কোরআনে মুমিন এর পরিচয় !

কোরআনে মুমিন এর পরিচয় !


মুমিন কারা ?
মুমিন একটি আরবি শব্দ, যা মূলত আরবি ঈমান শব্দটি থেকে এসেছে। এর শাব্দিক অর্থ "বিশ্বাসী" এবং এর দ্বারা একজন কঠোরভাবে অনুগত মুসলিমকে বুঝায়, যে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে ইসলামকে নিজের অভ্যন্তরের এবং বাহিরের সকল কর্মকান্ডে ধারণ করে এবং আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার কাছে নিজেকে পূর্ণরুপে সমর্পণ করে| নারী মুমিনদের ক্ষেত্রে মুমিনা শব্দটি ব্যবহৃত হয়।

মুসলিম/মুসলিমার সাথে মুমিন/মুমিনার পার্থক্য

মুসলিম হল ইসলাম ধর্মকে নিজ ধর্ম বলে বিশ্বাস ও স্বীকার করে এমন ব্যক্তি| অপরদিকে মুমিন হল ইসলাম ধর্মকে নিজ ধর্ম বলে বিশ্বাস ও স্বীকার করার পাশাপাশি তা নিজের ভেতরে ও বাহিরে ধারণ করে এবং সাথেসাথে কঠোরভাবে এর নির্দেশাবলী মেনে চলে এমন ব্যক্তি। অর্থাৎ, বলা যায়, সকল মুমিন মুসলিম, কিন্তু সকল মুসলিম মুমিন নয়।

ব্যক্তি পার্থক্য

মুহসিন – পূর্ণতা ও উৎকর্ষ অর্জনকারী
মুমিন – বিশ্বাসী
মুসলিম – [আল্লাহর নিকট] আত্মসমর্পণকারী
ফাসিক – অধার্মিক, লঘু পাপী, দুশ্চরিত্র
ফাজির – পাপাচারী, অনিষ্টকারী
মুনাফিক – কপট, ধর্মধ্বজী
কাফির – গোপনকারী, অস্বীকারকারী, প্রত্যাখ্যানকারী
মুশরিক – পৌত্তলিক, বহুঈশ্বরবাদী, [আল্লাহর সঙ্গে] শরিককারী
জিন্দীক – ধর্মদ্রোহী
মুরতাদ – ধর্মত্যাগী
মুলহিদ – নাস্তিক, অবিশ্বাসী

কোরআনের ভাষায় মুমিন যারা

➡️ সূরা আল হুজুরাত (الحجرات), আয়াত: ১৫
অর্থঃ নিঃসন্দেহ মুমিন তারাই যারা আল্লাহ্‌তে ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, তারপরে তারা সন্দেহ পোষণ করেনা, আর তাদের ধনসম্পদ ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ করে। এরাই খোদ সত্যনিষ্ঠ।
➡️ সূরা আল আনফাল (الأنفال), আয়াত: ২
মুমিন তো কেবল তারাই যাদের হৃদয় ভয়ে কাঁপে যখন আল্লাহ্‌র কথা বলা হয়, আর যখন তাদের কাছে তাঁর বাণীসমূহ পাঠ করা হয় তা তাদের জন্য ধর্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়, আর তাদের প্রভুর উপরেই তারা নির্ভর করে, --
➡️ সূরা আল আনফাল (الأنفال), আয়াত: ৩
যারা সালাত কায়েম করে আর আমরা তাদের যা রিযেক দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করে থাকে।
➡️ সূরা আল আনফাল (الأنفال), আয়াত: ৪
তারা নিজেরাই হচ্ছে সত্যিকারের মুমিন। তাদের জন্য রয়েছে তাদের প্রভুর কাছে মর্যাদার স্তরসমূহ, আর পরিত্রাণ ও সম্মানজনক জীবিকা।
🔴 মুমিনরা যে কোনো সংবাদকে যাচাই-বাছাই করে গ্রহণ করে।🔴

