নামাজে বুকের উপর হাত বাধা নিয়ে মতভেদ!

 


প্রথম দলীল:—

মুয়াম্মাল ইবনে ইসমাইলের সনদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-
أَخْبَرَنَا أَبُو طَاهِرٍ، نَا أَبُو بَكْرٍ، نَا أَبُو مُوسَى، نَا مُؤَمَّلٌ، نَا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ: "صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -، وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى عَلَى صَدْرِهِ.
[479] (إسناده ضعيف. لأن مؤملاً وهو ابن إسماعيل سيئ الحفظ. لكن الحديث صحيح جاء من طرق أخرى بمعناه، وفي الوضع على الصدر أحاديث تشهد له - ناصر)
সুফিয়ান ছাওরী রহ., আসেম ইবনে কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর সাথে নামায পড়লাম ... তিনি তাঁর ডান হাত বাম হাতের উপর বুকের উপর রাখলেন।
৷-সহীহ ইবনে খুযায়মা ১/২৭২, হাদীস : ৪৭৯
হাদীসটির স্তরঃ সনদ যঈফ ৷ আর ইবনুল কাইয়ূম রহঃ এর তাহক্বীক্বের আলোকে عَلَى صَدْرِهِ বা বুকের উপর শব্দসহ হাদীসটা মুনকার বা বানোয়াট ৷৷
ইবনে কাউয়ূম আল জাওযিয়া রহঃ বলেন:-
①মুয়াম্মাল বিন ইসমাঈল নিজে মুনকারুল হাদীস তথা পরিত্যাক্ত বর্ননাকারী, তার উপরে তার নিজের বর্ননাতেই ইজতেরাব রয়েছে ৷
②মুয়াম্মাল বিন ইসমাঈল ছাড়া অন্য কোনো ثقة বা নির্ভরযোগ্য বর্ননাকারী ওয়ায়েল বিন হুজর রাঃ এর বর্ননায় على الصدر বা ﻋﻨﺪ ﺻﺪﺭﻩ অৰ্থাৎ 'বুকের উপর’ বা ‘বুকের কাছে’ কথাটি বলেন নি নি ৷ তাই হাদীসটি মুনকার ৷
(অথচ, হাদীসটি ২০ টি সূত্রে এসেছে ৷ যার মধ্যে ১৯টি সূত্রে “আসিম ইবনে কুলাইব” থেকে ৮ জন বর্ননা করেছেন,, সরাসরি “আব্দুল জব্বার ইবনে ওয়াইল” থেকে ৩ জন বর্ননা করেছেন,,আলকামা থেকে দুইজন বর্ননা করেছেন ৷—ইনারা সবাই ইثقةএবং প্রসিদ্ধ ইমাম,হাফেজে হাদীস ৷ এই ১৩ জন ثقة বর্ননাকারীদের কেউইعلى الصدر বা ﻋﻨﺪ ﺻﺪﺭﻩ অৰ্থাৎ 'বুকের উপর’ বা বুকের কাছে কথাটি বর্ননা করেন নি ৷ )
সূত্র - ইবনে কাইয়ূম রহিঃএর ই'লামুল মুয়াক্কীঈনঃ-২/৪০০,বাদায়েউল ফাওয়াইদ, ৩/৫৯১ পৃষ্ঠা
শায়খ মোহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উছাইমিন রাহ. এই হাদিসকে দূর্বল বলেছেন। সূত্র -ফাতাওয়া আরকানিল ইসলাম, ৩৭১ পৃষ্ঠা।
শায়খ নাসিরুদ্দীন আল-বানী রাহ. এই হাদিসের সনদকে দূর্বল বলেছেন। সূত্র - সহীহ ইবনে খুযাইমা, টীকা /২৭১ পৃষ্ঠা।
ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ ফাতহুল বারীতে বলেছেন:—
ﻭﻛﺬﻟﻚ ﻣﺆﻣﻞ ﺑﻦ ﺇﺳﻤﺎﻋﻴﻞ ﻓﻲ ﺣﺪﻳﺜﻪ ﻋﻦ ﺍﻟﺜﻮﺭﻱ ﺿﻌﻒ
একইভাবে (সুফিয়ান) ছাওরী হতে মুয়াম্মাল ইবনে ইসমাঈলের বর্ণনায় দুর্বলতা আছে।
(ফাতহুল বারী -৯/২৮৮পৃ, ৫১৭২ নং হাদীসের অধীনে)
ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন রহঃ মুয়াম্মালকে ثقة বললেও তিনি মুয়াম্মাল সম্পর্কে অন্যত্র বলেছেনঃ— সুফিয়ানের ক্ষেত্রে মুয়াম্মাল প্রমাণযোগ্য হওয়ার উপযুক্ত নন। ( তারীখে ইবনে মুহরিয, ১/১১৪)
স্পষ্টত,মুয়াম্মাল ইবনে ইসমাইলের পূর্ণ বিবরণ সঠিক নয়।মুয়াম্মাল ইবনে ইসমাইল ভুলক্রমে তা বাড়িয়ে দিয়েছেন।
.
কারণ সুফিয়ান ছাওরী রহ. থেকে এই হাদীস মুহাম্মাদ ইবনে ইউসুফ ফিরয়াবী ও আবদুল্লাহ ইবনুল ওয়ালীদ রহ.ও বর্ণনা করেছেন।
তাঁরা দু’জনই ছিকা ও শক্তিশালী রাবী।
.
তাঁদের রেওয়ায়েতে ﻋﻠﻰ ﺻﺪﺭﻩ ‘বুকের উপর’ কথাটা নেই। দেখুন : মুসনাদে আহমদ ৪/৩১৮;আলমুজামুল কাবীর তবারানী ২২/৩৩
.
