আমার এ ধর্ম সংক্রান্ত আলোচনার লেখা ও কথা উদ্দেশ্য কারো সাথে তর্কে জেতা নয় । ধর্ম সম্পর্কে আপনাদেরকে একটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয়া । যাতে কেউ ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আপনাকে হিপনোটাইজ করতে না পারে । লক্ষ্য করে দেখবেন বহু মানুষী আল্লাহ্কে ভয়ংকর কিছু মনে করে কারন আল্লাহ্ কে ভালবাসার চেয়ে আল্লাহ্কে ভয় এর কোথায় আমরা বেশি শুনি ।
আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত সম্পূর্ণ পরিপূর্ণ অনুমুদিত জীবনবিধান হচ্ছে কোরআন । আর কোরানের সাথে সামঞ্জস্যহীন কথিত এসব হাদিস ইজমা কিয়াস এ বানোয়াট কিচ্ছা কাহিনী দোয়া তাবিজ নির্ভর এক উতভট ধর্মচর্চা ইসলাম নামে আমাদের বেশির ভাগ মানুষের কাছে পরিচিত । বেসির ভাগ ধর্ম প্রান মুসলমান এটা উপলব্ধি পর্যন্ত করতে পারে না কোরআন আর হাদিসের মধ্যে পার্থক্য টা আসলে কি? কোনটা হাদিসে কথা কোনটা কোরআনের সেটাও অনেক আলাদা করতে পারেনা ।
আরবি হরফে ইচ্ছা মত যা কিছু লিখে দিলোও মানুষের এটাকে কোরআন বলে সম্মান করবে । দেওয়ালে আরবিতে পেশাব করা নিষেধ লিখে দিলে মানুষ আর সেখানে পেশাব করে না । মানুষ আরবি দেখলেই সেটাকে ধর্মের মন্ত্র মনে করে ভয় করে । মানুষের এই অন্ধ আবেগকে কাজে লাগিয়ে মুসলমানদের কুরআন থেকে এত দূরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে সে আর ফিরে আসতে পারেনা কোরআনের কাছে । কতগুলো আরবি লেখাকে যাবতীয় সমস্যার সমাধানের দোয়া এবং সেসব দোয়ার ফজিলত সম্মৃদ্ধ আমাদের দৈনন্দিন ধর্ম চর্চার প্রধান ভিত্তি ধর্মপ্রাণ । বেশির ভাগ মুসলমানকে ইসলাম ধর্মের প্রধান করনীয়-বর্জনীয় কাজ গুলোর তালিকা বানাতে বলেন দেখবেন তারা যে তালিকা বানাবেন তার সিংহভাগই কোরআন বহির্ভূত কোরআনের বক্তবের পরিপন্থী মানব রচিত সংগ্রহিত সংকলিত বিভিন্ন ধরনের কিতাব ভিত্তি । ধর্মের কথা ধর্মের বই থেকে না নিয়ে আমাদের বিভিন্ন বই ধরিয়ে দিচ্ছে ।
ধর্ম জীবনের নাম। ধর্ম বাস্তব সমস্যার বাস্তব সমাধানের নাম। তুমি ক্ষুধার্ত? ধর্ম তোমাকে খাবার দেবে। তুমি বাস্তহীন? ধর্ম তোমার থাকার জায়গা দেবে। তুমি নির্যাতিত? ধর্ম তোমার অধিকার ফিরিয়ে দেবে। যদি না দেয় তবে সেটা ধর্ম নয়। স্রষ্টা ধর্ম পাঠিয়েছেন মানুষের বাস্তব জগতের সমস্যার সমাধান করার জন্য, কোনো কল্পিত জগতের মরীচিকার দিকে তাকিয়ে থেকে বাস্তব দুনিয়ায় অক্ষম-দূর্বল, পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে থাকার জন্য নয়।
আমি আপনাদের কখনই বলবনা হাদীস বইগুলো একেবারে পরিত্যাগ করতে। হাদীস অবশ্যই পড়বেন এবং যে হাদীসগুলো সুন্দর, উপকারী, মহৎ সেগুলো মেনে চলবেন। তবে সহিহ বুখারী/ সিহাহ সিত্তাহ শুনলেই অন্ধ বিশ্বাস করে উদ্ভট, অবাস্তব, ভয়ঙ্কর, ক্ষতিকর হাদীসগুলো মেনে চলা একেবারেই উচিৎ নয়। হাদিসের সনদ ঠিক থাকলেই আর কোরানের সাথে সরাসরী বিরোধীতা না থাকলেই আজকাল হাদীসটি সহিহ হিসেবে গণ্য হয়ে যায়। কিন্তু আসলে দেখা যায় কোরানের সাথে বিরোধীতার পরেও সহিহ হাদীস গুলোকে রুপক হিসেবে চালানোর চেষ্টা করে সেটাকে সহিহ হিসেবেই মর্যাদা দেয়া হয়। আর বেশীরভাগ হাদীসই কোরানের সাথে সরাসরি সাঙ্ঘর্ষিক না হলেও কোরানের সাথে যে ছন্দময় তা নয়। সেই সব হাদীস ভয়ঙ্কর হলেও আর বাতিল হয়না। হাদীসের বইতে এমন হাদীসের সংখ্যাই সর্বাধিক। আমি আপনাদের আহবান জানাই, আপনারা কোরান বুঝে পড়ুন, এবং হাদীসগুলোকে সেই কোরান দিয়েই এবং হাদীসের বক্তব্য দিয়ে যাচাই করে নিন সেগুলো সত্য কিনা। হাদীসের সনদ ঠিক থাকলেই সেটা সহিহ এমন উদ্ভট ভয়ঙ্কর কথা পরিত্যাগ করুন। প্রমাণ করে দিচ্ছি যে সহিহ বুখারী আর মুসলিম শরীফের সিংহভাগ হাদীসই অগ্রহণযোগ্য।
ইমাম বুখারী এবং ইমাম মুসলিম হাদীস সত্যাসত্য করার কিছু প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছিলেন। হাদিস হিসেবে গ্রহণীয় হওয়ার জন্য সাধারণতঃ হাদীসটির সনদে চারটি প্রধান বিষয়ের প্রতি সবার আগে নজর দিতে হবে। আমি নিচে তার দুটি উল্লেখ করলামঃ
১) আগা গোড়া প্রতিটি সাক্ষিই জ্ঞানী, খাঁটি সত্যবাদী, সৎ চরিত্র, মোত্তাকীম পরহেজগার শালীনতা ও ভদ্রতা সম্পন্ন স্বভাবের হতে হবে। কোন ব্যক্তি জীবনে মাত্র একবার হাদিস সংক্রান্ত ব্যাপারে মিথ্যা উক্তির জন্য ধরা পড়লে এ ব্যক্তির শুধু মিথ্যা হাদিসই নহে, বরং তাহার সারা জীবনের সমস্ত হাদিসই অগ্রাহ্য হইবে। তওবা করিলেও তাহার বর্ণিত হাদিস গ্রহণযোগ্য হইবে না। উহা ছাড়া অন্য কোন বিষয় ও মিথ্যাবাদী বলে পরিচিত হলে বা শরিয়ত বিরোধী আকিদা বা কার্যকলাপে লিপ্ত প্রমাণিত হলে বা অসৎ প্রকৃতির লম্পট ও নীচ স্বভাবের লোক হলে তাহার বর্ণিত হাদিস গ্রহণীয় হবে না।
২) প্রত্যেক সাক্ষী তার স্মরণ শক্তি সম্বন্ধে অতিশয় পাকাপোক্ত সুদক্ষ ও সুদৃঢ় সংরক্ষক বলিয়া পরিচিত হতে হবে। এবং ইহাও প্রমাণিত হওয়া আবশ্যক যে, প্রতিটি সাক্ষী তার পূর্ববর্তী সাক্ষ্যদাতা অর্থাৎ ওস্তাদের নিকট হইতে হাদিসখানা পূর্ণ মনোযোগের সহিত শ্রবণ করতঃ সবিশেষ মনোযোগের সহিত মূখস্ত করে বা লিপিবদ্ধ করিয়া রেখেছেন। এই বিশেষ প্রমাণ এরূপ হবে যে, উক্ত সাক্ষী যে হাদিস আজীবন শত শতবার বর্ণনা করে আসতেছেন।
কোন সময়ই তার বর্ণনার মধ্যে এরূপ গরমিল দেখা যাইবে, তখন হইতে আর ঐরূপ সাক্ষির বর্ণনার কোন হাদিস সঠিক প্রমাণিত বলিয়া গণ্য হইবে না।
আমরা জানি বুখারী এবং মুসলিম শরীফের সিংহভাগ হাদীসের বর্ণনাকারী হচ্ছেন আবু হুরায়রা। তিনি রাসূল (সঃ) এর সাথে মাত্র তিন বছরের চাইতেও কম সময় থাকলেও সর্বাধিক প্রায় পাঁচ হাজার হাদীস বর্ণনা করেছেন। অথচ প্রধান চার খলিফা সহ আর কোন সাহাবীই সারাজীবন নবী (সাঃ) এর সাহচর্যে থাকার পরেও এত অধিক সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করেননি।
হাদীস বেত্তাগণ মনে করেন, বুখারী আর মুসলিম শরীফের সকল হাদীসই সহিহ। এবার আমি সহিহ হাদীস দিয়েই প্রমাণ দিব যে আবু হুরায়রা উপরে উল্লিখিত ২ টি নিয়মেই হাদীস বর্ণনাকারী হিসেবে বাদ পড়ে যান। তিনি ভুল হাদীস বলেছেন আবার তাঁর স্মৃতি শক্তিও নির্ভরযোগ্য ছিলনা।
মূল বিষয়ে যাবার আগে প্রথমেই একটি হাদীস।
নিজেই স্বীকার করেছেন যে তিনি হাদীস ভুলে যেতেন
১১৯. আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললামঃ ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার নিকট হতে অনেক হাদীস শুনি কিন্তু ভুলে যাই।’ তিনি বললেনঃ তোমার চাদর মেলে ধর। আমি তা মেলে ধরলাম। তিনি দু’হাত খাবল করে তাতে কিছু ঢেলে দেয়ার মত করে বললেনঃ এটা তোমার বুকের সাথে লাগাও। আমি তা বুকের সাথে লাগালাম। অতঃপর আমি আর কিছুই ভুলে যাইনি। (১১৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২০)
ইবরাহীম ইবনুল মুনযির (রহ.)…..ইবনু আবূ ফুদায়ক (রহ.) সূত্রে একইরূপ হাদীস বর্ণনা করেন এবং তাতে বলেন যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাত দিয়ে সে চাদরের মধ্যে (কিছু) দিলেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২১)
দেখুন আবু হুরায়রা নিজেই স্বীকার করেছেন যে তিনি হাদীস ভুলে যেতেন। পরে নবী (সাঃ) এর মজেজায় আর জীবনেও নবী (সাঃ) (সাঃ)র হাদীস সহ কোন কিছুই ভুলেন নাই বলে দাবী করেছেন। এই সম্পর্কে আরেকটি হাদীস-
২০৪৭. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমরা বলে থাক, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) বেশি বেশি হাদীস বর্ণনা করে থাকে এবং আরো বলেন, মুহাজির ও আনসারদের কী হলো যে, তারা তো আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাদীস বর্ণনা করে না? আমার মুহাজির ভাইয়েরা বাজারে ক্রয়-বিক্রয়ে ব্যস্ত থাকত আর আমি কোন প্রকারে আমার পেটের চাহিদা মিটিয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকটে পড়ে থাকতাম। তাঁরা যখন অনুপস্থিত থাকত আমি তখন উপস্থিত থাকতাম। তাঁরা যা ভুলে যেত আমি তা মুখস্থ করতাম। আর আমার আনসার ভাইয়েরা নিজেদের ক্ষেত-খামারের কাজে ব্যস্ত থাকতেন। আমি ছিলাম সুফ্ফার মিসকীনদের একজন মিসকীন। তাঁরা যা ভুলে যেতো, আমি তা মুখস্থ রাখতাম। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর এক বর্ণনায় বললেন, আমার এ কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত যে কেউ তার কাপড় বিছিয়ে দিবে এবং পরে নিজের শরীরের সাথে তার কাপড় জড়িয়ে নেবে, আমি যা বলছি সে তা স্মরণ রাখতে পারবে। [আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) বলেন] আমি আমার গায়ের চাদরখানা বিছিয়ে দিলাম যতক্ষণ না আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কথা শেষ করলেন, পরে আমি তা আমার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলাম। ফলে আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সে কথার কিছুই ভুলে যাইনি। (১১৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯০৪ , ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৯১৯)
