কোরআনের আলোকে বেহেশতের চাবি !

কোরআনের আলোকে বেহেশতের আসল চাবি !


 ৫ বার অজুর পরে শাহাদা  পাঠ  করলেই জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে ।  নামাজ বেহেশতের চাবি এমন সব প্রতিশ্রুতি কোরআনে আল্লাহ দেননি । 

কোরআন হচ্ছে  জীবন বিধান কিন্তু কোরআন কে পাশ কাটিয়ে জীবনের সাথে সম্পর্কহীন সমাজ-সংসারে গুরুত্বহীন কিছু পোষাক আশাক দোয়া তাবিজ রীতি-রেওয়াজ কে আমরা ধর্ম হিসেবে চর্চা করি কিন্তু কোরআন যেসব করনীয়-বর্জনীয় বলে দিয়েছে সে সব ছায়ার মতো অনুসরণ করলে শুধু আখেরাত নয় দুনিয়ার জীবনে হবে প্রাপ্তিতে প্রশান্তিতে পরিপূর্ণ ।

 আমরা সবাই বেহেশতে যেতে চাই কিন্তু আমরা কেউ মরতে চাই না । তবে না চাইলেও মরতে হবে ।  কিন্তু বেহেশতে যেতে চাইলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের গাইডলাইন ফলো করতে হবে । 
প্রতিদিন আমরা কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, চালাও সে পথে যে পথে তোমার প্রিয়জন গেছে চলি,  আর সরল-সঠিক পথ পবিত্র কোরআনে পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন । 

অথচ আমরা কত দরগা মাজার তরিকা কতগুলো পন্ডশ্রমে ডুবে থাকি।  কিন্তু কোরান পড়ে দেখিনা যে স্বয়ং জান্নাতের মালিক জান্নাতে যেতে কি বলে দিয়েছেন। 

দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া একটি ধানের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু । 

আল্লাহর প্রিয়জনদের তিনি জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন এবং কারা  সেই সৌভাগ্যবান তাদের বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট করে বারবার বলে দিয়েছেন । 

কিন্তু যারা ঘুমানোর আগে এই দোয়া গোসলের পরে এই দোয়া  ইতিমধ্যেই বেহেস্তও  কনফার্ম করেছেন ।  এবং দিনে পাঁচবার সে বেহেশতের চাবিতে শান  দিচ্ছেন তাদের জন্য এই এই লিখাটি  কিছুটা আশায় গুড়েবালি । 

আমি কেবলমাত্র কোরআনের ভিত্তিতেই আলোচনা করব কারণ কোরআন ক্লিয়ার কমপ্লিটলি ও  ডিটেলস এবং কোরআন কোরআন বহির্ভূত হাদিস এবং  আল্লামা স্কলারের মতামতকে শরীয়ত ভিত্তি হিসেবে অনুমোদন দেয় না । 

জান্নাতে প্রবেশাধিকার কারা পাবে সূরা বাকারা আয়াত 25
وَبَشِّرِ الَّذِين آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ كُلَّمَا رُزِقُواْ مِنْهَا مِن ثَمَرَةٍ رِّزْقاً قَالُواْ هَـذَا الَّذِي رُزِقْنَا مِن قَبْلُ وَأُتُواْ بِهِ مُتَشَابِهاً وَلَهُمْ فِيهَا أَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَةٌ وَهُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
আর হে নবী (সাঃ), যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজসমূহ করেছে, আপনি তাদেরকে এমন বেহেশতের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান থাকবে। যখনই তারা খাবার হিসেবে কোন ফল প্রাপ্ত হবে, তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যা আমরা ইতিপূর্বেও লাভ করেছিলাম। বস্তুতঃ তাদেরকে একই প্রকৃতির ফল প্রদান করা হবে। এবং সেখানে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকূল থাকবে। আর সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে।