রেওয়ায়েত দুটির সনদসহ আরবী পাঠ নিম্নরূপ :
.78 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، ثنا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ الْفِرْيَابِيُّ، ثنا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ: «رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَضَعُ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى، وَإِذَا جَلَسَ افْتَرَشَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى، وَوَضَعَ ذِرَاعَيْهِ عَلَى فَخِذَيْهِ وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ»
18871 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ الْوَلِيدِ، حَدَّثَنِي سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ،عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ: " رَأَيْتُ (1) النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ كَبَّرَ، رَفَعَ (2) يَدَيْهِ حِذَاءَ أُذُنَيْهِ، ثُمَّ حِينَ رَكَعَ، ثُمَّ حِينَ قَالَ: سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَفَعَ يَدَيْهِ، وَرَأَيْتُهُ مُمْسِكًا يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ فِي الصَّلَاةِ، فَلَمَّا جَلَسَ حَلَّقَ بِالْوُسْطَى وَالْإِبْهَامِ وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ، وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُمْنَى، وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُسْرَى "
এটা শুধু পাওয়া যায় মুয়াম্মাল ইবনে ইসমাইল রহ.-এর বর্ণনায়, যাঁর সম্পর্কে জারহ- তাদীলের ইমামদের সিদ্ধান্ত এই যে,
.
তিনি সাধারণভাবে বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী হলেও রেওয়ায়েতের ক্ষেত্রে তাঁর প্রচুর ভুল হয়েছে।আর তিনি ছিলেন মুনকারুল হাদিস।
.
.
ইমাম বুখারী রহঃ মুআম্মাল বিন ইসমাইলকে মুনকারুল হাদীস বলে মন্তব্য করেছেন।
দৃষ্টান্তস্বরূপ ইমামগণের মন্তব্য নীচে উল্লেখ করা হল-
مؤمل بن اسماعيل العدوى مولى آل الخطاب وقيل مولى بني بكر أبو عبدالرحمن البصري نزيل مكة.الخ وقال البخاري منكر الحديث
অনুবাদ-মুআম্মাল বিন ইসমাঈর আল আদাবী আলুল খিতাবের মাওলা ছিলেন, কারো মতে বনী বকরের মাওলা ছিলেন। তিনি মক্কায় আগত। ইমাম বুখারী রহঃ বলেন, তিনি ছিলেন মুনকারুল হাদীস!। {তাহজীবুত তাহজীব, রাবী নং-৬৮১}
.আর ইমাম বুখারী রহঃ যাকে মুনকারুল হাদিস বলেন তার বিষয়ে,
.
ﻭﻧﻘﻞ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﻘﻄﺎﻥ ﺃﻥ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﻗﺎﻝ : ﻛﻞ ﻣﻦ ﻗﻠﺖ ﻓﻴﻪ ﻣﻨﻜﺮ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻓﻼ ﺗﺤﻞ ﺍﻟﺮﻭﺍﻳﺔ ﻋﻨﻪ .
.
ইবনে কাত্তান রহঃ বর্ণনা করেন, নিশ্চয় বুখারী রহঃ বলেছেন, যে ব্যক্তির ক্ষেত্রে আমি “মুনকারুল হাদীস” বলি তার থেকে বর্ণনা করা জায়েজ নয়।
.
{মীযানুল ইতিদাল-১/৬}
.
আরও ইমামগণের মন্তব্য নীচে উল্লেখ করা হল-
.
.
আল্লামা মিজ্জী রহঃ লিখেছেন-
.
ﻭﻗَﺎﻝ ﺍﻟﺒُﺨﺎﺭِﻱُّ : ﻣﻨﻜﺮ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ .
.
তথা ইমাম বুখারী রহঃ বলেছেন, তিনি [মুআম্মাল বিন ইসমাঈল রহঃ] মুনকারুল হাদীস।
.
{তাহযীবুল কামাল ফী আসমায়ির
রিজাল, বর্ণনা নং-৬৩১৯}
.
.
ইমাম যাহাবী রহঃ বলেন, ইমাম বুখারী রহঃ বলেছেন, মুয়াম্মাল বিন ইসমাঈল মুনকারুল হাদীস।
.
আলমুগনী ফিজ জুআফা, বর্ণনা নং-৬৫৪৭, তারীখুল ইসলাম, বর্ণনা নং-৩৮০, সিয়ারু আলামিন নুবালা, বর্ণনা নং-১৫৪৬, জিকরু মান তাকাল্লামা ফীহি, বর্ণনা নং-৩৪৭, মিযানুল ইতিদাল, বর্ণনা নং-৮৯৪৯।
.
.
ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ বলেন, ইমাম বুখারী রহঃ মুআম্মাল বিন ইসমাঈলকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন।
.
{তাহযীবুত তাহযীব, বর্ণনা নং-৬৮, লিসানুল মিযান, বর্ণনা নং-৪৯৮৭}
.
.
আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী রহঃ বলেন, ইমাম বুখারী রহঃ মুআম্মাল বিন ইসমাঈলকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন।
.
{মাগানিয়ুল আখয়ার, বর্ণনা নং-২৪১৯}
.
.
আহমাদ বিন আব্দুল্লাহ ইয়ামানী রহঃ বলেন, ইমাম বুখারী রহঃ মুআম্মাল বিন ইসমাঈলকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন। {খুলাসাতুল তাহযীবু তাহযীবিল কামাল}
.
এতগুলো গ্রহণযোগ্য জারাহ তাদীলের ইমামগণ এতসব কিতাবে ইমাম বুখারী রহঃ এর মন্তব্যটি নকল করেছেন।
.
শায়েখ নাসীরুদ্দীন আলবানী রাহ. তাঁর সিলসিলাতুল আহাদীস আয যয়ীফাহ ওয়াল মাওযূআহ তে ১ম, ২য়, ৩য় এবং ৪র্থ খণ্ডে এই মুয়াম্মালকে যয়ীফ বলেছেন।
.
অন্যান্য মুহাদ্দিসগণও মুয়াম্মালকে যয়ীফ বলেছেন।
.
ইমাম বুখারী রহঃ মুয়াম্মাল বিন ইসমাঈলকে নয়, মুয়াম্মাল বিন সাঈদ সম্পর্কে এ মন্তব্য করেছেন, এমন কথা কোন পূর্ববর্তী কোন গ্রহণযোগ্য জারাহ তাদীলের ইমাম কি বলেছেন……? কেউ বলেননি , সবাই মুআম্মাল বিন ইসমাঈল সম্পর্কেই ইমাম বুখারীর মন্তব্যটির নিসবত করেছেন। মুআম্মাল বিন সাঈদের কথা কেউ বলেননি।
.
একথা স্পষ্টভাবেই প্রমাণ করে যে, বর্তমানের নামধারী আহলে হাদীস ভাইয়েরা নিজেদের দলীলহীন মাসআলা প্রমাণের জন্য এতসব গ্রহণযোগ্য জারাহ তাদীলের ইমামগণের অবস্থানকে ভুল সাব্যস্ত করার হীন কর্মকান্ডে নেমেছেন।
.
