নিজেকে জানুন ! নতুন করে !

নিজেকে জানুন ! নতুন করে !


 নিজেকে জানুন ! নতুন করে ! আজকে কথা বলব আমাদের ব্রেনের ক্ষমতা সম্পর্কে,  আমাদের ব্রেনের সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট মানুষের যাবতীয় কার্যাবলী অপারেট করে ।

আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নার্ভের মাধ্যমে ব্রেইনের সাথে যুক্ত এবং নির্দেশ মোতাবেক চলে এমনকি আমরা যখন ঘুমায় তখন আমাদের ব্রেইন কাজ করে এবং শরীরের জরুরি কার্যাবলী পরিচালনা করে।  আমরা যদি কিছু স্বপ্ন দেখি সেটা মেমোরিতে সেভ করে রাখে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর পদ্ধতি আইত্ম করতে পারলে , আপনি যা চাইবেন তাই অর্জন করতে পারবেন. 

আমাদের ব্রেনের ক্ষমতা সম্পর্কে যদি সামান্য ধারণা নেই তামাম ইউনিভার্সিটি করতে যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তার মধ্যে সবচাইতে শক্তিশালী ক্ষমতাধর বিস্ময়কর জিনিস সৃষ্টি করেছেন তা হচ্ছে মানুষের মস্তিষ্ক ।

এর কারণে মানুষকে বলা হয় আশরাফুল মাখলুকাত সৃষ্টির সেরা সৃষ্টি সৃষ্টিকর্তা সমস্ত ফেরেশতাদের ডেকে নির্দেশ দিলেন মানুষকে সেজদা করতে। এবং সে আদেশ অমান্য করায় অভিশপ্ত ও বিতাড়িত শয়তানের পরিণত হয় ফেরেশতাদের সর্দার ।

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে মানুষ সম্পর্কে বলেছেন ,  আমি মানুষকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছি আমার প্রতিনিধি হিসেবে । 

এই পৃথিবীতে সর্বশক্তিমান স্রষ্টার প্রতিনিধিত্ব করার মানে যদি একটু বিশ্লেষণ করেন তাহলে বুঝতে পারবেন আপনি কে আপনার প্রতি এবং আপনার পক্ষে কি কি করা সম্ভব । 

আপনি কি জানেন, বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন রাষ্ট্রদূত আছেন তিনি মূলত বাংলাদেশে মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি তিনি কোনো বক্তব্য দিলে সেটা মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য বলে গণ্য হবে ।  তার স্বাক্ষর প্রেসিডেন্ট এর  স্বাক্ষর  হিসেবে বিবেচিত হবে । প্রেসিডেন্ট এর জন্য প্রযোজ্য সকল রাষ্ট্রদূতের জন্য প্রযোজ্য কারণ প্রেসিডেন্ট বর্তমানে তিনি প্রেসিডেন্ট । 

যেমন প্রেসিডেন্টকে লালগালিচা সংবর্ধনা দিতে হয় রাষ্ট্রদূতকে দিতে হবে প্রেসিডেন্টের পতাকা থাকবে রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে জাতীয় পতাকা থাকবে । ট্রাফিক আইন অমান্য করলে যে কোন দেশের পুলিশ তার গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করাতে পারবে না বরং  একটা চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানাতে পারবে । ফৌজদারি আইন তার জন্য প্রযোজ্য নয় । 

কোন অবস্থাতেই রাষ্ট্রদূত কে গ্রেফতার করা যাবেনা । তার বাড়ি তল্লাশি করা যাবে না ।
যিনি  প্রেসিডেন্ট এর প্রতিনিধিত্ব করবেন তাকে সর্বোচ্চ সতর্কতা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। 
এবং সেই রকম দায়িত্ব জ্ঞান সম্পন্ন কাউকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়। 

আল্লাহ তার প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আমাদের মনোনীত করেছেন এই পৃথিবীতে স্বয়ং  স্রষ্টার  যাবতীয় কল্যাণকর  ইচ্ছার বাস্তবায়ন করবে মানুষ আর এ কারণে মানুষকে বিস্ময়কর কার্য ক্ষমতা সম্পন্ন একটি মস্তিষ্ক দিয়েছেন ।

আপনি কি জানেন একজন  সাধারন মানের মানুষের ব্রেইন প্রায় 100 বিলিয়ন নিউরন থাকে প্রতিটি নিউরনে আবার নিউরনের সাথে 1000 সংযোগ তৈরি করে । সর্বমোট 1 ট্রিলিয়ন মিলিয়ন বিলিয়ন সংযোগ তৈরি করে যা মস্তিষ্কের স্তরেজ ক্যাপাচিটি বাড়ায় প্রায় 2.5 মিলিয়ন গিগাবাইট বা ১ মিলিয়ন গিগাবাইট পর্যন্ত প্রায় তিন মিলিয়ন ঘন্টা এইচডি ভিডিও স্টোর কোরে রাখা যাবে বিরতিহীনভাবে রেকর্ড করতে সময় লাগবে প্রায় সাড়ে তিনশ বছর ।

 বিশ্বের সবচাইতে শক্তিশালী কম্পিউটার কয়েক দশকের চেষ্টায় তৈরি সুপার কম্পিউটার k মানুষের মস্তিষ্কে তুলনায় চারগুণ দ্রুতগতিসম্পন্ন এবং তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে কিন্তু প্রায় 10 মিলিয়ন ওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করে । যা জাপানের প্রায় 10,000 বাড়িতে বিদ্যুৎ খরচ এবং একটা ফুটবল স্টেডিয়াম এর সমান জায়গা দখল করে । আর মানুষের ব্রেনের জন্য মাত্র 20 ওয়াট বিদ্যুৎ শক্তির প্রয়োজন হয় ।
যাতে ডিম লাইট জলতে যতটুকু বিদ্যুৎ খরচ হয় তার চাইতেও কম ।