আবু হুরায়রা (রাঃ) এত বেশী হাদীস বলতেন বলে তখন অনেকেই সন্দেহ করেছেন।
দেখুন আবু হুরায়রা এত বেশী হাদীস বলতেন বলে তখন অনেকেই সন্দেহ করেছেন। সেই সময় এই হাদীস প্রচারিত হলে আবু হুরায়রা’র কথা শুনে সকল সাহাবীই এই কাজটা করতেন। তাতে তারাও আর জীবনে হাদীস ভুলতেননা। সকলেই ৫০০০ এর উপর হাদীস বর্ণনা করতে পারতেন। এত কষ্ট করে মুখস্তও রাখতে হতনা, বা কোথাও লিখেও রাখতে হতনা। নবী (সাঃ) প্রধান চার খলিফাকেও এই পদ্ধতি শিখাতে পারতেন, সেক্ষেত্রে খলিফারা আর ভয়ের কারণে হাদীস নষ্ট করতে যেতেননা। অবাক ব্যাপার হলো এই হাদীসটি তিনি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করেছেন যেখানে প্রেক্ষাপট আর ঘটনার ধারা এক রকম নয়। এতে করেই তার নিজস্ব স্বীকারোক্তি অনুযায়ীই বুঝা যায় তিনি ভুলোমনা ছিলেন। এক হাদীসের বর্ণনাতে তিনি বলেছিলেন তার গায়ে একটা মাত্র কাপড় ছিল, এতে করে কাপড় মেলে ধরার সময় আর বুকে মাখার সময় যে তার লজ্জাস্থান প্রকাশ পেয়ে যায় সেটা বোধয় তিনি ভুলে গিয়েছিলেন।
এবার চলুন আমাদের মূল বিষয়ে যাই। আবু হুরায়রা ভুল বা মিথ্যা বলেছিলেন এবং দূর্বল স্মৃতির মানুষ ছিলেন তা প্রমাণ করে দেই।
”আমি অস্বীকার করলাম, আমি এমন কিছুই বলিনাই”।
৫৫৯৭। আবূ তাহির ও হারামালা (রহঃ) … আবূ সালামা ইবনু আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সংক্রমণ (-এর অস্তিত্ব) নেই। তিনি আরও হাদীস বর্ণনা করতেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অসুস্থ উটপালের মালিক (অসুস্থ উটগুলিকে) সুস্থ উটপালের মালিকের (উটের) কাছে আনবে না। আবূ সালামা (রহঃ) বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) এ দুংটি হাদীস রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করতেন। পরে আবূ হুরায়রা (রাঃ) তাঁর (প্রথম হাদীসের) ‘সংক্রমণ …… নেই’ বলা থেকে নীরব থাকেন এবং অসুস্থ উটপালের মালিক সুস্থ উটপালের মালিকের কাছে আনবেনা এর বর্ণনায় দৃঢ় থাকেন।
রাবী বলেনঃ (একদিন) হারিস ইবনু আবূ যুবাব (রহঃ), তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর চাচাত ভাই, বললেন, হে আবূ হুরায়রা! আমি তে শুনতে পেতাম যে, আপনি এ হাদীসের সাথে আরও একটি হাদীস আমাদের কাছে রিওয়াত করতেন যা বর্ণনায় আপনি এখন নীরব থাকছেন। আপনি বলতেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সংক্রমণ …… নেই। তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ) তা মেনে নিতে অস্বীকার করলেন এবং বললেন, অসুস্থ পালের মালিক সুস্থপালের মালিকের কাছে নিয়ে যাবে না। তখন হারিস (রহঃ) এ ব্যাপারে তাঁর সাথে বিতর্কে লিপ্ত হলেন। ফলে আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাগাম্বিত হয়ে হাবশী ভাষায় কিছু বললেন।
তিনি হাবিস (রহঃ) কে বললেন, তুমি কি বুঝতে পেরেছো, আমি কি বলেছি? তিনি বললেন, না। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, আমি বলেছি, আমি অস্বীকার করছি। আবূ সালামা (রহঃ) বলেন, আমার জীবনের শপথ। আবূ হুরায়রা (রাঃ) অবশ্যই আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করতেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ‘সংক্রমণ …… নেই’। এখন আমি জানি না যে, আবূ হুরায়রা (রাঃ) ভুলে গেলেন, নাকি একটি অপরটিকে (মানসুখ) রহিত করে দিয়েছে।
এই হাদীসে দেখা যাচ্ছে যে আবু হুরায়রা আগে নবী (সাঃ) এরনামে নিয়মিত বলতেন যে দুনিয়াতে সঙ্ক্রামক ব্যাধী বলে কিছু নেই। কিছুদিন পরে তিনি আর এই হাদীস বর্ণনা করতেন না, বরং সত্য হাদীস বলেছেন যে অসুস্থ রোগীকে সুস্থ লোকের কাছে নিয়ে যেতে না করেছিলেন নবী (সাঃ)। তখন হযরত আবু সালামা অভিযোগ করলেন যে আপনি তো আগে অন্য হাদীসটিও বর্ণনা করতেন এখন করেননা কেন? আবু হুরায়রা অস্বীকার করলেন যে তিনি এমন কিছু বলেন নাই , বরং তিনি নাকি বলেছেন অসুস্থ উটকে সুস্থ উটের কাছে নিয়ে না যেতে (সম্পূর্ন ভুল কথা, নিচে হাদীস দেখুন)। আবু হুরায়রার এই কথা শুনে হারিথ সরাসরি অসম্মতি জানানোর কারণে আবু হুরায়রা ভিন্ন ভাষা ব্যবহার করে বললেন এই ভাষার অর্থ হচ্ছে ”আমি অস্বীকার করলাম, আমি এমন কিছুই বলিনাই”। তখন হযরত আবু সালামা জীবনের কসম খেয়ে বলেছিলেন যে আবু হুরায়রা এই কথা বলেছেন।
এইবার দেখি আবু হুরায়রা সত্যি এই কথা বলেছিলেন কিনা
৫৫৯৫। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম ও হাসান হুলওয়ানী ও আবূ সালামা ইবনু আবদুর রাহমান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ সংক্রামক ব্যাধি, কুলক্ষণ, (ক্ষুধায় পেট কামড়ানো) কীট ও পাখির (পেঁচার) কুলক্ষণ (মৃতের পেঁচার রূপ ধারনের কুসংস্কার) এর অস্তিত্ব নেই। তখন এক বেদুঈন আরব বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! …… পূর্বোক্ত ইউনুস (রহঃ) বর্ণিত উক্ত হাদীসের অনুরূপ।
অর্থাৎ হযরত আবু সালামার কথাই সত্য, আবু হুরায়রা সত্যিই এই হাদীসটি বর্ণনা করতেন।
উপরের আলোচনার ভিত্তিতে এবার নিম্ন লিখিত অনুসিদ্ধান্তে সহজেই আসা যায়ঃ
১) হয়তো আবু হুরায়রা মিথ্যা বলেছেন (সূত্র উপরের ৩ নং হাদীস)। তাহলে হাদীস সংগ্রহের নীতিমালার এই পোস্টের শুরুতে বর্ণিত ১ নং পয়েন্ট অনুযায়ী আবু হুরায়রা বর্ণিত সকল হাদীস বাদ হয়ে যায়। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি এমন একজন সাহাবী মিথ্যা বলতে পারেননা। তাই…
২) হয়তো তিনি হাদীসটি ভুলে গিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে হাদীস সংগ্রহের নীতিমালার এই পোস্টের শুরুতে বর্ণিত ২ নং পয়েন্ট অনুযায়ী আবু হুরায়রা বর্ণিত সকল হাদীস বাদ হয়ে যায়। এখন কেউ যদি বলেন একটা মাত্র ভুলের জন্য তো তার সকল হাদীস বাদ দিয়ে দেয়া যায়না তাহলে নিচের পয়েন্টগুলো দেখুন যে তিনি মাত্র একটা ভুলই করেননি। এছাড়া সঙ্ক্রামক ব্যাধী বলে যে কিছু নেই এমন ভুল কথা কি নবী (সাঃ) কোনদিন বলতে পারেন? আবু হুরায়রা ই নবী (সাঃ) এর নামে ভুল কথা বলেছেন।
৩) উপরের ২ অনুযায়ী আবু হুরায়রা হাদীস ভুলে গিয়ে থাকলে বলা যায় নবী (সাঃ) মিথ্যা বলেছিলেন (যেহেতু নবী (সাঃ) হাদীস মনে থাকবে এমন কথা বলেছিলেন কিন্তু তা কাজে লাগেনি, সূত্র উপরের ১ নং হাদীস)। কিন্তু নবী (সাঃ) মিথ্যা বলবেন এটা কোনভাবেই সম্ভব না তাই নির্দ্বিধায় এই পয়েন্ট বাদ দিয়ে দেয়া যায়।
৪) যেহেতু নবী (সাঃ) মিথ্যা বলেননি তাই অবশ্যই তিনি ভুল বলেছিলেন। আর নবী (সাঃ) এর যে ভুল হওয়া সম্ভব তা কোরআন এবং হাদীস সমর্থিত। সেক্ষেত্রে প্রমাণ হয়ে যায় যে আবু হুরায়রা নিয়মিত ভাবেই হাদীস ভুলে যেতেন (আবু হুরায়রা’র নিয়মিত হাদীস ভুলে যাবার নিজস্ব স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এবং নবী (সাঃ) এর সেই ভুল মিরাকল ভুলোমনা আবু হুরায়রা’র অবস্থার উন্নতি করতে পারেনি অনুযায়ী)।
অতএব আমাদের যত খারাপই লাগুক না কেন আবু হুরায়রা কে হয় মিথ্যাবাদী অথবা ভুলোমনা এই দুটোর অন্তত একটা স্বীকার করে নিতে হবেই, নাহলে বলতে হবে বুখারী আর মুসলিম শরীফের হাদীস মোটেই নির্ভরযোগ্য নয়। তাই অত্যন্ত প্রিয় হলেও আবু হুরায়রা’র বর্ণিত হাদীস ইমাম বুখারী এবং ইমাম মুসলিম অনুসৃত নিয়ম অনুযায়ী মোটেই গ্রহণযোগ্য হয়না।