এছাড়াও ,ইমাম বুখারী রহঃ মুআম্মাল বিন ইসমাঈলকে মুনকারুল হাদীস না বললেও উক্ত হাদীস কথিত আহলে হাদীসদের দলীল হতে পারে না। কারণ ২টি। যথা-
.
১ম কারণঃ
.
মুআম্মাল বিন ইসমাঈল মুনফারিদ
আসেম বিন কুলাইব, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি হযরত ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে। এ সূত্রের মাধ্যমে রাসূল সাঃ এর নামায সংক্রান্ত একাধিক সূত্র এসেছে।
.
কয়েকটি সূত্র উল্লেখ করছি-
.
.
ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦُ ﺍﻟْﻮَﻟِﻴﺪِ، ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺳُﻔْﻴَﺎﻥُ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺻِﻢِ ﺑْﻦِ ﻛُﻠَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮ
আব্দুল্লাহ বিন ওয়ালীদ, তিনি সুফিয়ান থেকে, তিনি আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
{মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৭১}
.
.
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺷَﺮِﻳﻚٌ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺻِﻢِ ﺑْﻦِ ﻛُﻠَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮٍ،
.
শারীক বর্ণনা করেন আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
{মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৬৮}
.
.
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﺮَّﺯَّﺍﻕِ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﺳُﻔْﻴَﺎﻥُ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺻِﻢِ ﺑْﻦِ ﻛُﻠَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮ
আব্দুর রাজ্জাক তিনি সুফিয়ান থেকে, তিনি আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
{মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৫৮}
.
.
ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦُ ﺇِﺩْﺭِﻳﺲَ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺻِﻢِ ﺑْﻦِ ﻛُﻠَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮٍ ،
.
আব্দুল্লাহ বিন ইদরীস আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
{সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৯১২}
.
.
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺑِﺸْﺮُ ﺑْﻦُ ﺍﻟْﻤُﻔَﻀَّﻞِ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺻِﻢِ ﺑْﻦِ ﻛُﻠَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮٍ ،.
.
বিশর বিন মুফাদ্দাল আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৭২৬}
.
.
ﻋَﻦْ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺻِﻢ ﺑْﻦِ ﻛُﻠَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦ ﺃَﺑﻴﻪِ، ﻋَﻦ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮ، ﺭَﺿِﻲ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ،
.
মুসা বিন আবী আয়শা থেকে, তিনি আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
{মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৪৪৮৯}
.
.
ﻗُﺘَﻴْﺒَﺔُ، ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺳُﻔْﻴَﺎﻥُ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺻِﻢِ ﺑْﻦِ ﻛُﻠَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮٍ ،
.
কুতাইবা আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
{সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-১২৬৩}
.
.
ﺍﺑْﻦُ ﻓُﻀَﻴْﻞٍ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺻِﻢِ ﺑْﻦِ ﻛُﻠَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮ
ইবনে ফুযাইল আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
{সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-৪৭৮}
.
.
ﺷُﻌْﺒَﺔُ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺻِﻢِ ﺑْﻦِ ﻛُﻠَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮ
শুবা আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
{সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-৪৭৮}
.
১০
.
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺇِﺳْﺤَﺎﻕَ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺻِﻢِ ﺑْﻦِ ﻛُﻠَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮ
আবু ইসহাক আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
{সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-১৭০৫}
.
মাত্র ১০টি সূত্র উল্লেখ করলাম। এরকম আরো অসংখ্য সূত্রে উক্ত বর্ণনাটি এসেছে। কিন্তু কোথাও বুকের উপর হাত বাঁধার কথা উল্লেখ করা হয়নি। একমাত্র মুআম্মাল বিন ইসমাঈলের সূত্রে এসেছে বুকের উপর কথাটি।
.
তাই তিনি বুকের উপর হাত বাঁধা বলার ক্ষেত্রে মুনফারিদ। আর সমস্ত জরাহ তাদীলের ইমামগণ একমত যে মুআম্মাল বিন ইসমাঈল প্রচুর ভুল করতেন। সুতরাং একথা সহজেই বুঝা যায় যে, উক্ত বর্ণনাটিতে বুকের উপর কথাটি তিনি হয়তো ভুলেই বলেছেন। নতুবা আর কারো সূত্রে একথা আসেনি কেন...?
.
মুয়াম্মাল বিন ইসমাঈল রহঃ ভুল করে উক্ত বর্ণনাটি আনতে পারেন। দলীল মুহাদ্দিসীনে কেরামের বক্তব্য দ্বারা স্পষ্ট-
১-ইবনে সাদ রহঃ বলেন, তথা তিনি সিকা তবে প্রচুর ভুল করেন। {আততাবকাতুল কুবরা, বর্ণনা নং-১৬৫৬}
.
২- মুহাম্মদ বিন হিব্বান রহঃ বলেন, তিনি প্রায় ভুল করতেন। {আসসিকাতুল লিইবনে হিব্বান, বর্ণনা নং-১৫৯১৫}
.
৩- আল্লামা খতীব বাগদাদী রহঃ বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করতেন। {তারীখে বাগদাদ-৬}
.
৪-ইমাম আবু হাতেম রহঃ বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করতেন। {আলজারহু ওয়াততাদীল, বর্ণনা নং-১৭০৯}
.
৫-আল্লামা যাহাবী রহঃ বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করতেন। {আলকাশশাফ, বর্ণনা নং-৫৭৪৭}
.
৬- ইমাম আবূ জুরআ রহঃ বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করতেন। {আলমুগনী ফিজ জুআফা, বর্ণনা নং-৬৫৪৭}
.
৭- ইমাম দারা কুতনী রহঃ বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করেন। {তাহযীবুত তাহযীব, বর্ণনা নং-৬৮}
২য় কারণঃ
.
হাদীসটির বর্ণনাকারীই উক্ত হাদীসের বিপরীত আমল করেন,
সহীহ ইবনে খুজাইমার উক্ত হাদীসের সূত্রের একজন রাবী হলেন, হযরত সুফিয়ান সওরী রহঃ। খোদ তিনিই বুকের উপর হাত বাঁধার মতকে গ্রহণ করেননি। বরং তিনি নাভির নিচে হাত বাঁধতেন।
.