➡️ ‘হে মুমিনগণ! যদি কোনো পাপাচারী তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও। এরপর নিজেদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হও।’ সূরা হুজুরাত, আয়াত ৬।

🔴 অহেতুক ও অপ্রয়োজনীয় বিষয়কে মুমিন বান্দারা এড়িয়ে চলে 🔴

➡️ ‘দয়াময় আল্লাহর প্রকৃত বান্দা তারাই, যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না আর অহেতুক বিষয়ের পাশ দিয়ে যখন তারা গমন করে, তখন তারা ভদ্রভাবে পাশ কাটিয়ে যায়।’ সূরা ফুরকান, আয়াত ৭২।

🔴 সফল মুমিন কারা? এ প্রশ্নের জবাবে বলা হয়েছে🔴

➡️ ‘মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে, যারা নিজেদের সালাতে বিনয়ী-নম্র, যারা অনর্থক কথা বলে না, যারা জাকাত আদায় করে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানকে সংযত রাখে। সূরা মুমিনুন, আয়াত ১-৪।
➡️ আর ইমানদার পুরুষ ও ইমানদার নারী একে অন্যের সহায়ক। তারা সৎ কাজের আদেশ দেয় এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। সালাত প্রতিষ্ঠা করে, জাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসুলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবনযাপন করে। এদের ওপর আল্লাহ দয়া করবেন।’ সূরা তাওবা, আয়াত ৭১।
➡️ নিশ্চয়ই সৎকর্মশীল মুমিনদের জন্য দয়াময় আল্লাহ তাদের অন্তরে মহব্বত পয়দা করে দেন।’ সূরা মরিয়ম, আয়াত ৯৬।