 সুতরাং বেহেশতের চাবি হচ্ছে 'বিশ্বাস' এবং ভালো কাজ . কোরআনের যতগুলো আয়াতে আল্লাহ জান্নাত মহোত্তম পুরস্কার প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন , তাতে বিশ্বাস  ও  সৎ কাজের কথা বলেছেন বিশ্বাস এবং সৎকর্মের পরিষ্কার বিবরণ আল্লাহ কোরআনে বলে দিয়েছেন,  কি কি বিশ্বাস করতে হবে এবং কি কি কাজ সৎকর্মের অন্তর্ভুক্ত কোরআনের যে সব আয়াতে আল্লাহ জান্নাতের পথে বলেছেন সে আয়াতগুলো এক নজরে দেখে নেই যাতে আল্লাহ বারবার জান্নাতের মাস্টার কি ( চাবি)  বলে দিয়েছেন

সূরা আন নিসা আয়াত 122
যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, আমি তাদেরকে উদ্যানসমূহে প্রবিষ্ট করাব, যেগুলোর তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়। তারা চিরকাল তথায় অবস্থান করবে। আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সত্য সত্য। আল্লাহর চাইতে অধিক সত্যবাদী কে?

জান্নাতের মালিক হচ্ছেন আল্লাহ তিনি তার ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন কারা জান্নাতে প্রবেশ অধিকার পাবে আল্লাহর কথা বিশ্বাস করবেন নাকি এই দোয়া পড়লে বেহেশতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে ওই দোয়া পড়লে মা ফাতেমার সাথে জান্নাতে যাবেন । 
পঙ্খীরাজ ঘোড়ায় চড়ে বসতে যাবেন এ সব কথা বিশ্বাস করবেন । 

আমি প্রতিটি আয়াত নাম্বার বলে দিচ্ছে  যাতে আপনারা ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইংরেজি বাংলা অনুবাদ করে দেখতে পারেন হাতের কাছে কোরআন শরীফ না থাকলেও গুগলের সার্চ বারে সূরার নাম এবং  নম্বর লিখলেই চলে আসবে যদিও আয়াতগুলো খুব স্পষ্ট 

সূরা বাকারা আয়াত 82
وَالَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ أُولَـئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে।
But those who have faith and work righteousness, they are companions of the Garden: Therein shall they abide (For ever)

সূরা নিসা আয়াত 57
وَالَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ سَنُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا لَّهُمْ فِيهَا أَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَةٌ وَنُدْخِلُهُمْ ظِـلاًّ ظَلِيلاً
আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, অবশ্য আমি প্রবিষ্ট করাব তাদেরকে জান্নাতে, যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহর সমূহ। সেখানে তারা থাকবে অনন্তকাল। সেখানে তাদের জন্য থাকবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্ত্রীগণ। তাদেরকে আমি প্রবিষ্ট করব ঘন ছায়া নীড়ে।
But those who believe and do deeds of righteousness, We shall soon admit to Gardens, with rivers flowing beneath,- their eternal home: Therein shall they have companions pure and holy: We shall admit them to shades, cool and ever deepening.

সূরা আন নিসা আয়াত 124
وَمَن يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتَ مِن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُوْلَـئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلاَ يُظْلَمُونَ نَقِيرًا
যে লোক পুরুষ হোক কিংবা নারী, কোন সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়, তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রাপ্য তিল পরিমাণ ও নষ্ট হবে না।
If any do deeds of righteousness,- be they male or female - and have faith, they will enter Heaven, and not the least injustice will be done to them.

সূরা আল মায়েদা আয়াত 9 
وَعَدَ اللّهُ الَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাËেদরকে ক্ষমা ও মহান প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
To those who believe and do deeds of righteousness hath Allah promised forgiveness and a great reward.

সূরা ইউনুস আয়াত 9
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ يَهْدِيهِمْ رَبُّهُمْ بِإِيمَانِهِمْ تَجْرِي مِن تَحْتِهِمُ الأَنْهَارُ فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ
অবশ্য যেসব লোক ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদেরকে হেদায়েত দান করবেন তাদের পালনকর্তা, তাদের ঈমানের মাধ্যমে। এমন সুসময় কানন-কুঞ্জের প্রতি যার তলদেশে প্রবাহিত হয় প্রস্রবণসমূহ।
Those who believe, and work righteousness,- their Lord will guide them because of their faith: beneath them will flow rivers in gardens of bliss.