এবার চলুন দেখি ভুলোমনা স্বভাবের আবু হুরায়রা আর কি কি সন্দেহজনক হাদীস প্রচার করেছেন। আমি মাত্র কয়েকটি উল্লেখ করছি। এমন আরও বহু সংখ্যক হাদীস আছে যাতে প্রমাণীত হয় আবু হুরায়রা ভুল বলেছেন।
এক হাদিসে দু’কথা
৩৮৪। আসরের পর কাযা বা অনুরূপ কোন সালাত আদায় করা। কুরাইব (রহঃ) উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আসরের পর দু’রাকাত সালাত আদায় করলেন এবং বললেন, আবদুল কায়স গোত্রের লোকেরা আমাকে যুহরের পরবর্তী দু’রাকআত সালাত আদায় থেকে ব্যাস্ত রেখেছিল।
৫৬৫। মূসা ইবনু ইসমায়ীল (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, দু’রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রকাশ্যে বা গোপনে কোন অবস্থাতেই ছাড়তেন না। তা হল ফজরের সালাত (নামায/নামাজ)-এর আগের দু’রাকাআত ও আসরের পরের দু’রাকাআত।
আমরা দেখলাম হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেছেন যে নবী (সাঃ) আসরের পর দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। এবার এটা দেখুনঃ
৫৬১। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ)…… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’ সময়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে নিষেধ করেছেন। ফজরের পর সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত এবং আসরের পর সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত।
আবু হুরায়রা বললেন যে আসরের পর নামাজ পড়তে নবী (সাঃ) নিষেধ করেছেন।
সুলাইমান(আঃ) কে যে কিভাবে অপমান করলেন আবু হুরায়রা
একই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে সংখ্যাতে তালগোল পাকিয়েছেন আবু হুরায়রা। সুলাইমান(আঃ) কে যে কিভাবে অপমান করলেন আবু হুরায়রাঃ
৬৯৬১। মুআল্লা ইবনু আসা’দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর নাবী সুলায়মানের ষাটজন স্ত্রী ছিল। একদা সুলায়মান (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ আজ বাতে আমার সব স্ত্রীর কাছে যাব। যার ফলে স্ত্রীরা সবাই গর্ভবতী হয়ে এক একজন সন্তান প্রসব করবে, যারা অশ্বারোহী অবস্থায় আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। অতএব সুলায়মান (রাঃ) তাঁর সব স্ত্রীর কাছে গেলেন, তবে তাদের থেকে একজন স্ত্রী ছাড়া আর কেউ গর্ভবতী হলো না। সেও প্রসব করলো একটি অপূর্ণাঙ্গ সন্তান। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি সুলায়মান (আলাইহিস সালাম) ইনশা আল্লাহ বলতেন, তাহলে স্ত্রীরা সবাই গর্ভবতী হয়ে যেতো এবং প্রসব করতো এমন সন্তান যারা অশ্বারোহী অবস্থায় আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করত।
৪১৮০-(২৪/…) আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) …… আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সুলাইমান ইবনু দাউদ (আঃ) একদা বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আমি আজ রাতে সত্তরজন স্ত্রীর কাছে যাব। এতে তাদের প্রত্যকেই এমন সব সন্তান জন্ম দেবে যারা আল্লাহর পথে লড়াই করবে। তখন তাকে বলা হলো যে, আপনি ইনশা আল্লাহ’ বলুন। কিন্তু তিনি (ভুলক্রমে) তা বলেননি। অতঃপর তিনি সকল স্ত্রীর কাছে গমন করলেন। তাতে কোন স্ত্রী গর্ভবতী হলেন না, একজন স্ত্রীর একটি অর্ধ মানবাকৃতির (অপূর্ণাঙ্গ) সন্তান প্রসব করা ব্যতীত। রাবী বলেন যে, এ প্রসঙ্গে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি তিনি তখন ইনশা-আল্লাহ’ বলতেন, তবে তিনি শপথ ভঙ্গকারী হতেন না। আর উদ্দেশ্য পূরণে তিনি সফলতা পেতেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪১৪২, ইসলামিক সেন্টার ৪১৪১)
৬২৬৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সুলায়মান (আলাইহিস সালাম) একদা বলেছিলেন যে, অবশ্যই আজ রাতে আমি নব্বইজন স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হব। তারা প্রত্যেকেই পুত্র সন্তান প্রসব করবে যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে। তখন তার সাথী (রাবী সুফিয়ান সাথী দ্বারা ফেরেশতা বুঝিয়েছেন) বলল, আপনি ইনশাআল্লাহ বলুন। কিন্তু তিনি তা ভুলে গেলেন এবং সকল স্ত্রীর সাথে মিলিত হলেন। তবে একজন ব্যতীত অন্য কোন স্ত্রীর গর্ভ থেকেই কোন সন্তান পয়দা হল না; তাও ছিল অপূর্ণাঙ্গ।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) এ ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনি কসমের মাঝে যদি ইনশাআল্লাহ বলতেন তাহলে তার কসময় ভঙ্গ হত না আবার উদ্দেশ্যও সাধিত হত। একবার আবূ হুরায়রা (রাঃ) এরূপ বর্ণনা করলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনি যদি “ইস্তিসনা” করতেন (অর্থাৎ ইনশাআল্লাহ বলতেন)। আবূ যিনাদ আরাজের মাধ্যমে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ননা করেছেন।
৫২৪২. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, দাউদ আঃ)-এর পুত্র সুলায়মান আঃ) একদা বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আজ রাতে আমি আমার একশ’ স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হব এবং তাদের প্রত্যেকেই একটি করে পুত্র সন্তান প্রসব করবে, যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। এ কথা শুনে একজন ফিরিশিতা বলেছিলেন, আপনি ‘ইন্শাআল্লাহ’ বলুন; কিন্তু তিনি এ কথা ভুলক্রমে বলেননি। এরপর তিনি তার স্ত্রীগণের সঙ্গে মিলিত হলেন; কিন্তু তাদের কেউ কোন সন্তান প্রসব করল না। কেবল এক স্ত্রী একটি অপূর্ণাঙ্গ সন্তান প্রসব করল। নাবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেন, যদি সুলায়মান আঃ) ‘ইন্শাআল্লাহ্’ বলতেন, তাহলে তাঁর শপথ ভঙ্গ হত না। আর তাতেই ভালভাবে তার আশা মিটত। আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৮৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬২)
আবু হুরায়রার কল্পবিলাসী মনঃ কথা বলা গরু আর নেকড়ে
৩৪৭১. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত শেষে লোকজনের দিকে ঘুরে বসলেন এবং বললেন, একদা এক লোক একটি গরু হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ সে এটির পিঠে চড়ে বসলো এবং ওকে প্রহার করতে লাগল। তখন গরুটি বলল, আমাদেরকে এজন্য সৃষ্টি করা হয়নি, আমাদেরকে চাষাবাদের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এতদশ্রবণে লোকজন বলে উঠল, সুবহানাল্লাহ্! গরুও কথা বলে? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি এবং আবূ বাকর ও ‘উমার তা বিশ্বাস করি। অথচ তখন তাঁরা উভয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। আর এক রাখাল একদিন তার ছাগল পালের মাঝে অবস্থান করছিল, এমন সময় একটি চিতা বাঘ পালে ঢুকে একটি ছাগল নিয়ে গেল। রাখাল বাঘের পিছনে ধাওয়া করে ছাগলটি উদ্ধার করে নিল। তখন বাঘটি বলল, তুমি ছাগলটি আমার থেকে কেড়ে নিলে বটে তবে ঐদিন কে ছাগলকে রক্ষা করবে যেদিন হিংস্র জন্তু ওদের আক্রমণ করবে এবং আমি ব্যতীত তাদের অন্য কোন রাখাল থাকবে না। লোকেরা বলল, সুবহানাল্লাহ! চিতা বাঘ কথা বলে! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি এবং আবূ বাকর ও ‘উমার তা বিশ্বাস করি অথচ তাঁরা উভয়েই সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। ‘আলী ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত।….আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এ রকমই বর্ণনা করেছেন। (২৩২৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩২১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩২২২)
এইখানে নবী (সাঃ) এর ভাবখানা এমন যে লোকে যখন বিশ্বাস করতে চাইছে না তখন নবী (সাঃ) বলছেন উমর/হযরত আবু বকর থাকলে তারা বিশ্বাস করত। খুব স্বাভাবিক যুক্তিতেই বুঝা যায় নবী (সাঃ) এই কথা আসলে কোনদিনই বলেননি। বরং লোকে আবু হুরায়রা’র কথা বিশ্বাস করবেনা বলে আবু হুরায়রা নিজেই নবী (সাঃ) এর সাথে উমর/ আবু বকরের নাম জুড়িয়েছেন। আচ্ছা পাঠক,আমাদের ইসলাম পালনের সাথে এই হাদীসের কি সম্পর্ক? ইমাম বুখারী কেন এইসব আজেবাজে অদরকারী হাদীস দিয়ে বই ভর্তি করেছিলেন?