ইমাম নববী রহঃ শরহে মুসলিমে উল্লেখ করেছেন-
.
ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻭﺳﻔﻴﺎﻥ ﻭﺍﺳﺤﺎﻕ ﺑﻦ ﺭﺍﻫﻮﻳﺔ ﻭﺍﺑﻮ ﺍﺳﺤﺎﻕ ﺍﻟﻤﺮﻭﺍﺯﻯ ﻣﻦ ﺍﺻﺤﺎﺑﻨﺎ ﻳﺠﻌﻠﻬﻤﺎ ﺗﺤﺖ ﺳﺮﺗﻪ
.
তথা ইমাম আবু হানীফা রহঃ, সুফিয়ান সওরী রহঃ, ইসহাক বিন রাহুয়া রহঃ এবং আমাদের আসহাবদের মাঝে আবু ইসহাম মারওয়াজী রহঃ বলেন যে, উভয় হাতকে নাভির নিচে বাঁধতে হবে। {শরহে মুসলিম লিননববী-১/৭৩}
বর্ণনাকারী নিজেই যখন স্বীয় বর্ণনার খেলাফ আমল করেন, তখন উক্ত বর্ণনা আমলহীন তা স্পষ্টতই বুঝে আসে।
দ্বিতীয় দলীল:—
حَدَّثَنَا أَبُو تَوْبَةَ، حَدَّثَنَا الْهَيْثَمُ، - يَعْنِي ابْنَ حُمَيْدٍ - عَنْ ثَوْرٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ مُوسَى، عَنْ طَاوُسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَضَعُ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى ثُمَّ يَشُدُّ بَيْنَهُمَا عَلَى صَدْرِهِ وَهُوَ فِي الصَّلاَةِ ‏.‏
তাবেঈ তাউস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাত আদায়কালে স্বীয় ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে তা নিজের বুকের উপর বাঁধতেন।
(আবু দাউদ, হাদিস নং ৭৫৯)
হাদীসটির স্তরঃ যঈফ ৷ তিনটি কারণে হাদীসটি দূর্বল ৷
🌻ক) হাদীসটির সনদ মুনকাতী ৷ অর্থাৎ তাবেঈ তাউস (রহঃ) রাসুলুল্লাহর সঃ সাক্ষাৎ পাননি ৷ কেননা, তিনি জন্মগ্রহন করেছিলেন ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে ইয়েমেনে ৷ অর্থাৎ রাসুলুল্লাহর সঃ ইন্তেকালের দুই বছর পরে তাউস রহঃএর জন্ম হয়েছিলো v.gd/nQubZz ৷৷
এই একটি মাত্র কারণের জন্যই আহাফিদের হাদীসটা যঈফ মানা উচিত ছিলো ৷ কারণ আহাফিদের নিকট মুরসাল মানেই মুনকাতী এবং মুনকাতী হলো টনটনে যঈফ ৷৷
🌻খ) হাদীসটার একজন রাবী “সুলাইমান ইবনে মূসা” সম্পর্কে ইমাম বুখারী রহঃ বলেছেন:- سُلَيْمَانُ بْنُ مُوسَى مُنْكَرُ الْحَدِيثِ “সুলাইমান ইবনে মূসা ‘মুনকারুল হাদীস” ৷ (তারিখুল কাবীর ৪/৩৯ রাবী নং ১৮৮৮ v.gd/7XS17s ঈলালে তিরমিজী কাবীর, পৃষ্ঠা ২৫৬, হাদীস নং ৪৬৩ এর আলোচনায় v.gd/NplnpD)
সুলাইমান ইবনে মূসা সম্পর্কে আলী ইবনুল মাদীনী বলেছেন, ﻣﻄﻌﻮﻥ ﻋﻠﻴﻪ সমালোচিত ও অভিযুক্ত রাবী। আস সাজী রহ. বলেছেন, ﻋﻨﺪﻩ ﻣﻨﺎﻛﻴﺮ তার কিছু মুনকার বর্ণনা আছে। হাকেম আবু আহমদ বলেছেন:- ﻓﻲ ﺣﺪﻳﺜﻪ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﻤﻨﺎﻛﻴﺮ তার হাদীসে কিছু কিছু মুনকার বিষয় আছে । (সিয়ারু আ'লামুন নুবালাঃ ৬/১৫৪, রাবী নং ৮০৮)
আবু হাতেম রাযী বলেছেন, قَالَ أَبُو حَاتِمٍ: مَحَلُّهُ الصِّدْقُ وَفِي حَدِيْثِهِ بَعْضُ الاضْطِرَابِ তিনি সাদূক বা সত্যনিষ্ঠ মানের, তবে তার হাদীসে কিছু কিছু ইযতিরাব বা অসঙ্গতি রয়েছে। (জরাহ ওয়া তাদীল, ৪/১৪২, রাবী নং ৬১৫)
ইবনে হাজার আসকালানী রহ. তার সম্পর্কে বলেন:-
.صدوق فقيه في حديثه بعض لين وخولط قبل موته بقليل
তিনি সাদূক, ফকীহ, তার হাদীসের মধ্যে কিছু শীথিলতা রয়েছে। মৃত্যুর পূর্বে তার হাদীস ওলটপালট হয়ে গিয়েছিল। (তাকরীবুত তাহযীব, রাবী নং২৬১৬)
ইমাম নাসাঈ রহ: বলেছেন:—, سُلَيْمَان بن مُوسَى الدِّمَشْقِي أحد الْفُقَهَاء لَيْسَ بِالْقَوِيّ فِي الحَدِيث সুলাইমান ইবনে মূসা ফুকাহাদের একজন, তিনি হাদীসে মজবুত নন। (যুয়াফা ওয়াল মাতরূকীন লিন নাসাঈ,পৃষ্ঠা ৪৯, রাবী নং ২৫২)
ইবনুল জারূদ তাকে শুধুমাত্র যঈফ রাবীদের নিয়ে সংকলিত “যুআফা” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। বোঝা যায়, তার দৃষ্টিতেও তিনি দুর্বল ছিলেন।
স্বয়ং আলবানী সাহেবও একটা হাদীসে তার সম্পর্কে লিখেছেন, ﺻﺪﻭﻕ ﻓﻲ ﺣﺪﻳﺜﻪ ﺑﻌﺾ ﻟﻴﻦ সে সাদূক, তার হাদীসে কিছু দুর্বলতা রয়েছে। (আস- সিফাতিস সালাহ,পৃষ্ঠা ২/৫২৮)
.