সূরা হুদ আয়াত 11
 কিন্তু যারা ধৈর্য্য ধারণ করে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহোত্তম পুরস্কার

সূরা হুদ আয়াত 23 
এবং সৎকাজ করে এবং প্রভুর অনুগত তারা জান্নাতের চিরস্থায়ী অধিবাসী
সূরা কাহাফ আয়াত 30
যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে নিশ্চয়ই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কার বঞ্চিত হতে দেব না

সূরা কাহাফ আয়াত 17
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَانَتْ لَهُمْ جَنَّاتُ الْفِرْدَوْسِ نُزُلًا
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের অভ্যর্থনার জন্যে আছে জান্নাতুল ফেরদাউস।
As to those who believe and work righteous deeds, they have, for their entertainment, the Gardens of Paradise

সূরা আল হাজ্জ আয়্যাত ১৪ 
إِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ إِنَّ اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন।
Verily Allah will admit those who believe and work righteous deeds, to Gardens, beneath which rivers flow: for Allah carries out all that He plans

সূরা আল হাজ্জ আয়্যাত 24
إِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ يُحَلَّوْنَ فِيهَا مِنْ أَسَاوِرَ مِن ذَهَبٍ وَلُؤْلُؤًا وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ
নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে দাখিল করবেন উদ্যান সমূহে, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হবে। তাদেরকে তথায় স্বর্ণ-কংকন ও মুক্তা দ্বারা অলংকৃত করা হবে এবং তথায় তাদের পোশাক হবে রেশমী।
Allah will admit those who believe and work righteous deeds, to Gardens beneath which rivers flow: they shall be adorned therein with bracelets of gold and pearls; and their garments there will be of silk.

সূরা আল হাজ্জ আয়্যাত 50
فَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
সুতরাং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে আছে পাপ মার্জনা এবং সম্মানজনক রুযী।
"Those who believe and work righteousness, for them is forgiveness and a sustenance most generous.

সূরা লোকমান আয়াত 8
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُمْ جَنَّاتُ النَّعِيمِ
যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত।
For those who believe and work righteous deeds, there will be Gardens of Bliss,-

সূরা সাবা আয়াত 4
যারা বিশ্বাস করে এবং সৎ কাজ করে তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহোত্তম পুরস্কার বা জান্নাত

সূরা ফাতির আয়াত 7
যারা বিশ্বাস করে এবং সৎ কাজ করে তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও উত্তম পুরস্কার বা জান্নাত

সূরা ফুসসিলাত আয়াত ৮
যারা বিশ্বাস করে এবং সৎ কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে অন্তহীন পুরস্কার বা জান্নাত বলবেন না কিন্তু যারা বিশ্বাস করে এবং সৎ কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে পুষ্পশোভিত বাগান বা জান্নাত

সূরা সুরা আয়্যাত ২২
تَرَى الظَّالِمِينَ مُشْفِقِينَ مِمَّا كَسَبُوا وَهُوَ وَاقِعٌ بِهِمْ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فِي رَوْضَاتِ الْجَنَّاتِ لَهُم مَّا يَشَاؤُونَ عِندَ رَبِّهِمْ ذَلِكَ هُوَ الْفَضْلُ الكَبِيرُ
আপনি কাফেরদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্যে ভীতসন্ত্রস্ত দেখবেন। তাদের কর্মের শাস্তি অবশ্যই তাদের উপর পতিত হবে। আর যারা মুমিন ও সৎকর্মী, তারা জান্নাতের উদ্যানে থাকবে। তারা যা চাইবে, তাই তাদের জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে। এটাই বড় পুরস্কার।

সূরা সুরা জাকিয়া আয়াত ৩০ 
فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فَيُدْخِلُهُمْ رَبُّهُمْ فِي رَحْمَتِهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْمُبِينُ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদেরকে তাদের পালনকর্তা স্বীয় রহমতে দাখিল করবেন। এটাই প্রকাশ্য সাফল্য।