অবিশ্বাস্য/অকল্পনীয়/আজগুবী/রহস্যময় ইত্যাদি ঘটনা বর্ণনা করতে আবু হুরায়রা খুবই পছন্দ করতেন তা তার বর্ণিত বহু হাদীস দেখলেই বুঝা যায়।
আবু হুরায়রার স্মৃতি বিভ্রাট
Abu-Hassan reports that two people came to Aishah and said to her that Abu Hurayrah narrates that the Prophet used to say that bad luck is to be found only in women, horses and houses. At this Aishah replied: By the God who revealed the Qur’an to the Prophet ! The Prophet never said this; what he did say was that the People of the Jahilliyyah hold this opinion.
Musnad of Ahmad ibn Hanbal, 6/246
দেখুন আবু হুরায়রা নবী (সাঃ) এর নাম দিয়ে বলেছেন যে নারীরা অপয়া। এই কথা শুনে হযরত আয়েশা বলেছেন যে আবু হুরায়রা ভুল বলেছেন। নবী (সাঃ) এই কথা বলেননি বরং নবী (সাঃ) বলেছিলেন বহু আগের যুগের মানুষের ভুল ধারণা। আবু হুরায়রা কে বাঁচানোর জন্য বা তার স্মৃতি দূর্বল এই কথা অস্বীকার করার জন্য সনদে দূর্বল একটি হাদীস উল্লেখ করে বলা হয় যে আবু হুরায়রা নবী (সাঃ) এরপুরো কথাটি শুনেননি। সেক্ষেত্রে তো আবু হুরায়রা আরও বড় ভুল করেছেন। সম্পূর্ণ কথা না শুনেই তিনি এমন আরও কত হাদীস ছড়িয়েছেন তা কে বলে দিবে?
আবু হুরায়রা কি এত দ্রুত ভুলে যেতেন?
৫৩৫৫. আবূ হুরাইরাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম সদকা হলো যা দান করার পরে মানুষ অমুখাপেক্ষী থাকে। উপরের হাত নীচের হাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যাদের ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্বে আছে তাদের আগে দাও। কেননা) স্ত্রী বলবে, হয় আমাকে খাবার দাও, নইলে তালাক দাও। গোলাম বলবে, খাবার দাও এবং কাজ করাও। ছেলে বলবে, আমাকে খাবার দাও, আমাকে তুমি কার কাছে ছেড়ে যাচ্ছ? লোকেরা জিজ্ঞেস করলঃ হে আবূ হুরাইরা! আপনি কি এ হাদীস রাসূলুল্লাহ থেকে শুনেছেন? তিনি উত্তরে বললেন, এটি আবূ হুরাইরাহর থলে থেকে পাওয়া নয় বরং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে)। [১৪২৬] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫১)
লক্ষ করুন আবু হুরায়রা প্রথমে দাবী করেছেন যে নবী (সাঃ) এটা বলেছেন। পরে স্বীকার করেছেন যে এটা তার নিজের কথা। নবী (সাঃ) এর নামে এইভাবে ভুল কথা বলার পরেও তার কথায় নির্ভর করা যায় কোন যুক্তিতে? এই হাদীসের দূর্বলতা ঢাকতে হাদীসের পক্ষের লোকজন বলেন যে – এই হাদিসে হযরত আবু হুরাইরার গোটা ন্যারেশন ডাবল ইনভার্টেড কমার ভেতরে রাখা, এবং রাসুল সা.-এর বক্তব্যটা সিঙ্গেল ইনভার্টেড কমার ভিতরে। তাই নবী (সাঃ) এর বক্তব্য শেষ হবার পর অর্থাৎ সিঙ্গেল ইনভার্টেড কমা শেষ হবার পর যেটুকু থাকে সেটাই হযরত আবু হুরাইরার নিজের বক্তব্য।
কিন্তু এটা যে কত ভুল যুক্তি তা পাঠক সহজেই বুঝতে পারবেন। কারণ ইনভার্টেড কমার ভেতর নবী (সাঃ) এরবক্তব্য আছে, ওয়াইফের বক্তব্য আছে, স্লেভ এর বক্তব্য আছে আর সানের বক্তব্য আছে। আবু হুরায়রায় নিজের বক্তব্য একেবারেই নাই। পিপল যেখানে পরিষ্কার শুনল যে ওয়াইফ আর সানের বক্তব্য বলা হয়েছে সেখানে এই অংশটা নবী (সাঃ) এরবক্তব্য কিনা জিজ্ঞেস করাটা অবান্তর। বরং নবী (সাঃ) এরনামে যেটা বলা হয়েছে সেটাই পিপল জিজ্ঞেস করেছে। আর স্বাভাবিক ভাবে চিন্তা করে দেখেন কোন দাসী/স্ত্রী/সন্তান এর কোটেশন দেয়া বক্তব্য কোনক্রমেই আবু হুরায়রার নিজস্ব বক্তব্য হতে পারেনা।
খুবই আজব এক হাদীস-এইখানে শয়তানের আচরণ কোরানের বর্ণনার সাথে সম্পূর্ণ সাঙ্ঘর্ষিক।
২৩১১. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রমাযানের যাকাত হিফাযত করার দায়িত্বে নিযুক্ত করলেন। এক ব্যক্তি এসে আঞ্জলা ভর্তি করে খাদ্য সামগ্রী নিতে লাগল। আমি তাকে পাকড়াও করলাম এবং বললাম, আল্লাহর কসম! আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে উপস্থিত করব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি খুব অভাবগ্রস্ত, আমার যিম্মায় পরিবারের দায়িত্ব রয়েছে এবং আমার প্রয়োজন তীব্র। তিনি বললেন, আমি ছেড়ে দিলাম। যখন সকাল হলো, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবূ হুরাইরা, তোমার রাতের বন্দী কি করলে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে তার তীব্র অভাব ও পরিবার, পরিজনের কথা বলায় তার প্রতি আমার দয়া হয়, তাই তাকে আমি ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বললেন, সাবধান! সে তোমার কাছে মিথ্যা বলেছে এবং সে আবার আসবে। ‘সে আবার আসবে’ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ উক্তির কারণে আমি বুঝতে পারলাম যে, সে পুনরায় আসবে। কাজেই আমি তার অপেক্ষায় থাকলাম। সে এল এবং অঞ্জলি ভরে খাদ্র সামগ্রী নিতে লাগল। আমি ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে নিয়ে যাব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। কেননা, আমি খুবই দরিদ্র এবং আমার উপর পরিবার-পরিজনের দায়িত্ব ন্যস্ত, আমি আর আসব না। তার প্রতি আমার দয়া হল এবং আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকাল হলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবূ হুরাইরাহ! তোমার বন্দী কী করল? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে তার তীব্র প্রয়োজন এবং পরিবার-পরিজনের কথা বলায় তার প্রতি আমার দয়া হয়। তাই আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বললেন, খবরদার সে তোমার কাছে মিথ্যা বলেছে এবং সে আবার আসবে। তাই আমি তৃতীয়বার তার অপেক্ষায় রইলাম। সে আবার আসল এবং অঞ্জলি ভর্তি করে খাদ্য সামগ্রী নিতে লাগল। আমি তাকে পাকড়াও করলাম এবং বললাম, আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে অবশ্যই নিয়ে যাব। এ হলো তিনবারের শেষবার। তুমি প্রত্যেকবার বল যে, আর আসবে না, কিন্তু আবার আস। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও। আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিখিয়ে দেব। যা দিয়ে আল্লাহ তোমাকে উপকৃত করবেন। আমি বললাম, সেটা কী? সে বলল, যখন তুমি রাতে শয্যায় যাবে তখন আয়াতুল কুরসী {اللهُ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ} আয়াতের শেষ পর্যন্ত পড়বে। তখন আল্লাহর তরফ হতে তোমার জন্যে একজন রক্ষক নিযুক্ত হবে এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না। কাজেই তাকে আমি ছেড়ে দিলাম। ভোর হলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, গত রাতের তোমার বন্দী কী করল? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে আমাকে বলল যে, সে আমাকে কয়েকটি বাক্য শিক্ষা দেবে যা দিয়ে আল্লাহ আমাকে লাভবান করবেন। তাই আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি আমাকে বললেন, এই বাক্যগুলো কী? আমি বললাম, সে আমাকে বলল, যখন তুমি তোমার বিছানায় শুতে যাবে তখন আয়াতুল কুরসী { اللهُ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ } প্রথম হতে আয়াতের শেষ পর্যন্ত পড়বে এবং সে আমাকে বলল, এতে আল্লাহর তরফ হতে তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত থাকবেন এবং ভোর পর্যন্ত তোমার নিকট কোন শয়তান আসতে পারবে না। সাহাবায়ে কিরাম কল্যাণের জন্য বিশেষ লালায়িত ছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, এ কথাটি তো সে তোমাকে সত্য বলেছে। কিন্তু হুশিয়ার, সে মিথ্যুক। হে আবূ হুরাইরাহ! তুমি কি জান, তিন রাত ধরে তুমি কার সাথে কথাবার্তা বলেছিলে। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বললেন, না। তিনি বললেন, সে ছিল শয়তান। (৩২৭৫, ৫০১০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ কিতাবুল ওয়াকালাহ অনুচ্ছেদ-১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ অনুচ্ছেদ ১৪৩৮)
এই হাদীসের সমস্যাগুলো খেয়াল করুনঃ
১) হযরত আবু আবু হুরায়রা নবী (সাঃ) এরকথা হয় বিশ্বাস করতেননা, না হয় মনে রাখতেন না,অথবা সর্বাধিক গুরুত্ব দিতেন না। যেখানে নবী (সাঃ) দুই দুই বার সতর্ক করে দিয়েছেন যে সেই লোক মিথ্যাবাদী সেখানে আবু হুরায়রা বারবার নবী (সাঃ) এরকথায় গুরুত্ব না দিয়ে সেই মিথ্যাবাদীর কথা বিশ্বাস করে তাকে ছেড়ে দিয়েছেন! এর মানে এও দাঁড়ায় যে আবু হুরায়রা শয়তানের প্ররোচনায় খুব সহজেই ঘায়েল হয় স্বয়ং নবী (সাঃ) এরসান্নিধ্যেও তা রোধ হয়না। নবী (সাঃ) এরমৃত্যুর পর আবু হুরায়রা যে শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে হাদীস বর্ণনা করেননি তার গ্যারান্টি দিতে পারবেন কি?