🌻এছাড়াও সুলায়মান ইবনে মূসা মুদাল্লিস রাবী।
(দেখুন:- মাশাহীরু উলামাইল আমসার পৃষ্ঠা ২৮৪,রাবী নং ১৪১৫ এবং তা’রীফু আহলিত তাকদীস বি মারাতিবিল মাওসূফীনা বিত তাদলীস, পৃষ্ঠা: ১/৬২ রাবী নং ১৫৮)
আর, সুলায়মান ইবনে মূসা এই হাদীসটা তাউস রহ: থেকে عن শব্দে বর্ননা করেছেন ৷
🌻গ) আরেক রাবী “হাইসাম ইবনে হুমাইদ” রাসুলুল্লাহ সঃ কর্তৃক অভিশপ্ত “কাদারিয়া মতাদর্শী” ছিলেন বলে তাকেও অনেকেই যঈফ বলেছেন ৷ (কামালঃ ৩০/৩৭২,মীযানুল ই'তিদালঃ ৯২৯৮,তাহযীবঃ ১৫৪)
৩য় দলীল:—
হুলব আতত্বয়ী রা.-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসে মুসনাদে আহমদের ‘শায’ অংশ
হাদীসের বিশুদ্ধ বর্ণনায় ‘বুকের উপর হাত বাঁধা’র কথা নেই। একটিমাত্র বর্ণনায় এই অতিরিক্ত কথাটি পাওয়া যায়, যা অন্য সকল বর্ণনার পরিপন্থী। রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই -
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُفْيَانَ، حَدَّثَنِي سِمَاكٌ، عَنْ قَبِيصَةَ بْنِ هُلْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: " رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْصَرِفُ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ يَسَارِهِ، وَرَأَيْتُهُ، قَالَ، يَضَعُ هَذِهِ عَلَى صَدْرِهِ " وَصَفَّ يَحْيَى: الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى فَوْقَ الْمِفْصَلِ -
ক্বাবীসাহ বিন হুলব তার পিতা থেকে বর্ননা করেছেন, তার পিতা বলেন:— আর আমি তাঁকে (নবী সা.কে) দেখলাম, এটি বুকের উপর রাখতে। ইয়াহইয়া (ইবনে সাঈদ আল কাত্তান) এর বিবরণ দিয়েছেন: ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর। (আহমদঃ ২১৯৬৭,২২৩১৩)
.
হাদীসটির স্তরঃ শাজ, মুদাল্লাস এবং يَضَعُ هَذِهِ عَلَى صَدْرِهِ শব্দে মুজতারিবুল মাতান ও যঈফ ৷
🌻এই হাদীসের রাবী “ক্বাবীসাহ বিন হুলব” কে আলী ইবনে মাদানী, নাসাঈ, শুয়াইব আরনাউত রহিঃ প্রমূখ মুহাদ্দিসরা “মাজহুল বা অজ্ঞাত” বলেছেন ৷ শুধুমাত্র “সিমাক বিন হারব” ছাড়া আর কেউ ই তার থেকে বর্ননা করেন নি ৷ (মুসনাদে আহমদ: ৩৬/২৯৯,আবু দাউদ ৩/৩৪৫, হা/১০৪১ এর আলোচনায়)
ক্বাবীসাহ বিন হুলব তাদলিস কারী ৷ আর তিনি তার পিতা থেকে عن শব্দে হাদীসটা বর্ননা করেছেন ৷৷
এই রেওয়ায়েতে দেখা যাচ্ছে, ইয়াহইয়া ইবনে সায়ীদ রাহ. এই হাদীসটি সুফিয়ান ছাওরী রাহ. থেকে বর্ণনা করেছেন। সুফিয়ান ছাওরী রাহ. থেকে এই হাদীস আরো বর্ণনা করেছেন
১. ইমাম ওকী ইবনুল জাররাহ
২. ইমাম আবদুর রাযযাক ইবনে হাম্মাম
৩. ইমাম আবদুর রহমান ইবনে মাহদী ***
৪. মুহাম্মাদ ইবনে কাছীর
৫. আবদুস সামাদ ইবনে হাসসান
৬. হুসাইন ইবনে হাফস
প্রমুখ ইমাম ও ছিকা রাবীগণ। তাঁদের কারো বর্ণনায় على صدره ‘বুকের উপর’ কথাটা নেই।
দেখুন যথাক্রমে : ১. মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১/৩৯০; ২. মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/২৪০; ৩. সুনানে দারাকুতনী ২/৩৩, হাদীস : ১১০০;
৪. আলমুজামুল কাবীর তাবারানী ২২/১৬৫; ৫. মারিফাতুস সাহাবা, আবু নুয়াইম ১৯/১৭২; ৬. সুনানে কুবরা বাইহাকী ২/২৯৫
,“আব্দুর রহমান ইবনে মাহদীর” বর্ণনাটি ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদের তুলনায় এজন্য অগ্রগণ্য হওয়ার উপযুক্ত যে, ইমাম আহমদ বলেছেন, كان يحب أن يحدث باللفظ অর্থাৎ তিনি উস্তাদের মূল শব্দে বর্ণনা করা পছন্দ করতেন।
আর আবূ হাতেম রাযী রহ: বলেছেন, هو أثبت من يحيى بن سعيد وأتقن من وكيع وكان يعرض حديثه على الثورى অর্থাৎ তিনি ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদের তুলনায় সুদৃঢ়, ওয়াকীর চেয়ে মজবুত। তিনি সুফিয়ান ছাওরীর হাদীসগুলো তাঁর সামনে পেশ করে শোনাতেন।(জারহু ওয়া তা'দীলঃ- ১/২৫৫)
তদ্রূপ সিমাক ইবনে হারব থেকে সুফিয়ান ছাওরী রাহ. ছাড়া আরো বর্ণনা করেছেন :
১. আবুল আহওয়াস
২. হাফস ইবনু জুমাই
৩. শরীক
৪. আসবাত ইবনে নাসর
৫. শো’বা ইবনুল হাজ্জাজ
৬. যাইদা ইবনে কুদামা আলকূফী প্রমুখ রাবীগণ।
এঁদের কারো বর্ণনায় على صدره ‘বুকের উপর’ কথাটা নেই।
(দেখুন যথাক্রমে : ১. জামে তিরমিযী ১/৩১২, হাদীস : ২৫০; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৮০৯; আলমুজামুল কাবীর তবারানী ২২/১৬৫;
২. আলমুজামুল কাবীর তবারানী ২২/১৬৫; ৩. মুসনাদে আহমদ ৫/২২৬, হাদীস : ২১৯৬৯; ৪. আলমুজামুল কাবীর তাবারানী ২২/১৬৫; ৫. ইবনে আবী আসিম ২৪৯৫-আনীসুস সারী ১০/৩৪৩; ৬. ইবনু কানি ৩/১৯৯-আনীসুস সারী ১০/৩৪৩)
এ থেকে প্রতীয়মান হয়, ছিমাক ইবনে হারবের বর্ণনায় এ অংশটি ছিল না। সুতরাং সুফিয়ান ছাওরী রাহ.-এর বিশুদ্ধ বর্ণনায় তা কীভাবে থাকতে পারে?