সুরা মোহাম্মদ আয়াত ২ 
وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَآمَنُوا بِمَا نُزِّلَ عَلَى مُحَمَّدٍ وَهُوَ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ كَفَّرَ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَأَصْلَحَ بَالَهُمْ
আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে মুহাম্মদের প্রতি অবতীর্ণ সত্যে বিশ্বাস করে, আল্লাহ তাদের মন্দ কর্মসমূহ মার্জনা করেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করে দেন।

সুরা আত তাগাবুন আয়াত ৯ 
يَوْمَ يَجْمَعُكُمْ لِيَوْمِ الْجَمْعِ ذَلِكَ يَوْمُ التَّغَابُنِ وَمَن يُؤْمِن بِاللَّهِ وَيَعْمَلْ صَالِحًا يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ وَيُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
সেদিন অর্থাৎ, সমাবেশের দিন আল্লাহ তোমাদেরকে সমবেত করবেন। এ দিন হার-জিতের দিন। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তার পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন। যার তলদেশে নির্ঝরিনীসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা তথায় চিরকাল বসবাস করবে। এটাই মহাসাফল্য।

সুরা তীন আয়াত ৬ 
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فَلَهُمْ أَجْرٌ غَيْرُ مَمْنُونٍ
কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে অশেষ পুরস্কার।

সূরা ব্যিয়িনাহ আয়াত ৭ 
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُوْلَئِكَ هُمْ خَيْرُ الْبَرِيَّةِ
যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা।

সুতরাং জান্নাতের অনুমোদিত গাইড অনুযায়ী  বিশ্বাস এবং ভালো কাজ  যারা করবে তারাই জান্নাতে যাবে। 

কিন্তু যারা বাজারের অন্যান্য অনুনোমোদিত গাইড পড়ছেন তাদের অনেক কিছুই কমন পড়েনি সিলেবাসের  পড়ালেখা করলে পরীক্ষার ফলাফল ভালো হবে ।  কিন্তু সিলেবাসের বাইরে জিনিস পড়লে তো পরীক্ষায় কিছুই কমন পড়বে না । 

বিশ্বাস করলে ও সৎ কাজ করলে ইহুদীরা ও যে কেউ জান্নাতে যাবে এমন অবিশ্বাস্য কথাও কোরআন  বলছে

সূরা বাকারা 62 
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَالَّذِينَ هَادُواْ وَالنَّصَارَى وَالصَّابِئِينَ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَعَمِلَ صَالِحاً فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
নিঃসন্দেহে যারা মুসলমান হয়েছে এবং যারা ইহুদী, নাসারা ও সাবেঈন, (তাদের মধ্য থেকে) যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।

অনেকে  রেফারেন্স দেয়  যে আয়াতটি হুজুররা পড়েনি কখনো এমন অদ্ভুত কথা শুনেনি এই  আয়াত কোরআনের আয়াত আমি নিজে বানাই নি বা বানান সম্ভব ও না ।   ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সম্পর্কে কোরআনের কি বলা আছে তা অন্ন দিন আলচনা হবে। 

এবার চলুন জেনে নেই বিশ্বাস এবং ভালো কাজ কি ?   

সূরা বাকারা আয়াত 177
لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّواْ وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَـكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَالْمَلآئِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَى حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّآئِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُواْ وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاء والضَّرَّاء وَحِينَ الْبَأْسِ أُولَـئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا وَأُولَـئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ
সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।
 
** আল্লাহ শুরুতে বলে দিচ্ছেন যে সৎকর্ম এটা নয়  পূর্ব-পশ্চিমে মুখ ফেরাও অর্থাৎ পূর্ব-পশ্চিমে পূর্ব-পশ্চিমে কেবলার দিকে মুখ ফেরানো সৎকর্ম এটা নয়. আমেরিকা থেকে আমরা পূর্ব দিকে ফিরে নামাজ পড়ি আবার বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমে। 
যেমন আমরা জানি মসজিদে আকসা থেকে কাবা পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে কথা বলা হয়েছে যে কাবার দিকে মুখ ফেরানো আল-আকসার দিকে মুখ ফেরানোর সৎকর্ম এটা নয় । 