মানুষ কাজে লাগানোর পরিবর্তে আমরা গায়ের জোরে সেরা হতে চাই। শক্তির বিচারে শ্রেষ্ঠত্ব ঠিক হলে হাতি গন্ডার সৃষ্টিকুলের সেরা হত। ব্রেন মানুষের একমাত্র হাতিয়ার শরীরের কোন অঙ্গ ব্রেন থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে সেই অঙ্গ প্যারালাস ব্রেন কে বাদ দিলে মানুষ কত অসহায় ।

আমাদের কুকুরের মতো ধারালো দাঁত নাই । চিতার মত গতি নাই । বাঘের মত শক্ত থাবা নাই । একটি ছোট্ট পকা মাকরের কামরে মানুষ মারা যেতে পারেন । তবু  শুধু ব্রেন কে কাজে লাগিয়ে মানুষ দিগ্বিদিক জয় করছে তাই আমাদের জানতে হবে কিভাবে কাজে লাগাতে হয় ।

আমাদের ব্রেইন কাজ করে ঠিক কম্পিউটারের মতো । কম্পিউটারে যেমন দুইটা পার্ট হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার । এখন হার্ডওয়্যার হচ্ছে কম্পিউটারের যা কিছু দেখা যায় ধরা যায় ওজন করা যায়। আর সফটওয়্যার হচ্ছে কম্পিউটারের ইনভিজিউয়াল সিস্টাম বা অপারেটিং সিস্টেম যা অপারেট করে । 

এখন আপনার লেটেস্ট কনফিগারেশনের একটা কম্পিউটার কিনলেন কিন্তু তাতে যদি কোন অপারেটিং সিস্টেম বা এপ্লিকেশন সফটওয়্যার না থাকে । তবে সে কম্পিউটার বড়জোর বাটখারা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে ।

আপনার কম্পিউটারে অপারেটিং সিস্টেম যদি উইন্ডোজ 2000 তাতে তো আর উইন্ডোজ টেন এর সুবিধা পাওয়া যাবে না । কোনো নির্দিষ্ট সফটওয়্যার না থাকলে সে নির্দিষ্ট কাজ ওই কম্পিউটারে করা যাবে না । যেমন কম্পিউটারে ভিডিও এডিটিং এর সফটওয়্যার না থাকে তাতে ভিডিও এডিট করা যাবেনা। কালারের সফটওয়্যার না থাকলে কালার আসবে না । সাউন্ড সফটওয়্যার না থাকলে সাউন্ড আসবে না ।

আবার এন্টি ভাইরাস সফটওয়্যার না থাকলে কম্পিউটার ফাংশন-কী উল্টাপাল্টা কাজ করবে না । যতক্ষণ না সে ভাইরাস ক্লিন করার না হবে ততক্ষণ কম্পিউটার ঠিকভাবে কাজ করবে না।
আমাদের ব্রেইনের দুটি অংশ। আমাদের মস্তিষ্ক যেটা শক্ত স্থর দিয়ে ঢাকা সেটাকে বলতে পারি হার্ডওয়্যার । যেটাকে আমরা সাধারণত ব্রেইন বলি কিন্তু এই মস্তিষ্কের সংরক্ষিত সারা জীবনের সংগৃহীত তথ্য, উপাত্থ , যুক্তি, দর্শন, ঘটনা,-দুর্ঘটনা, অভিজ্ঞতা, স্মৃতি, হতাশা ,দুঃখ, ষড়যন্ত্র, এসবকিছুকে আমরা বলতে পারি সফটওয়্যার কারণ

এসব কিছুকে আমরা বলতে পারি সফটওয়্যার কমান্ড ।  পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েও দেখা সম্ভব না । এই ইনভিজিবল সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম আমাদের অপারেট করে । অপারেটিং সিস্টেম যেমন হবে আমাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড সেরকম হবে । কোন নির্দিষ্ট সফটওয়্যার না থাকলে সে কাজ আপনাকে দিয়ে হবে না । 

যেমন যারা কালার ব্লাইন্ড তাদের তাদের ব্রেনে কালারএর সফটওয়্যার নাই। সাউন্ড এর সফটওয়্যার না থাকলে সে শুনবে না । কারো ব্রেনে ফন্ট সফটওয়্যার না থাকলে সে হিন্দি লেখা পড়তে পারবেন না বা জার্মান ল্যাঙ্গুয়েজ রিডার না থাকলে আপনি জার্মান ভাষার কিছুই বুঝবেন না । আপনার কাছে সব হিজিবিজি মনে হবে ।

একইভাবে যেকোনো ব্রেনে ক্রাইম প্রোগ্রাম না থাকলে তাকে দিয়ে ক্রাইম করানো যাবে না । আবার ক্রাইম প্রোগ্রাম থাকলে সে ক্রাইম না করে থাকতে পারবে না ।
কিছু মানুষ অকারণে মিথ্যা কথা বলে অন্যদের সাথে দুর্ব্যবহার করে পরচর্চা পরনিন্দার করে অশালীন ভাষায় তর্ক করে অপ্রয়োজনে মানুষ খুন করে ।  কারন তার  অপারেটিং সিস্টেম সেই সফটওয়্যার সেটআপ করা আছে। 

Post a Comment

Previous Post Next Post