২) শয়তানের উদ্দেশ্য এইখানে বুঝা গেলনা। যেখানে শয়তানের উদ্দেশ্য হল মানুষকে বিপথে পরিচালনা করা সেইখানে শয়তান সামান্য সদকা চুরি করতে এসেছিল! তাও একবার নয় পরপর তিন রাত। সেই চুরির মাল দিয়ে শয়তান কি করবে তাও এক বিরাট প্রশ্ন! আচ্ছা নাহয় চুরি করলই, তারপর শয়তান এমন পন্থা শিখিয়ে দিল যাতে করে শয়তান নিজের পথ রুদ্ধ করে দিল। শয়তান এখন নিজের মাথা চাপড়াচ্ছে নিশ্চই যে আবু হুরায়রা হাদীসের মাধ্যমে সকল মুসলিমকে এই উপায় শিখিয়ে দিয়ে শয়তানের মহা সর্বনাশ করেছে। শয়তান খামাখা এত সময় নষ্টই বা করল কেন আর নিজের ক্ষতিই বা করল কেন তার কোন জবাব নাই।
৩) যদিও কোরান দাবী করে যে নবী (সাঃ) ভবিষ্যত জানে না, কিন্তু এইখানে নবী (সাঃ) বলে দিয়েছেন যে প্রিজনার আবার আসবে। আপনি হয়তো দাবী করবেন এটা ভবিষ্যতবানী নয় বরং অনুমান। কিন্তু সম্পূর্ণ হাদীস পড়লে এটা অনুমান মনে করার কোন কারণ নেই, কারণ এটা যে শয়তান সেটা নবী (সাঃ) শুরুতেই জানতেন। এছাড়া আবু হুরায়রা কিছু বলার আগেই নবী (সাঃ) প্রিজনার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছেন। আবু হুরায়রা এতে বিন্দুমাত্র অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেনাই যে নবী (সাঃ) কিভাবে প্রিজনারের কথা জানলেন।
৪) নবী (সাঃ) শয়তানের কথা জেনেও আগেই কেন আবু হুরায়রা কে সাবধান করে দিলেননা? যে খাবারগুলো শয়তান নিয়ে গেল তার দায় দায়িত্ব কে নিবে? পাহারাদার হিসেবে আবু হুরায়রার ব্যর্থতার জন্য তখনই তাকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করে দেয়াটাই স্বাভাবিক ছিলনা? নাকি কিভাবে শয়তানের দাগা থেকে মুক্ত থাকা যায় সেটা শুনার জন্য নবী (সাঃ) অপেক্ষায় ছিলেন? সেক্ষেত্রে এই উপায় নবী (সাঃ) শয়তানের কাছ থেকে না জেনে আল্লাহর কাছ থেকে জানতে চাইতে পারতেননা?
৫) আল্লাহর নামে শপথ করেও আবু হুরায়রা শপথ ভংগ করেছেন।
৬) নবী (সাঃ) আবু হুরায়রাকে বিশ্বাস করে রমজানের যাকাত পাহাড়া দিতে বলেছিলেন, কিন্তু নিজের মাল না হওয়া সত্বেও বিনা অনুমতিতে তা বিলিয়ে দিয়ে সেই বিশ্বাস ভংগ করেছেন আবু হুরায়রা।
কি আজব!!! আমরা এতটাই অন্ধ!! ছোটবেলায় এক সময় এই হাদীস পড়ে আমার মনে একটি প্রশ্নও জাগে নাই!! হাদীস কিভাবে আমাদের মাথা দখল করে কোরানকে ভুলিয়ে রেখেছে তা আমরা নিজেরাও বুঝতে পারিনা!
মুসা নবী (সাঃ) কে নগ্ন করিয়ে ছেড়েছেন।
৩৪০৪. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মূসা (আঃ) অত্যন্ত লজ্জাশীল ছিলেন, সব সময় শরীর ঢেকে রাখতেন। তাঁর দেহের কোন অংশ খোলা দেখা যেত না, তা থেকে তিনি লজ্জাবোধ করতেন। বনী ইসরাঈলের কিছু লোক তাঁকে খুব কষ্ট দিত। তারা বলত, তিনি যে শরীরকে এত অধিক ঢেকে রাখেন, তার একমাত্র কারণ হলো, তাঁর শরীরে কোন দোষ আছে। হয়ত শ্বেত রোগ অথবা একশিরা বা অন্য কোন রোগ আছে। আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করলেন মূসা (আঃ) সম্পর্কে তারা যে অপবাদ ছড়িয়েছে তা হতে তাঁকে মুক্ত করবেন। অতঃপর একদিন নিরালায় গিয়ে তিনি একাকী হলেন এবং তাঁর পরণের কাপড় খুলে একটি পাথরের ওপর রাখলেন, অতঃপর গোসল করলেন, গোসল সেরে যেমনই তিনি কাপড় নেয়ার জন্য সেদিকে এগিয়ে গেলেন তাঁর কাপড়সহ পাথরটি ছুটে চলল। অতঃপর মূসা (আঃ) তাঁর লাঠিটি হাতে নিয়ে পাথরটির পেছনে পেছনে ছুটলেন। তিনি বলতে লাগলেন, আমার কাপড় হে পাথর! হে পাথর! শেষে পাথরটি বনী ইসরাঈলের একটি জন সমাবেশে গিয়ে পৌঁছল। তখন তারা মূসা (আঃ)-কে বস্ত্রহীন অবস্থায় দেখল যে তিনি আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে সৌন্দর্যে ভরপুর এবং তারা তাঁকে যে অপবাদ দিয়েছিল সে সব দোষ হতে তিনি পুরোপুরি মুক্ত। আর পাথরটি থামল, তখন মূসা (আঃ) তাঁর কাপড় নিয়ে পরলেন এবং তাঁর হাতের লাঠি দিয়ে পাথরটিকে জোরে জোরে আঘাত করতে লাগলেন। আল্লাহর কসম! এতে পাথরটিতে তিন, চার, কিংবা পাঁচটি আঘাতের দাগ পড়ে গেল। আর এটিই হলো আল্লাহর এ বাণীর মর্মঃ ‘‘হে মুমিনগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো না যারা মূসা (আঃ)-কে কষ্ট দিয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ্ তাঁকে নির্দোষ প্রমাণিত করেন তা হতে যা তারা রটিয়েছিল। আর তিনি ছিলেন আল্লাহর নিকট মর্যাদার অধিকারী।’’ (আল-আহযাবঃ ৬৯) (২৭৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১৬২)
১) লাজুক হযরত মুসাকে আল্লাহ এইভাবে হেনস্তা করতে পারলেন? লজ্জা, নম্রতা, মোডেস্ট আচরণ, আশ্লীলতা থেকে দূরে থাকা এই সকল আদেশ করাই আল্লাহর সুন্নত,আর আল্লাহর সুন্নতে কখনো পরিবর্তন হয়না। এই হাদীস অনুযায়ী কি আমরা আল্লাহ সম্পর্কে ভুল ( কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক) ধারণা পাচ্ছিনা?