সুফিয়ান থেকে শুধুমাত্র ইয়াহইয়া ই বুকের উপর হাত বাঁধার কথাটি উল্লেখ করেছেন।
অথচ, ইয়াহইয়া ইবনে সায়ীদ আলকাত্তানের রেওয়ায়েত মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার বসরী-এর সূত্রে ‘‘মুখতাসারুল আহকাম’’ তূসীতেও (২/৯৭, হাদীস : ২৩৪) রয়েছে। কিন্তু ঐ কিতাবে ‘আলা সাদরিহী’ নেই।
সনসদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-
أخبرنا بندار محمد بن بشار، قال : ثنا يحي وهو ابن سعيد عن سفيان، عن سماك، عن قبيصة بن الهلب عن أبيه قال : رأيت النبي صلى الله عليه وسلم ينصرف عن شقيه عن يمينه وعن يساره ويضع اليمنى على اليسرى.
তথাপি, মুসনাদে আহমদেও বর্ণনাটি যেভাবে আছে, তা গভীরভাবে পাঠ করলে আল্লামা নীমভী রাহ. যে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন তা বেশ শক্তিশালী মনে হয়।
এই হাদীসটির ব্যাখ্যায় আল্লামা নিমাবী রহ.লিখেছেন:—
ويقع في قلبي أن هذا تصحيف من الكاتب والصحيح يضع هذه على هذه فيناسبه قوله: وصف يحيى اليمنى على اليسرى فوق المفصل ويوافقه سائر الروايات
আমার মনে হয়, অনুলেখকের ভুলের কারণে এমনটি হয়েছে। সঠিক হবেعلى صدره (বুকের উপর) এর স্থলে على هذه (এই হাতের উপর)। (এ হিসেবে হাদীসটির অর্থ দাঁড়ায়- এই হাতটি এই হাতের উপর রেখেছেন: লেখক)। এতে এটি পরের কথার সঙ্গেও মিলে যায়। কারণ পরে বলা হয়েছে, ইয়াহইয়া ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রেখে দেখিয়েছেন। আর এটি তখন অন্যান্য বর্ণনাকারীদের বর্ণনার সাথেও সংগতিপূর্ণ হয়। (আছারুস সুনান, পৃ ৮৭)
তাই, এ রেওয়ায়েতেও على صدره বুকের উপর কথাটা ‘শায’ বা মুসাহহাফ, যা পরিত্যক্ত।
এছাড়া এইসব রেওয়ায়েত প্রমাণ হিসেবে গ্রহণের আগে আরো যে বিষয়গুলো চিন্তা করা উচিত তা এই যে,
এক. হুলব আতত্বয়ী রা.-এর হাদীসের মুল রাবী ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রাহ.।যদি এই হাদীসের বিশুদ্ধ বর্ণনায় على صدره থাকতো তাহলে অবশ্যই তিনি বুকের উপর হাত বাঁধাকে সুন্নাহ মনে করতেন এবং বুকের উপর হাত বাঁধতেন।
কিন্তু তিনি হাত বাঁধতেন নাভীর নিচে, বুকের উপর নয়। দেখুন :
ইমাম নববী রহঃ শরহে মুসলিমে উল্লেখ করেছেন-
.
ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻭﺳﻔﻴﺎﻥ ﻭﺍﺳﺤﺎﻕ ﺑﻦ ﺭﺍﻫﻮﻳﺔ ﻭﺍﺑﻮ ﺍﺳﺤﺎﻕ ﺍﻟﻤﺮﻭﺍﺯﻯ ﻣﻦ ﺍﺻﺤﺎﺑﻨﺎ ﻳﺠﻌﻠﻬﻤﺎ ﺗﺤﺖ ﺳﺮﺗﻪ
.
তথা ইমাম আবু হানীফা রহঃ, সুফিয়ান সওরী রহঃ, ইসহাক বিন রাহুয়া রহঃ এবং আমাদের আসহাবদের মাঝে আবু ইসহাম মারওয়াজী রহঃ বলেন যে, উভয় হাতকে নাভির নিচে বাঁধতে হবে। {শরহে মুসলিম লিননববী-১/৭৩,আলমুগনী ইবনে কুদামা ২/১৪১; আলমাজমূ শরহুল মুহাযযাব ৪/৩৩০
দুই. মুসনাদে আহমদের সহীহ রেওয়ায়েতে ‘‘আলা সাদরিহী’’ থাকলে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ. কেন বুকের উপর হাত বাঁধাকে সুন্নাহ বলেননি?
উল্টো, ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহঃ পুরুষদের জন্য বুকের উপর হাত বাধাকে মাকরূহ বলেছেন ৷ যেমনঃ—
🌻ইবনু কাইয়ূম আল জাওযিয়া রহঃ লিখেছেন:—
والصحيح حديث علي قال في رواية المزني: "أسفل السرة بقليل ويكره أن يجعلهما على الصدر "
ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহঃ বলেছেন:— হাত বাঁধবে নাভীর সামান্য নীচে, আর বুকের উপর হাত বাধা মাকরূহ ৷
(বাদায়েঊল ফাওয়ায়েদ, পৃষ্ঠা:- ৩/৯১ ৷ দেখুন শামেলা থেকে — v.gd/5kMUzQ )
🌻ইমাম আবু দাউদ আল সাজিস্তানি রহঃ লিখেছেন:-
وَسَمِعْتُهُ، يَقُولُ: " يَكْرَهُ أَنْ يَكُونَ، يَعْنِي: وَضْعَ الْيَدَيْنِ عِنْدَ الصَّدْرِ «.