 নামাজ অনেক কারণে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত অতি উত্তম ইবাদত প্রার্থনা নামাজ বেহেশতের চাবি না

আল্লাহতালাকে  যেন বিশ্বাস করে আল্লাহকে শেষ বিচারের দিনে ফেরেশতাগণকে আসমানী কিতাব সমূহ এবং নবীগণকে।  এখানে আল্লাহ বলে  দিয়েছেন যে কি কি বিশ্বাস করতে হবে  আমাদের  আল্লাহ আখেরাত ফেরেশতা আসমানী কিতাব নবীগণ সম্পর্কে আল্লাহ যতোটুকু জানিয়েছেন এর বাইরে কিছুই জানিনা ।
এসব বৈজ্ঞানিক প্রমাণ করতে পারবো না এজন্য আল্লাহ আমাদের জানতে বা প্রমাণ করতে বলেন নি ।  আল্লাহ আমাদের এসব সবিস্তারে জানানোর প্রয়োজন মনে করেননি । 

আল্লাহ আমাদের বিশ্বাস করতে বলেছেন আমাদের কাজ বিশ্বাস করা আল্লাহর ফেরেশতাদের অস্তিত্ব প্রমাণ করে বেড়ানোর নয় । 

আমরা জানলাম কি সৎকর্ম নয় এবং কি কি বিশ্বাস করতে হবে । 


বিজ্ঞান
অনেকে বিশ্বাস ও বিজ্ঞান এর পার্থক্য বোঝে না । যেটা জানি সেটা হচ্ছে বিজ্ঞান যেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিশেষভাবে বা নিশ্চিত ভাবে জানি তা হচ্ছে বিজ্ঞান ।
বিশ্বাস
আর বিশ্বাস হচ্ছে সেটা জানিনা বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা পর্যবেক্ষণ করা যায় না কিন্তু সত্য বলে মেনে নিয়েছি ।

এবার সৎ কর্মের তালিকা দেখুন>>>> 

সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।


আল্লাহ সৎকর্ম ভালো কাজের বিবরণ দিয়েছেন আরো কিছু আয়াত দেখে

সূরা বাকারা আয়াত 195
وَأَنفِقُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَلاَ تُلْقُواْ بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ وَأَحْسِنُوَاْ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।

আল্লাহর পথে ব্যয় কি : 
يَسْأَلُونَكَ مَاذَا يُنفِقُونَ قُلْ مَا أَنفَقْتُم مِّنْ خَيْرٍ فَلِلْوَالِدَيْنِ وَالأَقْرَبِينَ وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا تَفْعَلُواْ مِنْ خَيْرٍ فَإِنَّ اللّهَ بِهِ عَلِيمٌ
তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, কি তারা ব্যয় করবে? বলে দাও-যে বস্তুই তোমরা ব্যয় কর, তা হবে পিতা-মাতার জন্যে, আত্নীয়-আপনজনের জন্যে, এতীম-অনাথদের জন্যে, অসহায়দের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে। আর তোমরা যে কোন সৎকাজ করবে, নিঃসন্দেহে তা অত্যন্ত ভালভাবেই আল্লাহর জানা রয়েছে।

সূরা বাকারা আয়াত 262  
الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ ثُمَّ لاَ يُتْبِعُونَ مَا أَنفَقُواُ مَنًّا وَلاَ أَذًى لَّهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
যারা স্বীয় ধন সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, এরপর ব্যয় করার পর সে অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে না এবং কষ্টও দেয় না, তাদেরই জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে পুরস্কার এবং তাদের কোন আশংকা নেই, তারা চিন্তিতও হবে না।

সূরা বাকারা আয়াত 274   
الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُم بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ سِرًّا وَعَلاَنِيَةً فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
যারা স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে, রাত্রে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে। তাদের জন্যে তাদের সওয়াব রয়েছে তাদের পালনকর্তার কাছে। তাদের কোন আশংঙ্কা নেই এবং তারা চিন্তিত ও হবে না।

