হেঁচকি কেন উঠে আর থামাবেন কীভাবে?

হেচকির জন্য ঔষধ খাবেন না।
ঔষধ খেয়ে একবার বিপদে পড়েছিলাম। একবার প্রচন্ড হেচকি উঠা শরু করল। সকাল-সন্ধ্যা শুধু হেচকি। মায়ের পরামর্শে লবঙ্গ+ চিনি খেলাম। প্রচুর পানি খেলাম৷ কিছুই হল না। তিন দিন পরে আবার কক্সবাজারে একটা কনফারেন্সে এটেন্ড করতে হবে। এই অবস্থা হলে তো বিপদ। বিকালে আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে দেখালাম। উনি বিস্তারিত বললেন। কেন হয়, কিভাবে, কোন নার্ভ দায়ী ইত্যাদি। আর হ্যালোপেরিডল ঔষধ দিলেন সকাল বিকাল খাওয়ার জন্য। জীবনে ঘুমের ঔষধ খাই নাই। ছোটবেলায় ডাক্তার মাইগ্রেনিল দিয়েছিল তাও চার ভাগের একভাগ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে থাকতাম। হেচকির অবস্থা বেগতিক দেখে, তিন -চরটে খেয়ে নিলাম। তারপর ইতিহাস। দুই দিন ঝাড়া ঘুমাইলাম। তারপর উঠে মাকে বললাম। দোড়ঝাপ শুরু হল। কনফারেন্সে জুনিয়রকে পাঠালাম। আর আম্মু তো ডাক্তারের উদ্ধার করে ছেড়ে দিল।
প্লাসিবো হিসাবে হেচকি সিনেমা খেয়ে দেখতে পারেন।
এ তো গেলো ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। এবার একটু মেডিকেল কপচায়।
মানুষের হেঁচকি আসে কেন?
বিজ্ঞানীরা শত শত বছর ধরে আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিহীন এই শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যার সুনির্দিষ্ট কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন।
হেঁচকির সময় শ্বাসনালীতে সামান্য খিঁচুনির মত হয় যার ফলে শ্বাসযন্ত্রে দ্রুত বাতাস প্রবেশ করে। তখন ভোকাল কর্ড হঠাৎ বন্ধ হয়ে 'হিক' শব্দ তৈরি হয়।
ফুসফুসের নীচের পাতলা মাংসপেশীর স্তর, যেটিকে ডায়াফ্রাম বলে, হঠাৎ সংকোচনের ফলেই হেঁচকি তৈরি হয়।
হেঁচকি ওঠার একশো'র বেশি মেডিক্যাল কারণ থাকতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলো খুবই সামান্য কারণেই হয়ে থাকে।
হেঁচকি ওঠার একশো'র বেশি মেডিক্যাল কারণ থাকতে পারে
দ্রুত খাওয়ার কারণে খাবারের সাথে সাথে পেটের ভেতর বাতাস প্রবেশ করার কারণে 'ভ্যাগাস' নার্ভের কার্যকলাপ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে হেঁচকি তৈরি হয়।
চেতনানাশক, উত্তেজনাবর্ধক, পার্কিনসন্স রোগ বা কেমোথেরাপির বিভিন্ন ধরণের ওষুধ নেয়ার ফলেও হেঁচকি তৈরি হতে পারে।
এছাড়া কিছু অসুখের ক্ষেত্রেও মানুষের হেঁচকি হতে পারে।
কিন্তু অধিকাংশ সময়ই হেঁচকি শুরু হওয়ার জন্য এসব কোনো কারণেরই দরকার হয় না।
হাসি বা কাশির মধ্যে, অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিদ্রুত খাবার গ্রহণ করা বা ঝাঁঝসহ পানীয় বেশি পরিমাণে খেলে হেঁচকি শুরু হতে পারে, তবে কোনো ধরণের কারণ ছাড়াও হেঁচকি আসাটা একেবারেই অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়।
হেঁচকি ওঠাটা খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং সাধারণত মিনিটখানেকের মধ্যেই তা স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় হেঁচকির উদাহরণও কিন্তু রয়েছে।
যেমন সবচেয়ে বেশি সময় ধরে হেঁচকি ওঠার বিশ্ব রেকর্ডের উদাহরণ হিসেবে মনে করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের চার্লস অসবোর্নের ঘটনাকে।
১৯২২ সালে হেঁচকি তোলা শুরু করেন তিনি, কথিত আছে সেসময় তিনি একটি শূকর ওজন করার চেষ্টা করছিলেন। মি. অসবোর্ন হেঁচকি তোলা থামান ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে - মোট ৬৮ বছর পর।[1]
তাহলে বুঝুন অবস্থা।
আসল উত্তরঃ
প্লাসিবো হিসাবে দিলেও অনেক সময় কাজ হয় কারণ মনই শরীরের নিয়ন্ত্রণ করে। তবে ভেগাস নার্ভের এক্টিভিটি এবং ডায়াফ্রামের জন্যও কিছু ঔষধ দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।
ধন্যবাদ
ফুটনোটগুলি

Post a Comment

Previous Post Next Post