এবং আমি শুনেছি, ইমাম আহমদ রহঃ বলেছেন:- বুকের কাছে দুই হাত বাধা মাকরূহ ৷৷
(মাসাঈলে ইমাম আহমদ,রিওয়ায়েতী আবু দাউদ পৃ:৪৮ দেখুন শামেলা থেকে v.gd/7IAQur )
হাম্বলী মাযহাবের আরেক শীর্ষ আলেম ইবনে মুফলিহ তার আল ফুরু গ্রন্থে লিখেছেন, ويكره وضعها على صدره نص عليه বুকের উপর হাত রাখা মাকরুহ( ইবনে মুফলিহ: আলফুরু:১/৩৬১)
🌺🌻৪র্থ দলীল:—
أَخْبَرَنَا أَبُو زَكَرِيَّا بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، أنبأ الْحَسَنُ بْنُ يَعْقُوبَ بْنِ الْبُخَارِيِّ، أنبأ يَحْيَى بْنُ أَبِي طَالِبٍ، أنبأ زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، ثنا رَوْحُ بْنُ الْمُسَيَّبِ قَالَ: حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ مَالِكٍ النُّكْرِيُّ، عَنْ أَبِي الْجَوْزَاءِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فِي قَوْلِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ {§فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ} [الكوثر: 2] قَالَ: " وَضْعُ يَدِهِ الْيُمْنَى عَلَى وَسَطِ يَدِهِ الْيُسْرَى، ثُمَّ وَضَعَهَا عَلَى صَدْرِهِ "
আল্লাহর বাণী : ﻓَﺼَﻞِّ ﻟِﺮَﺑِّﻚَ ﻭَﺍﻧْﺤَﺮْ সম্পর্কে ইবনে আব্বাস রা. এবং আলী রাঃ বলেছেন:—ঐ আয়াতের তাফসীর হলো:- নামাযে বাম হাতের উপর ডান হাত রেখে বুকের উপর রাখবে । (জামেউল আহাদীস হা/ ৩৩৮১০, বায়হাকী, হা/ ২৩৩৮,,,২৩৩৯ এবং তারিখে কাবীর)
.
এ প্রথম হাদীসের সনদে “রাওহ্ ইবনুল মুসায়্যাব” আছে, তিনি চরম দুর্বল রাবী। ইবনে হিব্বান তার সম্পর্কে বলেছেন:-
ﻳﺮﻭﻱ ﺍﻟﻤﻮﺿﻮﻋﺎﺕ ﻋﻦ ﺍﻟﺜﻘﺎﺕ ﻻ ﺗﺤﻞ ﺍﻟﺮﻭﺍﻳﺔ ﻋﻨﻪ
সে বিশ্বস্ত লোকদের নামে জাল হাদীস বর্ণনা করতেন, তার থেকে হাদীস গ্রহণ করা বৈধ হবে না। ইবনে আদী বলেছেন, ﺃﺣﺎﺩﻳﺜﻪ ﻏﻴﺮ ﻣﺤﻔﻮﻇﺔ তার হাদীস সঠিক নয়। (আল-কামিল ফী জুয়াফাইর রিজাল ৩/১৪৩; মীযানুল ইতিদাল ২/৫৭; লিসানুল মীযান ২/৪৬৮ )
বুকের উপর হাত বাধার কোনো সহীহ হাদীস যখন লাউরা দেখাতে সক্ষম হয়না তখনই যুগযুগ ধরে চলে আসা নারীদের জন্য মুতাওয়াতীর আমলের আলোচনা নিয়ে আছে!
💝🌻প্রশ্নঃ—মহিলাদের কে বুকের উপর হাত বাঁধতে বলা হয় কেনো??
🌻উত্তরঃ—এটা একটা ইজমাগত মাসয়ালা ৷৷৷ পুরুষদের জন্য হাত বাধার নির্দিষ্ট স্থানের বিষয়ে মতভেদ থাকলেও পৃথিবীর সকল মাযহাবের সকলেই একমত হয়েছেন যে, মহিলারা শুধুমাত্র বুকের উপর ই হাত বাঁধবেন ৷৷
প্রথমে একটি কথা ভাল করে বুঝে নিতে হবে, আমরা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত হানাফী। আমাদের কাছে দলীল হল চারটি। আর দ্বীন পূর্ণতা লাভ করেছে চার দলীল দিয়ে। যথা-
১- কুরআন।
২- সুন্নাহ।
৩- ইজমা।
৪- কিয়াস।
প্রথমে আমরা মাসআলার দলীল কুরআন থেকে নেই।
কুরআনে না পেলে সুন্নাহ থেকে।
সুন্নাহে না পেলে ইজমায়ে উম্মাহ থেকে।
ইজমায়ে না পেলে কিয়াসে শরয়ী থেকে মাসআলার সমাধান করা হয়।
আলোচিত মাসআলাটির সমাধানও কুরআন ও হাদীসে পরিস্কার বর্ণিত হয়নি। তাই আমরা তৃতীয় দলীলের মাঝে উক্ত বিষয়টির প্রমাণ আছে কি না? তা দেখি।
হযরত আব্দুল হাই লক্ষ্ণৌবীর রহঃ লিখেছেনঃ
اما فى حق النساء فاتفقوا على ان السنة لهن وضع اليدين على الصدر، (السعاية-2/156
আর মহিলাদের ক্ষেত্রে সকলেই ঐক্যমত্ব যে, তাদের ক্ষেত্রে সুন্নত হল তাদের উভয় হাতকে বুকের উপর রাখবে। {আসসিয়ায়াহ-২/১৫৬}
হযরত আতা রহঃ বলেন,
تجمع المرأة يديها فى قيامها ما ستطعت (مصنف عبد الرزاق-3/137
মহিলারা নামাযে দাড়ানো অবস্থায় তাদের হাতকে যতদূর সম্ভব গুটিয়ে রাখবে। {মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক-৩/১৩৭}
রাসুলুল্লাহ সঃ মহিলাদের কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন:—
الْمَرْأَةُ تَجْعَلُ يَدَيْهَا حِذَاءَ ثَدْيَيْهَا
অর্থাৎ মহিলা হাত উঠাবে বুক বরাবর। (আল মুজামুল কাবীর, হাদিস নং-২৮ শামেলা সনদ সহীহ)
হযরত আতা বিন আবী রাবাহ রহঃ কে জিজ্ঞেস করা হল-