সূরা আল- ইমরান 134 
الَّذِينَ يُنفِقُونَ فِي السَّرَّاء وَالضَّرَّاء وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ وَاللّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
যারা স্বচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুতঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন।

যারা  তাদের সম্পদ ব্যয় করে রাতে এবং দিনে প্রকাশে এবং গোপনে তারা তাদের প্রভুর কাছ থেকে পুরস্কৃত হবে তাদের কোন ভয় নেই।  তাদের কোনো দুশ্চিন্তা বা দুঃখ থাকবে না অর্থাৎ তারা জান্নাতে 

 সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় ও যাদের আল্লাহ দান করতে বলেছেন 1 টাকা আছে পাঁচ পয়সা দেন যাদের উপর  রাগ ঝারতে  পারবেন এবং রাগ করার কারণ আছে কিন্তু আল্লাহর জন্য সেই রাগ  গিলে ফেললেন। 

কিন্তু যেখানে রাগ দেখালে চাকরি হারাবেন বা গুলি খাবেন সেখানে রাগ সংবরণ করার কোন ফজিলত এবং যাদের চাইলেই শায়েস্তা করতে পারেন বা শায়েস্তা করা উচিত তাদের আল্লাহর ওয়াস্তে মাফ করে দেয়া সৎকর্ম । 

রাত জেগে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়া সহজ কিন্তু অসচ্ছল অবস্থায় ও দান করা সে দানের  প্রচার বা খোটা  না দেয়া  । সর্বাবস্থায় প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা বিশেষ পরিস্থিতিতে রাগ দমন করা সব মানুষকে নিঃশর্ত ক্ষমা করা সংকটের সংগ্রামের ধৈর্য ধারণ করা এভারেস্ট জয় করার চেয়েও কঠিন  ।

আর এ অগ্নি পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত । 

৫ বার অজুর পরে শাহাদা  পাঠ  করলেই জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে ।  নামাজ বেহেশতের চাবি এমন সব প্রতিশ্রুতি কোরআনে আল্লাহ দেননি । 

এবং নবীজিকে জাতীয় কোন কথা বলতেও বলেননি বরং আল্লাহ নবীজি কে বলেছেন 
হে নবী আপনি বলুন তিনিই একমাত্র ইলাহ অর্থাৎ বিধানদাতা আর তোমরা তার সাথে যে বিধি বিধান সংযোজন বা শরিক করও আমি তার থেকে মুক্ত । 

 আমরা আল্লাহর কাছে যা চাই তা হচ্ছে প্রার্থনা কিন্তু আল্লাহ আমাদের কাছে যা চান তাই হচ্ছে সৎকর্ম  যারা  আল্লাহর কমান্ড / আদেশ পরিপুন্ন ভাবে মানবে  ভালো কাজ করবে আল্লাহ তাদের বেহেশত প্রবেশাধিকার দিবেন আর যারা আল্লাহর কথা না শুনে বিভিন্ন  সাহেবের কথা শুনবেন ব্ল্যাক মার্কেট থেকে বেহেস্তের টিকিট কিনবেন ভুল একাউন্টে ডিপোজিট করবেন তাদের জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। 

কোরআন হচ্ছে  জীবন বিধান কিন্তু কোরআন কে পাশ কাটিয়ে জীবনের সাথে সম্পর্কহীন সমাজ-সংসারে গুরুত্বহীন কিছু পোষাক আশাক দোয়া তাবিজ রীতি-রেওয়াজ কে আমরা ধর্ম হিসেবে চর্চা করি কিন্তু কোরান যেসব করনীয়-বর্জনীয় বলে দিয়েছে সে সব ছায়ার মতো অনুসরণ করলে শুধু আখেরাত নয় দুনিয়ার জীবনে হবে প্রাপ্তিতে প্রশান্তিতে পরিপূর্ণ ।

আল্লাহ আমাদের সহায় হোন ।
আমিন । 

Post a Comment

Previous Post Next Post