মুমিনের বৈশিষ্ট্য- গুণাবলী
সুরা তাওবার ১১১ নং আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য আছে জান্নাত। তারা আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করে, অতঃপর তারা মারে ও মরে। তাওরাত, ইঞ্জীল ও কুরআনে এ সম্পর্কে তাদের হক ওয়াদা রয়েছে। আর নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহর চেয়ে শ্রেষ্ঠতর কে আছে? সুতরাং তোমরা যে সওদা করেছ সে সওদার জন্য আনন্দিত হও। আর সেটাই তো মহাসাফল্য। পরের আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা তাওবাকারী, ইবাদাতকারী, আল্লাহর প্রশংসাকারী, সিয়াম পালনকারী, রুকূকারী, সিজ্দাকারী, সৎকাজের আদেশদাতা, অসৎকাজের নিষেধকারী এবং আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা হেফাযতকারী। আর মুমিনদেরকে তুমি সুসংবাদ দাও। আল্লাহ সুবাহানাহুয়া তায়ালা প্রথম আয়াতে বলছেন, তিনি মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন জান্নাতের বিনিময়ে। তারপর তিনি মুমিনদের প্রধান বৈশিষ্ট্য বা গুণের কথা উল্লেখ করলেন, সেটা হচ্ছে তারা আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করে, অতঃপর তারা মারে ও মরে। এর বিনিময়েই তো আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে জান্নাত দান করবেন। পরের আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের আরো নয়টি বৈশিষ্ট্য বা গুনের কথা উল্লেখ করলেন। পূর্ণ মুমিন হওয়ার জন্য যেগুলো অত্যন্ত জরুরি। আমরা উক্ত দুইটি আয়াতে বর্ণিত মুমিনের মোট দশটি বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলী একে একে বিশ্লেষণ করব ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় মুমিনের বৈশিষ্ট্য আল্লাহ তায়ালা বর্ণনা করেছেন। সেগুলো তুলে ধরা হলো। ১) প্রকৃত ঈমানদার তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ওপর ঈমান এনেছে এবং এ ব্যাপারে পরে আর কোন সন্দেহ পোষণ করেনি। তারপর প্রাণ ও অর্থ-সম্পদ দিয়ে জিহাদ করেছে। তারাই সত্যবাদী। -(সূরা আল হুজুরাতঃ ১৫) ২) প্রকৃত ঈমানদার তো তারাই, আল্লাহকে স্মরণ করা হলে যাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে। আর আল্লাহর আয়াত যখন তাদের সামনে পড়া হয়, তাদের বিশ্বাস বেড়ে যায় এবং তারা নিজেদের রবের ওপর ভরসা করে। তারা নামায কায়েম করে এবং যা কিছু আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে (আমার পথে) খরচ করে। এ ধরনের লোকেরাই প্রকৃত মুমিন। তাদের জন্য তাদের রবের (আল্লাহর) কাছে রয়েছে বিরাট মর্যাদা, ভুল-ত্রুটির ক্ষমা ও উত্তম রিযিক। - (সূরা আল আনফালঃ ২-৪) ৩) মু’মিনদের কাজই হচ্ছে, যখন তাদেরকে আল্লাহ ও রসূলের দিকে ডাকা হয়, যাতে রসূল তাদের মোকদ্দমার ফায়সালা করেন, তখন তারা বলেন, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম। এ ধরনের লোকেরাই সফলকাম হবে। -(সূরা আন্ নূরঃ ৫১) ৪) তারাই এ ধরনের লোক যারা (এ নবীর দাওয়াত) গ্রহণ করেছে এবং আল্লাহর স্মরণে তাদের চিত্ত প্রশান্ত হয়। -(সূরা আর্ রাদঃ ২৮ ) ৫) মু’মিনরা যেন ঈমানদারদের বাদ দিয়ে কখনো কাফেরদেরকে নিজেদের পৃষ্ঠপোষক, বন্ধু ও সহযোগী হিসেবে গ্রহণ না করে। যে এমনটি করবে, আল্লাহর সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। তবে হ্যাঁ, তাদের জুলুম থেকে আত্মরক্ষার জন্য তোমরা যদি বাহ্যত এ নীতি অবলম্বন করো তাহলে তা মাফ করে দেয়া হবে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর নিজের সত্ত্বার ভয় দেখাচ্ছেন আর তোমাদের তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে। - (সূরা আলে-ইমরানঃ ২৮ ) ৬) মু’মিনরা তো পরস্পর ভাই ভাই। অতএব তোমাদের ভাইদের মধ্যকার সম্পর্ক ঠিক করে দাও। আল্লাহকে ভয় করো, আশা করা যায় তোমাদের প্রতি মেহেরবানী করা হবে। -( সূরা আল-হুজুরাতঃ ১০ ) ৭) মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, এরা সবাই পরস্পরের বন্ধু ও সহযোগী। এরা ভাল কাজের হুকুম দেয় এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে, নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে। এরা