২) কোরানের যেই আয়াতের ব্যাখ্যা হিসেবে আবু হুরায়রা এই হাদীস বলেছিলেন সেই আয়াতটা দেখুনঃ “O you who believe! Be you not like those who annoyed Moses, But Allah proved his innocence of that which they alleged, and he was honorable In Allah’s Sight.” (33.69)
‘‘হে মুমিনগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো না যারা মূসা (আঃ)-কে কষ্ট দিয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ্ তাঁকে নির্দোষ প্রমাণিত করেন তা হতে যা তারা রটিয়েছিল। আর তিনি ছিলেন আল্লাহর নিকট মর্যাদার অধিকারী।’’ (আল-আহযাবঃ ৬৯)
এবার আপনিই বলুনঃ হযরত মুসা নবী কে নগ্ন করে জনপদের সামনে দৌড়িয়ে তার দেহসুষ্ঠব দেখিয়ে কিভাবে হযরত মুসার সরলতা প্রমাণ করা হল? পাঠক নিজের মাথাটা কি একটুও খাটাবেন না? আর কারো শরীরে খুঁত থাকলে সেটা তার দোষ না যে তাকে নির্দোষ প্রমাণ করা লাগবে। আল্লাহ যেখানে এই আয়াতেই বলেছেন যে আল্লাহর দৃষ্টিতে মুসা সম্মানিত,সেখানে মুসাকে নগ্ন করিয়ে কিভাবে মুসার সম্মান রক্ষা করলেন সেটা আমি বুঝতে পারিনাই।
৩) এই ঘটনা সত্যি ঘটে থাকলে ইহুদীরা বলত হে মুসা তুমি কিসের নবী (সাঃ)? সামান্য পাথর তোমাকে মানেনা, আর আমরা মানব? তাই আল্লাহ কখনো এমন ঘটনা ঘটাতেন না।
৪) কোরানের উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা স্বয়ং কোরানই দিয়েছে। সেই ব্যাখ্যার জন্য মিথ্যা হাদীসের দারস্থ হবার কোন প্রয়োজন নেই। কোরানের (৭/১২৯, ২/৬১, ৭/১৩৮, ২/৫৫, ৫/২৪, ৬১/৫, ৫/২৫) আয়াতগুলো পরিষ্কার ভাবে ৩৩/৬৯ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রদান করে। নিজেই যাচাই করে নিন।
আবু হুরায়রা’র অন্যায় আচরণ
৫৪৩২. আবূ হুরাইরাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি পেট ভরার জন্য যা পেতাম তাতে সন্তুষ্ট হয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে সব সময় লেগে থাকতাম। সে সময় রুটি খেতে পেতাম না, রেশমী কাপড় পরতাম না, কোন চাকর-চাকরাণীও আমার খিদমতে ছিল না। আমি পাথরের সঙ্গে পেট লাগিয়ে রাখতাম। আয়াত জানা সত্ত্বেও কাউকে তা পাঠ করার জন্য বলতাম, যাতে সে আমাকে ঘরে নিয়ে যায় এবং আহার করায়। মিসকীনদের প্রতি অত্যন্ত দরদী ব্যক্তি ছিলেন জা‘ফর ইবনু আবূ তালিব। তিনি আমাদের নিয়ে যেতেন এবং ঘরে যা থাকত তাই আমাদের খাওয়াতেন। এমনকি তিনি আমাদের কাছে ঘি’র পাত্রটিও বের করে আনতেন, যাতে ঘি থাকত না। আমরা ওটাই ফেড়ে ফেলতাম আর যা থাকত তাই চাটতাম। [৩৭০৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৫০২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯২৫)
I used to accompany Allah’s Apostle to fill my stomach……..
I used to …. ask somebody to recite a Quranic Verse for me though I knew it, so that he might take me to his house and feed me.
আবু হুরায়রা নিজেই বলছেন যে তিনি রাসুলের সাথে থাকতেন উদর পূর্তির আশায়। এছাড়া কোরানের আয়াত জানা থাকার পরেও তিনি অন্য লোকের কাছে তা জানতে চাইতেন এই আশায় যে সেই লোক আবু হুরায়রাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে খাওয়াবে। এইখানে লক্ষনীয় বিষয় এটাই যে আবু হুরায়রা সরাসরি কাউকে বলতেন না যে আমি ক্ষুধার্ত আমাকে খেতে দিন। বরং তিনি এই মিথ্যা অভিনয় করতেন যে তিনি কোরানের আয়াত শিখতে বড়ই আগ্রহী তাই সেটা শিখার জন্যই বাড়িতে যেতে আগ্রহী, অন্য উদ্দেশ্যে নয়। আবু হুরায়রার অসততা বুঝতে এর বেশী কিছু লাগেনা।
আবু হুরায়রা বড়ই ক্ষুধার্ত ছিলেন, পেটে পাথর বাঁধতে হত। এই রকম একটা ক্ষুধার্ত লোককে অতি অবশ্যই সাহাবাগণ নিজের জীবন দিয়ে হলেও খাওয়ানোর ব্যবস্থা করবেন তা স্বাভাবিক চিন্তাতেই বুঝা যায়। স্বয়ং কোরানেই বহুবার নির্দেশ দেয়া আছেপ্রতিবেশী/ এতীম/ মিসকিন/ ক্ষুধার্তকে খাবার না দিয়ে নামাজ পড়লে তা কবুল হবেনা। সুরা মাউন দেখে নিতে পারেন। তো সাহাবারা কি কোরানের নির্দেশ জানতেন না?
যাই হোক হযরত উমরের সাথে এই রকম করতে গিয়ে একদিন আবু হুরায়রা লাভবান হতে পারেন নাই। নিচের হাদীস দেখুনঃ
৪৯৮৩। ইউসুফ ইবনু ঈসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার তার ইন্তেকাল অবধি একাধারে তিন দিন আহার করে পরিতৃপ্ত হন নি।
আরেকটি বর্ণনায় আবূ হাযিম আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, একদা আমি প্রচণ্ড ক্ষুধার যন্ত্রনায় আক্রান্ত হই। তখন উমর ইবনু খাত্তারের সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং মহান আল্লাহ (কুরআনের) একটি আয়াতের পাঠ তার থেকে শুনতে চাইলাম। তিনি আয়াতটি পাঠ করে নিজ গৃহে প্রবেশ করলেন। এদিকে আমি কিছু দূর চলার পর ক্ষুধার যন্ত্রনায় উপুড় হয়ে পড়ে গেলাম। একটু পরে দেখি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার মাথার কাছে দাঁড়ানো। তিনি বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা। আমি লাব্বাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ ওয়া সাদায়কা (আমি হাযীর! ইয়া রাসুলাল্লাহ, আপনার সমীপে) বলে সাড়া দিলাম। তিনি আমার হাত ধরে তুললেন এবং আমার অবস্থা বুঝতে পারলেন।
তিনি আমাকে খেতে নিয়ে গেলেন এবং আমাকে এক পেয়ালা দুধ দেওয়ার জন্য আদেশ করলেন। আমি কিছু পান করলাম। তিনি বললেনঃ আবূ হুরায়রা! আরো পান কর। আবার পান করলাম। তিনি পুনবায় বললেনঃ আরো। আমি পূনর্বার পান করলাম। এমনি কি আমার পেট তীরের মত সমান হয়ে গেল। এরপর আমি উমরের সাথে সাক্ষাৎ করে আমার অবস্থার কথা তাকে জানালাম এবং বললামঃ হে উমর! আল্লাহ তাআলা এমন একজন লোকের মাধ্যমে এর বন্দোবস্ত করেছেন যিনি এ ব্যাপারে তোমার চেয়ে বেশী উপযুক্ত। আল্লাহর কসম! আমি তোমার কাছে আয়াতটির, পাঠ শুনতে চেয়েছি অথচ আমি তোমার চেয়ে তা ভাল পাঠ করতে পারি। উমর (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! তোমাকে আপ্যায়ন করা আমার নিকট লাল বর্ণের উটের চেয়েও অধিক প্রিয়
Afterwards I met ‘Umar and mentioned to him what had happened to me, and said to him, “Somebody, who had more right than you, O ‘Umar, took over the case. By Allah, I asked you to recite a Verse to me while I knew it better than you.”
On that Umar said to me, “By Allah, if I admitted and entertained you, it would have been dearer to me than having nice red camels.
