেলের তথ্য অনুযায়ী কেয়ারটেকারের বেতন ৯২৪ টাকা।
মার্কেট রিসার্চ বা সার্ভে কলার
মার্কেট রিসার্চ বা সার্ভে কলারের কাজ সবচেয়ে সহজ কাজ। এখানে আপনাকে কোনও পণ্য বিক্রির চেষ্টা করা লাগবে না। বরং গ্রাহকদের কাছ থেকে পণ্য সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। একজন মার্কেট রিসার্চ কলারের গড় বেতন ১০০৮ টাকা।
মার্চেন্ডাইজার
বিভিন্ন মুদি দোকান, পাইকারি দোকান ও ফার্মেসিতে বাইরের বিক্রেতারা শুভেচ্ছা কার্ড, ফুল, সংবাদপত্র এবং অন্যান্য বিশেষায়িত জিনিস রেখে আসেন। এসব বিক্রেতাকে খণ্ডকালীন মার্চেন্ডাইজার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পেস্কেলের তথ্য অনুযায়ী এতে গড় বেতন ১০০৮ টাকা।
হকার
এখন অবধি সংবাদপত্র বিক্রির জন্য হকারদের দেখা যায়। অতিরিক্ত উপার্জনের জন্য ভোরে ঘুম থেকে উঠে কাজ শুরু করেন তারা। সংবাদপত্র বিক্রি করে সপ্তাহে তারা ৪২ হাজার টাকা আয় করেন।
অনলাইন সেলস
ই-বে বা অ্যামাজনের মাধ্যমে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করেন। অনেকেই অনলাইনে পণ্য বিক্রির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করেন। ইতসির মাধ্যমে অনলাইনে সহজেই পণ্য বিক্রি করা যায়। পোশমার্কের মতো অন্য সাইট ব্যবহার করে মানুষ কম পরিশ্রম করে আয় বাড়াতে সক্ষম হচ্ছে।
পার্কিং অ্যাটেনডেন্ট
গাড়ি পার্কিংয়ের চাকরি এটি। পার্কিং অ্যাটেনডেন্টের কাজ হলও পার্কিংয়ের জন্য চালকদের টিকেট দেয়া এবং ফি নেয়া। তাদের গড় বেতন প্রতি ঘণ্টায় ৮৪০ টাকা।
পেট সিটার
আপনি কি বিড়াল বা কুকুর পোষেন? আপনার বাসায় যদি অতিরিক্ত কোনও ঘর থাকে তাহলে আপনি এসব ঘরে অন্যদের কুকুর, বিড়াল এনে দেখাশুনা করতে পারেন। পেট সিটার হিসেবে অনেক মানুষ কম পরিশ্রমে বেশি আয় করেন। পে-স্কেলের তথ্য অনুযায়ী একজন পেট সিটারের বেতন প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১১০০ টাকা।
খুচরা কর্মকর্তা
সহজে কোথায় আয় করা যাবে এর অনুসন্ধান করেন অনেকে। অনেকে আবার এও ভাবেন কোথায় গেলে আনন্দের সঙ্গে কাজ করা যায়। বিভিন্ন খুচরা প্রতিষ্ঠানেও যে আনন্দ নিয়ে কাজ করা যায় অনেকের সেই বিষয়ে ধারণা নেই। বিভিন্ন খুচরা প্রতিষ্ঠানে অল্প কাজ করে বেশি আয়ের সুযোগ রয়েছে। খুচরা কর্মকর্তাদের গড় বেতন ৭৫৬ থেকে ২১০০ টাকা।
রাইড শেয়ারিং চালক
উবার, পাঠাও, ওভাইয়ের মতো দেশের বড় বড় রাইড শেয়ারিং অ্যাপের মাধ্যমে স্মার্ট ইনকাম করা সম্ভব। অ্যাপে সাইনআপ করার পর রাইড শেয়ারিং সেবার মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের পথ খোলা রয়েছে। একজন উবার চালক দিনে ৪২০ থেকে ২১০০ টাকা উপার্জন করতে পারেন।
রিসেপশন
একসঙ্গে অনেকগুলো কাজ করতে পারেন? তার জন্য উপযুক্ত চাকরি রিসেপশন। ফ্রন্ট ডেস্কের চাকরি হিসেবে একজন রিসেপশনিস্ট একইসঙ্গে ক্লায়েন্টদের অভ্যর্থনা জানান, ইভেন্ট বা অনুষ্ঠানের শিডিউল তৈরি করেন ও অফিসের বিভিন্ন কাজে টেলিফোনে কথা বলেন। রিসেপশনিস্টের গড় বেতন প্রায় ১২০০ টাকা।
সোশ্যাল মিডিয়া হেল্পার
সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা বেশি সময় দিতে পারেন তাদের জন্য সম্ভাবনাময় চাকরি সোশ্যাল মিডিয়া হেল্পার। এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজ করার দক্ষতা থাকতে হবে। একজন সোশ্যাল মিডিয়া হেল্পারের কাজ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কোম্পানির প্রচার ও প্রসার। পে-স্কেলের তথ্য অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়া হেল্পারের গড় বেতন ১৩৪৪ টাকা।
টেস্ট প্রোক্টর
টেস্ট প্রোক্টরের চাকরিতে খেয়াল খুশিমতো কাজ করা যায়। কিন্তু আয় অনেক বেশি। টেস্ট প্রোক্টরের কাজ হলও পরীক্ষার সময় গার্ড দেওয়া। পরীক্ষা যদি অনলাইনে হয় তাহলে তারা পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের কাজ করেন। টেস্ট প্রোক্টরের বছরে গড় বেতন ২১ লাখ টাকা।
টিউটর
আপনি যদি কলেজের শিক্ষার্থী বা শিক্ষক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি সহজেই টিউশনির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এখানে আপনার অবশ্যই বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান, ধৈর্য ও অন্যদের যোগাযোগের দক্ষতা থাকতে হবে। পে-স্কেলের তথ্য অনুযায়ী টিউটরের গড় বেতন ১৪২৮ টাকা।