এমন লোক যাদের ওপর আল্লাহর রহমত নাযিল হবেই। অবশ্যই আল্লাহ সবার ওপর পরাক্রমশালী এবং জ্ঞানী ও বিজ্ঞ। -(সূরা আতত তাওবাঃ ৭১) ৮) এ মুমিন পুরুষ ও নারীকে আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাদেরকে তিনি এমন বাগান দান করবেন যার নিম্নদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান হবে এবং তারা তার মধ্যে চিরকাল বাস করবে। এসব চির সবুজ বাগানে তাদের জন্য থাকবে বাসগৃহ এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে। এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য।- (আত তাওবাঃ ৭২) ৯) সুসংবাদ দাও তাদেরকে যারা ঈমান এনেছে (তোমার প্রতি) যে, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে বিরাট অনুগ্রহ। -(আল-আহযাবঃ ৪৭) ১০) আমি তোমার পূর্বে রসূলদেরকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাই এবং তারা তাদের কাছে আসে উজ্জ্বল নিদর্শনাবলী নিয়ে। তারপর যারা অপরাধ করে তাদের থেকে আমি প্রতিশোধ নিই আর মুমিনদেরকে সাহায্য করা ছিল আমার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। -(সূরা-আররূমঃ ৪৭) ১১) মনমরা হয়ো না, দুঃখ করো না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো। -(সূরা-আলে ইমরানঃ ১৩৯) ১২) হে ঈমান গ্রহণকারীগণ, তোমরা আল্লাহকে সাহায্য করো তাহলে আল্লাহও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা সুদৃঢ় করে দেবেন। (সূরা -মুহাম্মদঃ ৭) ১৩) যারা ঈমান আনে আল্লাহ তাদের সাহায্যকারী ও সহায়। তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর মধ্যে নিয়ে আসেন। আর যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করে তাদের সাহায্যকারী ও সহায় হচ্ছে তাগুত। সে তাদের আলোক থেকে অন্ধকারের মধ্যে টেনে নিয়ে যায়। এরা আগুনের অধিবাসী। সেখানে থাকবে এরা চিরকালের জন্য। -(সূরা আল-বাকারাহঃ ২৫৭) ১৪) পুরুষ বা নারী যে-ই সৎকাজ করবে, সে যদি মু’মিন হয়, তাহলে তাকে আমি দুনিয়ায় পবিত্র-পরিচ্ছন্ন জীবন দান করবো এবং (আখেরাতে) তাদের প্রতিদান দেবো তাদের সর্বোত্তম কাজ অনুসারে।-(সূরা আন্ন নহলঃ ৯৭) ১৫) আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তাদেরকে তিনি পৃথিবীতে ঠিক তেমনিভাবে খিলাফত দান করবেন যেমন তাদের পূর্বে অতিক্রান্ত লোকদেরকে দান করেছিলেন, তাদের জন্য তাদের দ্বীনকে মজবুত ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করে দেবেন, যাকে আল্লাহ তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের (বর্তমান) ভয়-ভীতির অবস্থাকে নিরাপত্তায় পরিবর্তিত করে দেবেন। তারা শুধু আমার বন্দেগী করুক এবং আমার সাথে কাউকে যেন শরীক না করে। আর যারা এরপর কুফরী করবে তারাই ফাসেক। (সূরা আন্ নূরঃ ৫৫) ১৬) নিঃসন্দেহে যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে শীঘ্রই রহমান তাদের জন্য অন্তরে ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেবেন। (সূরা মারয়ামঃ ৯৬) ১৭) ঈমানদারদেরকে আল্লাহ একটি শাশ্বত বাণীর ভিত্তিতে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানে প্রতিষ্ঠা দান করেন। আর জালেমদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন। আল্লাহ যা চান তাই করেন।-(সূরা ইবরাহীমঃ ২৭) ১৮) তবে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাত, যেখানে তারা থাকবে চিরকাল। এ হচ্ছে আল্লাহর অকাট্য প্রতিশ্রুতি এবং তিনি পরাক্রমশালী ও জ্ঞানময়।-(সূরা-লোকমানঃ৮-9) ২০) লোকেরা বললোঃ তোমাদের বিরুদ্ধে বিরাট সেনা সমাবেশ ঘটেছে। তাদেরকে ভয় করো, তা শুনে তাদের ঈমান আরো বেড়ে গেছে এবং তারা জবাবে বলেছেঃ আমাদের জন্য আল্লাহ যথেষ্ট এবং তিনি সবচেয়ে ভালো কার্য উদ্ধারকারী। -(আলে ইমরানঃ ১৭৩)
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিষয়গুলি সঠিকভাবে বুঝার এবং পরিপূর্ণ মুমিন হওয়ার অর্থাৎ উক্ত গুণাবলী সহ মুমিনের যে সমস্ত গুণাবলী থাকা প্রয়োজন সেগুলি অর্জন করার তাওফীক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন।

Post a Comment

Previous Post Next Post