আবু হুরায়রা দাবী করছেন যে তিনি হযরত উমরের চাইতেও তিনি কোরানের আয়াতটি বেশি বুঝতেন। আমার খুব অদ্ভুত লাগছে তিনি কেন সরাসরি বলতে পারলেননা যে তিনি ক্ষুধার্ত। আপনারা যুক্তি দেখাতে পারেন যে আত্মসম্মান বোধের কারণে তিনি বলেননি। কিন্তু তিনি একজন মিসকিন, থাকার ঘরটা পর্যন্ত নেই সেই লোক আত্মসম্মানের কারণে মিথ্যা ভান করলে সেটাতো আরও বড় অপরাধ। কোরানের আয়াত জানা থাকার পরেও না জানার ভান করে খাওয়ার ব্যাবস্থা করা মিথ্যারই নামান্তর। আর হযরত উমর কি বললেন!! আবু হুরায়রা কে বাসার ভিতর ঢুকিয়ে উপভোগ করালে সেটা নাকি হযরত উমরের কাছে একটা উট পাওয়ার চাইতেও বেশী পছন্দনীয় ব্যাপার হত!! এত পছন্দের একটা জিনিস একেবারে হাতের কাছে পেয়েও হযরত উমর পায়ে ঠেলে দিলেন? এত ক্ষুধার্ত একজন মানুষ যে ফেইন্ট হয়ে যায় তাকে দেখলেই তো হযরত উমরের বুঝা উচিৎ ছিল যে তাকে খাওয়ানো উচিত। এই হাদীস বিশ্বাস করলে তো দেখা যাচ্ছে হযরত উমর নিজের পছন্দের ব্যাপারে পরিষ্কার মিথ্যা কথা বলেছেন।
আবু হুরায়রা’র আরেকটি সন্দেহজনক হাদীস
৬১৭১। আমর আন-নাকিদ (রহঃ) … আবূ কাসীর থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যেন, আমি আমার মাকে ইসলামের প্রতি আহবান জানাতাম, তখন তিনি মুশরিক ছিলেন। একদিন আমি তাকে ইসলাম কবুলের জন্য আহবান জানালাম। তখন তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে আমাকে এমন এক কথা শোনালেন যা আমার কাছে খুবই অপ্রিয় ছিল। আমি কাঁদতে কাঁদতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি আমার মাকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে আসছিলাম। আর তিনি অস্বীকার করে আসছিলেন। এরপর আমি তাকে আজ দাওয়াত দেওয়াতে তিনি আমাকে আপনার সম্পর্কে এমন কথা শোনালেন, যা আমি পছন্দ করি না। সুতরাং আপনি আল্লাহ্র কাছে দু’আ করুন যেন তিনি আবূ হুরায়রার মাকে হিদায়াত দান করেন।
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “হে আল্লাহ্! আবূ হুরায়রার মাকে হিদায়াত দান কর”। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু’আর কারনে আমি খুশি মনে বেরিয়ে এলাম। যখন আমি (ঘরের) দরজায় পৌঁছলাম তখন তা বন্ধ দেখতে পেলাম। আমার মা আমার পায়ের আওয়াজ শুনতে পেলেন। তিনি বললেন, আবূ হুরায়রা! একটু দাড়াও (থাম)। তখন আমি পানির কলকল শব্দ শুনছিলাম। তিনি বলেন, এরপর তিনি (আমার মা) গোসল করলেন এবং গায়ে চাঁদর পরলেন। আর তড়িঘড়ি করে দোপাট্টা ও ওড়না জড়িয়ে নিলেন, এরপর ঘরের দরজা খুলে দিলেন।
এরপর বললেন, “হে আবূ হুরায়রা! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ব্যাতিত কোন ইলাহ নেই, আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল”। তিনি বলেন, তখন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে রওনা হলাম। এরপর তাঁর কাছে গেলাম এবং আমি তখন আনন্দে কাঁদছিলাম। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সুসংবাদ গ্রহন করুন। আল্লাহ্ আপনার দু’আ কবুল করেছেন এবং আবূ হুরায়রার মাকে হিদায়াত দান করেছেন। তখন তিনি আল্লাহ্র শুক্র আদায় করলেন ও তাঁর প্রশংসা করলেন এবং ভাল ভাল (কথা) বললেন।
তিনি বলেন, এরপর আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আল্লাহ্র কাছে দু’আ করুন, তিনি যেন আমাকে এবং আমার মাকে মু’মিন বান্দাদের কাছে প্রিয় করেন এবং তাদের ভালবাসা আমাদের অন্তরে বদ্ধমূল করে দেন। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “হে আল্লাহ্! তোমার এই বান্দা (আবূ হুরায়রা) কে এবং তাঁর মাকে মুমিন বান্দাদের কাছে প্রিয়ভাজন করে দাও এবং তাদের কাছেও মুমিন বান্দাদের প্রিয় করে দাও”। এরপর এমন কোন মুমিন বান্দা সৃষ্টি হয়নি, যে আমার কথা শুনেছে অথবা আমাকে দেখেছে অথচ আমাকে ভালোবাসেনি।
১) আবু হুরায়রার মা এতই বিধর্মী যে নবী (সাঃ) কে গালি দিতে ছাড়েন না,অথচ মাতৃভূমি ইয়েমেন ছেড়ে কপর্দকহীন আবু হুরায়রার সাথে নবী (সাঃ) এরএলাকায় থাকতে চলে এলেন যেখানে আবু হুরায়রায় নিজেরই খাবার জুটেনা, বারবার মাথা ঘুরে পড়ে যায়? মাতৃভূমিতে অন্য সকল অবিশ্বাসীদের সাথেই থাকার কথা ছিলনা?
২) কপর্দকহীন আবু হুরায়রা যেখানে দাবী করেন তার কোন সহায় সম্বল ছিলনা, সুফফা তে তিনি মসজিদে থাকতেন রাত দিন, সেখানে আবু হুরায়রার এই হাদীসে বর্ণিত ঘরটি কোত্থেকে আসল? মুয়াবিয়ার আমলে হাদীস বর্ণনার সময় অবস্থাসম্পন্ন আবু হুরায়রা কি ভুলে গিয়েছিলেন তার মক্কার শুরুর জীবনের দূরবস্থা?
৩) নবী (সাঃ) এত দোয়া করে নিজ চাচা হযরত আবু তালিবকে মুসলিম বানাতে পারলেননা, হামজা এবং দুই একজন ছাড়া আর সকল আত্মীয়ই নবী (সাঃ) এরদোয়া সত্বেও ঈমান আনতে পারলেননা আর আবু হুরায়রার মার ঈমান চলে এল?
৪) এত গুরুত্বপূর্ণ একটা ঘটনা আবু হুরায়রা ছাড়া আর কেউ জানলনা? এই ঘটনা সত্য হলে সকলের মুখে মুখে শুনা যেত, নবী (সাঃ) এরমাজেজার এক গ্রেট সাইন হত এটা। অথচ কেউ আবু হুরায়রার মা সম্পর্কে একবিন্দু তথ্য জানেনা, ইতিহাস ঘেঁটে দেখুন। শুধু হযরত উমরের একটা কথায় আবু হুরায়রার মায়ের নামটা জানা যায়।
৫) মুসলিম হয়েই আবু হুরায়রার মা ছেলের সামনেও পর্দা করা শুরু করে দিলেন? তিনি ওযুর কথা পর্দার কথা হঠাৎ করে জেনে গেলেন?
৬) এই হাদীসের শেষ লাইনটি সম্পূর্ণ মিথ্যাঃ no believer was ever born who heard of me and who saw me but did not love me.
আবু হুরায়রা বর্ণিত হাদীসেই আমরা দেখেছি পিপল অব ইরাক যারা বিশ্বাসী ছিলেন তারা আবু হুরায়রাকে মিথ্যাবাদী বলতেন।
ইবনে সাদ এর তাবাকাত এ দেখি আবু হুরায়রা নিজেই বর্ণনা করেছেনঃ উমর আবু হুরায়রাকে বলছেন “O you, enemy of God and His Book! You stole God’s money, didn’t you? How else could you be in possession of ten thousand dinars?”
হযরত উমর এর মত খলিফা বিনা প্রমাণে একজনকে আল্লাহর শত্রু বলে দিতেন না। হযরত উমর তার নিজের পুত্রের প্রতি কি আচরণ করেছিলেন তা দেখলেই জেনে যাবেন তিনি এই ধরনের লোক নন। সহিহ বুখারী আর মুসলিমের হাদীসেও আমরা দেখেছি আবু হুরায়রা যখন কালেমা শাহাদা এর কথা বলেছিলেন হযরত উমর আবু হুরায়রা কে বুকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে গলায় পা দিয়েছিলেন। যদিও হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)’র দাবী অনুযায়ী হযরত উমর পরে আবু হুরায়রা’র কথা বিশ্বাস করেছিলেন নবী (সাঃ) এর জুতা দেখে।
পাপ করার লাইসেন্সঃ প্রদায়ক আবু হুরায়রা
৬৭৩২। আবদুল আলা ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় প্রতিপালক আল্লাহ রাব্বুল আলামীন থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, এক বান্দা গুনাহ করে বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমার গুনাহ ক্ষমা করে দাও। তারপর আল্লাহ তাআলা বললেন, আমার বান্দা গুনাহ করেছে এবং সে জানে যে, তার একজন প্রতিপালক আছে, যিনি গুনাহ ক্ষমা করেন এবং গুনাহের কারণে পাকড়াও করেন। এ কথা বলার পর সে পুনরায় গুনাহ করল এবং বলল, হে আমার মনিব! আমার গুনাহ মাফ করে দাও। এরপর আল্লাহ তাআলা বললেন, আমার এক বান্দা গুনাহ করেছে এবং সে জানে যে, তার একজন প্রতিপালক আছে যিনি গুনাহ মাফ করেন এবং গুনাহের কারণে পাকড়াও করেন।
তারপর সে আবারও গুনাহ করে বলল, হে আমার রব! আমার গুনাহ ক্ষমা করে দাও। একথা শুনে আল্লাহ তাআলা আবারও বলেন, আমার বান্দা গুনাহ করেছে এবং সে জানে যে তার একজন মালিক আছে, যিনি বান্দার গুনাহ ক্ষমা করেন এবং গুনাহের কারণে পাকড়াও করেন। তারপর আল্লাহ তাআলা বলেন, হে বান্দা! এখন যা ইচ্ছা তুমি আমল কর। আমি তোমার গুনাহ মাফে করে দিয়েছি। বর্ননাকারী আবদুল আ’লা বলেন, “এখন যা ইচ্ছা তুমি আমল কর” কথাটি (আল্লাহ তাআলা) তৃতীয়বারের পর বলেছেন, না চতুর্থবারের পর বলেছেন, তা আমি জানি না।
যত খুশি পাপ করুন, শুধু একবার বললেই হবে যে আল্লাহ ক্ষমা করে দিও। এক সময় আল্লাহ বিরক্ত (!!) হয়ে বলে দিবেন বান্দারে তুই যা খুশি কর, আমি তোরে ক্ষমা করে দিয়েছি।
এই ধারণা সম্পূর্ণ কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক। আল্লাহ বলেছেন প্রতিটি কাজের হিসাব হবে। আল্লাহ অসীম দয়ালু, তিনি তওবা কবুল করেন তবে কখনোই পাপ করার লাইসেন্স দিয়ে দেননা।
৬৭২৮। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক ব্যক্তি তার নিজের প্রতি বাড়াবাড়ি করল। এরপর মৃত্যু মুখে পতিত হয়ে সে তার সন্তানদেরকে অসিয়্যাত করল এবং বলল, আমি মরে যাওয়ার পর তোমরা আমাকে আগুনে পুড়িয়ে ছাইকে উত্তমরূপে পিষবে। তারপর আমাকে সমুদ্রের মাঝে বায়ুতে উড়িয়ে দিবে। আল্লাহর কসম! আল্লাহ যদি আমাকে পান, তবে অবশ্যই তিনি আমাকে এমন শাস্তি দিবেন, যা তিনি আর কাউকে দেননি। তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ সন্তানগণ তার সাথে অনুরূপ আচরণ করল।
এরপর আল্লাহ তা’আলা মাটিকে বললেন, তুমি তার যে ছাই গ্রাস করেছ তা একত্রিত করে দাও। ফলে সে সোজা দাড়িয়ে গেল। এ সময় আল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, এ কাজ করার ব্যাপারে কিসে তোমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে? উত্তরে সে বলল, خَشْيَتُكَ يَا رَبِّ অথবা مَخَافَتُكَ আপনার ভয়ে। তারপর এ কথার বিনিময়ে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন।
অপর এক সুত্রে যুহরী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন এক স্ত্রীলোক বিড়ালের কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করেছে। সে বিড়ালটি বেঁধে রেখেছিল; কিন্তু তাকে কোন খাদ্য প্রদান করেনি এবং জমি থেকে কীট পতঙ্গ খাবার জন্য তাকে ছেড়েও দেয়নি। এমনিভাবে বিড়ালটি মরে যায়।
যুহরী (রহঃ) বলেন, উপরোক্ত হাদীস দুটো এ জন্যই বয়ান করা হয়েছে, যেন কোন মানুষ (আমল বর্জন করে আল্লাহর উপর) নির্ভর করে বসে না থাকে এবং যেন মানুষ (আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে) নিরাশ না হয়ে যায়।
কি আজব! যেখানে আল্লাহ কোরানে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন কারও তিল পরিমাণ ভাল কাজও নষ্ট হবেনা, সেখানে বিড়ালকে না খাওয়ানোতে মহিলা জাহান্নামী। বিড়ালকে না খাওয়ালে জাহান্নামে যেতে হবে এমন কথা আল্লাহ কোথাও বলেননি। মহিলা জাহান্নামে গিয়ে থাকলে বিড়ালকে না খাওয়ানোর অন্যায় এর সাথে অন্যান্ন অন্যায় মিলেই গিয়েছে। আর আরেক পাপী এত বড় পাপই করেছে যে তওবা না করেই মারা গেল। সে পাপের গুরুত্ব বুঝে তওবা করার সাহসও পায়নি। আর আল্লাহ সেই পাপীকে বিনা তওবায় ক্ষমা করে দিলেন? আল্লাহর সুন্নতের সাথে যাচ্ছেনা। আল্লাহ বলেছেন প্রতিটি মানুষ তার কর্ম অনুযায়ী ফল ভোগ করবে।
সর্বোপরি, হাশরের বিচার এখনো শুরুই হলনা, বিচার দিবসের কথা আল্লাহ কোরানে ঘোষনা করে রেখেছেন, সেখানে সকলের কৃতকর্মের হিসাব নেয়া হবে, আর এই হাদীসে দেখছি বিচার আচার শেষে জান্নাত জাহান্নামও অকুপাই হয়ে গিয়েছে। শেষ বিচারের দিন কি আল্লাহ পূর্বের বিচারের ভিডিও দেখবেন?