2471 - حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، قَالَ: أنا شَيْخٌ لَنَا , قَالَ: سَمِعْتُ عَطَاءً، سُئِلَ عَنِ الْمَرْأَةِ: كَيْفَ تَرْفَعُ يَدَيْهَا فِي الصَّلَاةِ؟ قَالَ: «حَذْوَ ثَدْيَيْهَا»
“নামাযে মহিলার্ কতটুকু হাত উঠাবে?” তিনি বললেন-“বুক বরাবর”। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা,-১/২১৬, হাদিস নং-২৪৭১ শামেলা
🌻এছাড়াও অনেক হাদীসেই রাসুলুল্লাহ সঃ মহিলাদের কে সালাতের মধ্যে সতরের বিষয়ে মনোযোগী হতে বলেছেন ৷ যেমনঃ (كَأَسْتَرِ مَا يَكُونُ لَهَا অর্থাৎ এভাবে মহিলাদের সালাত তাদের সতরের জন্য বেশী উপযোগী ৷ বায়হাকী হা-৩৩২৪),,, (الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ অর্থাৎ মহিলারা আপদমস্তকই সতর ৷ তিরমিজি হা-১১৭৩),,,,,,(لَا تُقْبَلُ صَلَاةُ الْحَائِضِ اِلَّا بِخِمَارٍ অর্থাৎ মুখমন্ডল,হাতের কবজি এবং পায়ের পাতা ব্যতিত পুরা শরীল ই ঢেকে রাখার «''খিমার বা ওড়না’’ দিয়ে নিজেকে ঢাকা ছাড়া প্রাপ্ত বয়স্কা মহিলাদের নামাজ হবে না»। মিশকাত হা-৭৬২)
সতর বিষয়ক এই সবগুলো দলীলের মূল বিষয়বস্তু হলো:— হাত নাভীতে বাঁধতে গিয়ে নামাজের জন্য শর্তযুক্ত মহিলাদের হাতের কবজির উপরের অংশও অনাবৃত হয়ে পড়লে মহিলাদের নামাজ হবেনা ৷—
এইজন্য মহিলারা হাত বুকের উপর রাখবে কারণ সেটার দ্বারা তাদের পর্দা রক্ষা হবে যা তাদের জন্য ফরয।
(মিরকাতুল মাফাতিহ ৫০৯পৃ ২য় খন্ড, ফাতহুল মুলহিম ৩য় খন্ড ৩০৬পৃ, মারিফুস সুনান ২য় খন্ড ৪৪৫পৃ, আলুউরফুস সুযি ১ম খন্ড২৯১পৃ, তাকরিরে তিরমিযি ২য় খন্ড ২৪পৃ)
সুতরাং মহিলাদের বুকের উপর হাত বাঁধাটি ইজমা দ্বারা প্রমানিত।
ছালাতে মহিলাদের বুকের হাত বাঁধার ইজমা কবে কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছে?
কোন বিষয়ে ইজমা বা ঐক্যমত্ব হবার জন্য সবাই এক সাথে বসে কোন বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে বক্তব্য প্রদান করা আবশ্যক নয়। বরং একই সাথে কোন আমলে ধর্মপ্রাণ বিজ্ঞ উলামা ফুক্বাহাগণ কোন আমল শুরু করে দিলেও তা ইজমা বলেই গৃহিত হয়।
যেমন-
জামাতে নামাযে ইমাম জোরে তাকবীর দেয়, আর মুসল্লিরা আস্তে আস্তে তাকবীর বলে থাকেন। কিন্তু মুসল্লিদের আস্তে আস্তে তাকবীর বলার স্বপক্ষে কুরআন ও হাদীসে কোন দলীল নেই। বরং এটি ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। যা কবে কোথায় হয়েছে? তা কেউ বলতে পারবে না। কিন্তু সবাই ঐক্যমত্বের ভিত্তিতেই আমল করে যাচ্ছে।যেমন তিন তালাক তিন তালাক সাহাবীদের জামানায় থেকে চলে আসছে কবে কখন কোথায় এই ইজমা হয়েছে এই প্রশ্ন করা আবালের পরিচয় দেয়নি নামান্তর!
ঠিক একই হালাত মহিলাদের বুকের উপর হাত বাঁধার।
সহজ ভাষায় বুঝতে উদাহরণ দিচ্ছি।
বর্তমানে মুসলমানগণ কয়েকটি প্রসিদ্ধ দলে বিভক্ত। এর মাঝে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সঠিক অনুসারী রয়েছেন চার মাযহাবের অনুসারীগণ। যথা-
১-হানাফী।
২-শাফেয়ী।
৩-মালেকী।
৪-হাম্বলী।
এছাড়া রয়েছে লা-মাযহাবী ও শিয়ারা।
লক্ষ্য করে দেখুন- হানাফী মহিলারাও নামাযে বুকের উপর হাত বাধে। শাফেয়ী মহিলারাও। হাম্বলী এবং মালেকী মহিলারাও। ঠিক একই আমল করে লা-মাযহাবী ও শিয়া মহিলারাও।
তাহলে মহিলাদের নামাযে বুকের উপর হাত বাঁধা সবার “ইজমা” তথা ঐক্যমত্বের আমল এতে সন্দেহ করার কোন সুযোগ আছে কি?
এটাতো প্রতিদিনকার উদিত হওয়া সূর্যের মতই পরিস্কার ইজমায়ী আমল। তো এখানে কবে কোথায় ইজমা হল এমন বোকামীসূলভ প্রশ্ন করার কী মানে থাকে? এতো দীবালোকের ন্যায় পরিস্কার ইজমা।
যেহেতু নারীদের নামাজের এই পদ্ধতি সাহাবীদের থেকে, তাবেয়ীদের থেকে সালাফদের থেকেই পর্যায়ক্রমে চলে আসছে। তাই মহিলাদের মতো নামাজ পড়া পুরুষ হয়ে সাহাবীদের পথ, তাবেয়ীদের পথ ও সালাফদের পদচ্যুত বলেই গন্য হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন আমিন "

Post a Comment

Previous Post Next Post