নবী (সাঃ) এর কথা প্রচার করলেও তা মানেন নি আবু হুরায়রা নিজেই
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল আবু হুরায়রা সম্পর্কে একটি ঐতিহ্য মুহাম্মদ বিন জিয়াদ দ্বারা বর্ণনা করেছেনঃ মুহম্মদ বিন জিয়াদ বলছেনঃ “মারওয়ান, মুয়াবিয়ার রাজত্বকালে মদিনার আমীর ছিলেন। কখনও কখনও আবু হুরায়রা তার উপদেষ্টা হওয়ার জন্য মদিনা ছেড়ে চলে যায়। আবু হুরায়রা মাটিতে আঘাত করে বলেছিলেন: “পথ পরিষ্কার কর! পথ পরিষ্কার কর! আমির এসেছেন। “সে নিজেই উল্লেখ করেছে।
মুসনাদ, ইমাম আহমদ বিন হাম্বল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৪৩
ইবনে কুতুব্বা আদ-দীনুরী তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেছেন । আবু রাফি বলেছিলেন:
মারওয়ান কিছু সময়ের জন্য আবু হুরায়রাকে মদিনার আমীর নির্ধারিত করেছিল। যখন সে ভ্রমণ করত গাধার উপর বসে এবং তার মাথায় খেজুর গাছের আঁশ ঝুলিয়ে রাখত। সে যখন কারো সাথে সাক্ষাত করত তখন বলত- পথ পরিষ্কার কর! আমির এসেছে। “সে নিজেই হয়তো”
দুই দিনের জন্য আমির হয়ে আবু হুরায়রা মাটিতে পা ছুঁড়ে আঘাত করে নিজেকে নিজে আমীর উল্লেখ করে বলছেন যে তার জন্য লোকে রাস্তা ছেড়ে দিক। আবু হুরায়রা যে সেই সময় মারওয়ানের ডেপুটি ছিলেন তা নিচের লিংকের হাদীসেও আছে।
এদিকে আবু হুরায়রা বর্ণিত একটা হাদীস দেখিঃ এই হাদীসে বাহরাইনের আমীর ঠিক একই আচরণ করেছিল বলে নবী (সাঃ) না করে দিয়েছেন যে এমন আচরণ খারাপ। আমীর হয়েই আবু হুরায়রা নবী (সাঃ) এর কথা ভুলে গেলেন?
৫২৮৮। উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) … মুহাম্মাদ ইবনু যিয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি (তিনি তখন বাহরায়নের গভর্নর ছিলেন), (একদা) তিনি দেখলেন, এক ব্যক্তি তার ইযার ঝুলিয়ে চলছে আর তা পা দ্বারা যমীনে আঘাত করে করে বলছে, আমীর এসেছেন, আমীর এসেছেন…… রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ সে লোকের দিকে তাকাবেন না, যে তার অহংকারবশে ইযার ঝুলিয়ে চলে।
ভাল করে পড়ে দেখুন, কাপড় ছেঁচরানোটা মূল কারণ নয় বরং অহংকারটাই মূল কারণ যা নবী (সাঃ) করতে নিষেধ করেছেন। আর মাটিতে পা ছুঁড়ে আঘাত করে লোকজনকে রাস্তা ছেড়ে দিতে বলাটাতো পরিষ্কার অহঙ্কার।
আবু হুরায়রা স্বয়ং আল্লাহকেও দোজখে ঢুকাতে ছাড় দেননি
৪৮৫০. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাত ও জাহান্নাম পরস্পর বিতর্ক করে। জাহান্নাম বলে দাম্ভিক ও পরাক্রমশালীদের দ্বারা আমাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। জান্নাত বলে, আমার কী হলো? আমাতে কেবল মাত্র দুর্বল এবং নিরীহ ব্যক্তিরাই প্রবেশ করছে। তখন আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা‘আলা জান্নাতকে বলবেন, তুমি আমার রহমাত। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছে আমি অনুগ্রহ করব। আর তিনি জাহান্নামকে বলবেন, তুমি হলে আযাব। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছে শাস্তি দেব। জান্নাত ও জাহান্নাম প্রত্যেকের জন্যই রয়েছে পূর্ণতা। তবে জাহান্নাম পূর্ণ হবে না যতক্ষণ না তিনি তাঁর পা তাতে রাখবেন। তখন সে বলবে, বাস, বাস, বাস। তখন জাহান্নাম পূর্ণ হয়ে যাবে এবং এর এক অংশ অপর অংশের সঙ্গে মুড়িয়ে দেয়া হবে। আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্টির কারো প্রতি জুলুম করবেন না। অবশ্য আল্লাহ্ তা‘আলা জান্নাতের জন্য অন্য মাখলূক সৃষ্টি করবেন। [৪৮৪৯; মুসলিম ৫১/১৩, হাঃ ২৮৪৬, আহমাদ ৮১৭০] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৪৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৪৮৬)
অর্থাৎ, আল্লাহ নিজের পা দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করবেন। এ ব্যাপারে কোরান কি বলে দেখিঃ
لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنكَ وَمِمَّن تَبِعَكَ مِنْهُمْ أَجْمَعِينَ
তোর (ইবলিশ) দ্বারা আর তাদের মধ্যে যারা তোর (ইবলিশ) অনুসরণ করবে তাদের দ্বারা আমি জাহান্নাম পূর্ণ করব। সূরা সোয়াদ আয়াত ৮৫
অন্যান্য অনেক হাদীসে আবু হুরায়রা আল্লাহর হাত পা মাথা ইত্যাদি আছে বলে দাবী করেছে। এখন এইটাকেও যদি কেউ বলেন রূপক হাদীস তাহলে ভাই আমার রূপক হাদীসের চেয়ে কোরানকেই সহজ বলে মনে হচ্ছে, কারণ আল্লাহ কোরানে সরাসরিই বলে দিয়েছেন শয়তান আর তার অনুসারী দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করবেন। আর আল্লাহর পা কে যদি শয়তানের অনুসারী বলেন (নাউযুবিল্লাহ) তাইলে আর কি বলব!! এই রুপক হাদীস দিয়ে আসলে কি বুঝানো হয়েছে তাই বলেন? এর দরকার কি আমাদের জন্য?
শেষ কথা হিসেবে বলতে চাই, আসুন ভাইয়েরা আমরা আমাদের ভুল ধারণা গুলো বাদ দিয়ে সত্য পথে চলার চেষ্টা করি। আমি এতক্ষণ শুধু আবু হুরায়রা বর্ণিত হাদীসই উল্লেখ করেছি। তার গুলো বাদেও এমন বহু সংখ্যক হাদীস রয়েছে যা অবাস্তব, ভয়ঙ্কর, লজ্জাজনক, ক্ষতিকর এবং মিথ্যা। তাই সনদের উপর বিশ্বাস না করে চলুন সবাই কোরান দিয়ে হাদীস যাচাই করি। তাহলেই শুধু এই সিঙ্ঘভাগ বাতিল হাদীস থেকেও আপনি অনেক ভাল হাদীস খুঁজে পেতে পারেন। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
রাব্বানা তাকব্বাল দোয়া।